কুষ্টিয়ায় টাকার বিনিময়ে আ.লীগ নেতাদের পদ দিচ্ছে বিএনপি নেতা

কথায় আছে "টাকায় মেলে বাঘের চোখ" উক্তিটি কাল্পনিক হলেও বাস্তবে তা সত্য হয়েছে কুষ্টিয়াতে। এমন হাজারো কাল্পনিক ও অবাস্তব বিষয় বাস্তব রূপে করে দেখিয়েছে কুষ্টিয়ার এক প্রভাবশালী বিএনপি নেতা। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র কুষ্টিয়া জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার জাকির হোসেন সরকারের বিরুদ্ধে এবার উঠে এসেছে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আওয়ামী লীগের পদধারি নেতাদেরকে বিএনপি'র ইউনিয়ন ও উপজেলা কমিটিতে পদ দেওয়ার। এমন অভিযোগ তুলে বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে জেলার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়ন বিএনপি'র সাবেক সভাপতি গোলাম সারোয়ার বিশ্বাস ও কুমারখালী উপজেলা বিএনপি'র সাবেক সভাপতি এ্যাডঃ গোলাম মোহাম্মদ সহ কুষ্টিয়া জেলার প্রত্যেকটা উপজেলা, পৌর ও ইউনিয়ন,ওয়ার্ড কমিটির নেতৃবৃন্দরা। 

বাগুলাট ইউনিয়ন বিএনপি'র সাবেক সভাপতি গোলাম সারোয়ার বিশ্বাস এবিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, কুমারখালী উপজেলার প্রতিটা ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড বিএনপি'র কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ গুলোতে আওয়ামী সন্ত্রাসী ক্যাডারদের কে বসানো হয়েছে। যার ফলে দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে এবং আওয়ামী ক্যাডারদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে দীর্ঘ ১৬ বছর স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম করা নেতাকর্মীরা। এতে দলের প্রতি দিন দিন আস্থা হারাচ্ছে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। 

কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি'র সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার জাকির হোসেন সরকারের বিরুদ্ধে আরো জানা যায়, কুমারখালী উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন ওয়ার্ড বিএনপি'র কমিটিতে রাখা হয়েছে আওয়ামী লীগের পদধারী নেতাদের এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য জগন্নাথপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শামীম হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ রব্বান সেখ, যুব বিষয়ক সম্পাদক মোঃ ফিরোজ, নির্বাহী সদস্য চাঁদ আলী, সাধারণ সদস্য বাচ্চু হোসেন। এমন'টি উপজেলার প্রত্যেকটা ইউনিয়নের প্রতিটা ওয়ার্ডে'ই একই চিত্র। এরা সবাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগে'র বর্তমান কমিটিতে সম্পাদক মন্ডলীর পদে  বিদ্যমান আছে। এতে করে নিজ দলের নেতাকর্মীদের কাছেই সমালোচনার শিকার হচ্ছে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি'র সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার জাকির হোসেন সরকার। 

কমিটি বাণিজ্য ও আওয়ামী লীগ নেতাদেরকে রাতারাতি বিএনপি নেতা বানানোর বিষয়ে কুমারখালী উপজেলা বিএনপি'র সাবেক সভাপতি এ্যাড: গোলাম মোহাম্মদ এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সার্চ কমিটির সদস্যদের'কে মূল্যায়ন না করে এবং তাদেরকে না জানিয়ে কাউন্সিল বা সম্মেলন বাদে জেলা আহ্বায়ক কমিটি বা জেলার নেতা ইঞ্জিনিয়ার জাকির হোসেন সরকার তার পছন্দের লোক এবং মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আওয়ামী লীগের লোকদের'কে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড বিএনপি'র কমিটি'তে রাখছে। এবং উপজেলা বিএনপি'র আহবায়ক আনসার পারমানীকের বাসার দারোয়ান এবং তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আওয়ামী পন্থী কর্মচারীদের কে দলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদ-পদবীতে রাখা হচ্ছে। আর এর ফলে গ্রুপিং রাজনীতি সৃষ্টি হয়েছে প্রত্যেকটা জায়গাতে। এবং আওমিপন্থী ব্যক্তি-বর্গরা বিএনপি'তে এসে রাতারাতি বড় পদ বাগিয়ে নিয়ে সালিশ বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, ভূমি দখল সহ একাধিক অপকর্মের সঙ্গে লিপ্ত হচ্ছে যার ফলে দলের জনপ্রিয়তা দিন দিন হারাচ্ছে এবং দলীয় সম্মান ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। 

কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি'র সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার জাকির হোসেন সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র দলীয় কেন্দ্রে পাঠালেও তার কোন সুরাহা না হওয়াতে হতাশ নেতাকর্মীরা। আর এ কারণেই কুষ্টিয়ার বিএনপি কর্মীরা বলছে, দলীয় ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে একের পর এক অপরাধ করেই যাচ্ছে ইঞ্জিনিয়ার জাকির হোসেন সরকার। কমিটি বাণিজ্য, পদ বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, মামলা বাণিজ্য সহ জেলার সকল অপরাধের নাটের গুরু ইঞ্জিনিয়ার জাকির হোসেন সরকার। 

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি'র সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার জাকির হোসেন সরকারের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তার পক্ষ থেকে জানানো হয় তিনি তার পরিচিত সাংবাদিক বাদে অন্য কোন সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন না।