কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে টুল - পিঁড়িতে বসে চুল দাড়ি কাটার দৃশ্য
স্বভাবগতভাবেই মানুষ সুন্দরের পূজারি। ছেলেদের সৌন্দর্যের অনেকটাই বহন করে চুল-দাড়িতেই। তাই সৌন্দর্যবর্ধনে নরসুন্দর বা নাপিতদের কদর ও প্রয়োজনীয়তাও অনেক বেশি। আধুনিকতার ছোঁয়ায় বর্তমানে নেত্রকোনার বারহাট্টায় এই পেশা প্রায় বিলুপ্তির পথে। এখন আর চোখে পড়ে না হাট-বাজার, গ্রাম-গঞ্জের ভ্রাম্যমাণ নরসুন্দর বা নাপিত সম্প্রদায়ের পিঁড়ি বা টুলে বসিয়ে চুল ও দাড়ি কাটার দৃশ্য।
কালের বিবর্তনে ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন নরসুন্দর বা নাপিত পেশা বর্তমানে শহর-বন্দর ও গ্রামের হাট-বাজারগুলোতে রয়েছে এসি ও নন-এসি সেলুন। সে সব সেলুন ও পার্লারে চুল-দাঁড়ি কাটার জন্য রয়েছে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও মেশিন। বর্তমানে পুরুষদের জন্যও ব্যবস্থা করা হয়েছে পার্লার।
মাঝে মধ্যে বারহাট্টার বিভিন্ন এলাকার গ্রামাঞ্চলের হাট-বাজারে চোখে পড়ে ভ্রাম্যমাণ নরসুন্দর বা নাপিতদের কর্মযজ্ঞ। প্রতি সপ্তাহের হাটের দিনে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে আসা নিম্ন আয়ের এবং বয়স্ক ক্রেতারাই এসব ভ্রাম্যমাণ নরসুন্দর বা নাপিতদের 'সেবা গ্রহীতা'।
গত রবিবার থেকে আজ (১৪ নভেম্বর) বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন হাট ঘুরে কিছু কিছু জায়গায় চোখে পড়ে ভ্রাম্যমান নরসুন্দর বা নাপিতরা কাস্টমারদের পিঁড়ি বা টুলে বসিয়ে চুল ও দাড়ি কাটছেন।
বাউসী বাজারের নরসুন্দর বা নাপিত সুরেশ চন্দ্র শীল বলেন, এই হাট সপ্তাহে একদিন বৃহস্পতিবার বসে প্রতি বাজারেই এসে কাজ করি। ৩০-৩৫ বছর আগে চুল-দাড়ি কাটা ৫-১০ টাকা ছিল। সে সময় যা আয় হতো তা দিয়ে ভাল ভাবেই সংসার চলতো। কিন্তু, বর্তমানে চুল কাটতে ২৫-৩০ টাকা এবং দাড়ি কাটতে ১৫-২০ টাকা নেই। তবে, এত কম দামে চুল দাড়ি কাটার মানুষ পাওয়া যায় কম। সারাদিনে ৩০০-৪০০ টাকা উপার্জন হয় তা দিয়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
নৈহাটি বাজারের নরসুন্দর বা নাপিত অরুণ চন্দ্র শীল বলেন, আমার দাদা এই পেশায় ছিলেন, তারপর আমার বাবা এই পেশায় এসেছেন আর এখন আমি এই পেশা ধরে রেখেছি। আমরা তিন ভাই। অন্য ভাইয়েরা এই পেশা পছন্দ করে না, তাই অন্য পেশায় চলে গিয়েছে। বাবা বৃদ্ধ হয়ে গেছেন তাই বাজারে কম আসেন।
তিনি আরো বলেন, অনেক বছর আগে চুল কাটার জন্য ১০ টাকা আর দাঁড়ি কাটার জন্য ৫ টাকা রাখা হতো। সে সময় যা আয় হতো তা দিয়ে সংসার ভালোভাবেই চলতো। কিন্তু বর্তমানে ২০ টাকায় চুল ও ১০ টাকা দাঁড়ি কেটেও সারা দিন যে টাকা উপার্জন হয় তা দিয়ে সাংসারিক ব্যয় নির্বাহ করতে তাদের হিমশিম খেতে হয়।
বাউসী বাজারে চুল কাটতে আসা ৬০ বছর বয়সী হাদিস মিয়া জানায়, ছোট বেলায় বাবার সঙ্গে হাটে এসে এই ভ্রাম্যমাণ নরসুন্দর বা নাপিতদের কাছে চুল কাটাতেন। এখন তিনি নিজেই ও তার সন্তানের নাতিদের এনে চুল কাটাচ্ছেন।
তিনি বলেন, আমি নিম্ন আয়ের মানুষ। সেলুনে চুলদাড়ি কাটাতে গেলে ৫০ থেকে ১০০ টাকা লাগে। আর এখানে মাত্র ৩০ থেকে ৫০ টাকায় চুল ও দাড়ি কাটানো যায়। সেলুন আর এদের কাজের মান প্রায় সমান।
উপজেলার রায়পুর এলাকার শহীদুল ইসলাম নামে অপর ব্যক্তি বলেন, ছোট বেলায় বাবার সঙ্গে বাজারে যেতাম। তিনি চুল কাটাতে তাদের দায়িত্ব দিয়ে বাবা বাজারের সব কাজ শেষে আসতেন। এখন আর তাদের কাছে চুল-দাঁড়ি কাটায় না।
বাউসী কলেজের বাংলা বিষয়ের প্রভাষক বিজয় চন্দ্র দাস বলেন, বর্তমানে সবাই চুল কাটায় আধুনিক সেলুন গুলোতে। একটা সময় আসবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে পিঁড়ি বা টুলে বসে চুল ও দাড়ি কাটা নিছকই গল্প মনে হবে।
T.A.S / T.A.S
রাঙ্গামাটিতে সিএনজি -কাভারভ্যান মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১,আহত ১
৬৪ জেলায় পুলিশ সুপার বদলি - কুমিল্লার নতুন পুলিশ সুপার মো. আনিসুজ্জামান
লাকসামে বিএনপি নেতা হিরু-পারভেজ নিখোঁজের ১২ বছর, স্বজনদের অপেক্ষার প্রহর কাটছে না
কালীগঞ্জে জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ ও প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনীর উদ্বোধন
মাদ্রাসায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে জঙ্গলে নিয়ে মেয়েকে ধর্ষণ: পলাতক বাবা গ্রেপ্তার
বড়লেখায় জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ ও প্রদর্শনীর উদ্বোধন
নাচোলে জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ ও প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী- উদ্বোধন
লাগারে লাগা ধান লাগা' স্লোগানে সুনামগঞ্জ-৪ আসন উত্তাল
ভূরুঙ্গামারীতে প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ
গোপালগঞ্জে সাড়ে চার হাজার কৃষকের হাতে পৌঁছাল প্রণোদনার বীজ–সার
মুকসুদপুরে জাতীয় প্রাণি সম্পদ সপ্তাহ ও প্রাণি সম্পদ প্রদর্শনী উপলক্ষে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান
সুবর্ণচরে বর্ণাঢ্য আয়োজনে প্রাণীসম্পদ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত