নিরাপদ জীবনের চার উপাদান
নিশ্চিন্ত, নিরাপদ ও সুখময় জীবন সবারই কাম্য। চারটি গুণ ও বৈশিষ্ট্য থাকলে মিলবে প্রত্যাশিত সুখ। পরকালেও মিলবে মুক্তি। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘চারটি গুণ এতই মূল্যবান, তা যদি তোমার মধ্যে থাকে তা হলে দুনিয়ায় আর কী তোমার নেই, সে চিন্তা করার দরকার নেই- ১. আমানত রক্ষা করা। ২. সত্য কথা বলা। ৩. উত্তম চরিত্রের অধিকারী হওয়া। ৪. রিজিক হালাল হওয়া।’ (মুসনাদে আহমদ : ৬৩৬৫)
আমানত : আমানত সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা জেনেশুনে আল্লাহ ও রাসুলের সঙ্গে এবং নিজেদের পারস্পরিক আমানতের খেয়ানত করো না’ (সুরা আনফাল : আয়াত ২৭)। আমানত বিভিন্ন রকম হতে পারে। বান্দার সঙ্গে বান্দার আমানত। আল্লাহর সঙ্গে বান্দার আমানত। আমাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো আল্লাহ কর্তৃক আমানত। সবকিছুই যখন তাঁর সন্তুষ্টির জন্য ব্যবহার করা হবে এবং রাসুল (সা.) নির্দেশিত পথে হবে তখনই কেবল আমানত আদায় হবে। রাসুল (সা.) আমানতের খেয়ানত করতে নিষেধ করেছেন। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা খেয়ানত করো না, কেননা খেয়ানত কতই না শাস্তি ও তিরস্কারযোগ্য।’ (আবু দাউদ ও তিরমিজি)
সত্য বলা : মানুষের প্রতিটি কথার জন্য জবাবদিহি করতে হবে। সৃষ্টিকর্তা কথার হিসাব নেবেন। আমরা যাই বলি না কেন, তা লিপিবদ্ধ করা হয়। মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করে, তা লিপিবদ্ধ করার জন্য তৎপর প্রহরী তার সঙ্গেই রয়েছে। তাই মুখের কথা খুবই বিপজ্জনক হতে পারে। হাদিসে এসেছে, ‘বান্দা অনেক সময় এমন কথা বলে যাতে সে গুরুত্ব দেয় না অথচ সেই কথা আল্লাহকে সন্তুষ্ট করে। ফলে আল্লাহ তায়ালা এর দ্বারা তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। পক্ষান্তরে বান্দা অনেক সময় এমন কথাও বলে যাতে সে গুরুত্ব দেয় না অথচ সেই কথা আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করে। ফলে সে কথাই তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করে।’ (বুখারি : ৪৮৫)
উত্তম চরিত্র : সর্বাধিক উত্তম চরিত্রের মানুষ ছিলেন রাসুল (সা.)। তাঁর চারিত্রিক মাধুর্যে বিধর্মীরাও মুগ্ধ হতো। ঈমান তারা আনেনি ঠিকই, তবে তাঁর চারিত্রিক গুণ অর্জন করতে চেষ্টা করত। আর যার চরিত্র খারাপ, বস্তুত তার কিছুই নেই। বাদামের খোসার মতো তার অবস্থা। নবী (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর কাছে সর্বাধিক প্রিয় বান্দা হলো যাদের চরিত্র সুন্দর।’ (ইবনে হিবরান : ২/২৩৬; মুস্তাদরাক : ৪/৪৪৩)
হালাল রিজিক : ‘হালাল রিজিক’ ইবাদত কবুলের পূর্বশর্ত। হজরত রাফে ইবনে খাদিজা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে সর্বোত্তম উপার্জন কোনটি? জবাবে তিনি বলেন, ব্যক্তির নিজস্ব শ্রমলব্ধ উপার্জন ও সততার ভিত্তিতে ক্রয়-বিক্রয়’ (মুসনাদে আহমদ : ৪/১৪১)। জান্নাতে যাওয়ার যে বিন্দুমাত্র আশা রাখে, অবশ্যই তার উপার্জন হালাল হতে হবে। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি হালাল উপার্জিত খাবার খায় ও সুন্নতের ওপর আমল করে এবং মানুষ তার অনিষ্ট থেকে নিরাপদ থাকে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (তিরমিজি : ২৫২০)
এমএসএম / এমএসএম
নববী আদর্শের নওজোয়ান: ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন-নুমান রিডার
নিরাপদ জীবনের চার উপাদান
ইসলামে মানবাধিকারের শিক্ষা
ঈমান ধ্বংসকারী ফেতনা থেকে আত্মরক্ষা
মানুষের হক নষ্ট করা পাপ
সাহাবিদের মতো জীবন গড়ার শিক্ষা
ভূমিকম্পে ধ্বংসপ্রাপ্ত সামুদ জাতির কাহিনি
পুরোনো কাপড় দান করে সওয়াব অর্জন
হালাল সম্পদ উপার্জনের নির্দেশনা
উত্তম চরিত্রের অনন্য পুরস্কার
পাপের ভারে ভূমিকম্প বাড়ে
সুস্বাস্থ্যের জন্য যে দোয়া করবেন