ঢাকা সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫

লবণের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় শঙ্কায় দিন পার করছে, কক্সবাজারের লবণ চাষিরা


মহেশখালী প্রতিনিধি photo মহেশখালী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৫-১২-২০২৪ বিকাল ৫:৫১

লবণ উৎপাদনের মৌসুম শুরু হয়ে গেছে,কৃষকরা পুরোদমে চালাচ্ছে তাদের লবণ উৎপাদনের কাজ। কোথায় দেখা গেছে লবণের স্তুপ আবার দেখা গেছে লবণ উৎপাদনের জন্য মাঠ প্রস্তুত করছেন তারা।এতে কৃষকদের দম ফেলানোর সময় নেই।এমন চিত্র দেখা গেছে, দেশের লবণ উৎপাদন এলাকা কক্সবাজারের মহেশখালীতে।বলা যায় এই এলাকার প্রায় প্রতিটি পরিবারের মানুষ লবণ চাষের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বর্তমান সময়ে এক কঠিন সময়ের মধ্য যাচ্ছে এই কৃষকদের দিন।

প্রতিবছর এখানে ৭০হাজার একর জমিতে প্রায় ২ লাখ মেট্রিক টনের অধিক লবণ উৎপাদন হয়। কিন্তু সম্প্রতি বাজারে লবণের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়ায় এই শিল্পে জড়িত মানুষদের জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে।

স্থানীয় চাষি রাহমত উল্লাহ'র বলেন, বর্তমান লবণের বাজারদর ২২০-৩০০ টাকা প্রতি মণ, যা উৎপাদন খরচের তুলনায় অনেক কম। অন্যদিকে লবণ ব্যবসায়ীরা এক মণ ৪০কেজি সত্বেও মাপার সময় ৪৬-৪৮কেজি নিয়ে নেয়।তারপরও ন্যায্য দাম পাচ্ছিনা।এতে চাষিদের একদিকে লোকসান গুনতে হচ্ছে, অন্যদিকে লবণ উৎপাদন অব্যাহত রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

লবণ চাষি গিয়াস উদ্দিন জানান, “আমাদের এখানকার লবণ দেশের চাহিদা পূরণ করতে পারে। কিন্তু বিদেশী লবণ আসার পর বাজারে দাম পড়ে গেছে। আমরা যে খরচ করে লবণ উৎপাদন করি, সেটা তুলতেই পারি না। এই পরিস্থিতিতে আমরা কীভাবে টিকে থাকব? মহেশখালীতে লবণ উৎপাদন একটি ঐতিহ্যবাহী পেশা। বছরের শুষ্ক মৌসুমে এখানকার মানুষ সূর্যের তাপ ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে লবণ চাষ করেন।

চাষি আব্দুল মান্নান বলেন,লবণের মাঠ,কর্মচারী খরচ, পলিথিন ও তেল খরচ সহ এক কানি প্রতি এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা মত খরচ হয়। আমি ঋণ নিয়ে ১০কানি মাঠ নিয়েছি।বর্তমান লবণের দাম অনুযায়ী আমার এই বছর প্রায় ৬লক্ষ টাকা মত লোকসান হবে। এই অবস্থা হলে, আমি বড় বিপদে পড়ে যাবো।আমার মত হাজার হাজার চাষি আছে তাদেরও একই অবস্থা হবে।

এছাড়াও একাধিক চাষি বলেন, বিদেশ থেকে লবণ আমদানির কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তারা মনে করেন, দেশে লবণের পর্যাপ্ত উৎপাদন থাকা সত্ত্বেও বিদেশী লবণ আমদানি করা সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয়।

লবণ চাষি নাজিম উদ্দিন জানান, “আমাদের এখানকার লবণ দেশের চাহিদা পূরণ করতে পারে। কিন্তু বিদেশী লবণ আসার পর বাজারে দাম পড়ে গেছে। আমরা যে খরচ করে লবণ উৎপাদন করি, সেটা তুলতেই পারি না। এই পরিস্থিতিতে আমরা কীভাবে টিকে থাকব? মহেশখালীতে লবণ উৎপাদন একটি ঐতিহ্যবাহী পেশা। বছরের শুষ্ক মৌসুমে এখানকার মানুষ সূর্যের তাপ ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে লবণ চাষ করেন।

কিন্তু উৎপাদন খরচ, জমি ইজারা, শ্রমিকের মজুরি এবং পরিবহন ব্যয়ের কারণে তাদের লাভের মুখ দেখা কঠিন হয়ে উঠছে। উপরন্তু, আমদানিকৃত লবণের দামের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে তারা প্রায় সর্বস্বান্ত হচ্ছেন।’ স্থানীয় লবণচাষিরা অভিযোগ করেছেন, সরকারি পর্যায়ে পর্যাপ্ত নজরদারির অভাবে এই শিল্প দিন দিন ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে। মহেশখালীর লবণচাষিরা দীর্ঘদিন ধরে বিদেশী লবণ আমদানি বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছেন। তাদের ভাষায়, “দেশের লবণ চাষিদের কথা চিন্তা না করে আমদানি চালু রাখলে আমরা ধ্বংস হয়ে যাব। আমাদের পক্ষে এই দামে লবণ উৎপাদন করা সম্ভব নয়।”
মহেশখালীর সন্তান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হামিদুল ইসলাম আরাফাত বলেন- ‘ভোক্তা পর্যায়ে লবণের দাম কমেনি? কেজি ৪০ থেকে শুরু হয়ে ৮০ টাকা পর্যন্ত দাম। অন্যদিকে শিল্প কারখানায় লবণের চাহিদাও কমে নাই, কিন্তু আমাদের উৎপাদক পর্যায়ে লবণের দাম হুট করে উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়াটা লবণ চাষিদের উৎসাহকে চরমভাবে হতাশ করে দেবে। গত মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ যে লবণ উৎপাদিত হয়েছিল এবার সেটা কমে যেতে পারে। কারণ দাম ভালো থাকলে উৎপাদনে চাষিদের আগ্রহও থাকে বেশি, উৎপাদনও হয় বেশি। ফলে আমদানিনির্ভরতা কমে। এখন দাম কমে যাওয়াটা লবণ আমদানিকে প্রভাবিত করবে বলে আমি মনে করি।”
লবণচাষিদের এই সংকট থেকে উত্তরণে সরকারের কার্যকর হস্তক্ষেপ জরুরি হয়ে পড়েছে। তারা বলছেন, স্থানীয় লবণের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে এবং বিদেশী আমদানি নিয়ন্ত্রণে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে একজন স্থানীয় দুই বারের সাবেক সাংসদ আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদ মতামত দিয়ে বলেন, “দেশীয় লবণ উৎপাদন দেশের চাহিদার জন্য যথেষ্ট। বিদেশী লবণ আমদানি শুধু স্থানীয় শিল্পকেই ধ্বংস করছে না, বরং চাষিদের ঋণগ্রস্ত করে তুলছে। মহেশখালীতে লবণ চাষ শুধু একটি অর্থনৈতিক কার্যক্রম নয়; এটি এখানকার মানুষের জীবনের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে আছে।

সরকারের সঠিক পদক্ষেপের অভাবে যদি এই শিল্প বন্ধ হয়ে যায়, তবে শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতি নয়, একটি অঞ্চলের ঐতিহ্যও হারিয়ে যাবে। এজন্য সরকারের জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। স্থানীয় চাষিদের প্রণোদনা, ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা এবং বিদেশী লবণ আমদানি বন্ধ করার মাধ্যমে এই সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।”

এমএসএম / এমএসএম

রায়গঞ্জে আসামী না হয়েও নুরু মিয়াকে হাতকড়া পড়িয়ে হেনস্তা করলেন এএসআই

আদমদীঘিতে প্রাইভেট কারের ধাক্কায় ৩ বছরের শিশুর মৃত্যু

ফুলকুমার নদীতে ডুবে দুই ভাই বোনের মৃত্যু

নবীনগরে শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে এসে শ্যালকের দা'য়ের কোপে আহত বোন জামাই

চট্টগ্রামে মহাসড়কের পানি নিস্ক্রানের নালা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ

চলনবিলের কৃষকদের স্বপ্ন এখন পানির নিচে

গজারিয়া ইউনিয়নে বিএনপির ঈদ পূর্ণমিলনী ও কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত

বকশীগঞ্জে পূর্ব শত্রুতারকে কেন্দ্র করে হামলা

মোবাইল ফোন চুরির সন্দেহে যুবকে কুপিয়ে হত্যা, আটক ৩

তানোরে বৃষ্টির মধ্যে রাস্তায় কার্পেটিং কাজ চলছে" কর্তৃপক্ষ নিরব

কমলগঞ্জে বিদ্যুতের ছিঁড়া তারে পিষ্ট হয়ে মহিলার মৃত্যু

উলিপুরে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা চরাঞ্চলে বাদাম তুলছেন

ঘাঘর বাজারে উচ্ছেদ অভিযান, দুই শতাধিক অবৈধ স্থাপনা অপসারণ