ঢাকা বৃহষ্পতিবার, ২ অক্টোবর, ২০২৫

সাভারে সাংবাদিককে বিবস্ত্র করা ভিডিও ভাইরাল, প্রকাশ্যে ঘুরছে সন্ত্রাসীরা


আহ‌মেদ জীবন, সাভার photo আহ‌মেদ জীবন, সাভার
প্রকাশিত: ২-১০-২০২৫ দুপুর ২:৩৭

সাভারে মাদক ব্যবসায়ী ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় অপহরণের পর পাশবিক  নির্যাতন চালিয়ে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেই ভিডিও ভাইরাল করায় মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার সাংবাদিক আলী রেজা রাজু।

প্রকাশ্যে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে দীর্ঘ চার ঘণ্টা একটি ভবনের দ্বিতীয় তলার ছাদে  টর্চার সেলে আটকে রেখে হাত-পা ও মুখ বেঁধে তার ওপর মধ্যযুগীয় কায়দায় চালানো হয় বর্বর নির্যাতন। নির্যাতনের পর শরীরের সমস্ত কাপড় খুলে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে ভর্তি করা হয় বেসরকারি একটি হাসপাতালে।

এ ঘটনায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হলেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। উল্টো মামলা তুলে নেয়ার জন্য সন্ত্রাসীরা ভুক্তভোগীর পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সারা দেশে চলমান অস্ত্রবাজ, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী ধরার যৌথ অভিযান চলার মধ্যেই আসামিরা প্রকা‌শ্যে বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এতে ভুক্তভোগীসহ স্থানীয় সাংবাদিকদের মধ্যে বাড়ছে ক্ষোভ।

গত মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে সাভার থানাধীন হেমায়েতপুর এলাকা থেকে তুলে নিয়ে জয়নাবাড়ী এলাকায় আটকে রেখে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক আলী রেজা রাজু যশোর জেলার শার্শা থানার যাদবপুর গ্রামের শামসুর রহমানের ছেলে। তিনি জানান, কিছুদিন আগে সাভারের হেমায়েতপুর এলাকার চাঁদাবাজ ও মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একাধিক  সংবাদ প্রকাশ করি। এতে আমার উপর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে অপরাধীরা। গত ৯ সেপ্টেম্বর রাতে পেশাগত তথ্য সংগ্রহের পর বাসায় ফেরার পথে হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ডে পৌছা মাত্রই হেমায়েতপুরের ত্রাস কুখ্যাত পাইকারি মাদক ব্যবসায়ী  ফিরোজ হোসেন ওরফে গুটি ফিরোজ (৪০) ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমার ওপর চড়াও হয়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ফিরোজের নেতৃত্বে পলাতক তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দুই ডজন ছাত্র হত্যা মামলার আসামি ফখরুল আলম সমরের ঘনিষ্ঠ সাদ্দাম হোসেন (৩৫), পলাতক সাভার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দুই ডজন ছাত্র হত্যা মামলার আসামি মঞ্জুরুল আলম রাজীবের ঘনিষ্ঠ মেহেদী হাসান মানিক ওরফে খামচি মানিক (৪৫), রুবেল ওরফে হলদি রুবেল (৪০), সাগর হোসেন ওরফে ফিটিং সাগর (৪০), দেলোয়ার হোসেন ওরফে কাজী দেলোয়ার (৩৫) ও জাকির হোসেন ওরফে ফেন্সি জাকির (২৯) আমাকে
প্রকাশ্যে তুলে নিয়ে যায় হেমায়েতপুরের জয়নাবাড়ী প্রাইমারি স্কুল সংলগ্ন এলাকার একটি দুই তলা ভবনের ছাদে গুটি ফিরোজের টর্চার সেলে।

সেখানে প্রায় চার ঘণ্টা আটকে রেখে সবাই মিলে আমার হাত-পা ও মুখ বেঁধে ফেলে আমাকে লাঠি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে। নির্যাতনের পর আমার শরীরের সমস্ত কাপড় খুলে বিবস্ত করে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করা হয়। এক পর্যায়ে প্রচণ্ড আঘাতে আমার আর্ত চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন  এগিয়ে আসে। তারা আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

কয়েকদিন হাসপাতালে থেকেই চিকিৎসা চলছিল। এরই মধ্যে গত সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) অপরাধীরা জোকসাজসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আমার বিবস্ত্র ভিডিও ছড়িয়ে দেয়। সন্ত্রাসীদের ধারণ করা বিবস্ত্র ভিডিও ভাইরাল হলে আমি মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ি। পরবর্তীতে আমি থানায় অভিযোগ দিলে ১০ দিন পর প্রাথমিক তদন্ত শেষে পুলিশ মামলাটি গ্রহণ করে। মামলা গ্রহণের ৬ দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কোন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়নি। সন্ত্রাসীরা প্রভাবশালী হওয়ায় আমি ও আমার পরিবারের সদস্যদের মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে।

ঘটনার পর মামলা গ্রহণ ও তদন্ত শুরু করায় পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে স্থানীয় সাংবাদিক নেতারা জানান, মানুষ পৈশাচিকতায় যেকোনও হিংস্র প্রাণীকে অনেক আগেই হার মানিয়েছে। এই বর্বর ঘটনা তার আরেকটি দৃষ্টান্ত। সে তো আত্মহত্যাও করতে পারত, তার জন্য আমাদের কিছু করা প্রয়োজন ছিল কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য আমাদের কিছু সহকর্মী উল্টো অপরাধীদের শেল্টার দেওয়ার চেষ্টা করেছে। এ কয়টা দানবের কাছে আমাদের হার মানলে চলবে না। বহুদিনের চলে আসা বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসা প্রয়োজন। সাংবাদিক আলী রেজা রাজুর বিবস্ত্র ভিডিওটি না চাইতেই সামনে চলে এসেছে। আমরা সাংবাদিক, সংবাদ প্রকাশ করাই আমাদের কাজ। সংবাদ প্রকাশের জেরে এই ধরনের ঘটনায় রাগে ক্ষোভে ঘৃণায় নিজেদের মানুষ ভাবতেই লজ্জা হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িত অমানুষদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। নতুন কোনও ঘটনার আড়ালে এটি যেন চাপা না পড়ে যায়। আসামিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে পুলিশের প্রতি সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা ঘটনাস্থল ও আশপাশের সিসিটিভি’র ফুটেজ সংগ্রহ করছি। অপরাধীদের ধরতে গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে, আসামিদের গ্রেফতারপূর্বক তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন গুলো জব্দের চেষ্টা চলছে, ফরেনসিক করলেই সব কিছু বেরিয়ে আসবে।  

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার তদন্ত ওসি আশিক ইকবাল। তিনি জানান, সাংবাদিক আলী রেজা রাজুকে নির্যাতনের পর বিবস্ত্র ভিডিও ধারণ করে সেই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে বিষয়টি স্পষ্ট। ঘটনার বিষয়ে আমরা গুরুত্ব সহকারে তদন্ত এবং অভিযান শুরু করেছি। আসামিরা পলাতক তবে দ্রুতই জড়িত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

এমএসএম / এমএসএম

পটুয়াখালীতে বিজয় দশমীর শেষ মুহূর্তে চলছে প্রতিমা বিসর্জনের আয়োজন

নবীনগরে জালিয়াতির মাধ্যমে সম্পত্তি দখলের চেষ্টা অভিযোগ

ঘোড়াঘাটে দিন দিন বেড়েই চলছে চুরি-ছিনতাই, জনমনে আতংক

আত্রাইয়ে বিএনপি'র বিভিন্ন পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন

বাল্যবিয়ে করতে এসে কারাগারে গেলেন বর

কোনাবাড়ীতে ২ মাদককারবারী গ্রেফতার

তালায় ক্যান্সারযোদ্ধা মেধাবী কলেজ ছাত্র মেহেদী হাসান বাঁচতে চাই

চার দিন পর পুনরায় চালু হলো সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ি

মোহনগঞ্জে দুর্গাপূজায় বখাটেদের হামলায় আহত ৮

চৌগাছার ভারত সীমান্ত কুলিয়া বাওড় থেকে কঙ্কাল উদ্ধার

বিজয়া দশমীতে রাঙামাটিতে গুর্খা সম্প্রদায়ের তিলক প্রদান

গহীন পাহাড় থেকে ২১ জনকে উদ্ধার

পূজামন্ডপ পরিদর্শন ও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়ে আলহাজ্ব আবু সুফিয়ান