উন্নয়নের অনুঘটক মানবাধিকারকর্মীরা

মানবাধিকারকর্মীদের মূলত চিহ্নিত করা হয় তাদের কাজের মাধ্যমে পেশার মাধ্যমে। সাধারণত যে সৎ উপার্জন করে এবং উপার্জনের একটি অংশ মানবতার সেবায় ব্যয় করে, নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়ায়, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং সকল মানুষের শান্তির পক্ষে আওয়াজ তোলে; তিনিই হচ্ছেন মানবাধিকারকর্মী। মানবাধিকার সুরক্ষা ও উন্নয়নের আন্দোলনে মানবাধিকারকর্মীরা প্রধান ভূমিকা পালন করেন। তাই মানবাধিকারকর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বিনা বাধায় তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করার সুযোগ দিতে জাতিসংঘ প্রস্তাবনা এ/রেস/৫৩/১৪৪[৯] মাধ্যমে ১৯৯৮ সালে জাতিসংঘ মানবাধিকারকর্মী ঘোষণা গ্রহণ করে।
মানবাধিকারকর্মীদের অধিকার ও কর্তব্য বিষয়ে একটি ঘোষনা গ্রহন করতে জাতিসংঘ ১৯৮৪ সাল থেকে আলোচনা শুরু করে এবং জাতিসংঘ সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষনাপত্রের অর্ধশত বছর পুর্তিতে ১৯৯৮ সালে সাধারন পরিষদ কর্তৃক মানবাধিকারকর্মী ঘোষনা গ্রহনের মাধ্যমে তা সম্পন্ন হয়।
সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে জনগনের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহনের মাধ্যমে গনতান্ত্রিকভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে মানবাধিকারকর্মীরা অনুঘটক হিসেবে কাজ করে। মানবাধিকারকর্মীরা সামাজিক, রাজনৈতিকও অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি, সামাজিক ও রাজনৈতিক চাপা উত্তেজনা প্রশমন, রাষ্ট্রীয় ও আন্তজাতিক শান্তিপূর্ন পরিবেশ বজায় রাখা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অংগনে মানবাধিকার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে পৃষ্ঠপোষকতা করে।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১১ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রজাতন্ত্র হইবে একটি গণতন্ত্র, যেখানে মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা থাকিবে, মানবসত্তার মর্যাদা ও মূল্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নিশ্চিত হইবে।’ সংবিধানে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা, জনস্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, বিশ্রাম ও চিত্ত বিনোদন এবং সামাজিক নিরাপত্তার মত অর্থনৈতিক ও সামাজিক মানবাধিকারসমূহ এবং নাগরিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার সুরক্ষার বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।মানবাধিকার কর্মীরা দেশের কোথাও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কতৃক কোনো মানবাধিকার লঙ্ঘিত হলে তা সরকারের সামনে তুলে ধরে । দেশের কোথাও মানবাধিকার লঙ্ঘিত হলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে রাষ্ট্রকে অপরাধির কাঠ গড়ায় দাঁড় করাতে তারা পিছ পা হয় না। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম অঙ্গীকার ছিলো একটি মানবিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত করার। তাই রাষ্ট্রের মানবিক শরীরে যদি কোথাও ক্ষত সৃষ্টি হয় তাহলে মানবাধিকার কর্মীদের দায়িত্ব হলো রাষ্ট্র পরিচালনাকারি সরকারকে তা দেখিয়ে দেয়া। এ কাজ কোনো অবস্থাতেই সরকার কিংবা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধাচরণ করা নয়। রাষ্ট্রের মানবাধিকার রক্ষা করে রাষ্ট্রকে সন্মানের উঁচু স্থানে তুলে ধরাই তাদের পবিত্র কাজ।আর মানবাধিকার কর্মীরা তাদের কাজ যেন সুষ্ঠুভাবে করতে পারে, এই জন্য জাতিসংঘ মানবাধিকারকর্মী ঘোষণা-১৯৯৮ এর ১, ৫, ৬,৭,৮,৯,১১,১২ ও ১৩ নং ধারায় সুনির্দিষ্ট সুরক্ষা প্রদান করেছে।
মানবাধিকার কর্মী ঘোষনা-১৯৯৮ সবাইকে সমাজের প্রতি ও সমাজের মধ্যে এবং মানবাধিকারকর্মী হিসেবে সমাজে ভুমিকা রাখতে উৎসাহ প্রদানের বিষয়ে গুরুত্ব প্রদান করেছে। এই ঘোষনার ১০, ১১, ১৮ নং ধারা প্রত্যেকের মানবাধিকার উন্নয়ন, গনতন্ত্র রক্ষা ও অন্যের অধিকার লংঘন না করার দায়িত্ব আরোপ করা হয়েছে।তাই মানবাধিকার আন্দোনের সাথে জড়িত মানবাধিকারকর্মীরা তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে যেন কোনো নেতা কর্মীর বা আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহীনি কর্তৃক গ্রেফতার, লাঞ্ছনা বা হয়রানীর শিকার না হয় সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।আইনের মাধ্যমে সংগঠন, সমাবেশ, তথ্যপ্রাপ্তিসহ আন্দোলনের স্বাধীনতার মত মানবাধিকার কার্যক্রমকে আমাদের স্বাগত জানাতে হবে।
লেখক : আবির হাসান সুজন
শিক্ষার্থী : ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
এমএসএম / জামান

রেলের উন্নয়ন কেবল প্রকল্প নয়, দরকার র্কাযকর ব্যবস্থাপনা

অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতি

টেকসই উন্নয়নে প্রাথমিক শিক্ষা

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি ও বাস্তবতা

গাজায় যুদ্ধের নৃশংসতা ও আন্তর্জাতিক বিচার আদালত

বন্ধ হোক অপসাংবাদিকতা

বিভাজনের রাজনীতি দেশের জন্য হুমকি হতে পারে

প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের স্বপ্নের সৌদি আরব

শারদীয় দুর্গোৎসবে সম্প্রীতির বাংলাদেশ ভাবনা

দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য প্রয়োজন পর্যটন গন্তব্যগুলোর সামগ্রিক উন্নয়ন এবং শক্তিশালী ব্র্যান্ডিং

গণতান্ত্রিক অধিকার ও নতুন নেতৃত্বের অন্বেষণ

দুঃখই সবচেয়ে আপন
