ঢাকা রেলওয়ে হাসপাতালে অর্থ লোপাটের মহোৎসব

নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা না করে নিজেদের খেয়াল খুশি মতো সরকারি অর্থ লোপাটের মহোৎসব চালিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা জেনারেল হাসপাতালে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কতিপয় অসৎ কর্মকর্তার সিন্ডিকেট প্রায় ১ কোটি টাকা তছরুপ করেছে বলে জানা গেছে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে ঢাকা রেলওয়ে হেনারেল হাসপাতালে সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে সত্যতাও পেয়েছেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চীফ মেডিকেল অফিসার (সিএমও) ডাঃ ইবনে সফি আব্দুল আহাদ। তিনি সরেজমিন ঘুরে হাসপাতালের সার্বিক বিষয়ে যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন তা রিতিমত চোখ ছানাবড়া হওয়ার মতো। হাসপাতালটির প্রতিটি স্তরে ও কর্মকাণ্ডে নয়ছয় করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
ডাঃ ইবনে সফি আব্দুল আহাদের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে নানা অনিয়ম ও দূনীতি। কর্মচারীদের ডিউটি রোস্টার অনুযায়ী বেলা ১টা ৩৭ মিনিটে মেট্রন ও ১ জন সহকারি ছাড়া কেউ হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন না। বিকালের ডিউটিতে রাত ৯টার সময় ১ জন নার্স ছাড়া কেউ উপস্থিত ছিল না। হাসপাতালের এ বিভাগে কর্মচারীদের সঠিক সময়ে উপস্থিত না থাকায় তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেন। ডিএমও ঢাকাকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর কোন তালিকা সংরক্ষিত ছিলো না হাসপাতালে। ডায়েট দেওয়া হয়েছে এরকম কোন রোগীর তালিকা পাওয়া যায়নি। অথচ দীর্ঘ সময় রোগীদের খাদ্য সরবরাহ বন্ধ থাকলেও ২২-২৩ অর্থ বছরে ডায়েট খাতে ১৫ লক্ষ টাকা ব্যয় লেখা হয়েছে। হাসপাতালে বর্তমানে ভর্তিরোগীর ডায়েট বন্ধ আছে বলে স্টুয়ার্ডের কাছে জানা যায়।
ডাঃ ইবনে সফি আব্দুল আহাদ রেলওয়ে হাসপাতালটি পরিদর্শনকালে ডিএমও (ঢাকা), এএস (বিভাগ), মিজানুর রহমান-এআরও (মেজ), মো: জামাল হোসেন- পিএ ও ও মেট্রন সহ অন্যান্য কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা সরেজমিন ঘুরে দেখেন হাসপাতালে ডিএমও রুমে ১টি সিসি ক্যামেরার মনিটর বসানো হয়েছে এবং তাতে ৩টি ক্যামেরা কার্যকর দেখা যায়। ৩২টি সিসি ক্যামেরা চালু করার কথা থাকলেও তাতে কেবল ৩টি ক্যামেরা স্থাপিত হয়েছে। এর জবাবে ডিএমও বলেন, সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ চলমান আছে এবং খুব শীঘ্রই সকল কাজ সম্পূর্ণ হবে।
হাসপাতালে কিছু সংখ্যক যন্ত্রপাতি সচল আছে। ল্যাবরেটরিতে যন্ত্রপাতি মেরামত না করায় সকল ধরনের রক্ত পরিক্ষা বন্ধ রয়েছে। যন্ত্রপাতি মেরামত বাবদ এপিপিতে জিএম পূর্ব কর্তৃক অনুমোদন আছে ৪ লক্ষ টাকা। কিন্তু উক্ত খাতে ব্যয় করা হয়েছে ১২ লক্ষ টাকা।
পরিদর্শনের সময় ডাঃ ইবনে সফি আব্দুল আহাদ দেখেছেন, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে সকালের (৬টা-৭টা) রোস্টারে ১২ জনের স্থলে ৮ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও ১ জন জমাদার উপস্থিত পাওয়া যায়। দুপুরে ১০ জনের স্থলে ৮ জনকে উপস্থিত পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে সিনিয়র স্যানিটারি ইন্সপেক্টর বলেন, সকালে ১২ জন, দুপুরে ১০ ও রাতে ১০ জন পরিচ্ছন্ন কর্মী কাজ করেন। কিন্তু মোট কতজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী তার নিয়ন্ত্রণে কাজ করেন এবং কত বেতন পান জানতে চাইলে তিনি সঠিক জবাব দিতে পারেননি। অনেক পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিয়মিত কাজ না করেও বেতন নেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। অীধকাংশ পরিচ্ছন্নতা কর্মীকে পোশাক পরিহিত অবস্থায় দেখা যায়নি। পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের বার্ষিক পোশাক ও জুতা এবং স্যান্ডেল বাবদ ৩৪ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হলেও পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা পোশাক পাননি বলে অভিযোগ করেন।
সেনিটারি ইন্সপেক্টরের স্টোর রুম পরিদর্শনকালে পরিষ্কার- পরিচ্ছন্নতা সংক্রান্ত এবং ডেঙ্গু মশা ধ্বংসকারী স্যারভিসাইডাল এবং ফগার মেশিনের ঔষুধের কোন স্টক পাওয়া যায়নি। তিনি কর্মরতদের প্রশ্ন করলে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর জানান, ডিএমও অফিস থেকে কোন মালামাল দেওয়া হয় নাই। তবে হাসপাতালের ইনডোরে কর্মরত ফার্মাসিস্ট শাহআলম সাকিল জানান মাঝে মাঝে কিছু পরিমান ব্লিসিং পাউডার ও ঝাড়ু শলা সরবরাহ দেন, যা বিধি সম্মত নয়। কিন্তু ২০২২-২৩ অর্থ বছরে উক্ত খাতে ব্যয় করা হয়েছে ১৫ লক্ষ টাকা।
প্রতিবেদনে রেলের মহা-ব্যবস্থাপক পূর্ব সদয় অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উল্লেখ করা হয়।
অপর একটি সুত্র জানায় রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে ঢাকা বিভাগীয় সাবেক মেডিকেল অফিসার (ডিএমও) ডা.রিপন দাশ এসব অপকর্মের মূলহোতা। আর এসব কিছু জেনেও সিএমও শুধুমাত্র প্রতিবেদন দিয়ে নিরবতা পালন করছেন। রহস্যজনক কারনে কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এসব নিরবতার কারনে দুর্নীতিকে আরো উৎসাহী করেছেন বলে সুত্র দাবি করেন।
এবিষয়ে জানতে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চীফ মেডিকেল অফিসার (সিএমও) ডাঃ ইবনে সফি আব্দুল আহাদের মোবাইলে কল ও বার্তা দিয়েও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
সুত্র জানায় তৎকালীন ডিএমও (ঢাকা) ডা.রিপন দাশ জনরোষের মুখে পতিত হওয়া সরকারের ঘনিষ্ঠ লোক ছিলেন। ফলে তার কোন অপরাধের বিচার সম্ভব হয়নি। গত ৫ আগস্ট সরকারের পতনের ফলে কর্তৃপক্ষের কোন অনুমতি না নিয়েই কানাডায় পালিয়ে যান।
এবিষয়ে জানতে চাইলে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহা ব্যবস্থাপক (জিএম) নাজমুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনা যখন ঘটেছে তখন আমি দায়িত্বে ছিলাম না। আমি দায়িত্ব নেয়ার পরে বিষয়টি আমাকে কেউ জানায়নি। তবে এখন আপনার মাধ্যমে জেনেছি, এখন আমি খোঁজ নিয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব। আনঅথরাইজড দেশের বাইরে যাওয়ার বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সিপিওকে (প্রধান সংস্থাপন কর্মকর্তা) বলা হয়েছে।
এমএসএম / এমএসএম

কেশবপুরে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা তবিবুর এক সন্তানের জননী নিপা দাসকে নিয়ে চম্পট

মহেশখালীতে রাতে অপহরণের পর সকালে মিলল যুবকের লাশ

আবার রোহিঙ্গা ঢলের ঝুঁকিতে বাংলাদেশ

তানোরে চাষাবাদে গরুর বদলে বাড়ছে ঘোড়া দিয়ে মই চাষ

উল্লাপাড়ায় কষ্টি পাথরের মূর্তি পাচারকারী দুই জন গ্রেফতার

বরগুনায় তিন সংসদীয় আসন পুনর্বহালের দাবিতে মানববন্ধন

রাজশাহী-১ আসনে শরিফ উদ্দিনের বিরোধিতা না বিএনপির বিরোধিতা

টেকনাফে মুক্তিপণে ফিরেছে অপহৃত ব্যবসায়ী

কোচিং-এর গোলকধাঁধায়, শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে গুরুত্ব নেই

হাসিনা বাংলাদেশকে গুম-খুন আর লুটের রাজ্যে পরিণত করেছিল: আব্দুল খালেক

দাউদকান্দির ধারিবন গ্রামে একমাত্র রাস্তাটি বন্ধ, পানিবন্দি কয়েকটি পরিবার

ভূরুঙ্গামারীতে ব্র্যাকের স্বপ্ন সারথি দলের জীবন দক্ষতা বিষয়ক ২৫তম সেশন অনুষ্ঠিত
