ঢাকা শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

উপাচার্য ড. শওকাত আলীর এক বছর: শিক্ষা, প্রশাসন ও সৃজনশীল নেতৃত্বের মূল্যায়ন


মো: ইউসুফ photo মো: ইউসুফ
প্রকাশিত: ১৭-৯-২০২৫ বিকাল ৬:২

একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্ব শুধু প্রশাসনিক দক্ষতার ওপর নির্ভর করে না; এটি নির্ভর করে একজন উপাচার্যের দূরদর্শিতা, নৈতিকতা, মানবিকতা এবং একাডেমিক প্রজ্ঞার ওপর। একজন সফল উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়কে কেবল শিক্ষাদানের কেন্দ্র হিসেবেই গড়ে তোলেন না, বরং সেটিকে একটি গবেষণাভিত্তিক, সৃজনশীলতা ও মুক্তবুদ্ধিচর্চার প্ল্যাটফর্মে রূপান্তর করেন। বাংলাদেশে এমন অনেক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেগুলোর সার্বিক অগ্রগতি প্রভাবিত হয়েছে সঠিক নেতৃত্বের অভাবে। তবে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর এক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী একটি দৃষ্টান্ত গড়তে চলেছে, এটি সম্ভব হয়েছে বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলীর দায়িত্বশীল, দক্ষ এবং দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে। ড. শওকাত আলী ২০২৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের একজন সম্মানিত অধ্যাপক, জ্ঞানসাধক, গবেষক এবং সংস্কৃতিবান ব্যক্তি। দায়িত্ব নেয়ার সময় বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ছিল প্রশাসনিকভাবে বিপর্যস্ত, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পরপরই নতুন সরকারের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়—বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা। দায়িত্ব নিয়েই তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নানামুখী সমস্যাকে চিহ্নিত করে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনায় অগ্রসর হন। বিশেষ করে জুলাই বিপ্লবের প্রথম শহীদ আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের বিচার ও একটি ফ্যাসিবাদমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ে তোলার উদ্যোগ ছিল তাঁর নেতৃত্বের সাহসী পদক্ষেপ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়মিত মতবিনিময়ের মাধ্যমে অংশীদারিত্বমূলক প্রশাসনের ভিত্তি গড়ে তুলেছেন। তিনি অনুধাবন করতে পেরেছেন যে, একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয় শিক্ষার্থীদের জন্য। শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য শিক্ষক এবং তাদের সহায়তার জন্য কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ করা হয়ে থাকে। গত ১৫ বছর ধরে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি এ মৌলিক উদ্দেশ্যকে প্রায় ভুলেই গিয়েছিল। সৎ, যোগ্য ও একাডেমিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে উপাচার্য প্রফেসর ড. শওকাত আলী দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়টিকে অতীতের সকল অপবাদ থেকে মুক্ত করে একটি আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করার লক্ষ্যে। এই লেখার মাধ্যমে তাঁর এক বছরের কর্মকালীন সময়ের কর্মকাণ্ড ও অবদান মূল্যায়নের একটি ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা করা হয়েছে।

নতুন বাংলাদেশে বেরোবির নতুন যাত্রা: 
২০২৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই তিনি শুরু করেন এক নতুন দিগন্তের পথচলা। জুলাই বিপ্লব-এর সকল অংশীদারদের নিয়ে শুরু করেন খোলামেলা আলোচনা। ছাত্রদের কাছ থেকে শোনেন কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নেওয়া যায়, আর এখান থেকেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে এক নবজাগরণের সঞ্চার। ছাত্র-শিক্ষক সকলের পরামর্শে তিনি গঠন করেন একটি দক্ষ ও যোগ্য প্রশাসন। তাঁর প্রশাসনিক পরিকল্পনা এবং কার্যকর উদ্যোগে প্রতিফলিত হয় তাঁর দৃঢ়দৃষ্টি ও সংস্কারমনা ব্যক্তিত্ব। ছাত্রদের আকাঙ্ক্ষা উপলব্ধি করে তিনি ক্যাম্পাসে লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির অবসান ঘটিয়ে ছাত্র সংসদ চালুর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। শহীদ আবু সাঈদের হত্যাকাণ্ডে জড়িত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন তিনি। বেরোবির ২০০৯ এর আইনে ছাত্র সংসদের বিধান না থাকায় কালক্ষেপণ না করে তিনি একটি বিশেষ কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করেন এবং তা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে প্রেরণ করেন। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য পুনর্বাসনের লক্ষ্যে গ্রহণ করেন প্রয়োজনীয় উদ্যোগ। ক্লাসরুম সংকট নিরসনে শুরু করেন একাডেমিক ভবনসমূহের সম্প্রসারণ কার্যক্রম। শিক্ষার্থীদের যাতায়াত সমস্যা লাঘবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন পুলে যুক্ত করেন ৭টি নতুন বাস, এটি প্রফেসর শওকাত আলীর সময়োপযোগী ও ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে প্রশংসিত হয়েছে। প্রথমবারের মতো বেরোবিতে চালু হয় ডিন অ্যাওয়ার্ড ও মেরিট অ্যাওয়ার্ড, যা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় প্রতিযোগিতার মনোভাব ও আগ্রহকে বহুগুণে বাড়িয়ে তুলবে নিঃসন্দেহে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাঠামোর উন্নয়নে তিনি গ্রহণ করেছেন একটি সমন্বিত মাস্টার প্ল্যান। জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের স্মৃতিকে ধরে রাখতে এবং প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেন তাঁকে স্মরণ রাখতে পারে, সে উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহন করা হয় শহীদ আবু সাঈদ গেট এবং শহীদ আবু সাঈদ জাদুঘর, যা সর্বমহলে ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছে।

শিক্ষার্থীবান্ধব উপাচার্য:
ড. শওকাত আলী দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই শিক্ষাক্ষেত্রে গুণগত পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। একাডেমিক ক্যালেন্ডার নিয়মিত করা, সেশনজট নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ এবং পাঠদান প্রক্রিয়ায় প্রযুক্তির সমন্বয় এই প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা প্রশংসনীয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি বিভাগে দীর্ঘদিন ধরে বিরাজমান শিক্ষক সংকট মোকাবিলায় নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পূর্ণকালীন শিক্ষকের সংখ্যা বৃদ্ধির চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রম হালনাগাদে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। চাকরির বাজারের চাহিদার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের খাপ খাওয়াতে কারিকুলামে প্রযুক্তি ও উদ্যোক্তা-ভিত্তিক বিষয় অন্তর্ভুক্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গবেষণায় শিক্ষকদের অংশগ্রহণ বাড়াতে তিনি পিয়ার-রিভিউ জার্নালে প্রকাশনার সুযোগ ও অভ্যন্তরীণ গবেষণা অনুদান প্রাপ্তির প্রক্রিয়াকে সহজ ও স্বচ্ছ করেছেন। শিক্ষার্থীদের বিদেশি বৃত্তি ও এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করতে বিভিন্ন বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষর করছেন। কম্পিউটার ও ইংরেজি ভাষায় শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে চালু করা হয়েছে কম্পিউটার লিটারেসি এবং ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্স। বিদেশে উচ্চশিক্ষার প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বৃদ্ধির জন্য আয়োজিত হচ্ছে সেমিনার ও কর্মশালা। উল্লেখযোগ্য কর্মশালা ও সেমিনারগুলোর মধ্যে রয়েছে: ডিজিটাল স্কিলস ফর স্টুডেন্টস বিষয়ক অ্যাক্টিভেশন প্রোগ্রাম, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ ও সম্ভাবনা শীর্ষক কর্মশালা, জাতীয় গণিত অলিম্পিয়াড, যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা ও বৃত্তি বিষয়ক কর্মশালা,  ATF-SAP প্রজেক্ট প্রপোজাল রাইটিং শীর্ষক কর্মশালা, ইউনিভার্সিটি ইনোভেশন হাব প্রোগ্রাম বিষয়ক অ্যাক্টিভেশন সেমিনার, জার্মানিতে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সুবিধা বিষয়ক সেমিনার, জাপান ফাউন্ডেশন ইন্দো-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ প্রোগ্রাম ফেলোশিপ বিষয়ক সেমিনার, আউটকাম বেইজড এডুকেশন বিষয়ক কর্মশালা। এই সকল উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে।

সংস্কারমনা উপাচার্য:
উপাচার্য ড. শওকাত আলীর প্রশাসনিক দৃষ্টিভঙ্গি যে কেবল তাত্ত্বিক নয়, বরং বাস্তবায়নযোগ্য এবং কার্যকর, তা তাঁর গত এক বছরের কাজেই প্রতিফলিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার চর্চা বৃদ্ধির জন্য তিনি ডিজিটাল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম চালু করেছেন। কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য অনলাইন অ্যাটেনডেন্স সিস্টেম,  দ্রুত তথ্য প্রদানের জন্য ডিজিটাল ফাইল ট্র্যাকিং চালু করা হয়েছে। এছাড়া, দীর্ঘদিন ধরে যে আর্থিক অনিয়ম ও স্বচ্ছতার অভাব নিয়ে আলোচনা ছিল, তা প্রতিরোধে নতুন অডিট ব্যবস্থার প্রবর্তন এবং অর্থনৈতিক লেনদেনের অনলাইন ট্র্যাকিং ব্যবস্থা চালু করেছেন। বাজেট বরাদ্দ, খরচ ও প্রকল্প বাস্তবায়নে নিয়মিত অডিট এবং অনলাইন রিপোর্টিং সিস্টেম চালু করেছেন। দীর্ঘদিনের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়কে মুক্ত রাখার লক্ষ্যে একটি নিরপেক্ষ ও দক্ষ অর্থনৈতিক টিম গঠন করা হয়েছে। এ পদক্ষেপগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে বিশ্বাসযোগ্যতা ও শিক্ষার্থীদের আস্থা ফিরিয়ে এনেছে। নিয়োগ প্রক্রিয়াতেও স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনা হয়েছে। নিয়োগ বোর্ডে পেশাদারিত্ব ও মেধার মূল্যায়নকে অগ্রাধিকার দিয়ে, স্বজনপ্রীতি ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ রোধের প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। এর ফলে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের মধ্যে কাজের প্রতি আগ্রহ এবং আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

সৃজনশীল উপাচার্য ও সংস্কৃতি চর্চা:
একজন শিক্ষাবিদের দায়িত্ব শুধু শ্রেণিকক্ষে সীমাবদ্ধ নয়; বরং তিনি সমাজকে আলোকিত করার বাতিঘর। ড. শওকাত আলী সে দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছেন বলেই মনে হয়। তাঁর সময়কালে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সাহিত্য, সংস্কৃতি ও মুক্তচিন্তার চর্চা বেড়েছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিতভাবে সাহিত্য উৎসব, সেমিনার, আন্তর্জাতিক কনফারেন্স এবং মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন, যেখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মুক্তভাবে মত প্রকাশের সুযোগ পেয়েছেন। শহীদ আবু সাঈদ আন্ত:বিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্ট, শহীদ আবু সাঈদ বইমেলা, চৈত্র সংক্রান্ত উপলক্ষে ঘুরি উৎসব অনুষ্ঠান,  বৈশাখী উৎসব, বির্তক প্রতিযোগীতা এসকল কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে সৃজনশীল ও সংস্কৃতি চর্চাকে বিকশিত করছে। বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার আধুনিকায়ন, ক্যাম্পাসে উন্মুক্ত পাঠাগার ও কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে স্টাডি জোন স্থাপন এবং সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশ তাঁর নেতৃত্বের সৃজনশীল দিককে তুলে ধরে। তিনি ছাত্রদের সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করতে বিতর্ক, নাট্যচর্চা, এবং শরীরচর্চা ক্লাবগুলোর উন্নয়নেও জোর দিয়েছেন। এসব উদ্যোগ ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের মাঝে নেতৃত্বগুণ, দলগত কাজের অভ্যাস এবং আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।

শিক্ষার্থী-বন্ধুসুলভ উপাচার্য:
একজন উপাচার্যের সাফল্য নির্ভর করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কেমন তা দিয়েও। ড. শওকাত আলী শিক্ষার্থীদের নিকট অভিভাবকসুলভ মনোভাব প্রদর্শন করে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। তিনি নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন, তাদের সমস্যার কথা শোনেন এবং তা সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে হলে খাবারের মান নিয়ন্ত্রণ, আবাসন সংকট নিরসন, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ এবং মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তার জন্য কাউন্সেলিং সেল গঠন—এসবই শিক্ষার্থীদের প্রতি তাঁর দায়িত্বশীল আচরণের উদাহরণ। বিশেষ করে, নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হল এলাকায় সিসি ক্যামেরা বসানো, পৃথকভাবে কমনরুম  নির্মাণ ইত্যাদি পদক্ষেপ প্রশংসার দাবিদার। 

যদিও ড. শওকাত আলীর নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে, তবে কিছু চ্যালেঞ্জ এখনও রয়ে গেছে। যেমন, স্থায়ীভাবে শিক্ষক ও কর্মকর্তা নিয়োগের প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা, গবেষণায় আন্তর্জাতিক মান অর্জনে এখনও পরিমাণগত অগ্রগতি না হওয়া, এবং শিল্প-একাডেমিয়া সংযোগের ঘাটতি এসব বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। তাছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়কে “স্মার্ট ক্যাম্পাস” হিসেবে গড়ে তুলতে হলে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থাপনা এবং নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। আন্তর্জাতিক র‍্যাংকিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান উন্নয়নেও কৌশলগত পরিকল্পনা দরকার।
উপাচার্য ড. শওকাত আলীর এক বছরের কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করলে এটি স্পষ্ট যে, তিনি কেবল প্রশাসক হিসেবে নয়, বরং একজন দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন শিক্ষাবিদ, সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষক এবং মানবিক নেতৃত্বের প্রতীক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তাঁর নেতৃত্বে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, আধুনিক ও সৃজনশীল জ্ঞানের কেন্দ্র হয়ে উঠছে। তবে এ অর্জন ধরে রাখতে হলে তাঁকে আরও দৃঢ়, দূরদর্শী ও জনবান্ধব সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি স্তরে যে আস্থা তিনি অর্জন করেছেন, তা যেন একদিন ইতিহাসে রূপ নেয় বদলে যাওয়া বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপকার এই প্রত্যাশায়। 

লেখক:  মো: ইউসুফ, সহকারী অধ্যাপক, ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ‌, বেরোবি। 

এমএসএম / এমএসএম

উপাচার্য ড. শওকাত আলীর এক বছর: শিক্ষা, প্রশাসন ও সৃজনশীল নেতৃত্বের মূল্যায়ন

প্লাস্টিকের বোতল: একটি নীরব পরিবেশগত মহামারির সুদূরপ্রসারী পরিণতি

নিরাপদ পৃথিবীর জন্য ওজোন স্তর রক্ষায় প্রয়োজন বিশ্বজনীন অঙ্গীকার

মুসলিম রাষ্ট্রকে নিয়ে বৈশ্বিক শক্তির ষড়যন্ত্র-মো. হাসিব

শিশু হাসপাতালে সেবার পরিধি বৃদ্ধি পেয়েছে ও দালালদের দৌরাত্ম্য কমেছে

স্কুল-জীবনের স্মার্টফোন: শিক্ষার পথ সহজ, নাকি বাঁধার দেয়াল?

ডিজিটাল ইকোনমিতে তরুণদের অংশগ্রহণে বাড়ছে প্রবৃদ্ধির গতি

রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নে বাড়ছে অপরাধ

শিক্ষা ব্যবস্থায় ফিরে আসুক পুরনো দিনের ঐতিহ্য

মধ্যপ্রাচ্যের ভিসা সংকট থেকে প্রযুক্তি বাজার: বাংলাদেশের করণীয় কি?

পিআর পদ্ধতি নিয়ে হঠাৎ এতো আলোচনা

আ-তে আলো, আ-তে আধাঁর

মোদির চীন সফর ও বৈশ্বিক রাজনৈতিক প্রভাব