বারহাট্টার গাছে গাছে আমের মুকুল, ছড়াচ্ছে স্বর্ণালী আভা
বাংলার বুকে এখনও ফাল্গুন মাস না এলেও মাঘের শেষ ভাগে বারহাট্টার বিভিন্ন এলাকায় ইতোমধ্যেই লেগেছে ফাগুনের ছোঁয়া। গাছে গাছে বাতাসে দোল খাচ্ছে আমের মুকুল। উপজেলা জুড়ে বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে মুকুলের ম ম ঘ্রাণ। চারিদিকে শোনা যাচ্ছে কোকিলের কুহুতান। পাশাপাশি জানান দিচ্ছে মধুমাসের আগমনী বার্তা।
সরেজমিনে উপজেলা সদরসহ কয়েকটি ইউনিয়নের গ্রাম ঘুরে দেখাগেছে, রাস্তার দু’পাশে, আমবাগানসহ সবখানেই গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে আমের মুকুল। আম পাতার সবুজ বিছানায় মুকুলের সোনালি রেণু যেন ফুলশয্যা সাজিয়ে স্বাগত জানাচ্ছে ফাল্গুনকে। এ যেন হলুদ-সবুজের মহামিলন। মুকুলে মুকুলে ছেঁয়ে আছে গাছের প্রতিটি ডালপালা। চারদিকে ছড়াচ্ছে সেই মুকুলের সুবাসিত ঘ্রাণ। মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মুকুলে ভরে গেছে ব্যক্তি উদ্যোগে লাগানো আম গাছসহ বাগানের গাছগুলো। বড় আকারের গাছের চেয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের গাছে বেশি মুকুল ধরেছে।
এলাকার কয়েকজন আম চাষির সাথে কথা বললে তারা সকালের সময়কে বলেন, সব গাছে পুরোপুরিভাবে এখনো মুকুল আসেনি। আমাদের এলাকায় আমের জাতের মধ্যে আম্রুপালি, গোপালভোগ, ল্যাংড়া, ফজলি, ক্ষিরসাপাসহ অন্যান্য জাতের আম চাষের উপযুক্ত হওয়ায় এলাকার চাষিরা নিজ উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে চারা সংগ্রহ করে বাগান করেছেন। এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০ শতাংশ গাছেই মুকুল এসেছে। সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই সব গাছেই মুকুল আসবে। ক্ষতিকারক পোকার আক্রমণ না হলে এবার কাঙ্ক্ষিত ফলনের আশা করছেন তারা। আর ধীরে ধীরে উপজেলা জুড়ে সম্প্রসারিত হচ্ছে আমের বাগান।
তারা আরও বলেন, গত মৌসুমে আমের বাজার ভালো থাকায় লাভবান হয়েছিলেন চাষিরা। গত বছরের চেয়ে এ বছর আম বাগান আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এ উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে এখনো আম চাষ শুরু হয়নি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমের উৎপাদন গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি হবে বলে আশা করছেন চাষিরা।
উপজেলার বাউসী ইউনিয়নের বাইশধার গ্রামের আম চাষি সাজ্জাদুল হাসান বলেন, আমি চার বছর আগে শুরু করি ফলের চাষ। এবার কমলা চাষে লাভবান হয়েছি। এখন আমের বাগান করেছি। প্রায় দুই সপ্তাহ আগে থেকে আমার বাগানে লাগানো আম গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। বেশির ভাগ গাছই মুকুলে ছেয়ে গেছে। কিছু গাছে এখনও মুকুল বের হচ্ছে। আম চাষেও লাভবান হবার আশাকরছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা বলেন, আমের আগাম মুকুল ফুটেছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে মুকুলগুলো নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা নেই। আমের মুকুলের পরিচর্যায় এভোমেট্রিন ও ছত্রাকনাশক মেনকোজেভ বালাইনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
এমএসএম / এমএসএম