বিচারকদের কাছে আইনজীবীর ২ কোটি টাকা চাঁদাদাবী করে সুবিধা করতে না পেরে হাইকোর্টে রীট
বিচারকদের কাছে ২ কোটি টাকা চাঁদাদাবী করেছেন আইনজীবীরা। মোটা অংকের এই চাঁদা পরিশোধ না করলে মিডিয়ার সহায়তা নিয়ে বিচারকদের বিভিন্নভাবে নাজেহাল করার হুমকি দিয়েছেন তারা। আইনজীবীদের এই চক্রটি বিচার বিভাগের অর্ধশতাধিক কর্মকর্তাদের টার্গেট করে মাঠে নেমেছেন। এই চক্রের সাথে আইন মন্ত্রণালয়ের কিছু কর্মকর্তা জড়িত রয়েছে বলেও তারা মিথ্যা তথ্য প্রদান করেন। আইনজীবী এডভোকেট মো: আলী হাসান ও তার সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট আমিনুল এহসান যুবায়েরও এসকল মিথ্যা কর্মকান্ডের সাথে জড়িত রয়েছেন। চাঁদা না পেয়ে ইতোমধ্যে এই চক্রটির কেউ কেউ বিচারকদের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছেন। এসব করেও ফলাফল না পেয়ে অবশেষ বিচারকদের অপসারণ চেয়ে হাইকোর্টে একটি রীট পটিশন দাখিল করেন এডভোকেট আমীনুল এহসান জোবায়ের। যার রীট পিটিশন নং ১৫৫৭০/২০২৪।
পিটিশন দাখিলের আগে এই আইনজীবী জোবায়ের এন্ড এসোসিয়েট এর জুনিয়র সদস্য এডভোকেট মোহাম্মদ আলী হাছান ও ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম আইন মন্ত্রণালয় ও দুদকসহ বিভিন্ন দপ্তরে জাস্টিজ ডিমান্ড নোটিশ প্রেরণ করেন। অথচ এই আলী হাসানই বিচারকদের কাছে ২ কোটি টাকা দাবী করেছিলেন।
এই চাঁদাবাজ আইনজীবী ছাড়াও চাঁদাদাবীর সাথে যে আইনজীবগণ জড়িত রয়েছেন তাদের দুই জনকে ইতোমধ্যে সনাক্ত করেছেন ভুক্তভোগী বিচারকগণ। তারা হলেন, এডভোকেট আমীনুল এহসান জোবায়ের, এডভোকেট মোহাম্মদ আলী হাসান। আইনজীবীদের সাথে এ চাাঁদাবাজীর সাথে একজন ব্যবসায়ীও জড়িত। তার নাম আব্দুস সালাম। এই আবদুস সালাম আদালতে আইনজীবীদের ব্রোকার হিসেবে পরিচিত। তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়া হলেও ব্রোকারী করে ইতোমধ্যে তিনি রাজধানীর কেরানীগঞ্জ ও বসুন্ধরায় তার একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে।
বিচারকদের বেকায়দায় ফেলার জন্য আদালতে এ পিটিশন দায়েরের জন্য আইনজীবারা একটা ফ্যান্ডও ক্রিয়েট করেছেন। এই ফান্ড ক্রিয়েটের নেপথ্যে রয়েছে একটি বড় চক্র। চক্রটি বিচার বিভাগকে বিতর্কিত করে ফায়দা লুটের জন্যই মূলত এ প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।এডভোকেট মোহাম্মদ আলী হাসান রীট পিটিশনার এডভোকেট আমিনুল এহসান যুবায়ের এর জুনিয়র হিসেবে গাইবান্ধার বিজ্ঞ বিচারক মো: তোফাজ্জল হোসেনের পরিচিত। এই সূত্রে সে বিচারকদের বিরুদ্ধে রীট বা, হয়রানি করা হবে না এমন কথা বলে এডভোকেট আমিনুল এহসান যুবায়ের এর ক্লাসমেট বিজ্ঞ বিচারক তোফাজ্জল হোসেন এর ও অপর একজন বিজ্ঞ বিচারক মো: তসরুজ্জামানের নিকট মোটা অংকের টাকা দাবী করে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ ও ভয়েজ মেসেজ প্রেরণ করেন। এই আইনজীবীগণ বিচারকদের কাছে চাঁদাদাবী করার একাধিক কল রেকর্ড, ভয়েস ম্যাসেজ ও চেটিং এর একাধিক স্কীনশট এসেছে আমাদের হাতে।
রীট পটিশন দাখিল কারী এডভোকেট আমীনুল এহসান জোবায়ের। এই আইনজীবী জোবায়রে এন্ড এসোসিয়েট এর জুনিয়র সদস্য এডভোকেট মোহাম্মদ আলী হাছান ও ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম আইন মন্ত্রণালয় ও দুদকসহ বিভিন্ন দপ্তরে জাস্টিজ ডিমান্ড নোটিশ পেরণ করে। এই আলী হাসানই বিচারকদের কাছে ২ কোটি টাকা দাবী করেছিল।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক বিচারক বলেন, পরিবর্তীত পরিস্থিতিতে এই চক্রের সাথে জড়িত আইনজীবীরা বিচারকদের কাছে বিভিন্ন অনৈতিক দাবী করে আসছিল। বিচারকরা এসব অনৈতিক দাবী আইনসঙ্গভাবে পুরন করতে না পরায় তারা ক্ষিপ্ত হয়। একপর্যায়ে তারা বিচারকদের কাছে মোটা অংকের টাকা দাবী করে। বিচারকরা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে চক্রটি নানা ভাবে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়।
এদিকে এঘটনায় বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস এসাসিয়েসন সভাপতি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো: জাকির হোসেন গালিব ও সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র জেলা জজ মোহাম্মদ ফারুক এক বিজ্ঞপ্তিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এ ধরণের কার্যক্রম বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি ও মর্যাদার জন্য ক্ষতিকর।এসব বিষয়ে অভিযুক্ত আইনজীবীদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
T.A.S / T.A.S