বহদ্দারহাটের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে অসহায় পুলিশ

চট্টগ্রাম নগরীর অপরাধপ্রবণ এলাকার শীর্ষে রয়েছে চান্দগাঁও-বহদ্দারহাট এলাকা। এখানকার অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রক তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী মো. সোহেল প্রকাশ ফ্রুট সোহেল। চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, ছিনতাই, জুয়ার আসর, পতিতালয় ও লোকজনকে আটকে রেখে অর্থ আদায়ের মতো গুরুতর অপরাধে জড়িত সোহেল ও তার সহযোগীরা। তার অধীনে অন্তত শতাধিক অপরাধী সক্রিয় রয়েছে চান্দগাঁও ও পাঁচলাইশ থানা এলাকায়।
অপরাধ জগতে সোহেলের অন্যতম সহযোগী তার ভাই রুবেল ও ধামা জুয়েল। পুলিশের খাতায় তারা পলাতক, অথচ স্থানীয়দের অভিযোগ তাদের প্রতিদিন এলাকায় দাপিয়ে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে। জনমনে ভয়ভীতি বাঁচিয়ে রাখতে তুচ্ছ বিষয়ে অস্ত্র প্রদর্শন, ভয়াবহ হামলা থেকে শুরু করে খুনের ঘটনায় জড়িয়েছে গ্রুপটি।
চান্দগাঁওতে আব্দুর সবুর, কিশোর জিয়াদ ও নুরুল আলম হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা ছিল সোহেলের সহযোগী। এমনকি শমসের পাড়ায় চাঁদার জন্য আমজাদ হোসেন নামে এক যুবকের দুই পা ড্রিল মেশিনে ছিদ্র করে দেওয়ার নৃশংস ঘটনা দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। গত বছরের ৫ নভেম্বর এখানকার আরেক সন্ত্রাসী রাজু বাদশা ওরফে হামকা রাজু র্যাবের অভিযানে অস্ত্রসহ আটক হয়ে কারাগারে আছেন।
চলতি বছরের মার্চ মাস হতে এখন পর্যন্ত সন্ত্রাসী সোহেলের বিরুদ্ধে চারটি মামলা দায়ের হয়েছে চান্দগাঁও থানায়, তবে এখন পর্যন্ত তাকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। অভিযোগ রয়েছে, মাসোহারা নিয়ে পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা গ্রুপটিকে নানা সহায়তা করে আসছে দীর্ঘদিন। মৃত তফাজ্জল হোসেনের ছেলে সোহেল চান্দগাঁও থানাধীন বারাই পাড়াস্থ আনোয়ার বিল্ডিংয়ে বসবাস করে। সোহেলের বিরুদ্ধে চান্দগাঁও থানার অস্ত্র আইনে মামলা নং- ৫৭(৩)২১, মানব পাচার আইনে- ৫৩(৩)২১, মাদকদ্রব্য আইনে- ৫৮(৩)২১, জুয়ার আইনে- ৫৬(৩)২১ এ চার মামলায় পলাতক আসামী সে। এছাড়া, তার বিরুদ্ধে বিচারাধীন রয়েছে চান্দগাঁও থানার চাঁদাবাজি আইনে মামলা নং-৩২(১০)১৮ এবং হত্যা চেষ্টা আইনে- ১৬(১০)১৮।
গত ২৯ মার্চ রাতে চান্দগাঁও থানার অদূরে এস এ আবাসিক হোটেলে অভিযান চালায় পুলিশ। সেখানে পেশাদার পতিতা খদ্দেরসহ উদ্ধার করা হয় জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা এক নারীকেও। এ ঘটনায় সোহেল ও তার সহযোগী মানিকের নামে মানব পাচার আইনে মামলা দায়ের করেন পুলিশ। ৩০ মার্চ চান্দগাঁও থানাধীন আঁছি শাহ মাজার সংলগ্ন এলাকায় মোহাম্মদ আলীর বিল্ডিংয়ে 'সোহেলের জুয়ার আখড়া'য় অভিযান চালায় পুলিশ। সেখান থেকে মাদক, দেশীয় অস্ত্র ও জুয়ার টাকা সরঞ্জামসহ আটক করা হয় ১১ জনকে।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে আটককৃত ব্যক্তিসহ দলনেতা ফ্রুট সোহেল ও তার সহযোগী ধামা জুয়েলের নাম উল্লেখ করে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করেন। অভিযান শেষে পুলিশকে সাধুবাদ জানিয়ে মিছিল বের করে স্থানীয় এলাকাবাসী। মিছিলে অংশ নেওয়ায় পরের দিন ১ এপ্রিল দিবাগত রাতে বারাই পাড়া এলাকায় আনোয়ার নামে এক গার্মেন্টস কর্মকর্তাকে কুপিয়ে হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন করে দেয় সোহেলের সহযোগীরা। জনমনে তাদের ভীতি বাঁচিয়ে রাখতে ভয়াবহ এ হামলা চালায় গ্রুপটি। এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
মাঝেমধ্যে সোহেলের সহযোগীরা আটক হলেও কিছুতে লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছেনা গ্রুপটির। পুরোদমে সক্রিয় চাঁদাবাজিসহ সন্ত্রাসী কার্যকলাপে। বহদ্দারহাটে সড়ক ও ফুটপাত দখল করে দোকান বসিয়ে নিয়মিত চাঁদা আদায় করছে সোহেল। এ খাত থেকে তার মাসিক আয় অন্তত বিশ লাখ টাকা। সোহেলের হয়ে এখান থেকে নিয়মিত চাঁদা তুলে রুবেল ও ভাগিনা মহিউদ্দিন। চাঁদা তোলার অভিযোগ রয়েছে বহদ্দারহাট পুলিশ ফাঁড়ির দুই কনস্টেবল আনিস ও ইমনের বিরুদ্ধেও।
শুধু সড়ক ফুটপাতে সীমাবদ্ধ নয় সোহেলের চাঁদাবাজি। নির্মাণাধীন ভবন, রেস্টুরেন্ট, আবাসিক হোটেল, গার্মেন্টসের পণ্যবাহী গাড়ি ও কাঠের গাড়ি ইত্যাদি খাত থেকেও চাঁদাবাজিতে জড়িত সোহেল। বিভিন্ন বাসাবাড়িতে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে গড়ে তুলেছে জুয়ার আখড়া। রয়েছে মাদক ব্যবসা ও পতিতালয়৷ বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে ছিনতাই ও ইয়াবা বিক্রয়ে সক্রিয় রয়েছে সোহেলের সহযোগীরা। বহদ্দারহাট ও আশপাশ এলাকায় সোহেলের রয়েছে ভয়ংকর কিশোর গ্যাং। আধিপত্য বিস্তার ও অপরাধ সাম্রাজ্য টিকিয়ে রাখতে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার, মহড়া দিয়ে আতংক সৃষ্টি ও সংঘর্ষে জড়িয়ে যায় গ্রুপটি। সোহেলের ভাণ্ডারে বিপুল অস্ত্র-গুলি থাকার তথ্য থাকলেও, তা উদ্ধারে আন্তরিক নয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সোহেলের প্রধান দুই সহযোগী তার ভাই রুবেল ওরফে পাঙ্গাস ও কারাগারে আটক হামকা রাজুর ভাই ধামা জুয়েল। রুবেলের বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানার ছিনতাই আইনে মামলা নং-১৫(২)১৭, চান্দগাঁও থানার হত্যা চেষ্টার আইনে মামলা নং-১৬(২)১৮সহ একাধিক মামলা ও অভিযোগ রয়েছে। এদিকে, ধামা জুয়েল চার মামলার পলাতক আসামী। মামলা গুলো হল চান্দগাঁও থানার মামলা নং- ৫৬(৩)২১, ৫৭(৩)২১, ৫৮(৩)২১, ৩(৪)২১, এছাড়াও বিচারাধীন রয়েছে চান্দগাঁও থানার মামলা নং- দ্রুত বিচার আইনে ২৪(১২)১৫, ৬(১)১৭ এবং জিডি নং- ২৫(১০)২০। অভিযোগের বিষয়ে সোহেল প্রকাশ ফ্রন্ট সোহেল বলেন, এখানো আমার সাথে যাদের নাম বলা হচ্ছে আমি তাদের চিনি না তাদের সাথে আমার কোন সর্ম্পক নাই। একটি গ্রুপ আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করতে বারবার মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। মামলার বিষয়ে বলেন আমি সব মামলা থেকে জামিনে রয়েছে বলে দাবি করেন। এ বিষয়ে চাঁন্দগাও থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, যতটুকু সম্ভব অপরাধ নিয়ন্ত্রনে রাখতে পুলিশ তৎপর ।আমি আশার পর বড় বড় অনেক অভিযান করেছি। আগের চেয়ে এলাকায় অপরাধমূলক কর্মকান্ড অনেকে কমে গেছে বলে দাবি করেন। অপরাধীর তথ্য পেলে সাথে সাথে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত রয়েছে বলে তিনি জানান।
এমএসএম / জামান

শান্তিগঞ্জে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমে গতিশীলতা আনয়ন শীর্ষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত

নাফনদীর মোহনায় ট্রলার ডুবি, ৭জেলে উদ্ধার

বালিয়াকান্দিতে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময়

বাউফলে চেয়ারম্যান পরিবহন বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন

আদমদীঘিতে সমন্বয় কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত

জয়পুরহাটে পৌর হোল্ডিং ট্যাক্স বৃদ্ধির কার্যক্রম স্থগিতের দাবীতে স্মারকলিপি প্রদান

দৌলতপুরে মুখ বাঁধা অবস্থায় নারীর মরদেহ উদ্ধার

কমিউনিটি পুলিশিং সভা ও উদ্ধারকৃত মোবাইল-অর্থ হস্তান্তর: মেহেরপুর জেলা পুলিশের জনবান্ধব উদ্যোগ

ভূরুঙ্গামারীতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নবজাতক শিশুদের জন্ম নিবন্ধন নিশ্চিত করছে উপজেলা প্রশাসন

পাবনায় ট্রিপল মার্ডারের রায়ে একজনের মৃত্যুদন্ড

গলাচিপা সরকারি কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সাথে জামায়াতের এমপি পদ প্রার্থীর মত বিনিময় সভা

ত্রিশালে মসজিদে চুরি করতে গিয়ে গণপিটুনিতে নিহত
