বারহাট্টার সবজির বাজারে ধস, কৃষকের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ
ভরা মৌসুমে বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বাড়ায় বারহাট্টা উপজেলা সদরসহ আশপাশের এলাকার বাজার গুলোতে শীতের শাক-সবজির বাজারে ধস নেমেছে। প্রতিদিনই কাঁচা শাক-সবজির দাম কমতে থাকায় কৃষকরা কাঙ্ক্ষিত মূল্য পাচ্ছেন না। এতে সবজি চাষিদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পরেছে।
গত শনিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত সরেজমিনে উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মৌসুমের শুরুতে শীতকালীন কাঁচা শাক-সবজির দাম উদ্ধমুখী থাকলেও সম্প্রতি দাম তলানিতে এসেছে। ফলে উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার জন্য পরিবহন খরচই উঠছে না বলে জানান কৃষকরা। এতে ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বস্তি মিললেও দিশাহারা কৃষক। বজারে সবচেয়ে কম দামে বিক্রি হচ্ছে- সিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি ও মুলা। গত কয়েকদিনের বাজারে কৃষকরা ১০-১৫ টাকা কেজি দরে সিম ও ফুলকপি প্রতি পিছ ১৫-২০ টাকা, বাঁধাকপি প্রতি পিছ ১০-১২ টাকা, এবং মূলা ৫ টাকা হালি (৪টি) দরে বিক্রি করছেন।
উপজেলার বাউসী বাজারের ক্রেতা শহীদুল ইসলাম, রিপন হোসেন, আব্দুর রাজ্জাক জানান, বেশি দামের কারণে সবজি খাওয়া ভুলেই গিয়েছিলাম। এ রকম কম দামে পেলে আমাদের সবজির ঘাটতি পুষিয়ে নিতে পারব। রায়পুর এলাকার ভ্যানচালক আমিনুর রহমান জানান, সারা দিনে যা উপার্জন করি, তা চাল-ডাল কিনতেই শেষ হয়ে যায়। এমতাবস্থায় সবজির দাম কম হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি বোধ করছি।
উপজেলা সদরের গোপালপুর ও আসমা হাটে সবজি বিক্রি করতে আসা বারঘর গ্রামের তপন চৌধুরীর, কাশবন গ্রামের সুনীল, অরুণসহ কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বললে তারা সকালের সময়কে জানান, যেভাবে সবজির দাম কমে গেছে তাতে পরিবহন খরচ আমাদের নিজের পকেট থেকেই দিতে হবে। বছরের শুরুতে অতি বৃষ্টিতে বারহাট্টার বিভিন্ন এলাকার ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে যাওয়ার পর ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় নিয়ে কৃষকরা নতুন করে তেল, সার, কীটনাশক ও বীজের আকাশ ছোয়া দাম থাকলেও মাঠের পর মাঠ সবজি চাষ করেছেন। নানাবিধ পরিস্থিতিতে সবজি উৎপাদনে খরচ অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার অনেক বেশি হয়েছে কিন্তু সে তুলনায় দাম পাচ্ছেন না তারা।
এ বিষয়ে গোপালপুর বাজারের পাইকারী সবজি ব্যবসায়ী রুবেল, আমিরুল, সেলিম জানান, তারা কৃষকের কাছ থেকে কম দামে সবজি কিনলেও অতিরিক্ত খাজনা, পরিবহন খাতে অধিক ব্যয় ছাড়াও ঘাটতির কারণে বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।
এমএসএম / এমএসএম