ঢাকা শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

মানবসম্পদ উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক নিশ্চয়তা


রায়হান আহমেদ তপাদার  photo রায়হান আহমেদ তপাদার
প্রকাশিত: ২৩-৯-২০২৫ দুপুর ৩:৪৬

মানবসম্পদ হলো মানবশক্তির প্রয়োজনভিত্তিক প্রায়োগিক রূপ। আধুনিক বিশ্বে মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়টি বিশেষভাবে প্রচলিত। গবেষকরা মনে করেন, সমাজ, দেশ ও বিশ্বের সামগ্রিক অগ্রগতিকে সচল রাখার জন্য কেবল মানবসম্পদই ভূমিকা রাখতে পারে। এ সম্পদকে অনেকে অনেকভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন, তবে মূল কথা হলো অর্থনৈতিকভাবে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় উৎপাদনসহ আনুষঙ্গিক কার্যাবলি এবং ইতিবাচক-কল্যাণকর বিষয়াদির সঙ্গে জনসংখ্যার যে অংশটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে তা-ই মানবসম্পদ।মানুষ মূলত বিশ্বাসের বিশ্বে বাস করে। মানুষের পরস্পরের সম্পর্ক, সমাজের সব শক্তির সৌহার্দ ও সহযাত্রা, জরুরি উন্নয়ন কর্মভাবনার সফল বাস্তবায়ন, চিন্তা ও চৈতন্যে সমন্বয় সবই আস্থার ভিত্তিতে গড়ে ওঠে। আস্থা আত্মবিশ্বাসকে বলীয়ান করে, আত্মমর্যাদা বোধকে জাগ্রত করে, জাতীয় ঐক্য চেতনায় প্রেরণা জোগায়, গঠনমূলক ও উন্নয়নধর্মী কর্মোদ্যোগে প্রত্যয় ও প্রতীতি দান করে। পক্ষান্তরে পারস্পরিক আস্থাহীনতা জাতীয় ঐক্যে ফাটল ধরায়, বিভেদের দেয়াল গন্ডিবদ্ধ করে ফেলে সব মুক্ত চেতনার প্রহরকে, নিরুৎসাহ, নিরুত্তাপ-নিস্পৃহতাকে লালন-পালন করার ফলে মানুষ ও প্রকৃতি সৃষ্ট সমস্যার সমাধানের পথ পায় না। তাইতো যত অস্থিরতা। বাংলাদেশে অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু তা অসাম্য ও অস্থিরতার মধ্য দিয়ে। বৈদেশিক ঋণ, আমদানি নিয়ন্ত্রণ এবং রফতানি নির্ভরতা অর্থনীতিকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে। কেননা সব উন্নয়নের বিপরীতে দাঁড়িয়ে আছে এক গভীরতর সংকট। আর তা হচ্ছে, গণতান্ত্রিক অবক্ষয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আর্থিক অব্যবস্থাপনা ও সুশাসনের দুর্বলতাই এর মূল কারণ-যা গণতান্ত্রিক জবাবদিহির অভাবে জন্ম নিয়েছে।
এমন অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের দুর্বলতার একসঙ্গে সহাবস্থানের দ্বৈত চিত্র যেকোনো দেশেরই ভবিষ্যতের জন্য উদ্বেগজনক। কিন্তু বাংলাদেশে গত দেড় দশকে অর্থনৈতিক অগ্রগতির দৃশ্যমান ধারাটি এভাবেই এগিয়েছে। এ ভারসাম্যহীন পাল্লার একদিকে রয়েছে অর্থনৈতিক অগ্রগতি, অন্যদিকে গণতন্ত্রের গুরুতর ঘাটতি। এ ঘাটতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলেছে গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে পারে এমন সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করার সমারোহ। রাষ্ট্র ও সরকারের প্রায় সব অঙ্গেই এই দ্বৈত চিত্র স্পষ্ট। যেখানে একদিকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিসংখ্যান চিত্তাকর্ষক, অন্যদিকে বাস্তবতা বলছে 'এ উৎপাদন রাজনৈতিক সুবিধাভোগীদের হাতে কেন্দ্রীভূত এবং এতে জনগণের স্বার্থ উপেক্ষিত।' বাংলাদেশের রাজনৈতিক কাঠামোয় ‘উইনার-টেকস -অল’ সংস্কৃতি বিরাজমান, যেখানে নির্বাহী ক্ষমতা একক ব্যক্তির হাতে কেন্দ্রীভূত। সংসদ, শাসন বিভাগ, বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন-সবই থাকে কার্যত শাসক দলের নিয়ন্ত্রণে। এ কেন্দ্রীকরণ চেক অ্যান্ড ব্যালান্সকে ধ্বংস করে। নীতিনির্ধারণ আর অংশগ্রহণমূলক হয় না। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিয়ে পতিত সরকার যে পরিসংখ্যান তুলে ধরেছিল, তা চিত্তাকর্ষক হলেও বেশিরভাগ সময় বাস্তবতা এ সংখ্যার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল না। বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবার চাহিদা দ্রুত বাড়ছে, অথচ চিকিৎসা সরঞ্জামের ক্ষেত্রে আমরা এখনো প্রায় পুরোপুরি আমদানির ওপর নির্ভরশীল। প্রতি বছর প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলার বিদেশে চলে যাচ্ছে শুধু মৌলিক চিকিৎসা সরঞ্জাম কিনতে। অথচ ব্লাড প্রেসার মাপার যন্ত্র, গ্লুকোমিটার, সিরিঞ্জ বা স্যালাইন সেটের মতো সহজ জিনিস আমরা চাইলে স্থানীয়ভাবে সহজেই উৎপাদন করতে পারি।
এতে একদিকে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে, অন্যদিকে দেশীয় উদ্যোক্তা ও ক্ষুদ্র শিল্প বিকাশ পাবে।এ উদ্যোগ শুধু আমদানিনির্ভরতা কমাবে না, বরং প্রতিবেশী দেশ নেপাল, ভুটান ও ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোয় রফতানি বাজার তৈরি করবে। প্রতিটি অঞ্চলে একটি নির্দিষ্ট পণ্যে বিশেষায়িত ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) গড়ে তোলা যেতে পারে। এটি গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করবে, নারীদের উদ্যোক্তা হিসেবে যুক্ত করবে ও স্থানীয় দক্ষতাকে কাজে লাগাবে। বাংলাদেশে স্থানীয় মেড টেক শিল্প বিকাশের পথে দীর্ঘদিন ধরে একাধিক নীতিগত প্রতিবন্ধকতা বিদ্যমান।যেমন: সমন্বিত জাতীয় কৌশলের অভাবে চিকিৎসা সরঞ্জামকে কখনই অগ্রাধিকার খাত হিসেবে দেখা হয়নি; ফলে নীতি ও প্রণোদনা কাঠামো তৈরি হয়নি।ওষুধ ও প্রসাধনী আইনের সঙ্গে মিলিয়ে চিকিৎসা সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রণ করা হয়, যা প্রকৃতপক্ষে মেডটেকের বিশেষ চাহিদা পূরণ করে না। গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে সরকারি বরাদ্দ অপ্রতুল, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল বা উদ্ভাবনী অর্থায়নের সুযোগ সীমিত। ফলে উদ্যোক্তারা শুরুতেই নিরুৎসাহিত হন। দক্ষ বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ও টেকনিশিয়ান তৈরির কোনো জাতীয় পরিকল্পনা নেই; বিশ্ববিদ্যালয়, শিল্প ও সরকারের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে এ খাতে 'মেধা পাচার' তৈরি হয়েছে। এছাড়া পেটেন্ট ও মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের দুর্বল ব্যবস্থা স্থানীয় উদ্ভাবকদের নিরুৎসাহিত করেছে। গত কয়েক দশকে ক্ষমতাসীন সরকারগুলো স্বাস্থ্য খাতকে মূলত চিকিৎসা অবকাঠামো ও ওষুধ আমদানির ওপর সীমিত রেখেছে; তারা দেশীয় মেডটেক শিল্প গড়ার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেয়নি। রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তির অভাব, অগ্রাধিকার নির্ধারণে ভুল, সরকারি ক্রয়ে দুর্নীতি ও বৈদেশিক সরবরাহকারীদের ওপর নির্ভরতার সংস্কৃতি-সব মিলিয়ে পূর্ববর্তী সরকারগুলো এ খাতের সম্ভাবনাকে অবহেলা করেছে এবং বাংলাদেশকে আমদানিনির্ভর অবস্থায় রেখেছে।
জাতীয় মেডটেক কৌশল অনুযায়ী একটি বিশেষ শিল্পাঞ্চল গড়ে তুললে অন্তত ৫০ হাজার নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে, আর পুরো খাত সচল হলে এক লাখের বেশি চাকরি সৃষ্টি হবে। স্থানীয় ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা এ খাতে সরাসরি অবদান রাখতে পারবেন, তরুণদের জন্য নতুন কর্মসংস্থানের দরজা খুলবে এবং দক্ষ মানবসম্পদ দেশেই থেকে যাবে। এ লক্ষ্যে নীতিগত প্রতিবন্ধকতা দূর করতে এখন প্রয়োজন সমন্বিত পদক্ষেপ।এ পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন হলে মেডটেক শিল্প কেবল কর্মসংস্থানই তৈরি করবে না, বরং স্বাস্থ্যনিরাপত্তা, বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় ও রফতানি প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।মানবকে সম্পদে রূপান্তর করার ক্ষেত্রে শিক্ষা অন্যতম একটি মাধ্যম। গতানুগতিক ধারার শিক্ষাব্যবস্থার বিপরীতে পরিকল্পিত ও কর্ম উপযোগী শিক্ষা বলতে শুধু কারিগরি শিক্ষাকেই বোঝায় না। সে শিক্ষা এমন হবে না যে, পাস করার পর মিলবে না কর্ম। আবার মেধাবীরা উচ্চশিক্ষার নামে যে হারে বিদেশে পাড়ি জমায় এবং তাদের মাঝে দেশে না ফেরার প্রবণতা। মানবসম্পদ পাচারই বটে। এমন যে, সে জন্য শিক্ষাজীবন শেষে দেশে ফেরার প্রতি আগ্রহ তৈরি করতে হবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হলে স্বাস্থ্যপ্রযুক্তি খাতকে গ্রাম পর্যন্ত নিয়ে যেতে হবে। এর মাধ্যমে অর্থনীতি বড় হবে। ঠিক যেমন কোস্টারিকা কৃষিনির্ভর অর্থনীতি থেকে মেডটেক রফতানিকারক শক্তিতে রূপ নিয়েছে, বাংলাদেশও চাইলে আগামী এক দশকে ১০ বিলিয়ন ডলারের মেডটেক রফতানি শিল্প গড়ে তুলতে পারে। একইভাবে পাকিস্তানের অভিজ্ঞতা আমাদের জন্য শিক্ষণীয়। দেশটি ১৯৪৭ সালের পর স্বাধীনতার শুরুর দিক থেকেই স্থানীয়ভাবে সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতি উৎপাদনে বিশ্বখ্যাত, বিশেষ করে শিয়ালকোট শহর এরই মধ্যে একটি বৈশ্বিক মেডিকেল ইন্সট্রুমেন্ট হাব হিসেবে স্বীকৃত। পাকিস্তান প্রতি বছর শত শত মিলিয়ন ডলারের সার্জিক্যাল পণ্য রফতানি করে, যা তাদের অর্থনীতিতে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পাশাপাশি কর্মসংস্থানেরও বড় উৎস।
বাংলাদেশেরও একই ধরনের সম্ভাবনা রয়েছে, যদি সঠিক নীতি, বিনিয়োগ ও উদ্যোক্তা-সমর্থন কাঠামো তৈরি করা যায়। এখনই সময় এই সাহসী পদক্ষেপ নেয়ার। স্থানীয়ভাবে সহজ চিকিৎসা সরঞ্জাম উৎপাদন শুধু স্বাস্থ্যনিরাপত্তা নয়, বরং কর্মসংস্থান, বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়, আঞ্চলিক বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক সব কিছুর জন্য একটি গেম-চেঞ্জার হতে পারে।বিএনপির ৩১ দফা রাষ্ট্র মেরামত কর্মসূচিতে যেমন তারেক রহমান স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছেন, বিশেষ করে নারী ও যুবশক্তিকে কেন্দ্র করে নতুন কর্মক্ষেত্র গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, মেডটেক শিল্প সেই লক্ষ্য অর্জনের একটি বাস্তব ও কার্যকর হাতিয়ার হতে পারে। এ শিল্পে নারীদের উদ্যোক্তা হিসেবে যুক্ত করা এবং তরুণ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ও প্রযুক্তিতে শিক্ষিত যুবকদের কাজে লাগানো হলে স্বাস্থ্য ও অর্থনীতিকে একসঙ্গে এগিয়ে নেয়া সম্ভব হবে। ২০২৪ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন ছিল সেটার বিরুদ্ধেই তরুণদের প্রতিবাদের প্রতীক, যা মেরিটোক্রেসি বনাম রাজনৈতিক সুবিধাবাদের দ্বন্দ্বকে সামনে এনেছিল। নতুন পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে গণতান্ত্রিক নানান মৌলিক সংস্কারের দাবি আরো জোরালো হয়। গত ১৫ বছরে ধ্বংসপ্রাপ্ত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনরায় গঠন করার ম্যান্ডেট নিয়ে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসে। সবার প্রত্যাশা ছিল রাজনৈতিক প্রভাবের বাইরে তারা একটি স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক কাঠামো তৈরির প্রয়াস নেবে। তবে সংস্কার পদক্ষেপের ব্যাপক আলোচনা চললেও গত এক বছরে দৃশ্যমান পরিবর্তন নেই বললেই চলে। শাসকশ্রেণীকে বুঝতে হবে গণতন্ত্র শুধু ভোট নয়। এটি নীতিনির্ধারণে অংশগ্রহণ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং জবাবদিহির সংস্কৃতিও। এসব ভিত্তি পুনর্নির্মাণ না করলে বাংলাদেশের উন্নয়ন হবে একপাক্ষিক। এবং শেষ পর্যন্ত তা অসাম্য ও অস্থিরতার দিকে ধাবিত হবে।
লেখক: গবেষক ও কলাম লেখক 

Aminur / Aminur

জাতিগত নিধন বন্ধে জাতিসংঘের ব্যর্থতা

গণতান্ত্রিক হতে হলে মৌলিক অধিকার সমুন্নত রাখতে হয়

স্মার্ট ডিভাইস-আসক্তিতে বিপদগামী হচ্ছে শিশু-কিশোররা

মানবসম্পদ উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক নিশ্চয়তা

সৌদির ভূরাজনৈতিক কণ্ঠস্বর: তেল, জোট ও পুরোনো মার্কিন চুক্তির টানাপোড়েন

শুভ মহালয়া : দূর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গার আগমনী মঙ্গল বার্তা

সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ অপরিহার্য

আন্তর্জাতিক বিশ্বব্যবস্থা ও বৈশ্বিক বাস্তবতা

উপাচার্য ড. শওকাত আলীর এক বছর: শিক্ষা, প্রশাসন ও সৃজনশীল নেতৃত্বের মূল্যায়ন

প্লাস্টিকের বোতল: একটি নীরব পরিবেশগত মহামারির সুদূরপ্রসারী পরিণতি

নিরাপদ পৃথিবীর জন্য ওজোন স্তর রক্ষায় প্রয়োজন বিশ্বজনীন অঙ্গীকার

মুসলিম রাষ্ট্রকে নিয়ে বৈশ্বিক শক্তির ষড়যন্ত্র-মো. হাসিব

শিশু হাসপাতালে সেবার পরিধি বৃদ্ধি পেয়েছে ও দালালদের দৌরাত্ম্য কমেছে