একের পর এক ঘটছে অপহরণ, উদ্ধার হলেও দিতে হচ্ছে মুক্তিপণ

পাচারকারীদের হাত ধরেই ঘটছে অপহরণ কম খরচে মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে নিচ্ছে মুক্তিপণ চক্রে জড়িত একাধিক সিন্ডিকেট প্রশাসন'কে বৃদ্ধিঙ্গুলি দেখিয়ে নিত্যনতুন ঘটছে এসব ভয়ংকর ঘটনা।
উখিয়া-টেকনাফে একের পর এক অপহরণের ঘটনা ঘটেই চলছে। অপহরণ আতঙ্ক যেন এখানকার নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে উঠেছে। কখনো শিশু,কখনো যুবক,কখনো বৃদ্ধা, সরকারি বনকর্মী থেকে শুরু করে বাদ যাচ্ছে না কেউ।
অপহরণের শিকার হলেই দিতে হচ্ছে মুক্তিপণ। এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে উখিয়া-টেকনাফের সাধারণ মানুষ মানববন্ধন করতেও দেখা গেছে বিভিন্ন ব্যানারে। তারপরেও এই অপহরণ বাণিজ্য বন্ধ হচ্ছে না। এসব অপহরণ চক্রে জড়িত রয়েছে নতুন-পুরাতন বিশাল মানব পাচারকারী সিন্ডিকেট। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রতিনিয়ত ঘটছে এসব অপহরণ বাণিজ্য। এসব ঘটনার ভয়ংকর তথ্য উঠে এসেছে সকালের কক্সবাজার প্রতিবেদকের হাতে।
সম্প্রতি আলোচিত মোহাম্মদ আরাকান (৬) নামে শিশুটি অপহরণ হওয়ার মুক্তিপণ দিয়ে উদ্ধার হলেও তাকে মাটিতে পুঁতে রাখার ভিডিও' দৃশ্যটি ব্যাপক হারে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়।
এ ঘটনা যেতে না যেতেই উখিয়া রত্নাপালং ইউনিয়নের জসিম (২০) নামে আরেক যুবক অপহরণের শিকার হয়।জসিম উদ্দিন রত্নাপালং ০৪নং ওয়ার্ডের মো: আলীর ছেলে বলে জানা যায়।জসিমের মা সকালের কক্সবাজার প্রতিবেদক'কে জানিয়েছেন, পরিবারের ভরনপোষণ চালাতে কাজের সন্ধানে গত ১০ই জানুয়ারি শুক্রুবারে বাড়ি থেকে বের হয়ছিল তার ছেলে । সাথে ছিল একই এলাকার বাহাদুরের ছেলে রিদুয়ান আকাশ নামে আরেক যুবক। এক সাপ্তাহ পার হয়ে গেলেও ছেলের খোঁজ না পেয়ে পরিবার জসিমকে খোজাঁখুজি করলে বাহাদুরের শালী কোটবাজারের বাসিন্দা মোহসেনা আকতারের কাছে শুনতে পায় জসিম অপহরণ হয়েছে। মুক্তিপণ দিয়ে তাকে উদ্ধার করতে হবে। মোহসেনা নামে ওই মহিলার মাধ্যমে বাহাদুর জসিমের পরিবার থেকে ৩০ হাজার টাকা দাবি করে। ১দিন পরে তারা টাকা নিয়ে গেলে জবাব দেয় জসিম এখন তাদের হাতে নেই অন্য পাচারকারীরা তাকে নিয়ে গেছে।
এই সুত্রে ধরে কোটবাজারের মোহসেনা নামে অই নারীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ১১ই জানুয়ারী ২৫ইং তারিখে জসিমের সাথে বাহাদুরের ছেলেসহ আরো ৫ জন অপহরণ হয়। জনপ্রতি ৩০ হাজার করে দিলে অপহরণকারীরা সবাইকে ছেড়ে দিবে বলছিল তার বোনের জামাই বাহাদুর'কে। তারা সবাইর চিন্তা না করে শাপলাপুর এক চকিদারের আশ্বাসে তাদের ছেলে রিদুয়ানকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। বাকিরা অপহরণ কারীদের কাছে আটকে থেকে যায়। রিদুয়ানের দেয়া তথ্যমতে এসব ঘটনার বর্ণনা দিয়ে অপহরণ চক্র ও মানব পাচারকারীদের শনাক্ত করে ওই মহিলা নিজেই বাদী হয়ে তাদের নাম উল্লেখ করে উখিয়া এবং টেকনাফ থানায় লিখিত অভিযোগও দেন বলে জানান মহসেনা।
বাহাদুর নামে ওই যুবকের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে এ ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন , রত্নাপালং তুলাতুলী এলাকার ইমরান প্রকাশ বাচ্ছু নামে এক ছেলের ফাঁদে পড়ে আমার ছেলে রিদুয়ান,জসিমসহ ৫ জন ছেলে ইনানীতে বেড়াইতে যায় । সেখান থেকে ইমরান প্রকাশ বাচ্চু নামে অই ছেলেটি আমার ছেলে রিদুয়ান,জসিমসহ তারা ৫ জনকে মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে শাহা আলম নামে এক মানব পাচারকারীর হাতে তুলে দেয়।
সেই মানব পাচারকারী শাহা আলম তারা ৫ জনকে শাপলাপুরের কেফায়েত নামে আরেক মানবপাচারকারী ও অপহরণ চক্রে জড়িত ব্যক্তির কাছে তাদের তুলে দিয়ে মুক্তিপণ ছেয়ে বসে। অনেক কষ্ট করে শাপলাপুর ৮নং ওয়ার্ডের চকিদার ও মেম্বারের সহযোগীতায় আমার ছেলে রিদুয়ানকে মুক্তিপণ ছাড়া সহি সালামতে উদ্ধার করি। বাকি ৪ জন' এখনো উদ্ধার হয়নি।
৫ জনের মধ্যে একজনকে কিভাবে উদ্ধার করা হলো এমন রহস্যজনক তথ্য জানতে রিদুয়ানকে উদ্ধারকারী শাপলাপুর ৮নং ওয়ার্ডের গ্রামপুলিশ (চকিদার) মো: শহিদুল্লা'র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মুঠোফোনে জানান, রিদুয়ান নামে একজন কে শাপলাপুর এক বাড়ি থেকেই পাওয়া গেছে। মানব পাচারকারীদের হাতে অপহরণ হওয়া তারা ৫ জনের মধ্যে রিদুয়ান নামে ছেলেটি বুদ্ধিমান ছিল। সে অই গ্রুপ থেকে কৌশলে এক স্থানীয়'র বাড়িতে পালিয়ে আসে। সেখান থেকে বাড়িওলা মেম্বারের কাছে তুলে দেয় ওই ছেলেকে। পরবর্তী মেম্বার ওই ছেলেকে আমার জিম্মায় দিয়ে পরিবারের কাছে নিরাপদে তুলে দিতে বলেন। এর পর সেই ছেলেকে অপহরণ কারী ও মানব পাচারকারী কেফায়েত নামে এক লোক আমার থেকে ওই ছেলেকে ছিনিয়ে নিতে বিভিন্নভাবে অপচেষ্টা চালাই। আমাকে অনেক হুমকি ধমকিও দিয়েছিল তারপরও আমি পরিবারের হাতে রিদুয়ান নামে ওই ছেলেকে তুলে দিয়েছি।
অভিযোগ রয়েছে, উখিয়া রত্নপালং ইউনিয়নের ইমরান প্রকাশ বাচ্ছু (২৪), জালিয়াপালং ইউনিয়নের শাহা আলম(৩২), টেকনাফ শাপলাপুর এলাকার মো কেফায়েতসহ তারা ১০/১১ জনের একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এ ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে।
এদিকে রিদুয়ান ও তার পিতা বাহাদুর,মোহসেনা সহ রিদুয়ানকে উদ্ধার করা সকল ব্যক্তিরাও এই অপহরণ ও মানব পাচার চক্রে জড়িত বলে অপহরণ হওয়া ৪ জনের পরিবার মন্তব্য করেন। তাদের দাবি ৫জনের মধ্যে একজন মুক্তিপণ ছাড়া আসতে পারলে বাকি ৪জন কেন আসল না। রিদুয়ানসহ তার আত্মীয়স্বজনরাও এই কাজে জড়িত। প্রশাসনের সঠিক তদন্তের মাধ্যমে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় আনতে জোরদাবি জানান তারা।
সকালের কক্সবাজার প্রতিবেদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, মানবপাচারে জড়িত ব্যক্তিরাই অপহরণ বাণিজ্যের মিশনে কাজ করছে। চক্রে জড়িতরা কখনো মানবপাচার কখনো অপহরণকারী হয়ে উখিয়া-টেকনাফে অরাজকতা সৃষ্টি করে আসছে। অল্প খরচে সহজ উপায়ে সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে যুবকদের অপহরণ করে মুক্তিপণ ছেয়ে বসছে।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আরিফ হোসেনের সাথে এসব বিষয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন,উখিয়াতে গত ১ মাসের ভিতরে কোন অপহরণের ঘটনা ঘটেনি। আপনার পাঠানো তথ্যগুলো তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। জড়িত কাউকে পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জ গিয়াস উদ্দিনের সাথে এ বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, লিখিত ভাবে অভিযোগের বিষয়টি আমি অবগত নই। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে কাউকে উদ্ধার হয়েছি কি না সেটাও আমার জানা নেই। তবে এইখানে এরকম ঘটনা সবসময় ঘটছে। অভিযোগকারীদের সহযোগীতা প্রয়োজন হলে আমার এইখানে পাঠাই দিয়েন। পুলিশ ভিকটিমদের উদ্ধারে কাজ করবে।
এমএসএম / এমএসএম

বেনাপোলে সম্পত্তির জন্য কণ্যাকে প্রাননাশের হুমকির অভিযোগ

কোটি টাকা হাতিয়ে সপরিবারে বিদেশে পালালো হাটহাজারির ওসমান

চট্টগ্রামে ফুটন্ত কিশোর সংঘের ১৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

রায়গঞ্জে সাংবাদিকের ওপর হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

ফ্যাসিস্ট ও তাদের দোসরদের চিহ্নিত করে অতি দ্রুত বিচার করতে হবে ঃ রফিকুল ইসলাম খান

বেনাপোলে মশার উপদ্রবে অতিষ্ট পৌরবাসী

হাতিয়ায় দেড় কেজি গাঁজা সহ এক মাদক ব্যবসায়ী আটক

পুলিশের লেবাসে এসআই জিয়াউলের বিয়ের নামে প্রতারনা ধর্ষণ, অর্থ আত্মসাৎ অভিযোগ প্রমানিত

ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ জনপদের ঐতিহ্যবাহী তালপাতার পাখা

সীতাকুণ্ডে স্বামীর হাতে স্ত্রী খুন

জমি নিয়ে বিরোধঃঘর তুলতে বাঁধা ভাইদের

কারাবন্দী যুবদল নেতা কর্মীদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল
