সংগ্রামী নারী উদ্যোক্তা অ্যাওয়ার্ড
যাদের কথা হয়না বলা

অর্থনৈতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের নারীদের পথচলা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আত্মকর্ম সংস্থানেও নারীরা এখন বেশী অগ্রহী হচ্ছেন। কেউ এখন আর ঘরে বসে থাকতে চাচ্ছে না। সংসারের বাড়তি খরচ মেটাটে সংসারের সহযোগিতা করতে চান। এমন অনেক কিছুই আছে যা ঘরে বসেই করা যায়। দেশের শহর গ্রাম এমনকি প্রত্যন্ত অঞ্চলের এমন অনেক নারীই আছেন, যারা ঘরে বসে লাখ লাখ টাকা আয় করছেন। আর তারা থাকছেন, তারা সন্তানদের লেখা-পড়া করাতে পারছেন। এমনই একজন নারী হচ্ছেন, শামারিয়া শহীদ। তিনি এল এল বি মাস্টার্স শেষ করে বিএড করেছেন। ১৯৯৯ সারৈ বিয়ে করেন। সেই বিয়ের প্রথম দিন থেকে তিনি শ্বশুর বাড়ির নানা কথা শোনতে থাকেন।
তিন জানান, তার বিয়ের ১ম দিনই তাকে তার শাশুড়ি বলেন, তোমার কেমন বাবা ছেলে পেলো আর বিয়ে দিয়ে দিলো ? তার তখন খুবই খারাপ লাগলো। এছাড়াও আরও অনেক কথা তাকে শুনতে হয়েছে। তিনি মাঝে মধ্যেই কান্না করতেন। চোখের পানি শুকনো মাটিতে পড়লে তা মুহুতেই শুকিয়ে যেত। তাদের বিয়ের মাত্র ২ মাসের মধ্যেই তার গর্ভধানী মা মারা যান। তার উপর শ্বশুর বাড়ির জ¦ালাতন চলতেই থাকে। এনিয়ে তার জন্মদাতা পিতা তাদের নিয়ে খুব টেনশন করতে থাকেন। তার বড় তিন আর ছোট দুই ভাই ছিলো। তার বাবা লন্ডন প্রবাসি ছিলেন। আর এজন্যই তার বড় বোনসহ তাদেরকে দ্রুত বিয়ে দিয়ে দেন।
অনেকেই বলবেন, যুদ্ধের চেয়ে জীবন অনেক বড়। মোটিভেশনাল স্পিকাররা নিশ্চয়ই এক লহমায় উড়িয়ে দেবেন জীবনকে যুদ্ধের ক্ষুদ্রাংশ ভাবার চিন্তা। বলবেন, সংগ্রাম করতে করতে একদিন প্রতিষ্ঠা পেতে হবে। জানো না, অমুক বিখ্যাত ব্যক্তি কত কষ্ট করেছিলেন? সেই কষ্ট থেকেই তিলে তিলে তিনি বড় হয়েছেন। আর তাদের মতই শামারিয়া শহীদ জীবনের কঠিন একটা সময় পার করে যাচ্ছিলেন। নিজের কাছে কেবলই মনে করতেন, তার সামনে সীমাহীন এক সুমদ্র। আজও এ-ই সুমদ্রের কোন কিনারা খুজে পাচ্ছেন না। অথর সাগরে ভাসছেন তিনি।
শামারা শহীদ প্রতিবেদনকে জানান, আমার এক বিয়ের অনুষ্ঠান হয় দুই থেকে তিন বার। আমার বাবা দুবারই তাদের ভালো ভাবে আপ্যায়ন করেছে। কিন্তু তারা আমাকে বা আমার পরিবারকে কোন সন্মান করে নি। আমার ১৯৯৯ সালে ওভার ফোনে ১ম বিয়ে হয় তারপর বাবা দেশে আশার পর আবার ২০০১ অনুষ্ঠান করা হয়। আমার জীবনে সবচেয়ে বড়ো কষ্ট আমি কখনও ভালো বাসার গল্প শুনিনি। ভালো বাসার অনুভূতি টাও কেমন হয়, সেটা কখনও জানতে পারিনি। আমার স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক কেমন হয়, তার অনেক কিছুই অজানা ছিল। আমি কখনও স্বামীর সাথে মন ভরে কথা বলতে পারি নি। সে আমাকে বিয়ে করেছিলো লন্ডনের ছিটিজেনের জন্য, কেননা আমার বাবা লন্ডনের সিটিজেন ছিলেন। আর সে সুবাদে আমাদের ও কাগোজ হওয়ার কথা ছিলো আর সেটা যখন হয়নি, আর তখনই আমার সংসারটাও করা হয়নি।
আমার বিয়ের পর শশুর বাড়ির সবার ব্যবহারে বুঝে ছিলাম আমার বেশিদিন শ্বশুর বাড়িতে ঠাই হবে না। তা-ই আমি আবার পড়াশোনা শুরু করি খুলনা বিএল কলেজ থেকে প্রাইভেটে পরীক্ষা দেই। আমার মেধা খুব একটা খারাপ ছিলো না, ৯৭ সালে এইচএসসি পর থেকে বইয়ের সাথে আমার কোন যোগাযোগ ছিল না। এরপর ২০০৫ থেকে ৬ সালের দিকে বিএসএস পরীক্ষা দিতে খুলনায় আসি। আর ৯৯ সালে বিয়ের পর থেকে খুলনা তেমন যাতায়াত ছিল না। আমার শশুর বাড়ি যাদের বাসায় কাজের লোক থাকতো না, তাদের ডিউটি পালন করতে হতো। আমার স্বামীকে বললাম আমি পড়াশোনা শুরু করবো, তিনি তখন হাসলো আর বললো. তুমি পড়বা সে কুয়ালিটি তোমার আছে শুধু শুধু টাকা নষ্ট করবা। তুমি যদি পাশ করো আমার বা-হাতের তালু থেকে চুল উঠবে। আর আমি হাতের কবজি কেটে ফেলবো। তিনি কখনও আমার হাত খরচটাও দিতো না। আমার ভরনপোষণ বলেন বা তিনি বাইরে থাকতেন, দেশে আসলে আমার জন্য স্পেশাল বলে কিছুই থাকতো না। তার ভাই-বোন আত্মীয়-স্বজন নেওয়ার পর যা থাকতো, তার থেকে এক দুইটা জিনিস আমাকে দিতেন, আমার ভাই বোনরা কখনও কিছু পাইনি।
শামারা শাহীদ আরো বলেন, আমার বিএসএস পরীক্ষার আগে বলেছিলাম আমাকে ইংরেজির টিচার দিবে, আমাকে একটু বই কিনে দিবে, কিন্তু তিনি তা দেয়নি। আমার ছোট মামা যার অবদান অনেক তিনি পড়াশোনার পিছনে খরচ করেছেন। তিনি এখন আর বেচে নাই। আমার মামা যদি বেঁচে থাকতেন, তাহলে হয়তো আমার জীবনে এতো কষ্ট পেতে হতো না। মামাকে শুধু বললাম মামা তুমি আমার ফরম ফিলাপ কর। সিলেবাস জোগাড় করে রাখবো। আমি পরীক্ষার আগের দিন আসবো। আমাকে পড়তে দিবে না খুলনায় আসতে দিবে না। কিন্তু আমি জোর করে পরীক্ষার আগের দিন চলে আসলাম। এসে দেখলাম আমার মামা আমার জন্য সিলেবাস বই সব রেডি করে রাখছেন। এরপর সারারাত জেগে পড়লাম সকালে হলে গিয়ে পরীক্ষা দিলাম। এভাবে নিজের সাথে পরিবারের সাথে যুদ্ধ করতে থাকলাম। বিএসএস পাস ও কররাম।পরে আমার বাবু হলো ওর এক বছর বয়সে স্বামীর বাড়ি থেকে চলে আসলাম। কেননা বাবুর বাবা লন্ডনে বিয়ে করেছেন।
পরে আমার বাবার বাড়ি এসে মাসটার্স, এলএলবি করলাম বিএড ও করলাম। পরে চাকরির কোন জায়গায় হয়নি। এরপর বাবা-মারা যান ২০১০ সালে। তখন খুব সংসারে অভাব। বাবা শুধু বাড়ি টা আর তিন লাখ টাকা রেখে যান। আমার বাচ্চার খাবার জোগাড় করা সংসার চালানো খুবই কঠিন হয়ে পড়ে। তখন আমার তিন বছরের বাচ্চা রেখে ঢাকা চাকরি করতে আসলাম। সেখানে ৫ বছর চাজরি করি। পরে অসুস্থ হলে আমার মেজর অপারেশন করতে।ফরে চাকরি করতে না পেরে খুলনায় একটা রেস্টুরেন্ট চালু করি। কিন্তু সেটাও করোনার কারনে বন্ধ হয়ে যায়। চার মাস চালানোর পর ১৫ লাখ টাকা খরচ হয়ে যায়। আর মাথা উঁচু করে এখনও দাড়াতে পারছি না। আর করনার মধ্যে অনলাইনে খাবার ব্যবসা শুরু করি। সেভ থেকে তিন মাসের চীফ কোর্স করা হয়। খুলনাতে রান্নার প্রতিযোগিতায় নাম দিলে সেখানে ২য় স্থান অধিকার করি। ইন্টারন্যাশনাল কম্পিটিশনে ইন্ডিয়াতে যাওয়া হয়। আর সেখানেও আমাকে লাইফটাইম মেম্বার করা হয়েছে। আবার এনএসডিআই থেকে বেকিং এর উপরে কোর্স করা হয়েছে। এভাবেই আমার যুদ্ধ চলছে। তাই একজন মানুষ জীবনে ছোট বা বড়, যা-ই অর্জন করতে চায় না কেন, তার পেছনে একটি স্বপ্ন থাকা জরুরী। এটা মানুষকে প্রতিদিন, প্রতি মূহুর্তে অনুপ্রেরণা দেয় বলে অভিজ্ঞজনের বলেছেন।
এমএসএম / এমএসএম

গণপূর্তের ইএম কারখানা বিভাগে নির্বাহী প্রকৌশলী মো: ইউসুফের দুর্নীতির রাজত্ব

দুর্নীতিতে পিছিয়ে নেই এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলীগন

‘এনবিআর’এ স্বৈরাচার সরকারের পালিয়ে থাকা চক্রের চক্রান্ত

প্রাণ ধ্বংসকারী কোম্পানি প্রাণ

বিসিএসআইআরের ৬ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি কেনায় ভাগ বাটোয়ারা

কোতোয়ালীতে অপহৃত ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

রেজিস্ট্রি অফিসের প্রভাবশালী নকলনবিশের কাণ্ডঃ মন্ত্রীদের প্রভাবে চাঁদাবাজি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

বিসিক এর নীরিক্ষা কর্মকর্তা সাবধান আলী হতে সাবধান!

কেরানীগঞ্জ উপজেলার রাজাবাড়ী রোডে অবৈধ এলপিজি বটলিং প্লান্ট এর সন্ধান

গডফাদার মুরাদ জং-এর বোন পরিচয়ে দলিল দাতা-গ্রহীতাদের জিম্মি করার অভিযোগ

গাজীপুরের কাশিমপুরে সরকারি খাস জমি ভূমিদস্যুদের দখলে

বগুড়ায় সাবেক অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে 'ফ্যাসিস্ট সিন্ডিকেটের' মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ
