ঢাকা রবিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৫

প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ চালুর মাধ্যমে ছাত্ররাজনীতির যৌক্তিক সংস্কার প্রয়োজন


শাহাজান, গোবিপ্রবি photo শাহাজান, গোবিপ্রবি
প্রকাশিত: ২২-২-২০২৫ দুপুর ৩:২৩

শিক্ষার পাশাপাশি রাজনীতিই ছাত্ররাজনীতি। ছাত্ররাজনীতির মূল্য লক্ষ্য মেধাবী সৃজনশীল নেতৃত্ব তৈরি করা। সাধারণ শিক্ষার্থীদের যেকোনো সমস্যায় সবার আগে ঝাপিয়ে পড়ে ছাত্ররাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরা। রাজনীতি সচেতন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ করা যায়, তাদের কাজ-কর্মে একটা অন্যরকম উদাহরণ থাকে, যেকোনো কাজে নিজের চেয়ে অন্য দশজনের ভালোকে প্রাধান্য দেওয়ার এক অন্যরকম প্রয়াস থাকে।

কিন্তু বর্তমান শিক্ষার্থীদের মাঝে ছাত্ররাজনীতি বলতে গত ১৫ বছরের নোংরা রাজনীতি দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ, মাদকাসক্ত, হলে সীট বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি এসব চিত্রই বুঝে থাকে, এজন্যই শিক্ষার্থীরা ছাত্ররাজনীতি বিমুখ হয়ে পড়ছে। কিন্তু ছাত্ররাজনীতির যে দীর্ঘ সংগ্রামী ইতিহাস রয়েছে সেটা আমরা ভুলতে পারিনা। ছাত্ররাজনীতি না থাকলে হয়তো ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৬২ এর  শিক্ষা আন্দোলন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, এমনকি ২৪ এর গণঅভ্যুত্থান সফল হতো না। কারণ প্রতিটি গণআন্দোলনের শুরুটাই হয় ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন গুলোর মাধ্যমে। ২৪ এর নতুন স্বাধীনতার নেপথ্যে থাকা ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের শুরুর কথায় যদি বিবেচনা করি তাহলে দেখতে পাবো আন্দোলনের শুরুটা গণতান্ত্রিক ছাত্র শক্তি, ছাত্র অধিকার পরিষদ, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফেডারেশন সহ ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর মাধ্যমে হয়েছে, পরবর্তীতে ইসলামী ছাত্রশিবির, ছাত্রদল, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন সহ সকল ছাত্র সংগঠন গুলো অংশগ্রহণ করেছে। প্রতিটি জেলা-উপজেলা, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৪ এর ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে ছাত্র সংগঠন গুলোর নেতৃবৃন্দ, বিশেষ করে সকল জায়গায় ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা কর্মীদের সাহসী নেতৃত্বের ভুমিকা ছিলো অপরিসীম, প্রতিটি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়  জেলা-মহানগর উপজেলা পর্যায়ে ফ্যাসীবাদী শাসনতন্ত্রের চোখে চোখ রেখে লড়াই করেছে তারা। তাই রাজনীতির প্রয়োজনীয়তা একেবারে অস্বীকার করার উপায় নেই।।

যদি ছাত্র রাজনীতি না থাকতো তাহলে হয়তো ২৪ এর স্বাধীনতা এভাবে আসতো না, ১৮এর কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু করে ২৪ এর স্বাধীনতা পরবর্তী সময় পর্যন্ত ভিপি নুর, রাশেদ, মামুন, ফারুক, আসিফ, নাহিদ, আখতার সহ বিল্পবী নেতৃত্বগুলো তৈরি হতো না। এক ডাকসু নির্বাচন জাতির জন্য তৈরি করেছে ভিপি নুরের মতো ডিপ্লোমেটিক নেতৃত্ব, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যদি এমন গুনগত নেতৃত্ব উঠে আসতো তাহলে এই রাষ্ট্র এত পিছিয়ে থাকতো না।

ছাত্র সংসদ না হলে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতির পূর্বের ছাপগুলো আবার দেখতে পাবো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে, রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় ভাইয়ের পেছনে দৌড়ায়তে হবে হলের একটা সীটের জন্য, মেধাবী যোগ্য নেতৃত্ব রাষ্ট্রের জন্য উঠে আসবে না। বর্তমানের সচেতন শিক্ষার্থীরা কোনো দলের মাদকাসক্ত, চাঁদাবাজ, ধর্ষক নেতাকে নির্বাচিত করে ছাত্র প্রতিনিধি বানাবে না, ছাত্র সংগঠন গুলোর বাহিরেও সাধারণদের মাঝ থেকে অসাধারণ নেতৃত্ব উঠে আসবে। ছাত্র সংসদ না হলে রাষ্ট্র নেতৃত্বশূন্য হয়ে পড়বে, নেতৃত্বগুলো ছাত্র জীবনে তৈরি না হলে পরবর্তীতে জীবনে তৈরি করা সম্ভব না, অমুক ভাই তমুক ভাইয়ের ধারা অব্যাহত থাকবে। রাষ্ট্রপরিচালনায় রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রযোজনীয়তা অপরিসীম, যার অভাব আমরা বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের মাঝেও লক্ষ করছি। আবার দেশ ব্যবসায়ী রাজনৈতিকদের হাতে চলে গেলেও কেমন বেহাল দশা হয় সেটাও গত কয়েক বছরে দেখেছি আমরা। রাষ্ট্রের প্রয়োজনের নেতৃত্ব তৈরি হওয়ার একটা চেইন থাকা প্রয়োজন যা ছাত্ররাজনীতির মাধ্যমেই উঠে আসে।

এখন মূল কথা ছাত্র রাজনীতির সংস্কার কিভাবে হবে? এটা হতে পারে একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজ সহ প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ চালুর মাধ্যমে এবং ছাত্র সংসদের নেতৃত্ব নির্বাচন হবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে। যদি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্র সংসদের নেতৃত্ব তৈরি করা সম্ভব হয় তাহলে কোনো অযোগ্য শিক্ষার্থীকে ভোট দিয়ে নেতা হিসেবে নির্বাচন করবে না কেউ, আপনা আপনিই এই নেগেটিভ ক্যারেকটার গুলো ঝরে পড়বে, মেধাবী-সৃজনশীল-প্রগতিশীল নেতৃত্ব উঠে আসবে যা রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।

ছাত্ররাজনীতি সংস্কারের আরেকটা বিষয় হতে পারে রাজনীতি টার্ম টাই পরিবর্তন করা। ছাত্ররাজনীতি বলতে যেহেতু আগে ছাত্র তারপর রাজনীতি, এখানে তার পড়াশোনা আগে হবে তারপর রাজনীতির অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে কাজ করা এবং রাষ্ট্রের প্রয়োজনে অবদান রাখা। ছাত্র সংগঠন গুলোর কাজ হবে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের লক্ষে কাজ করা, ক্যাম্পাস ভিত্তিক বিভিন্ন সামাজিক কাজ করা, ক্যারিয়ার ও রাষ্ট্র ভাবনায় বিভিন্ন সভা-সেমিনার করা, পাঠচক্র আয়োজন করা, নিজস্ব লাইব্রেরি তৈরি করা, যে শিক্ষার্থী যার ক্যারিয়ারে যেভাবে ফোকাস করতে চান সেই সেক্টরগুলোতে সহায়ক ভুমিকা পালন করা। আমরা ছাত্ররাজনীতি শব্দটাকে বিরুপ প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখি, এক্ষেত্রে শব্দটাকে পরিবর্তন করে সামাজিক সংগঠন গুলোর মতো জন্য কোনো টার্ম ইউজ করা যায় কিনা সেটাও ভাবনার বিষয়। 

দলীয়-দাসত্ব, লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি পরিহার করে রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তৈরিতে ও ছাত্রদের অধিকার আদায়ে সতন্ত্র ছাত্ররাজনীতি অবশ্যই চালু থাকা প্রয়োজন। যার যৌক্তিক সংস্কার ছাত্র সংসদ চালুর মাধ্যমে হতে পারে।

এমএসএম / এমএসএম

চাকসুর গঠনতন্ত্রে যোগ হলো এমফিল-পিএইচডি শিক্ষার্থী: পূর্ব সিদ্ধান্ত বদলে বিতর্কে প্রশাসন

জাবিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শহীদ পরিবারদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান সম্পন্ন

ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা, ভোট ৯ সেপ্টেম্বর

শেকৃবিতে শিক্ষার্থীদের জিরো পার্সেন্ট ইন্টারেস্টে দেয়া হবে ল্যাপটপ

ইউজিসি'র হিট প্রকল্পের গবেষণা ফান্ডে নাম নেই জবির

চবিতে শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার,মৃত্যু ঘিরে রহস্য

কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই ৩৬ কর্ণার উদ্বোধন

বর্ণাঢ্য আয়োজনে পালিত হলো পবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে যুক্ত হচ্ছে লিখিত ও প্রেজেন্টেশন পরীক্ষা

জুলাইয়ের স্পিরিট নিয়ে কাল আসছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের নতুন প্ল্যাটফর্ম ইউটিএল

গবিতে বিতর্ক উৎসব: চার ধারার যুক্তিযুদ্ধ

দাবায় চবির ৯ অনুষদের লড়াই, শেষ হলো ‘চেস ফেস্ট

ইবিতে নিহত সাজিদের শেষ ফোনকল নিয়ে রহস্য