ঢাকা রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নে বাড়ছে অপরাধ


এসএম পিন্টু photo এসএম পিন্টু
প্রকাশিত: ১২-৯-২০২৫ বিকাল ৫:৫০

মানবসভ্যতার ইতিহাসে রাজনীতি এক অনিবার্য সামাজিক প্রতিষ্ঠান। প্রাচীন গ্রিসের নগররাষ্ট্র থেকে শুরু করে আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, সব জায়গাতেই রাজনীতি মানুষের অধিকার রক্ষা, আইন প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নের মূল চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করেছে। রাজনীতি হলো এমন এক সামাজিক প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে ক্ষমতার বণ্টন হয়, নেতৃত্ব নির্বাচিত হয় এবং ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কথা।
কিন্তু বাস্তবতা প্রায়শই ভিন্ন। যখন রাজনীতি তার মূল লক্ষ্য, জনকল্যাণ ও ন্যায়বিচার থেকে সরে গিয়ে ক্ষমতার লোভ, আধিপত্য বিস্তার এবং ব্যক্তিস্বার্থের কবলে পড়ে, তখন সেটিই দুর্বৃত্তায়নের জন্ম দেয়। এই দুর্বৃত্তায়ন ধীরে ধীরে সমাজের প্রতিটি স্তরে ছড়িয়ে পড়ে এবং রাজনৈতিক আশ্রয়ে অপরাধ বৃদ্ধি পায়। সভ্যতার ক্রমবিকাশের সঙ্গে সঙ্গে অপরাধও এক অবিচ্ছেদ্য বাস্তবতা হিসেবে বিদ্যমান। প্রাচীন যুগে মানুষ টিকে থাকার সংগ্রামে শক্তিকে ব্যবহার করত শিকার কিংবা আত্মরক্ষায়, কিন্তু সভ্যতার বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে শক্তি, প্রতিপত্তি ও ক্ষমতাকে ব্যবহার করা হতে থাকে সমাজ নিয়ন্ত্রণে, শোষণে এবং অন্যায় সুবিধা আদায়ে। অপরাধকে সাধারণত ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর নৈতিক অবক্ষয়ের ফল হিসেবে দেখা হয়। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধির একটি বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন। যখন রাজনীতি জনসেবার বদলে ব্যক্তিস্বার্থ, ক্ষমতালিপ্সা, দমননীতি ও দুর্নীতির আশ্রয় নেয়, তখন অপরাধ চর্চার জন্য উর্বর ক্ষেত্র তৈরি হয়।

বাংলাদেশসহ বিশ্বের বহু দেশে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন এক ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধিতে রূপ নিয়েছে। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দখলবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা, খুন-গুম, এসব অপরাধের সাথে রাজনৈতিক ছত্রছায়া অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে আছে। ফলে সাধারণ মানুষ ভয়ের মধ্যে দিন কাটায়, সমাজে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ে এবং রাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে যায়।
বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশে অপরাধ প্রবণতা ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন একে অপরের পরিপূরক হয়ে উঠেছে। রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত দুর্বৃত্তরা যেমন অপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়, তেমনি অপরাধীরা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে আইনের হাত এড়িয়ে যায়। ফলে সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিনযাপন করে এবং সমাজে এক প্রকার ভয়ের সংস্কৃতি গড়ে ওঠে।
এই লেখার উদ্দেশ্য হলো বিষয়টির গভীর বিশ্লেষণ করা এবং পাঠকের সামনে পূর্ণাঙ্গ চিত্র তুলে ধরা, যাতে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের ভয়াবহতা অনুধাবন করা যায় এবং এর প্রতিরোধে সচেতনতা তৈরি হয়। তাই রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন নিয়ে আমি এই প্রবন্ধে কিছু বিষয় বিশদভাবে আলোচনা করছি। যেমন: রাজনীতির সংজ্ঞা ও উদ্দেশ্য, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের ধারণা, অপরাধ প্রবণতার ধরণ ও তার বিস্তার, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন কীভাবে অপরাধকে ত্বরান্বিত করে, বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট, সমাজ, অর্থনীতি ও সংস্কৃতিতে এর প্রভাব ও প্রতিরোধ এবং সম্ভাব্য সমাধান। 
১. রাজনীতির সংজ্ঞা ও উদ্দেশ্য:
রাজনীতি শব্দটির উৎপত্তি গ্রিক শব্দ ”পলিস” থেকে, যার অর্থ নগররাষ্ট্র। রাজনীতি মূলত সেই প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে মানুষ একটি সমাজ বা রাষ্ট্র পরিচালনা করে। ব্রিটিশ দার্শনিক হ্যারল্ড লাসকি রাজনীতিকে সংজ্ঞায়িত করেছিলেন“রাজনীতি হলো মানুষের মধ্যে ক্ষমতার সম্পর্কের বিজ্ঞান।” রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য ছিল, জনকল্যাণ নিশ্চিত করা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা. সমাজে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখা, সমতা ও স্বাধীনতা রক্ষা করা, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা
রাজনীতির ইতিবাচক ভূমিকা: গণতন্ত্রের বিকাশ, সামাজিক কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠন, শিক্ষার প্রসার, স্বাস্থ্যসেবা ও অবকাঠামো উন্নয়ন, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা কিন্তু যখন রাজনীতি ক্ষমতা ধরে রাখার হাতিয়ারে পরিণত হয়, তখনই শুরু হয় দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়ন। এই বিচ্যুতিই অপরাধ বৃদ্ধির প্রধান চালিকাশক্তি হয়ে ওঠে।
২. রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের ধারণা: 
“দুর্বৃত্তায়ন” শব্দটি এসেছে “দুর্বৃত্ত” থেকে, যার অর্থ দুষ্কৃতিকারী বা অপরাধপ্রবণ মানুষ। রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন বলতে বোঝানো হয়, যখন রাজনীতি অপরাধী চক্র, গডফাদার, মাফিয়া বা সন্ত্রাসীদের দ্বারা প্রভাবিত হয় কিংবা যখন রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে অপরাধীদের ব্যবহার করে। এর ফলে রাজনীতি তার মৌলিক উদ্দেশ্য থেকে বিচ্যুত হয়। জনসেবা, ন্যায়নীতি ও গণতন্ত্রের বদলে ক্ষমতা, অর্থ ও আধিপত্য কায়েম করাই মূল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায়। অর্থাৎ, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন হলো সেই অবস্থা, যেখানে রাজনীতি অপরাধীদের আশ্রয়স্থলে পরিণত হয় এবং অপরাধ চক্র রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় বিকশিত হয়। এর ফলে রাজনীতি তার মূল লক্ষ্য, জনকল্যাণ থেকে সরে গিয়ে অপরাধী গোষ্ঠীর স্বার্থরক্ষার হাতিয়ার হয়ে ওঠে।
রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের লক্ষণগুলো হলো: রাজনৈতিক দলগুলোতে অপরাধীদের প্রভাব বৃদ্ধি, নির্বাচনে টাকার খেলা, চাঁদাবাজি ও পেশিশক্তির ব্যবহার, প্রতিদ্বন্দ্বী দমন করার জন্য সন্ত্রাসী বাহিনী ব্যবহার, আইনের শাসনকে অবজ্ঞা করা ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি, জনগণের স্বার্থকে উপেক্ষা করে দলীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়া।
এই প্রক্রিয়ায় রাজনীতিতে নীতি ও আদর্শের জায়গা দখল করে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী। ফলে রাজনীতির ভেতরে দুর্বৃত্তায়ন এক অনিবার্য বাস্তবতায় পরিণত হয়।

৩. অপরাধ প্রবণতার ধরণ ও বিস্তার:
অপরাধ প্রবণতা বলতে বোঝায় ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর মধ্যে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের প্রতি আকর্ষণ, অংশগ্রহণ বা আগ্রহের বৃদ্ধি। এটি বিভিন্ন ধরণে প্রকাশ পায়, যেমন:
৩.১. সামাজিক অপরাধ: খুন, ছিনতাই, ডাকাতি, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, অপহরণ। 
৩.২. অর্থনৈতিক অপরাধ: দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ, ট্যাক্স ফাঁকি, ব্যাংক লুট।
৩.৩. রাজনৈতিক অপরাধ: প্রতিপক্ষের ওপর হামলা, নির্বাচনে সহিংসতা, ভিন্নমত দমন। 
৩.৪. সাইবার অপরাধ: হ্যাকিং, ভুয়া তথ্য প্রচার, অনলাইন প্রতারণা।
৩.৫. সাংগঠনিক অপরাধ: মাফিয়া নেটওয়ার্ক, মাদক ব্যবসা, অস্ত্র কারবার।
আজকের বিশ্বায়নের যুগে অপরাধ সীমান্ত পেরিয়ে আন্তর্জাতিক আকার ধারণ করছে। বিশেষ করে মাদক ও অস্ত্র ব্যবসা, মানি লন্ডারিং ইত্যাদি রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় বিকাশ লাভ করছে।
৪. রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন যেভাবে অপরাধকে ত্বরান্বিত করে:
অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধির সঙ্গে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ। এর কারণগুলো নিম্নরূপ:
৪.১. অপরাধীদের রাজনৈতিক আশ্রয়:
রাজনৈতিক নেতারা ভোট, প্রভাব কিংবা অর্থনৈতিক সুবিধার জন্য অপরাধীদের ব্যবহার করেন। বিনিময়ে অপরাধীরা আইনি সুরক্ষা পায়। এতে তাদের অপরাধ প্রবণতা আরও বাড়ে।
৪.২. বিচারহীনতার সংস্কৃতি:
যখন অপরাধীরা রাজনৈতিক পরিচয়ে আইন এড়িয়ে যায়, তখন সাধারণ মানুষ মনে করে অপরাধ করে পার পাওয়া সম্ভব। ফলে সমাজে অপরাধ প্রবণতা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

৪.৩. নির্বাচনে পেশিশক্তির ব্যবহার:
বাংলাদেশসহ অনেক দেশে নির্বাচনে ভোট ডাকাতি, কেন্দ্র দখল, ভীতি প্রদর্শন ইত্যাদি অপরাধ রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের অংশ। এতে অপরাধকে বৈধতা দেওয়া হয়।
৪.৪. অর্থনৈতিক স্বার্থ: 
রাজনীতিবিদরা ক্ষমতায় টিকে থাকতে অবৈধ অর্থের উৎস তৈরি করেন। মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, ভূমিদখল, ঠিকাদারি, এসবই রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে বিকশিত অপরাধ নেটওয়ার্ক।
৫.৫. তরুণ সমাজকে বিপথে নেওয়া:
রাজনৈতিক দলগুলো প্রায়ই তরুণদের নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে। ছাত্ররাজনীতি ও স্থানীয় স্তরে অস্ত্রবাজি, টেন্ডারবাজি ইত্যাদিতে যুক্ত হয়ে অনেক তরুণ চরম অপরাধ প্রবণ হয়ে ওঠে।
৫. বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট:
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়নের প্রভাব ক্রমেই বেড়েছে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, নির্বাচনী সহিংসতায় প্রতিবছর শতশত মানুষ নিহত হয়। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ভূমিদখল ইত্যাদির সঙ্গে রাজনৈতিক পরিচয়ের ব্যক্তিরা সরাসরি জড়িত। রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অনেক সময় নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারে না। বিচারহীনতা একটি সাধারণ সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে, যা অপরাধ প্রবণতা বাড়িয়ে তুলছে।
৬. আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট:
রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন শুধু বাংলাদেশের সমস্যা নয়। লাতিন আমেরিকার অনেক দেশে মাফিয়া চক্র সরাসরি রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করে। আফ্রিকার কিছু দেশে বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও রাজনৈতিক দল মিলে সন্ত্রাস ও অপরাধকে বৈধতা দিয়েছে। এমনকি উন্নত দেশেও “লবিং”, কর্পোরেট অপরাধ ও রাজনৈতিক দুর্নীতির মাধ্যমে অপরাধ রাজনীতির সঙ্গে মিশে যায়।
৭. সমাজ, অর্থনীতি ও সংস্কৃতিতে প্রভাব:
রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন সমাজে গভীর প্রভাব ফেলে। যেমন: আইনের শাসন দুর্বল হয় ফলে মানুষ ন্যায়বিচারের ওপর আস্থা হারায়। অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফলে চাঁদাবাজি, দুর্নীতি ও অবৈধ অর্থনীতি রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন ব্যাহত করে। তরুণদের নৈতিক অবক্ষয় ঘটে ফলে তারা রাজনীতিতে অংশ নিতে গিয়ে অপরাধের পথে পা বাড়ায়। ভয়ের সংস্কৃতি সৃষ্টি হয় ফলে সাধারণ মানুষ মুক্তভাবে মত প্রকাশ করতে ভয় পায়। গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফলে নির্বাচন, মতপ্রকাশ ও বিরোধী মত দমনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ধ্বংস হয়।
৮. প্রতিরোধ ও সম্ভাব্য সমাধান:
রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন ও অপরাধ প্রবণতা রোধ করতে প্রয়োজন বহুমুখী উদ্যোগ এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
৮.১. আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা: অপরাধী যেই হোক তার পরিচয় একটাই সে অপরাধী, সুতরাং বিচারের ক্ষেত্রে কোনভাবেই ছাড় দেয়া যাবে না। নিজের সন্তান বা অপরিচিত কেউ, সবাইকে সমান চোখে দেখতে হবে। অপরাধ করলে পরিচয় বিবেচনা না করে অপরাধের ধরণ অনুযায়ী  আইনের আওতায় আনতে হবে।
৮.২. নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার: জাতীয়, স্থানীয় এমনকি সংগঠন বা ক্লাবের নির্বাচনে অর্থ ও পেশিশক্তির প্রভাবমুক্ত করে স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে।
৮.৩. দলীয় শৃঙ্খলা জোরদার: রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন রোধে দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখা খুবই জরুরী। রাজনৈতিক দলগুলোতে নেতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে সাংগঠনিক কার্যক্রমের পাশাপাশি নৈতিক চরিত্রকে প্রাধান্য দিতে হবে। সকল ক্ষেত্রে  অপরাধীদের আশ্রয় দেওয়া বন্ধ করতে হবে। কোন অবস্থাতেই বিবেক বিক্রি করা যাবে না। মনে রাখতে হবে, বিবেকের প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর যে নিজেকে সঠিকভাবে দিতে পারে সেই প্রকৃত নেতা।
৮.৪. শিক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধি: শিক্ষা ও সচেতনতা প্রতিটি ব্যক্তির জন্যই জরুরী। উন্নত ও সভ্য জাতি গঠনে এর কোন বিকল্প নাই। তাই তরুণদের অপরাধের পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে ইতিবাচক রাজনীতি, কর্মসংস্থান ও সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করতে হবে। 
৮.৫. গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের ভূমিকা: একটি রাষ্ট্রের অনিয়ম অসঙ্গতি দূর করতে গণমাধ্যমের ভূমিকা অনেক বেশি। যেকোন অনিয়ম  দুর্নীতির খবর নির্ভয়ে প্রকাশ করতে হবে। অপরাধ প্রকাশ্যে আনতে প্রত্যেক প্রকাশক ও সম্পাদকরা যেন সাংবাদিকদের সেই স্বাধীনতা দিতে পারেন তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। আর গণমাধ্যমের সংবাদ অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ যাতে ব্যবস্থা নিতে পারে সেই সক্ষমতা থাকতে হবে। প্রয়োজনে সাংবাদিকতা ও নাগরিক সামাজের প্রতিনিধিরা সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলবেন।
৮.৬. আন্তর্জাতিক সহযোগিতা: সীমান্ত পেরিয়ে অপরাধ দমন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বৈশ্বিক সহযোগিতা দরকার।
উপসংহার:
রাজনীতি মূলত জনসেবার জন্য, কিন্তু রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন সেটিকে অপরাধ প্রবণতার আশ্রয়স্থলে পরিণত করেছে। ফলে সমাজে অপরাধ বেড়ে যাচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা দুর্বল হচ্ছে, এবং সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন রোধ করা না গেলে অপরাধ প্রবণতা কখনোই কমানো সম্ভব হবে না। তাই প্রয়োজন রাজনৈতিক সংস্কার, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং সবার সচেতনতা।
সচেতন নাগরিক সমাজ ও জবাবদিহিমূলক শাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারলেই আমরা রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন কমাতে পারব, আর অপরাধ প্রবণতা হ্রাস পাবে।
লেখক: সাংবাদিক ও সভাপতি, রেলওয়ে জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন।

এমএসএম / এমএসএম

স্কুল-জীবনের স্মার্টফোন: শিক্ষার পথ সহজ, নাকি বাঁধার দেয়াল?

ডিজিটাল ইকোনমিতে তরুণদের অংশগ্রহণে বাড়ছে প্রবৃদ্ধির গতি

রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নে বাড়ছে অপরাধ

শিক্ষা ব্যবস্থায় ফিরে আসুক পুরনো দিনের ঐতিহ্য

মধ্যপ্রাচ্যের ভিসা সংকট থেকে প্রযুক্তি বাজার: বাংলাদেশের করণীয় কি?

পিআর পদ্ধতি নিয়ে হঠাৎ এতো আলোচনা

আ-তে আলো, আ-তে আধাঁর

মোদির চীন সফর ও বৈশ্বিক রাজনৈতিক প্রভাব

রিসাইক্লিং থেকে রেভিনিউঃ চক্রাকার অর্থনীতির বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি

বিপদের বন্ধু লোকনাথ বাবা ও তাঁর অলৌকিক কাহিনী

অতিরিক্ত স্বাধীনতা জীবনে আধাঁর ডেকে আনে

বিএনপির ৪৭ বছরের পথচলা ও জিয়াউর রহমান

লঙ্ঘিত মানবতার বিশ্বে আশার বাণী