মহেশখালীতে নদীর উপর দাঁড়িয়ে আছে সেতু,দুইপাশে কোনো সংযোগ সড়ক নাই

দুর থেকে দেখাচ্ছে জোয়ারের পানির উপর দাঁড়িয়ে আছে সেতু।জোয়ারের পানি নেমে গেলেই দেখায় যায়,সেতুর দু'পাশে কোনো সংযোগ সড়ক নেই।সেতুর উপর দিয়ে কোন যানবাহন চলাচল করতে পারে না। এলাকাবাসী সেতুটি ব্যবহার করলেও উঠতে ও নামতে বাঁশের মই ব্যবহার করতে হয়। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে এভাবেই পায়ে হেঁটে সেতু পার হয়ে কেটেছে এলাকাবাসীর। কখন সেতুটির সংযোগ সড়ক হবে তাও কেউ জানে না।
মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের সম্ভাবনাময় দ্বীপ সোনাদিয়ায় সড়ক যোগাযোগের জন্য নির্মিত হয়েছে দরবেশকাটা সেতুটি। ২০০৬ সালে দরবেশকাটা খালের ওপর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সোনাদিয়া দ্বীপের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের জন্য সেতুটি নির্মাণ করেন। এ সেতু নির্মাণের ফলে কুতুবজোম থেকে ঘটিভাঙা হয়ে সোনাদিয়া সড়কে সরাসরি যোগাযোগ সৃষ্টি হয়। সে সময় একই সড়কের সোনাদিয়া প্যারাবনের ভেতর আরও একটি সেতু নির্মাণ করা হয়।
এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৭০ ও ২২০ মিটার দৈর্ঘ্য সেতু দুইটি নির্মাণ করা হয়েছে। ২০০৯ সালে ৭৬ লাখ টাকা ব্যয়ে দরবেশকাটা সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণে উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। কিন্তু ঠিকাদার কাজ শেষ করার পরপরই সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে সড়কটি বিলীন হয়ে যায়।
এলজিইডি সুত্রে আরো জানাযায়, ২০১৯ সালে ঘটিভাংগা সোনাদিয়া সংযোগ সড়ক করার জন্য দু'টি প্রজেক্ট এসেছিল। কিন্তু সোনাদিয়া দ্বীপটি বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল ( বেজা) অধিগ্রহণ করার কারনে এই সড়ক আর নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি।
দেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ মহেশখালীর আরেক বিচ্ছিন্ন দ্বীপ সোনাদিয়া। এ দ্বীপের আয়তন ১০ হাজার একর। পর্যটনের জন্য দেশজুড়ে দ্বীপটির খ্যাতি রয়েছে। একসময় এ দ্বীপে অতিথি পাখির ব্যাপক সমাগম ছিল। সঙ্গে ছিল দেশীয় পাখির অভয়ারণ্য। দ্বীপকে বলা হতো পাখির রাজ্য। সেখানে সবুজ বনানী আর নীল জলের মিলনমেলায় প্রকৃতি পেত ভিন্নরূপ। এছাড়া এ দ্বীপ চিংড়ি, লবণ ও শুঁটকি উৎপাদনেও প্রসিদ্ধ। কিন্তু অযত্ন-অবহেলায় এ দ্বীপ আজ সব ঐতিহ্য হারাতে বসেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুতুবজোম-ঘটিভাঙা সড়কের দরবেশকাটা খালের ওপর নির্মিত হয় এই সেতু। এ সেতু সোনাদিয়া দ্বীপের বাসিন্দা এবং আশপাশের লবণ ও চিংড়ি চাষিদের যাতায়াতের একমাত্র অবলম্বন। এ সড়ক ছাড়া সোনাদিয়ায় পায়ে হেঁটে যাওয়ার কোনো বিকল্প রাস্তা নেই। এলাকাবাসীর অভিযোগ: সেতু আছে রাস্তা না থাকায় এই এলাকার মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।যাতায়াত সংঙ্কট জীবনের সবক্ষেত্রে প্রভাব ফেলছে।মুমূর্ষু রোগীদের যথাসময়ে চিকিৎসকের কাছে নিতে মারাত্মক সমস্যা দেখা দেয়।অনেক সময় বিনা চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু ও হয়।সড়ক নিয়ে ঘটিভাঙা এলাকার বাসিন্দা মাছ ব্যবসায়ী জাগীর হোসেন অভিযোগ করে বলেন, সড়ক নির্মাণে মাটির পরিবর্তে বালি ব্যবহার করায় ৬-৭ মাসের মাথায় সড়কটি বিলীন হয়ে যায়। এরপর আর সড়ক নির্মাণে উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
তিনি আরো জানান, ঘটিভাঙা ও সোনাদিয়ায় প্রায় ১০ হাজার একর জমিতে প্রতিবছর লবণ, চিংড়ি মাছ ও বিভিন্ন কৃষিপণ্য উৎপাদন করা হয়। শুষ্ক মৌসুমে উৎপাদন হয় শুঁটকির। সড়ক যোগাযোগের অভাবে পানির দরেই এসব পণ্য বিক্রি করতে হচ্ছে। এ ছাড়া সমুদ্রপথে নৌকায় করে পণ্য পরিবহনে অতিরিক্ত খরচ পড়ে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুপস্থিতি এবং অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে সোনাদিয়া ক্রাইমজোনে পরিণত হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, লবণ চাষ,চিংড়ি ঘের নির্মাণের জন্য প্যারাবন দখল এবং ধ্বংস করা হচ্ছে। সম্প্রতি প্যারাবন দখলকে কেন্দ্র করে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই গ্রুপের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে দুইজন নিহত এবং ১৫-২০ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
স্থানীয় চেয়ারম্যান শেখ কামাল বলেন,২০১৬ এর পরে ঘটিভাংগা সোনাদিয়া সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য ৭৬ লাখ টাকা বরাদ্ধ এসেছিল। কিন্তু (বেজা)অধিগ্রহণের ফলে আর সড়ক নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি।
বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য আলমগীর মুহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদ জানান, ২০০৬ সালে বিএনপি-জামাতের আমলে সোনাদিয়ার যোগাযোগ উন্নয়নে দুটি সেতু ও রাস্তা নির্মিত হলেও পরে আওয়ামিলীগের তিন মেয়াদে সেতু সংযোগ সড়কটির সংস্কারে কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তিনি অভিযোগ করেন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা প্রশাসনের সাথে আঁতাত করে প্যারাবন ধ্বংস করে চিংড়ি ঘের তৈরি করেছেন, যা এখনো চলছে। প্যারাবন ধ্বংসে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে তিনি প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান।
স্থানীয় এক স্কুল শিক্ষক জানান, সোনাদিয়া সড়কটি হয়েছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার আমলে এবং খালেদা জিয়া সড়ক নামে। পরবর্তীতে আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে রাস্তার সংস্কার কাজটি আর আলোর মুখ দেখেনি।
স্থানীয় সচেতন মহল আরো জানান, দ্বীপ এখন সন্ত্রাসী এবং মানবপাচারকারীদের নিরাপদ আশ্রয় স্থলে পরিণত হয়েছে। অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে ডাকাতি,মাদক বেচাকেনা এবং মানবপাচার অবাধে চলছে। দ্বীপকে সন্ত্রাস,মাদক এবং মানবপাচারমুক্ত রাখতে স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প, কোস্টগার্ডের ঘাটি স্থাপনের দাবি জানান।
মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ কাইছার হামিদ জানান,দ্রুত সোনাদিয়া যাওয়ার মতো কোন যানবাহন নেই। ক্যাম্প স্থাপনের বিষয়টি বিভাগীয় কমিশনারকে জানানো হয়েছে।
এমএসএম / এমএসএম

রায়গঞ্জে আসামী না হয়েও নুরু মিয়াকে হাতকড়া পড়িয়ে হেনস্তা করলেন এএসআই

আদমদীঘিতে প্রাইভেট কারের ধাক্কায় ৩ বছরের শিশুর মৃত্যু

ফুলকুমার নদীতে ডুবে দুই ভাই বোনের মৃত্যু

নবীনগরে শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে এসে শ্যালকের দা'য়ের কোপে আহত বোন জামাই

চট্টগ্রামে মহাসড়কের পানি নিস্ক্রানের নালা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ

চলনবিলের কৃষকদের স্বপ্ন এখন পানির নিচে

গজারিয়া ইউনিয়নে বিএনপির ঈদ পূর্ণমিলনী ও কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত

বকশীগঞ্জে পূর্ব শত্রুতারকে কেন্দ্র করে হামলা

মোবাইল ফোন চুরির সন্দেহে যুবকে কুপিয়ে হত্যা, আটক ৩

তানোরে বৃষ্টির মধ্যে রাস্তায় কার্পেটিং কাজ চলছে" কর্তৃপক্ষ নিরব

কমলগঞ্জে বিদ্যুতের ছিঁড়া তারে পিষ্ট হয়ে মহিলার মৃত্যু

উলিপুরে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা চরাঞ্চলে বাদাম তুলছেন
