ঢাকা শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫

শার্শায় ১৫ বাঁওড় দখল কর্মহীন ১ লাখ জেলে


সুমন হোসাইন, শার্শা photo সুমন হোসাইন, শার্শা
প্রকাশিত: ১৫-১১-২০২৫ দুপুর ৩:৩৪

যশোরের শার্শা উপজেলার ১৫টি বাঁওড় দখল করে প্রকৃত মৎস্যজীবীদের ভয়ভীত দেখিয়ে দূরে সরিয়ে রেখে বাওড় পরিচালনা করছেন প্রভাবশালীরা। এতে এ উপজেলার ১৫টি বাঁওড়পারের অন্তত সংশ্লিষ্ট ১ লাখ মৎস্যজীবী কর্মহীন হয়ে পড়েছে। বাঁওড়গুলো হলো-পাঁচুয়ার বাঁওড়, বাহাদুরপুর বাঁওড়, কন্যাদাহ বাঁওড়, সোনানদীয়া বাঁওড়, মহিষাকুড়া বাঁওড়,ছোটকোণা বাঁওড়, বড়কোণা বাঁওড়, ফুলসরা বাঁওড়, মুক্তাদাহ বাঁওড়, কালী বাঁওড়, মৌতার  বাঁওড়, রাজাপুর বাঁওড়, রাজগজ্ঞ বাঁওড়, জেওন বাঁওড় ও নেওড়ের বাঁওড়। 
জানা যায়, বাঁওড়পারের মৎস্যজীবীদের আত্ম-সামাজিক মানোন্নয়ন, পরিকল্পনা অনুযায়ী বাঁওড়ের বড় মাছের চাষ ও দেশীয় ছোট মাছের প্রজনন ঘটিয়ে নানা প্রজাতির মাছের চাহিদা মেটাতে মৎস্য মন্ত্রণালয় ১৯৭৯ সাল থেকে মৎস্য উৎপাদন শুরু করে। বাঁওড়গুলো ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকার কারণে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ানে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে মৎস্য মন্ত্রণালয় তখন থেকে মাছ চাষ শুরু করে। এখান থেকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতেন বাঁওড়পারের মৎস্যজীবীরা। ১৯৮৬ সালে বাঁওড়গুলো রাজস্ব খাতের আওতায় যশোর বিল-বাঁওড় মৎস্য উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে পরিচালিত হতে থাকে।
এ সময়ের মধ্যে আরো কয়েক দফা চুক্তি বৃদ্ধি করে ভূমি মন্ত্রণালয়। চুক্তি অনুযায়ী এখানে উৎপাদিত মাছের ৩৫ শতাংশ মৎস্য অধিদপ্তর, ২৫ শতাংশ ভূমি মন্ত্রণালয় ও মৎস্যজীবীরা পেত ৪০ শতাংশ। এ ছাড়া প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত রানি মাছের শতভাগই পেত বাঁওড়পারের মৎস্যজীবীরা। চার দশক ধরে বাঁওড়পারের মৎস্যজীবীদের আত্ম-সামাজিক মানান্নয়নে কাজ করে প্রকল্পটি।
জানা গেছে, ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মৎস্য মন্ত্রণালয়ের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে ভূমি মন্ত্রণালয় চুক্তি শেষ হওয়ার আগেই ২০২২ সালের নভেম্বরে স্থানীয় জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বাঁওড়গুলোর ইজারা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। তখন থেকে ইজারা প্রক্রিয়া শুরু করে জেলা প্রশাসন। জলমহাল ইজারা প্রদানের জন্য বিজ্ঞপ্তিতে নিবন্ধনকৃত ও প্রকৃত মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির আবেদনের কথা উল্লেখ করা হয়। মৎস্যজীবী নন এমন ব্যক্তিরা জোরপূর্বক বাঁওড়গুলো ইজারা নেয়। এদের মধ্যে অধিকাংশই রাজনৈতিক নেতারা।
বাঁওড় থেকে অধিক মুনাফার জন্য তাঁরা কৃত্রিম উপায়ে মাছ চাষ শুরু করেন। যখন ইচ্ছে তখন মাছ ছাড়েন ও ধরেন। স্বল্প সময়ে মাছ মোটাতাজা করার জন্য রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করতেন। ফলে দেশীয় মাছ ও জীববৈচিত্র বাঁওড়গুলো থেকে নষ্ট হয়ে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সমিতির সভাপতি জানান, আমার বাপ-দাদারা  বাঁওড় থেকে মাছ ধরেই সংসার চালিয়েছেন। আমিও এ পেশায় ছিলাম। এখন আমাদের বাঁওড় নেই। আমরা কর্মহীন হয়ে পড়েছি। শার্শার প্রতিটি বাঁওর এখন প্রভাবশালীরা চাষ করছেন। বিগত সরকারের আমলেও নেতাদের দখলে ছিলো। আমরা অসহায় কোন কিছু বলতে পরিনা,প্রতিবাদ ও করতে পারি না। প্রতিবাদ করলে আমাদের উপর হামলা মামলা হয়। রাজনৈতিক নেতারা এসব বাঁওর পরিচালনার কারনে হারিয়ে গেছে দেশীয় মাছ ও বাঁওরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক জেলে জানান, আমরা জেলে পরিবার। মাছ ধরা আমাদের পেশা। সেই পেশা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এখন আগের মত আর খাল বিলে মাছ পাওয়া যায় না। সরকার জাল যার জলা তার ঘোষনা দিলেও আমরা প্রভাবশালী লোকের কাছে ধরা। যখন যে ক্ষমতায় যায় তারা এসব বাঁওর দখল করে। তারা আমাদের জলমহলে নামতে দেননা মাছ ধরতে। আর আমরা অর্ধাহারে অনাহারে দিনাতিপাত করছি। সরকারের কাছে আবেদন শার্শার সকল বাঁওর  উন্মুক্ত করে আমাদের মাছ ধরার সুযোগ সৃষ্টি করে দিক। 
জেলেরা অভিযোগ করে জানান, শার্শা উপজেলায় ৩টি নদী, ১৫ বাঁওড়, ৫টি বিল ও ৭ টি খাল রয়েছে। কিন্তু স্থানীয় রাজনীতিবিদ ও দখলবাজরা এসব হাওর-বাওর-নদী ও বিল দখল করে প্রকৃত মৎস্যজীবীদের ইজারা থেকে বাদ দিয়ে ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সমিতির অবৈধ কাগজপত্র তৈরি করে বাঁওড়গুলো জোরপূর্বক দখলে নিয়েছে। এতে এ অঞ্চলের জেলে ও বাঁওড়পারের অন্তত ১ লাখ মৎস্যজীবী পরিবার কর্মহীন হয়ে পড়ে। অনেকে আবার এসব বাওর ও বিলের সরকারি জমি দখল করে ব্যাক্তিগত ঘের ও পুকুর তৈরি করে মাছ চাষ করছে। ফলে প্রকৃত মৎস্যজীবীরা হতদরিদ্র হয়ে পড়েছে। বেশিরভাগই জেলে ও মাৎসজীবীরা সংসার চালানোর জন্য এসব খাল-বিল ও বাঁওড়ে শামুক কুড়ানোর কাজ করে জীবীকা নির্বাহ করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিগত আ.লীগ সরকারের আমলে শার্শার প্রতিটি হাওর-বাঁওর ও বিল প্রভাবশালী নেতারা দখল করে চাষাবাদ করেছে। ৫ আগষ্টের পর আ.লীগের নেতা কর্মীরা এলাকায় নেই। ফলে গোপনে তাদের ইজারাকৃত এসব বাঁওরগুলো নামমাত্র ও অবৈধ স্টাম্পে পাওয়ার নিয়ে বর্তমান এলাকার প্রভাবশালী নেতারা পরিচারনা করছেন। সূত্র আরও জানায়, রাজনৈতিক প্রভাবের কারনে বছরের পর বছরধরে প্রকৃত মৎস্যজীবীদের নামমাত্র লোক দেখানো ইজারায় বাঁওড়গুলো থেকে বঞ্চিত এই উপজেলার ১ হাজার মাৎসজীবী পরিবার। 

এমএসএম / এমএসএম

পরিবর্তনের স্বপ্ন পূরণ করবে জাতীয় নাগরিক পার্টি : আসাদুল ইসলাম মুকুল

মাদারীপুর-৩ আসনে খোকন তালুকদারের গণজাগরণ, বালিগ্রামে দুই ওয়ার্ডে নতুন কমিটি

জুড়ীতে কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত

রাঙ্গামাটিতে বাজার ফান্ডের ভুমি হস্তান্তর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম

লাকসামে ফেয়ার হেলথ্ হসপিটালের দেড়যুগ পূর্তি পালিত

জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার বার্ষিক সভা ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের মাঝে অনুদান বিতরণ

আদমদীঘিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমিতির নির্বাচিত কমিটির অভিষেক

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে একটি গোষ্ঠীঃ আমির খসরু চৌধুরী

ধানের শীষের পবিত্রতা রাখতে হবেঃ আবুল কালাম

এ যেনো এক বালু খেকো রাক্ষসের থাবা ,মনপুরা কেটে মনপুরা কে বুঝ দেওয়া হচ্ছে

গাজীপুর-২ আসনে ধানের শীষের মহাসমাবেশে জনতার ঢল

হাটহাজারীতে শীত মৌসুমের শুরুতেই শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে আশঙ্কাজনকভাবে

শার্শায় ১৫ বাঁওড় দখল কর্মহীন ১ লাখ জেলে