সম্পদ রক্ষায় ইসলামের শিক্ষা

সম্পদ মহান আল্লাহর একটি দান। এটি ভালো কাজে ব্যবহার করলে সওয়াব অর্জিত হয়, খারাপ কাজে ব্যবহার করলে হয় পাপ। সম্পদ অর্জনের পন্থা সম্পর্কেও ইসলামে রয়েছে নির্দেশনা। অন্যের সম্পদ অনৈতিকভাবে আত্মসাৎ করতে নিষেধ করেছে ইসলাম। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমরা অন্যায়ভাবে একে অপরের সম্পদ ভোগ করো না এবং জনগণের সম্পদের সামান্য অংশও জেনেশুনে পাপ পন্থায় আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে শাসন কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিয়ো না’ (সুরা বাকারা : ১৮৮)। কেউ যেন অন্যের ধনসম্পদ চুরি করার সাহস না পায় এ জন্য ইসলামে চোরের হাত কাটার শাস্তি নির্ধারণ করেছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যে পুরুষ চুরি করে এবং যে নারী চুরি করে তাদের হাত কেটে দাও কৃতকর্মের শাস্তি হিসেবে। আল্লাহর পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি; মহান আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী, মহাজ্ঞানী।’ (সুরা মায়েদা : ৩৮)
ইসলামে চুরির শাস্তি প্রদানে ধনী ও গরিবের মাঝে কোনো ভেদাভেদ নেই। হজরত আয়েশা (রা.) একটি ঘটনা বর্ণনা করেন, ‘মাখজুম গোত্রের একজন নারীর চুরির ঘটনা কুরাইশের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অত্যন্ত উদ্বিগ্ন করে তুলল। এ অবস্থায় তারা বলাবলি করতে লাগল এ ব্যাপারে আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে কে আলাপ করতে পারে? তারা বলল, একমাত্র রাসুল (সা.)-এর প্রিয় পুত্র উসামা বিন জায়েদ (রা.) এই ব্যাপারে আলোচনা করার সাহস করতে পারেন। উসামা (রা.) নবী (সা.)-এর সঙ্গে কথা বললেন। নবী (সা.) বললেন, তুমি কি আল্লাহর নির্ধারিত সীমালঙ্ঘনকারিণীর সাজা মাওকুফের সুপারিশ করছ? অতঃপর নবী (সা.) দাঁড়িয়ে খুতবায় বললেন, ‘তোমাদের আগের জাতিগুলোকে এ কাজই ধ্বংস করেছে যে, যখন তাদের মধ্যে কোনো বিশিষ্ট লোক চুরি করত তখন তারা বিনা সাজায় তাকে ছেড়ে দিত। অন্যদিকে যখন কোনো অসহায় গরিব সাধারণ লোক চুরি করত তখন তার ওপর শাস্তি প্রয়োগ করত। আল্লাহর কসম, যদি মুহাম্মদ (সা.)-এর কন্যা ফাতেমা চুরি করত তা হলে আমি অবশ্যই তার হাত কেটে দিতাম।’ (বুখারি : ৩৪৭৫)
যেসব লেনদেনের মাধ্যমে কারও সম্পদ ক্ষতি হওয়ার নিশ্চিত সম্ভাবনা থাকে যেমন সুদ, ঘুষ, জুয়া, লটারি, অবৈধ ব্যবসা ইত্যাদি ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। সুদ গ্রহণ করা আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.)-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার মতো জঘন্য অপরাধ। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সুদের যেসব বকেয়া আছে তা পরিত্যাগ করো, যদি তোমরা ঈমানদার হয়ে থাকো। অতঃপর যদি তোমরা পরিত্যাগ না করো, তবে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত হয়ে যাও। কিন্তু যদি তোমরা তওবা করো, তবে তোমরা নিজের মূলধন পেয়ে যাবে। তোমরা কারও প্রতি অত্যাচার করো না এবং কেউ তোমাদের প্রতি অত্যাচার করবে না’ (সুরা বাকারা : ২৭৮-২৭৯)। যেসব ব্যবসায়ী মাপে কম দেয় তাদের ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যারা মাপে কম দেয় তাদের জন্য রয়েছে মহাদুর্ভোগ।’ (সুরা মুতাফফিফিন : ১)
ঋণ গ্রহণ করে কেউ যেন ঋণদাতাকে প্রতারিত করতে না পারে এ জন্য নির্দিষ্ট মেয়াদে ঋণের লেনদেনের ক্ষেত্রে লিখে রাখা ও সাক্ষী রাখার ব্যাপারে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা যখন নির্দিষ্ট মেয়াদে ঋণের লেনদেন করো তখন তা লিখে রাখো এবং তোমাদর পুরুষদের মধ্য হতে দুজন সাক্ষী রাখো। যদি দুজন পুরুষ সাক্ষী না পাওয়া যায় তা হলে একজন পুরুষ ও দুজন নারীকে সাক্ষী রাখো’ (সুরা বাকারা : ২৮২)। ইসলামের এসব দিকনির্দেশনা অনুসরণের মাধ্যমে মানুষের অর্থসম্পদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব। তাই এসব বিধিবিধান মেনে চলার মধ্যেই সবার জন্য মঙ্গল ও কল্যাণ।
Aminur / Aminur

উমাইয়া আমলের স্থাপত্য নান্দনিকতার নিদর্শন বহন করছে যে দুই মসজিদ

কথা না বলা যখন সওয়াবের

সম্পদ রক্ষায় ইসলামের শিক্ষা

পথে চলাচলের আদব ও সুন্নত

আজ পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)

ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.): সৃষ্টির ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ মহোৎসব

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী ৬ সেপ্টেম্বর

কোরআনে কল্যাণের পথে অগ্রগামী বলা হয়েছে যাদের

মন্দ কাজ থেকে নিজেকে বাঁচাবেন যেভাবে

কৃতজ্ঞতা প্রকাশে জীবন-জীবিকার প্রশস্ততা

কিবলা পরিবর্তনের নির্দেশ এসেছে কোরআনের যে আয়াতে

মানুষের ওপর আল্লাহর রহমত নিয়ে যা বলেছেন মসজিদুল হারামের খতিব
