কেএপিজেড আন্দোলন থেকে আনোয়ারা কর্ণফুলীর গণ মানুষের নেতা হয়ে ওঠে এহসান এ খাঁন
১৯৯৯ সালে কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন (KEPZ) প্রকল্পটি সরকারের অনুমোদন পায়। দেশের রপ্তানি খাত সম্প্রসারণ ও বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্যে নেওয়া এই প্রকল্পের জমি বরাদ্দ ও অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০০১ সালে আনোয়ারা ও কর্ণফুলী অঞ্চলে। তবে প্রকল্পের বাস্তবায়ন শুরুর পর থেকেই স্থানীয় জনগণের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দেয়। হাজার হাজার কৃষক, শ্রমিক ও সাধারণ মানুষ তাঁদের পূর্বপুরুষের ভিটেমাটি হারানোর আশঙ্কায় রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানান। কিন্তু সেই সময় এলাকার প্রভাবশালী রাজনীতিক ও সাবেক সংসদ সদস্য সারওয়ার জামাল নিজাম এবং আখতারুজ্জামান বাবু জনগণের এই ন্যায্য আন্দোলনের পাশে দাঁড়াননি বলে অভিযোগ ওঠে। বরং তাঁরা নানা রাজনৈতিক সমীকরণ ও ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে নীরব ভূমিকা পালন করেন, যা স্থানীয়দের ক্ষোভ আরও বাড়িয়ে তোলে।
এই পরিস্থিতিতে, জনগণের পক্ষে নেতৃত্বের শূন্যতা পূরণে এগিয়ে আসেন দক্ষিণ চট্টগ্রামের অন্যতম বনেদি পরিবারের সন্তান ও তরুণ নেতা এহসান এ. খান। তিনি ভয়-ভীতি, প্রলোভন, এমনকি প্রাণনাশের হুমকি উপেক্ষা করে কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষের পাশে দাঁড়ান। তাঁর নেতৃত্বে গড়ে ওঠে একটি গণআন্দোলন - যেখানে মানুষ কেবল জমির জন্য নয়, নিজেদের অস্তিত্ব, সম্মান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অধিকার রক্ষার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল।
এহসান এ. খান ছিলেন সেই সময়ের এক ব্যতিক্রমী কণ্ঠ,যিনি আন্দোলনকে রাজনৈতিক লাভের চেয়ে ন্যায়বিচারের প্রশ্নে দেখেছিলেন। প্রশাসনের দমননীতির মুখেও তিনি থেমে থাকেননি। এক পর্যায়ে তাঁকে গ্রেফতার করে দণ্ডাবেরি পরিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। কিন্তু জেলের দেয়ালও তাঁর আন্দোলনের স্পৃহা থামাতে পারেনি। কারাগারে থেকেও তিনি জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখেন এবং আন্দোলনে তাদের অস্তিত্ব জানান দেন।
অবশেষে, তাঁর অবিচল নেতৃত্বের ফলস্বরূপ সরকারের সঙ্গে সমঝোতা হয়-অনেক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার পুনর্বাসনের সুযোগ পায়, বহু স্থানীয় বাসিন্দা কেএপিজেড প্রকল্পে চাকরির সুযোগ অর্জন করেন। যেখানে অন্য নেতারা এই আন্দোলনের নামে বিপুল অর্থ উপার্জন করেছিলেন, সেখানে এহসান এ. খান অর্জন করেছিলেন মানুষের ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা।
কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার দিনটি ছিল এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলার দশ হাজারেরও বেশি মানুষ ফুলের মালা ও ব্যানার নিয়ে তাঁকে বরণ করে নেন। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান ফটক খুলে দিতে হয় জনতার ঢল সামলাতে। সেই দৃশ্য ছিল এক মহোৎসবের মতো-জনগণের নেতা তাঁদের মাঝে ফিরে এসেছেন।
আজ, বিশ বছর পরও কেএপিজেড আন্দোলনের সেই অধ্যায় চট্টগ্রামের মাটিতে এক অনুপ্রেরণার প্রতীক। এহসান এ. খান আজও পরিচিত ‘মেহনতি মানুষের বন্ধু’ হিসেবে-যিনি ব্যক্তিগত ক্ষতির বিনিময়ে জনগণের ন্যায্য অধিকার আদায়ে লড়েছেন। তাই আজও অনেকেই বিশ্বাস করেন, চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা কর্ণফুলী) আসনে জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধি হিসেবে এহসান এ. খানের মতো সাহসী, নীতিবান ও মানবিক নেতৃত্বের প্রয়োজন—যিনি প্রমাণ করেছেন, রাজনীতি মানে কেবল ক্ষমতা নয়, জনগণের কল্যাণে কিভাবে প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হয়।
তৎকালীন কেইপিজেড আন্দোলন সম্পর্কে জানতে চাইলে এহসান এ. খান দৈনিক সকালের সময়'কে জানান, আমি কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য এই আন্দোলন করিনি। মানবতার তাগিদে আমার এলাকার নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়াতে আন্দোলনে যুক্ত হয়েছিলাম। তবে এটা ঠিক-ন্যায্য দাবি আদায় করতে রাজপথে নামার কারণে আমাকে তৎকালীন ক্ষমতাশালী ব্যক্তিদের ক্রোধের শিকার হতে হয়েছে এবং আমার পরিবারের উপরেও আক্রোশ তাদের।
তিনি আরও বলেন, নিজ দল সরকারে থাকা সত্ত্বেও আমাকে অমানবিক জুলুমের মুখোমুখি হতে হয়েছে। প্রায় প্রতিদিন পুলিশ আমার বাড়িতে এসে পরিবারকে ভয়-ভীতি দেখাত, সন্তানদের সঙ্গে বিরূঢ় আচরণ করত। শেষমেশ এক গভীর রাতে ডিবি পুলিশ আমাকে কর্ণফুলী সেতু থেকে গ্রেপ্তার করে আমার হাতে পায়ে ডাণ্ডাবেড়ি পড়িয়ে আদালতে তোলা হয়েছিল। আদালতে আমি অবাক হয়ে লক্ষ্য করি-আমাকে দেখতে হাজির হয়েছেন আনোয়ারা ও কর্ণফুলী (তৎকালীন পশ্চিম পটিয়া) উপজেলার হাজার হাজার জনতা। তাদের সরব উপস্থিতি আমার ও আমার পরিবারের মনে অফুরন্ত সাহস যুগায়।
আমাদের আন্দোলনের ফলস্বরূপ কিছু মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে, কিছু মানুষের ভিটেমাটি ও মসজিদ, মন্দির, গির্জা রক্ষা পেয়েছে-এটাই আমার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। আমি আশা করি, সেই মা, বাবা, ভাই ও বোনেরা আজও আমার ও আমার পরিবারের জন্য খাস দিলে দোয়া করেন। এর চেয়ে বেশি চাওয়ার কিছু নেই আমার।”
বড়উঠান ইউপির স্থানীয় বাসিন্দা ও কেইপিজেডে ভূমি অধিগ্রহনের ভূক্তভোগী হারুনুর রশিদ বলেন, ২০০২ সালের কেএপিজেড আন্দোলনের সময় আমার বাড়িঘর ও জমি হারানোর উপক্রম হয়েছিল। সেই কঠিন সময়ে এহসান এ. খান ভাইয়ের নেতৃত্বে যে গণআন্দোলন গড়ে উঠেছিল, তা আমাদের জীবন বদলে দিয়েছে। তাঁর সাহস ও নেতৃত্বের কারণেই আমরা আমাদের ভিটেমাটি রক্ষা করতে পেরেছি। আজ আমি ও আমার বড় ছেলে কেএপিজেডে কাজ করছি।“
এহসান ভাই শুধু সেই সময় নয়, পরবর্তীতেও ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত গণতন্ত্র ও ন্যায়ের পক্ষে চলমান আন্দোলনে সাহসিক ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে তিনি নির্ভয়ে রাজপথে নেতৃত্ব দিয়েছেন। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, চট্টগ্রাম-১৩ আসনের জন্য তিনি-ই সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী-একজন পরীক্ষিত, সাহসী ও জনবান্ধব নেতা, যিনি মানুষের জন্য নিজের সবকিছু উৎসর্গ করেছেন। তাঁর প্রতি আমার ও আমাদের এলাকার মানুষের চিরকৃতজ্ঞতা।
এমএসএম / এমএসএম
ঝিনাইদহে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১৫
চিকিৎসক সংকট ও অব্যবস্থাপনায় হাসপাতালই যেন রোগী
পটুয়াখালীতে টিউবওয়েল বসাতে গিয়ে মেলে গ্যাস, ছয় মাস ধরে জ্বলছে আগুন
পিরোজপুরে আফতাবউদ্দিন কলেজে নবীনবরণ ও বই বিতরণ অনুষ্ঠিত
ভূরুঙ্গামারীতে বন্যায় আগাম সতর্কবার্তা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সচেতনা বৃদ্ধি বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত
বাঁশখালীতে পরিত্যক্ত দোকান গৃহ থেকে এক যুবকের লাশ উদ্ধার
সন্দ্বীপে রেডিও স্টেশন স্থাপনে বাংলাদেশ বেতারের কর্মকর্তাদের আগমন, মতবিনিময় সভা ও স্টেশনের জন্য স্থান পরিদর্শন
কুড়িগ্রামের রাজারহাট-আনন্দবাজার পাকা সড়ক দ্রুত সংষ্কারের দাবিতে মানববন্ধন
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তারেক রহমানের নেতৃত্বে নারীদের উন্নয়নে কাজ করবে সরকারঃ মিঠু
কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সরিষা বীজ ও সার বিতরণ
আত্রাইয়ে মোটরসাইকেল চোরকে হাতেনাতে ধরে পুলিশের হাতে সোপর্দ
পাবনায় মাদকের টাকা না পেয়ে নামাজরত পিতাকে কুপিয়ে হত্যাঃ ছেলে আটক