সিলেট ডিসি অফিসের কোটিপতি পিয়ন সোহেল
সিলেটে ডিসি অফিসে কর্মরত অফিস-সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক (রাজস্ব শাখা) মোঃ সোহেল আহমদের কাছে ১৭ বছর থেকে জিম্মি হয়েছেন জেলার মৎসজীবি সমবায় সমিতি ও জেলে সম্প্রদায়ের মানুষজন। সিলেট নগরীর খাসদবিরের সৈয়দ মুগনি তরংগো ৪/৩৭ এর বাসিন্ধা মৃত আব্দুল হাশেমের ছেলে সোহেল আহমদ। এই কয়েক বছরে তিনি হয়েছেন শতকোটি টাকার মালিক। গড়েছেন বিশাল সম্পদের পাহাড়। সিলেট জেলার সব কয়টি বিল ও জলমহালের ইজারা প্রদান করে জেলা প্রশাসকের রেভিনিউ শাখা। সেই শাখা একক নিয়ন্ত্রণ করেন অফিসের পিয়ন সোহেল আহমদ। তিনি এই শাখা কর্মরত থাকা অবস্থায় সরকারি বিল-জলমহাল ইজারার নামে এবং বিভিন্ন মামলা দেখিয়ে খাসকানেকশনের মাধ্যমে নিজে সম্পদের পাহাড় গড়ে গড়েন। ডিসি অফিসের একাধিক সূত্র জানিয়েছেন, এই রেভিনিউ শাখা থেকে সোহেল ঘুষ ও দূর্নীতি মাধ্যমে প্রায় শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। সোহেলের কাছে অফিসের বড়কর্তারাও জিম্মি হয়ে আছেন। বিগত ২০১৭ সালে বিভিন্ন দূর্নীতির অভিযোগে দুদকের একটি টিম সিলেট ডিসি অফিসে অভিযান চালায়। সেই টিমের উপর হামলা করে সোহেলসহ অফিসের কর্মচারীরা। এ সময় দুদকের অভিযানিক টিমকে উদ্ধার করতে গেলে কোতয়ালী থানার তৎকালীন ওসি সেলিম মিয়া মারাত্বক আহত হন।
পরে ডিসি অফিসের অফিস সহকারী আজিজুর রহমানকে ঘুষের টাকাসহ গ্রেফতার করে দুদক। এরপর থেকে অনেক ডিসি রদবদল হলেও সোহেলরা রয়েছেন বহাল তবিয়তে।
সর্বশেষ চলতি বছরের অক্টোবর মাসে সিলেট জেলার ৭৮টি মামলাভুক্ত বিল-জলমহালের তালিকা দিয়ে খাসকানেকশনের জন্য দরপত্র আহবান করা হয়। এ তালিকায় এমনও বিল রয়েছে কেবল কাগজে কলমে বিল উল্লেখ থাকলে বিলের অনেকাংশ বেদখল হয়ে আছে। আর এসব বিলের বেশীর ভাগ জমির বেদখলের নেপথ্যের কারিগর এই সোহেল আহমদ। চলতি বছরে মামলাভুক্ত দেখিয়ে যে সে সকল বিলের জন্য দরপত্র আহবায়ন করা হয়েছে সেই সকল বিল সঠিক ভাবে ইজারা দিলে প্রতি বছরে সরকার ২০ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় সম্ভব বলে মন্তব্য করে অনেক মৎজীবি সমিতির সদস্যরা। এমনও দেখা গেছে ১৯৯৮ সাল থেকে এসব বিল নিয়ে মামলা চললে মামলা নিষ্পত্তির কোন উদ্দ্যেগ গ্রহণ করেননি বিগত আমলের কোন জেলা প্রশাসক। কারণ এই সোহেলই সব নাটের গুরু হয়ে মামলাগুলোর কলকাটি নাড়েন। মামলা ভুক্ত দেখিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও সমিতির সাথে আতাঁত করে এসব বিল-জলমহালে নামমাত্র মূল্যে খাসকানেকশন আদায় করা হচ্ছে। এসব সমিতির সাথে সরাসরি সোহেল জড়িত হয়ে লিজ দিয়ে বছরে কোটি টাকা হাতিয়েছেন সোহেল আহমদ। সবকিছু ঠিকটাক থাকলেও সঠিক দরদাতাদের কোন বিল ইজারা দেওয়া হয়না। যে সকল সমিতি বা প্রতিষ্টান সোহেলকে খুশি করতে পারেন। সে সকল সমিতি এসব বিল ইজারা বা লিজ পেয়ে থাকেন। এমন ভানুমতির খেলা চলে সিলেট ডিসি অফিসের রেভিনিউ শাখায়। অনেক ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, যে সকল ইজারাদার সমিতি সোহেলের বিরুদ্ধে গিয়ে বিল বা জলমহাল ইজারায় অংশ গ্রহণ করেন। তারা বেশী দাম দিলেও এসব সমিতি বিল বা জলমহালের ইজারা পায়না। ইজারা পায় এ সকল সমিতি যারা সোহেলের সাথে গোপনচুক্তি করে তাকে একটি অংশ বা শেয়ারসহ পাশাপাশি নজরানা দিয়ে খুশি করতে পারেন। নতুবা বিভিন্ন অযুহাতে সঠিক বা বেশী দরদাতা সমিতির দরপত্র গায়েবসহ বাতিল হয়ে যায় মুদ্রাক্ষর ভুল দেখিয়ে।
সম্প্রতি সিলেট জেলা প্রশাসনের তালিকায় রয়েছে জেলার ৭৮ টি বিল ও জলমহাল। এ তালিকায় যে সকল বিল ও জলমহাল মামলা ভুক্ত দেখানো হয়েছে জেলা প্রশাসক অফিস চাইলেই এ সমস্যা বা মামলা মাত্র এক বছরে নিষ্পত্তি সম্ভব ছিলো। কিন্ত তা সম্ভব হয়নি শুধু মাত্র সোহেলের জন্য। এদিকে বিভিন্ন অভিযোগে এ পর্যন্ত পর-পর তিন বার রেভিনিউ শাখা থেকে অন্যত্র বদলী করা হলেও সপ্তাহের ভিতরে আগের জায়গায় ফিরে আসেন সোহেল। কারণ যেখান মধুর হাড়ি সেখানেই সোহেলের মামার বাড়ি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, শুধু মাত্র সিলেট শহরতলীর পাশ্ববর্তী গোলাপগঞ্জ উপজেলার মুরাদপুর এলাকার শৈলশ্বর ও বিলডুবা নামের দুটি সরকারি বিল রয়েছে। দুটিবিলে সরকারি কাগজে কলমে মোটভুমির পরিমান যথাক্রমে শৈলেশ্বর বিল ১৫০.৩ একর, বিলডুবায় আছে ১০৫ একর জমি। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, বিলের জমির অর্ধেক জবর দখল করে নিয়েছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। প্রতি বছর শুধু শৈলেশ্বর বিলের বিভিন্ন প্রান্তে গর্ত করে কোটি টাকার মাটি বিক্রি করে বিলের আকৃতি পরিবর্তন করে ফেলেছে স্থানীয় নুরুল, রিপন, হিলালসহ প্রভাবশালীরা। কিন্তু বিগত ২০১১ সাল থেকে শৈলেশ্বর বিল ইজারা আর খাসকানেশনের খেলায় সোহেল হাতিয়ে নিয়েছে কোটি টাকা। বেহাত হয়েছে দুটি বিলের প্রায় ৫০ একর জমি। স্থানীয় কয়েকটি মৎসজীবি সমিতির সদস্যদের সাথে হলে তারা জানান, ২০১১ সালে শৈলেশ্বর ও বিলডুবা বিল দুটি ইজারার জন্য দরপত্র দাখিল করে নিকটবর্তী তড়ুকবাগ গ্রামের আশার আলো মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি। কিন্তু বেশী দাম দেওয়ার পরও বিলগুলো উক্ত সমিতিকে না দিয়ে ইজারা দেওয়া দেওয়া হয় দূরবর্তী খালোপার গ্রামের প্রত্যাশা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি ও খালোপার মৎস্যজীবি সমবায় সমিতিকে। এই দুটি বিল ইজারা নিয়ে টানা তিন বছর দুটি বিলে সেচ দিয়ে শুকিয়ে মৎস্য আহরণ করে এ দুটি। এই তিন বছরে সরকারে গচ্ছা হয় প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার রাজস্ব। তৎকালীন ডিসি খান মোহাম্মদ বিলাল বিষয়টি নিয়ে অনুতপ্ত হয়ে ছিলেন। সেই সময় থেকে শুরু হয় শৈলেশ্বর বিলের জমি ও মাটি লুটপাট। পূবাঞ্চল সেনানিবাস চট্টগ্রামের নামে উক্ত দুটি বিলের দখল নেয় সিলেট সেনানিবাসের পাবলিক শাখার (কোম্পানীর অধিনে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারী) সেলিম আহমদ, নলু গ্রামের মৃত মতিন মিয়া, খালোপার গ্রামের আশরাফুল ইসলাম টিয়া। এই তিনজন সেনাবাহিনীর নাম ভাঙ্গিয়ে দুটি বিল বিক্রি করে খালোপার গ্রামের মন্টু মিয়ার কাছে। তার কাছ থেকে ১২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। পরে ২য় দফায় আবার এইচক্র দুটি বিল ৬লাখ টাকায় বিক্রি করে খালোপার গ্রামের ওসমান মেম্বারে কাছে। যদিও বাধ্য হয়ে মন্টুর টাকার বদলে একটি চেক প্রদান করে মন্টুকে। ঐ একাউন্টে কোন টাকা পাননি তিনি মন্টু। একই সময়ে উক্ত দুটি বিল ইজারা নিতে ডিসি অফিসে দরপত্র জমা দেয় তুড়ুকবাগ গ্রামের আশার আলো সমবায় সমিতি। কিন্তু বিভিন্ন অযুহাতে সেই সমিতিকে আর বিল দুটি ইজারা দেওয়া হয়নি। আবার ২০১৭ সালে একক ভাবে দুটি বিল ইজারা নিতে দরপত্র জমা দেয় সেই আশার আলো মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি। ইজারাকাল উক্ত সমিতি একক অংশগ্রহণকারী হলেও তাদেরকে ইজারা দেওয়া হয়নি শৈলেশ্বর-বিলডোবা বিল। কিন্তু একই বছরে সোহেল আহমদের সাথে আতাঁত করে কৌশলে বিলডোবা বিলটি ইজারা নেয় গোলাপগঞ্জ উপজেলার শরিফগঞ্জ ইউনিয়নের রাংজিওল বরোদল মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি। আশ্চর্যজনক হলেও সত্য সেই সমিতির ইজারাপ্রাপ্তীর কাগজে দেখা যায়, মজিদপুরের হিলাল আহমদের মোবাইল নাম্বার দেওয়া হয়েছে, প্রমান হয় জালিয়াতির মাধ্যমে উক্ত সমিতির নামে বিলটি ইজারা দেওয়া হয়েছে। অথচ এই সমিতির দূরত্ব বিল থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার কুশিয়ারা নদীর ওপারে অবস্থান। এ সময় আশার আলোর পক্ষ থেকে সোহেল আহমদের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি এই সমিতির সভাপতি ও সাধারণকে একটি কাগজ ধরিয়ে দেন, যেখানে লেখা রয়েছে, শৈলেশ্বর ও বিলডোবা দুটি বিল অকৃষি হিসাবে শ্রেণী পরিবর্তন হয়ে গেছে এবং “চট্টগ্রাম সেনানিবাস পূর্বাঞ্চল” ৯৯ বছরের জন্য লিজ নিয়েছে। এ রকম কয়েকটি কাগজ এপ্রতিবেদক সংগ্রহ করেন। পরে আশার আলো সমিতি এই বিষয়ে মহামান্য হাইকোর্টে রিট মামলা করলে তৎকালীন জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার একটি প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় ও আদালতকে জানিয়েছিলেন, এ সংক্রান্ত কোন চিটি বা আদেশ তিনি পাননি। সেনানিবাসের নামে বন্দোবস্তের কাগজটি ভুয়া। এই কাগজটি সোহেলের যোগসাজসে সৃজন করে কতিপয় একটি চক্র। যা দিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বোকা বানানো হয়েছিলো। এরপর দুটি বিলের মধ্যে বিলডুবা ইজারা দেওয়া হয় খালোপার মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির অনুকুলে আর শৈলেশ্বর বিলটি ইজারা দেওয়া হয় একই গ্রামের দিশারী মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির অনুকুলে। অথচ এই দুটি সমিতির সকল কাগজপত্র জাল ও জালিয়াতীর মাধ্যমে সৃজনকৃত যা তৈরী করতে সার্বিক ভাবে সহযোগীতা করেন সোহেল নিজে। অথচ আশার আলো মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি নিয়ম মাফিক দরপত্রের সাথে রাষ্ট্রিয় কোষাঘারে টাকাও জমা দেয়। তখন নাকি সোহেল দাবী করেছিলেন, যদি দুটি বিল আশার আলো মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি ইজারা নিতে হয় তাহলে প্রতিবছর তাকে ৫০% শেয়ার দিতে হবে। চলতি বছরে শৈলেশ্বর বিলটি ইজারা প্রদানের জন্য ডিসি অফিস দরপত্র আহবান করলে, সেখানেও অংশ নেয় খালোপার গ্রামের প্রতিশ্রুতি মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি। সকল নিয়ম মেনে তারা দরপত্র জামা প্রদান করেছেন। একই ভাবে আবারও সোহেলের যোগসাজসে জাল-কাগজ সৃজন করে ইজারায় অংশ নিয়েছে সেই আলোচিত দিশারী মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি খালোপার। তবে এখানে দেখা যায়, প্রতিশ্রুতি মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি সর্বচ্চ দরদাতা। কিন্তু সোহেলকে ম্যানেজ করে নিয়েছে দিশারী মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি। সর্বনিম্ন দরদাতা হলেও সোহেল বিলটি তাদের অনুকুলে লিজ দিতে কাজ করে যাচ্ছেন গোপনে। কারণ দিশারী মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সাথে সোহেল রয়েছেন ২৫% অংশিদার।
একই ভাবে সিলেট সদরের সর্বানন্দ মৌজা অবস্তিত ২৮৪.০৭ একরের মেলান বিল। এ বছর ইজারা মূল্য ধরা হয়েছে মাত্র ৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা। কিন্তু এ বিলটিতে ১৯৯৮ সাল থেকে মামলাভুক্ত দেখনো হয়েছে। যদিও বিগত ২০০৬ সাল থেকে বিলটি ছিলো আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম নাদেলের দখলে। বিগত ২০২৪ সালের ৫ আগষ্টের পর বিলটি দখলে নেয় আরেকটি চক্র। এই বিলটি সঠিক ভাবে ইজারা দিলে প্রতি বছর সরকার ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় সম্ভব। এ বিলের পাশ্ববর্তী ৮৮০৫১ একরের মাকুলি বিল। এ বছর দর হাকা হয়েছে ৬ লাখ ৬২.২২০ টাকা। বাস্তবে বিলের ৭৫ % জমি বিভিন্ন ব্যক্তি দখল করে নিয়েছে। ফলে এ বিলটির আকৃতি বদল করে ফেলা হয়েছে। ডিসি অফিস, সেই তালিকা অনুযায়ী প্রায় ৪০ টি বিল পরিদর্শন করে দেখা গেছে সরকারের শত শত একর জমি বেহাত হয়ে গেছে। এসব বিল ও জলমহাল থেকে সরকার হারাচ্ছে বিশাল অংকের রাজস্ব। কৌশলে অফিসের পিয়ন সোহেল হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।
সদর উপজেলার হাটখলা ইউনিয়নে হাকুলি-মাকুলি জলমহাল। এবার দরহাকা হয়েছে ৬ লাখ টাকায়। কাগজে কলমে বিলটি বিগত বছরে হাটখলা সোনারবাংলা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি সদর সিলেটের অনুকুলে ৪ বছরের জন্য ইজারা দেওয়া হয় ৮ লাখ টাকা করে। পরের ২ বছর আরো ২৫% বৃদ্ধি করা হবে। কিন্তু সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, এটি সম্পন্ন ভুয়া লিজের কাগজ। বিগত বছর বিলটি খাসকানেশনের মাধ্যমে লুটপাট করা হয়েছে। চলতি বছরে বিলটি আবার খাসকানেকশনের জন্য দরহাকা হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে যদি বিলটি ৬ বছরের জন্য লিজ দেওয়া হয়। তাহলে আবার বছরের-বছরের খাসকানেকশনের জন্য কেন দরহাকা হচ্ছে।
সিলেট জেলার দক্ষিণ সুরমার উপজেলার হাওয়াচেরা বিলটি ইজারা প্রদানে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগের শেষ নেই। এ বিশাল বিলের আয়তন ৮০.৩০ একর। ২০২৩ সালে সেই বিলে খাসকানেকশন হয়েছে ১১ লাখ টাকা। পরের বছর ২০২৪ সালে সেই বিল ইজারা দেওয়া হয় মাত্র ৫ লাখ টাকায়। বিলটি ইজারা পায় স্থানীয় প্রত্যাশা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করে বসে, স্থানীয় নতুনকুড়ি মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি ও গোপালগাঁও মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি। সেখানে সোহেলের যোগসাজসের কথা স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়। এই বিল নিয়ে চলতি বছরের ৮ জানুয়ারী ২০২৫ ইং তারিখে মহামান্য হাইকোর্টে একটি রিটপিটিশন মামলা দায়ের করেন নতুন কুড়ি মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির প্রতিনিধি মোগলাবাজার থানার গোপালগাও গ্রামের মৃত রইছ আলীর পক্ষে লেবু মিয়া। যাহার মামলা নং-৪০১/২০২৫ ইং। উক্ত মামলায় উল্লেখ করা হয় সিলেট জেলা প্রশাসক অফিসের পিয়ন সোহেল ও কর্মকর্তারা সকলের যোগসাজসে দীর্ঘদিন থেকে জেলার জলমহাল-বিল ইজারা ও খাসকানেকশনের নামে লুটপাট চালিয়ে আসছে। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। এবারও সেই বিল ইজারা দরহাকা হয়েছে মাত্র ৫ লাখ টাকা।
গোয়াইনঘাট উপঝেরার নিজাইল খাড়াঢিগাগ্রুপ জলমহালের জমির পরিমান ৪শ ৫৪ একর জমির বিলটি ইজারা নিতে স্থানীয় ৩টি সমিতি অংশ নেয়। কিন্তু বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে উন্নয়ন প্রকল্পে লিজ না দিয়ে ইজারার জন্য দরপত্র আহবান করেন তিন বছরের জন্য। এ সময় সোহেল প্রায় ২০ লাখ টাকা ঘুষ নেন বলে অভিযোগ উঠে। কিন্তু এই বছর সেই বিলের জমির পরিমান দেখানো হয়েছে মাত্র ২শত ৯০ একর জমি। বিলের অবশিষ্ট জমি জনৈক ব্যক্তিকে কন্ট্রাকে বন্দোবস্ত দিয়েছেন সোহেল কিন্তু সেই জমিগুলো সরকারি ১নং খতিয়ানের অর্ন্তভুক্ত।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ জাতীয় মৎস্যজীবি সমিতির সিলেট জেলার প্রতিনিধি নুরুল ইসলাম জানান, সিলেট জেলার প্রতিটি জলমহাল-বিল ইজারা প্রদান ও খাসকানেকশনের নামে ব্যাপক লুটপাট করছেন ডিসি অফিসের পিয়ন সোহেল আহমদ। জেলার মামলাভুক্ত ৭৮টি বিল ও জলমহালকে মামলা ভুক্ত থাকলেও এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা জেলা প্রশাসন অফিস। যাহা চাইলেই জেলা প্রশাসন মাত্র একবছরের মধ্যে মামলাগুলো নিষ্পত্তি সম্ভব বলে আমি মনে করি।
বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জোরদাবী জানান তিনি।
এব্যাপারে জেলার একাধিক মৎস্যজীবি সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে আলাপকালে জানা যায়, সোহেল আহমদকে টাকা দিলে সমিতির কাগজপত্র সঠিক না থাকলেও ভুয়া সমিতি দিয়ে বিল বা জলমহাল ইজারা পায়। আর সোহেলকে ম্যানেজ করতে না পারলে সমিতির কাগজপত্র সঠিক থাকলেও বিল-জলমহাল কোনটিরই ইজারা বা বন্দোবস্ত মিলেনা। দরপত্র জমা দিতে যদি কোন সমিতির কোন একটি মাদ্রাক্ষরিক ভূল হয়ে যায়, সেই অযুহাতে সর্বচ্চ দরদাতা সমিতিও ইজারা থেকে বাতিল হয়ে যায়। পরে সেখানো নতুন করে দেখানো হয় সোহেলের সাথে চুক্তিকরা অপর আরেকটি সমিতিকে। যেটি কোন নিয়মনীতি ছাড়া বিশাল-বিশাল বিল -জলমহাল ইজারা, লিজ, বন্দোবস্ত পেয়ে যায়। সমিতির নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করে বলেন, জেলা প্রতিটি বিলে সোহেলের একটি কমিশন থাকে। খাসকানেকশনের জন্য যে সকল সমিতির অনুকুলে বিলগুলো ইজারা দেওয়া হয় সেই সকল বিলগুলোর কাগজপত্র সঠিক না থাকলেও সোহেল ম্যানেজ হলে ইজারা পায় সেই সকল মৎস্যজীবি সমিতি।
যদিও সম্প্রতি সিলেট জেলা প্রশাসক মো. সরোওয়ার আলম স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন নিজের অফিসসহ জেলার বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্টানের দূর্নীতি, ঘুষ ও অনিয়ম ধরতে নিজের অফিসের সামনে একটি অভিযোগ বক্স স্থাপন করবেন। সেখানে যে কোন ব্যক্তি অভিযোগ করতে পারবেন। অভিযোগকারীর নাম পরিচয় গোপন রেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রশ্ন হচ্ছে, তবে কি সিলেটের বর্তমান জেলা প্রশাসক সরোওয়ার আলম এবার নিজের অফিসের এই দূর্নীতিবাজ পিয়নের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। পাশাপাশি প্রদক্ষেপ নিবেন জেলার মামলাভুক্ত বিলগুলোকে মুক্ত করার।
এমএসএম / এমএসএম
রায়গঞ্জে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ছাত্র প্রতিনিধিকে মারধরের অভিযোগ
ওসমান হাদীর ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে কুমিল্লায় বিএনপির বিক্ষোভ
পঞ্চগড়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিশুস্বর্গের শীত আনন্দ উৎসব
হাদিকে প্রকাশ্য গুলি করার রাজস্থলীতে বিএনপির উদ্যােগে বিক্ষোভ সমাবেশ
ওসমান হাদির উপর গুলি চালানোর প্রতিবাদে বরগুনায় বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়কের ওপর গুলি: সীমান্তে টহল ও চেকপোস্ট জোরদার
সিলেট ডিসি অফিসের কোটিপতি পিয়ন সোহেল
শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন করতে চাই : জেলা প্রশাসক কাজী মো: সায়েমুজ্জামান
কোম্পানীগঞ্জে উদয় এইড ফাউন্ডেশনের বৃত্তি পরীক্ষায় ৪৫০ শিক্ষার্থীর হাতে বৃত্তি ও পুরস্কার
বারহাট্টার প্রকৃতিতে জেঁকে বসছে শীত, জমে উঠেছে শীতবস্ত্রের বেচাকেনা
টপ সয়েল কাটায় রায়পুর প্রশাসনের অভিযানে ছয় মাসের কারাদণ্ড
কুতুবদিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ল্যাবে ইভনিং শিফট চালু