ঢাকা রবিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৫

স্থানীয় নির্বাচন ও সংস্কার


সুমন হোসাইন, শার্শা photo সুমন হোসাইন, শার্শা
প্রকাশিত: ৬-১০-২০২৪ দুপুর ৪:৪

দেশে দীর্ঘ ১৬ বছর গণতান্ত্রিক কোন রাজনৈতিক চর্চা না থাকায় সকল স্থরের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা সমপূর্ণরুপে ভেঙ্গে পড়েছে। সাথে সাথে সাধারণ জনগণের ভোটার অধিকার খুন্ন হয়েছে। এ কারনে সাধারণ জনগণের মাঝে আস্থা এবং বিশ্বাস ফিরিয়ে দিতে হলে সুষ্ঠ নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই। আর দেশের সুষ্ঠ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হলে এবং যে কোন দলের প্রভাব মুক্ত করতে হলে, সর্ব প্রথম স্থানীয় সরকার গঠনছাড়া কোন বিকল্প পথ নেই।

এছাড়া বর্তমান সময়ে স্থানীয় সরকারের অধিনে সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা এবং উপজেলার কোন প্রতিনিধি না থাকায় সাধারন জনগণ তাদের নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ কারনেই অনতি বিলম্বে স্থানীয় নির্বাচন বাস্তবায়ন করা অতি জরুরি। এছাড়া স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যে সকল বিষয় গুলোর উপর নজর রাখা প্রয়োজন তা হলো নিম্নরুপ:

(ক) স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় দলীয় করণ মুক্ত করতে সর্ব প্রথম জাতীয় নির্বাচনের পূর্বেই সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, উপজেলা স্থানীয় সরকার নির্বাচন দেয়া জরুরি, তা না হলে জাতীয় নির্বাচনের পরে হলে পূর্বের সরকারের মত দলীয় করণ এবং পেশি শক্তি ব্যবহার হবে।

(খ) জনগণের আস্থা এবং ভোটার অধিকার ফিরিয়ে দিতে অবাধ সুষ্ঠ নির্বাচন হতে হলে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়ন বাধ্যতা মূলক করা প্রয়োজন।

(গ) নির্বাচনে গোপনীয়তা রক্ষার্থে এবং সতন্ত্র প্রার্থীসহ সকল প্রার্থীদের অবাধ ও গণতান্ত্রিক ভাবে সবার অংশ গ্রহন নিশ্চিত করার স্বার্থে পূর্বের সরকারের ৫% ভোটার সমর্থনের স্বাক্ষর বাতিল করা প্রয়োজন ।

(ঘ) শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রভাব মুক্ত করতে কঠোর শাস্তির বিধান বাস্তবায়ন করতে হবে। 

প্রেক্ষাপটঃ দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে ঢালাও ভাবে সাজাতে হবে। দলীয় সরকার গঠনের পূর্বেই স্থানীয় নির্বাচন দেওয়া জরুরী বলে বিভিন্নভাবে মতামত দিচ্ছেন সমাজকর্মী নাগরিক কমিটি সহ সমাজ ব্যবস্থাপকরা। গণতন্ত্র হলো জনগণের সম্মতির শাসন। নির্বাচনের মাধ্যমেই নির্বাচিত প্রতিনিধিরা জনগণের স্বার্থ সংরক্ষণ ও কল্যাণে কাজ করার জন্য তাদের সম্মতি অর্জন করে। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা শুধু কেন্দ্রীয় পর্যায়েই নয়, স্থানীয় পর্যায়েও প্রয়োগ করা হয়। তাই পরিপূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে প্রশাসনের সকল স্তরে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের শাসন কায়েম করা আবশ্যক। বিগত সরকারের আমলে বেঁধে দেওয়া কালাকানুন আইন বাতিল করে দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্টার জন্য অবাধ ও নিরপেক্ষ রাষ্ট বিনির্মানে সংসদ নির্বাচনের পূর্বেই স্থানীয় নির্বাচন দেওয়া জরুরী। কারন দলীয় সরকার গঠন হলে স্থানীয় নির্বাচন সুষ্ট করা সম্ভবনা।

কেননা দলীয় নেতাকর্মীরা সংঙ্ঘবদ্ধ ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে সতন্ত্র প্রার্থীদের উপর বিভিন্ন ভাবে চাপ প্রয়োগ,বল প্রয়োগ সহ প্রশাসনিক ক্ষমতারও অপব্যবহার চাপাতে থাকে। গনতন্ত্রের মূল ভিত্তি বলা হয় স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে এজন্য স্থানীয় নির্বাচন সুষ্ট নিরপেক্ষ করার জন্য সংসদ নির্বাচনের আগেই স্থানীয় নির্বাচন করতে হবে। গত ১৬ বছর ধরে দেশের প্রতিটি নির্বাচন দলীয় করন করা হয়েছে। আর এই দলীয়করণ রুপ রেখা বাস্তাবায়নে আ.লীগ সরকার নির্বাচন ব্যবস্থার বিভিন্ন রুপ রেখা বাস্তবায়ন করেছে। যেমন সতন্ত্র প্রার্থীদের ক্ষেত্রে মোট ভোটারের ৫% স্বাক্ষর করন যেটা বাতিল করতে হবে। আমাদের সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস। কিন্তু তৃণমূলের নির্বাচিত গণতান্ত্রিক কাঠামোর অনুপস্থিতিতে জনগণের সরাসরি ক্ষমতা প্রয়োগের এবং সরকার পরিচালনায় তাদের অংশগ্রহণের কোনো সুযোগ থাকে না। তাই একটি শক্তিশালী স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার মাধ্যমেই প্রশাসনের সকল পর্যায়ে জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত তথা অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা জরুরী।

বিগত ১৬ বছর পরে গনতন্ত্রে বাংলাদেশ প্রতিষ্টায় যে নির্বাচন হবে তা অবাধ নিরপেক্ষ ও সুষ্ট করতে হবে। নির্বাচনে অংশগ্রহনকারী প্রতিটি প্রার্থী কোন নীলনকশা বা ভোটারদের ভয় ভীতি এবং কোন প্রকার অপচেষ্টা প্রয়োগ করে সাথে সাথে তাকে আইনের আওতায় আনা সহ প্রার্থীতা বাতিল এবং শাস্তির বিধান করতে হবে। গণতন্ত্র সুসংহত এবং সুদৃঢ় প্রতিষ্ঠানিক ভীতের ওপর দাঁড় করাতে হলে প্রশাসনের সকল স্তরে নিয়মিত ও যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা গঠন এবং এসকল প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করার কোনো বিকল্প নেই। বস্তুত নির্বাচিত স্থানীয় সরকার ছাড়া গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাই পরিপূর্ণতা লাভ করে না এবং সংসদভিত্তিক গণতান্ত্রিক উপরিকাঠামোর জন্য ভীত বা খুঁটির সৃষ্টি হয় না। তাই শক্তিশালী স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে বাংলাদেশে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েম করতে হবে।

T.A.S / জামান

অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতি

টেকসই উন্নয়নে প্রাথমিক শিক্ষা

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি ও বাস্তবতা

গাজায় যুদ্ধের নৃশংসতা ও আন্তর্জাতিক বিচার আদালত

বন্ধ হোক অপসাংবাদিকতা

বিভাজনের রাজনীতি দেশের জন্য হুমকি হতে পারে

প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের স্বপ্নের সৌদি আরব

শারদীয় দুর্গোৎসবে সম্প্রীতির বাংলাদেশ ভাবনা

দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য প্রয়োজন পর্যটন গন্তব্যগুলোর সামগ্রিক উন্নয়ন এবং শক্তিশালী ব্র্যান্ডিং

গণতান্ত্রিক অধিকার ও নতুন নেতৃত্বের অন্বেষণ

দুঃখই সবচেয়ে আপন

জাতিগত নিধন বন্ধে জাতিসংঘের ব্যর্থতা

গণতান্ত্রিক হতে হলে মৌলিক অধিকার সমুন্নত রাখতে হয়