এস আলমের সেই অননুমোদিত ভবন ভাঙবে সিডিএ

চট্টগ্রামের চেরাগী পাহাড়ে অবস্থিত এস আলমের নকশাবহির্ভূত ২৩ তলা ভবনটি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। এটি ভাঙা হতে পারে বলেও মনে করছেন সিডিএ’র একাধিক কর্মকর্তা। আবার এস আলমকে এখনো আগের মতোই পাওয়ারফুল মনে করছেন অনেকে। ফলে এটা আসলেই ভাঙা সম্ভব কিনা তা নিয়েও আছে সন্দেহ। তবে এটি বাজেয়াপ্ত করে সরকার কোন কাজে লাগাবে কিনা এমনটিও ভাবছেন সিডিএ’র কেউ কেউ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিডিএ’র একাধিক সিনিয়র অফিসার জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে এই দপ্তরে দলীয় চেয়ারম্যান থাকায় ঠিকমতো কাজ করতে পারেনি, চেয়ারম্যানের দপ্তর ছিল পার্টির লোকে লোকারণ্য। অনেকেই ভবন নির্মাণ আইন লংঘন করেছে। তখন চাইলেও চেয়ারম্যান ও দলীয় প্রভাবের কারনে কার্যকর তেমন কোন ব্যবস্থা নেয়া যায়নি। তবে সরকার পতনের পর নগরের বিভিন্ন জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। এই অভিযান থেকে বাদ যাবে না এস আলমও। চেরাগি পাহাড়ে তাদের একটি নকশাবহির্ভূত ভবন আছে, এটিও উচ্ছেদের আওতায় আছে।
জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে চট্টগ্রাম উন্নয় কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) ইমারত নির্মাণ বিধিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে, নকশা অনুমোদন ছাড়াই নগরীর চেরাগী পাহাড় মোড়ে বহুতল বাণিজ্যিক (২৩ তলা) ভবন নির্মাণ করছে জেনেসিস টেক্সটাইল এন্ড এ্যাপারেল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহসানুল আলম। সে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদের পুত্র। অবৈধভাবে ভবন নির্মানের ফলে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) প্রতিনিধি দল সাইট পরিদর্শনে গিয়ে বাধার মুখে পড়েছিল সেসময়। আবার মোটা অংকের ঘুষের মাধ্যমে ভবনটির নকশা অনুমোদনের চেষ্টাও করেন। তবে কয়েকজন সৎ অফিসারের কারনে তা হয়ে ওঠেনি।
এব্যপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) সচিব রবীন্দ্র চাকমা বলেন, শুধু এস আলম নয়, চট্টগ্রামে নকশাবহির্ভূত অনেক ভবন আছে। সিডিএ’র অনেক জায়গায় অবৈধ দখলদার আছে, আমরা এসব স্থাপনায় উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছি। পর্যায়ক্রমে সব অবৈধ স্থাপনা ভাঙা হবে। তবে যেসব বড় প্রকল্প আছে সেগুলোর ব্যপারে আমরা মন্ত্রণালয়ের সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিব। এস আলমের ভবনের বিষয়ে তিনি বলেন, এই ভবনে অনেক টাকা বিনিয়োগ আছে, এই টাকা দেশের সম্পদ। উচ্ছেদ করা হলে এই সম্পদ নষ্ট হয়ে যাবে। এটির বিষয়ে সরকার সিদ্ধান্ত নিবে। উচ্ছেদ না করে সরকার এটিকে কোনভাবে ব্যবহার করতে পারলে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি রক্ষা হবে। নকশা বহির্ভূত একটা ভবন যদি সরকার ব্যবহার করে আর সেখানো কোন দুর্ঘটনা ঘটলে এটার দায় কে নিবে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা নিয়ে সরকার যে সিদ্ধন্ত দিবে আমরা তাই করব। এব্যপারে আমরা এখনো সিদ্ধান্ত নেইনি।
তবে সচেতন মহল মনে করেন, আইন সবার জন্য সমান হওয়া উচিৎ। ছোট প্রতিষ্ঠানের জন্য একরকম আর বড় প্রতিষ্ঠানের জন্য আরেকরকম আইন হওয়া কাম্য নয়। এসব আলাদা দৃষ্টির কারনেই দেশে নানা অনিয়ম দুর্নীতিতে ভরপুর। আর দুর্নীতিকে প্রশ্যয় দেয়ার ফলে জন্ম নেয় অপশাসন, সৈরাচার ও ফ্যাসিবাদ। তাই ছোটদেও ক্ষেত্রে যে ব্যবস্থা বড়দের ক্ষেত্রে আরো কঠিন ব্যবস্থা নেয় উচিৎ। আর যদি না নেয়া হয় তাহলে জনগণের কাছে আস্থা হারাবে সেবাসংস্থা। জনগণ এটাও মনে করতে পাওে বড় প্রতিষ্ঠান থেকে মোটা অংকের ঘুষ নিতে পাওে বলে তাদেও অপকর্মেও বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়না। আর ছোটরা ঘুষ দিতে পারেনা বলে বলেন আইন তাদের উপর অবিচার চালায়। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ না পেলে আইনকেই ছোট করা হবে।
সিডিএ সূত্র জানায়, সরকার সৃজিত ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮ অনুযায়ী ভবন নির্মাণ করতে হলে কাজ শুরু করার আগেই, ভূমি ব্যবহারের ছাড়পত্রের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে ভবনের নকশারও অনুমোদন নিতে হবে। কিন্তু আহসানুল আলমের এই ভবনে এসব আইন না মেনে নকশার অনুমোদন ছাড়াই ২৩ তলা বেইজমেন্টসহ) ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ করেছে। এখন চলছে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ। ফলে না ভেঙে এটির নকশা অনুমোদনের কোন সুযোগ নেই।
ভবন নির্মাণ কাজ শুরুর কয়েকবছর পরে নকশা অনুমোদনের জন্য ২০২৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারী সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেন এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদের পুত্র জনেসিস টেক্সটাইল এন্ড এ্যাপারেলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহসানুল আলম। (বিসি কেইচ নং-১০২/২০২৩)। ইমরত নির্মাণ কমিটির সংশ্লিষ্ট পরিদর্শক বিমান বড়ুয়া অননুমোদিতভাবে ভবন নির্মাণ করার কারণ দেখিয়ে রিপোর্ট দাখিল করেন। রিপোট দাখিলের পর অধিকতর তদন্তের জন্য উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও ইমারত পরিদর্শক এ. এস. এম. মিজান এবং তোফায়েল হোসেনকে দায়িত্ব দেয়া হয়। তারা নির্মিত ভবনের ব্যত্যয় ঘটানো অংশের পরিমাপ করতে গেলে এস আলম গ্রুপের লোকজন তাদের বাঁধা দেয়। ফলে ইমারত পরিদর্শকগণ বিশেষ প্রকল্প ছাড়পত্রের বিশেষত-২ এর ক,ঙ, ৪ ও ৫ নং শর্ত প্রতিপালন না হওয়ায় নথিতে আপত্তি দেয়।
ভবন মালিকের বিরুদ্ধে অনুমোদিত নকশা প্রদর্শনের জন্য নোটিশ জারি করলে সিডিএকে পাত্তা না দেয়ায় বিসিএন মামলা দায়ের করে সিডিএ। পরে ভুমি ব্যবহার ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করলে তা প্রত্যাখাত হয়। পুনরায় এলইউসি আবেদন করলে রহস্যজনক কারণে ওপেন টু স্কাই ও ট্রাফিক ম্যানেজম্যান্ট শর্ত ব্যতিরেকে ভুমিব্যবহার ছাড়পত্র অনুমোদন দেয় কমিটি।
এরপর নির্মিত ভবনের ব্যত্যয় ঘটানো সম্পূর্ণ অংশ অপসারণ ও জমাদানকৃত ফি এর ১০ গুন ফি জমাপূবক শর্ত প্রতিপালন সাপেক্ষে কৌশলে অনুমোদন দেয়। একইভাবে রহস্যজনক কারনে স্থপতি গোলাম রাব্বানির সহায়তায় যাচাই বাচাই ছাড়াই বিশেষ প্রকল্প হিসেবে অনুমোদিত হয়েছে। তবে কাগজপত্রে ত্রুটি থাকার কারনে এখনো নকশা অনুমোদ হয়নি। আর এটা না ভাঙলে নতুন করে অনুমোদন দেয়ারও কোন সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এমএসএম / এমএসএম

বাগেরহাট জেলায় সর্বদলীয় অবরোধ কর্মসূচি

রাণীশংকৈলে বালু উত্তোলনের সময় গর্তে পড়ে শিশুর মৃত্যু

লোহাগড়ায় নিখোঁজের চার দিন পর কিশোরের লাশ উদ্ধার

পাঁচবিবিতে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের সমাপনী

রোহিঙ্গা ইস্যুতে কক্সবাজারে ৩ দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু

মির্জাগঞ্জে গাঁজাসহ মাদক কারবারি আটক

বিভিন্ন ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে সাবেক কাস্টমস কর্মকর্তা মুন্সি আকতার হোসেনের সংবাদ সম্মেলন

পাকশীতে রেলওয়ে প্রকৌশলী বিভাগের কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের বারো দফা দাবি না মানলে বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা

অনির্বাণের আয়োজনে লেখক ও কবিদের চলনবিল ভ্রমণ ও সাহিত্য আড্ডা

জয়পুরহাটে বিজ্ঞান অলিম্পিয়াডের পুরস্কার বিতরণী

ভূঞাপুরে আসামি ধরতে গিয়ে পুলিশের ৪ সদস্য আহত

পাঁচবিবিতে উপজেলা স্কাউটের উদ্যোগে বৃক্ষ রোপন কর্মসূচীর উদ্বোধন
