চেকে দিবা না ক্যাশে দিবা? নিয়োগ দিতে চাকরি প্রার্থীকে যবিপ্রবি কর্মকর্তা
'চেকে দিবা না ক্যাশে দিবা?' 'ক্যাশে দিবো স্যার' তাহলে কি পজিটিভ করে দিবো এমপি সাহেবের এদিকে? জ্বি স্যার, পজিটিভ তো অবশ্যই করে দিবেন, তবে দেখেন না একটু কম হয় কি-না? তোমার জন্য আমি এক (১ লাখ) কমায়ে দিবো।' এভাবেই সুমির নামে এক চাকরি প্রার্থীর সাথে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার বিষয়ে কথা বলেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ শাখার সাবেক উপ-পরিচালক (বর্তমান উপ-রেজিস্টার, ডিন অফিস) হায়াতুজ্জামান মুকুল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এমন একটি কল রেকর্ড ছড়িয়ে পড়েছে।
আজ সোমবার (০৪ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ডেভিল নামের একটি আইডি থেকে একটি গ্রুপে এটি পোস্ট করা হয়।
পোস্ট এর ক্যাপশনে লেখা হয় 'নিয়োগ বানিজ্যে সরাসরি জড়িত থাকা সত্তেও ততকালীন সময়ে এই অডিওটি উধাও করে দিয়ে নামে মাত্র মুচলেকা দিয়ে দালাল মুকুলকে উদ্ধার করেছিল। বর্তমানে এই মুকুলই ক্যাম্পাসের পরিবেশ অশান্ত করবার চেষ্টা করে প্রশাসনিক ভবনে ফেরত আসবার চেষ্টা করছে। সাধু সাবধান। পুনরায় তদন্ত করে এই নিয়োগ বানিজ্যের দালাল কে শাস্তি প্রদান করতে হবে। শেখ হাসিনার ছবি ব্যবহার করে তিনি এসব অপকর্মে লিপ্ত ছিলেন। এখন আবার বিএনপি এবং জামাত বেশ ধরে সাধু সাজবার চেষ্টা করে যাচ্ছে।'
কল রেকর্ডে বলতে শোনা যায়,
সুমির: কোন দিক দিয়ে চেষ্টা করবেন স্যার?
মুকুল: দুই দিক দিয়েই আমি চেষ্টা করবো। ভিসি স্যার তো টাকা খায় না, পলিটিকাল দিক দিয়ে নাবিল সাহেব (সদ্য সাবেক এমপি, যশোর) আর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ সংক্রান্ত কিছু বিষয় থাকে জানো তো? যারা চাকরি দিবে তারা তো অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হবে, এটা তো তুমি বোঝ।
শেষপ র্যন্ত চাকরি পাইয়ে দেওয়ার বিষয়ে ১১ লাখ টাকায় একটি সমঝোতা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই চুক্তির পর সুমির সেই চাকরির লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণও হন৷ মৌখিক পরীক্ষার আগে মুকুলের সাথে কথা বলার সময় তৎকালীন রিজেন্ট বোর্ড মেম্বার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টটিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মেহেদী হাসান সুমিরকে হাতেনাতে ধরেন। পরবর্তীতে তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় মুকুলকে পাঁচ বছরের পদোন্নতি ও তিনটি ইনক্রিমেন্ট না দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। তবে অভিযোগ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী এধরণের অপরাধে গুরুদন্ড দেওয়ার বিধান থাকলেও অদৃশ্য কারণে তাকে লঘুদন্ড দেওয়া হয়।
এবিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের হায়াতুজ্জামান মুকুল কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তিনি বলেন ব্যক্তিগত বিষয় যারা ফেসবুকে ছড়িয়েছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
এমএসএম / এমএসএম