তাড়াশে তাল গাছের তাল না হতেই বেতাল
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে তাল গাছের তাল না হতেই বেতাল হচ্ছে। তাড়াশ হতে ভূঁইয়াগাতী ১৫ কিলোমিটার সড়ক ঐতিহাসিক তাল সড়ক নামে পরিচিত। এই সড়কে তাল গাছ রোপণ করেছিলেন ১৯৭৫ সালে মাধাইনগর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা গাজী আব্দুর রহমান। তাল গাছের সারিতে এই সড়কের সৌন্দর্য মানুষের চোখে পড়ার মতো বটে। প্রতি বছরই এসব গাছের তাল শুরুতেই ডাব তাল হিসেবে পেড়ে শেষ করে দেয় এলাকার যুবক ছেলেরা।
সরেজমিন দেখা যায়, প্রতিদিনই তাল পারার ধুম পড়ে। মনে হয় তাল পাড়ার মহোৎসব শুরু হয়েছে। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, জোর যার মুল্লক তার। এখন এলাকার এক শ্রেণির তালখেকো যুবকরা তাল পাড়তে মরিয়া হয়ে উঠেছে। সেই সাথে এ বছর যুক্ত হয়েছে মৌসুমি ডাব তাল বিক্রেতারা। বাজারে ডাব তালের বেশ চাহিদা রয়েছে। উঁচু তাল গাছে বাঁশ লাগিয়ে গাছে উঠছে আবার অনেকে বাঁশ ছাড়াই গাছে উঠে ডাব তালের কাঁধি কেটে দড়ির সাহায্যে মাটিতে নামিয়ে আনছে। মাটিতে দাঁড়িয়ে থেকে ওই তাল সংগ্রহ করছে আরেকজন। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলে ওই ডাব তাল পাড়ার উৎসব। সেই সাথে এক শ্রেণির ডাব তাল বিক্রেতা রাতের আঁধারে তাল পেড়ে শহরের মহাজনদের কাছে বিক্রি করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এলাকার জনগণ সরকারের কাছে এর প্রতিকারের দাবি জানিয়েছেন।
ভাদাশ গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি আকবর আলী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, চেয়ারম্যান আব্দুর রহমানের আহ্বানে আমরাই তাল গাছ রোপণ করেছিলাম। আর ওই তাল যখন গাছ থেকে পাড়ে তখন খুব কষ্ঠ হয়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী আব্দুর রহমান মিয়া বলেন, আমি বয়ঃবৃদ্ধ মানুষ। আমার কথা আর কেউ শোনে না। যতদিন আমার শরীর ভালো ছিল আমি প্রশাসনের তোয়াক্কা করিনি। আমি আমার সন্তানের মতো তাল গাছকে রক্ষা করার চেষ্টা করেছি। এই সরকারি গাছগুলো রক্ষা করার দায়িত্ব উপজেলা প্রশাসনের।
উপজেলা কৃষি কমৃকর্তা লুৎফুন নাহার লুনা জানান, তাল গাছ থেকে ডাব তাল পাড়লে পরবর্তী বছর তাল কম ধরবে এবং পাকা তালের চাহিদা পূরণ হবে না। আমাদের অফিস থেকে এর নজরদারি করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান মনি জানান, রাস্তা ও তাল গাছগুলো জেলা পরিষদের হলেও আমি তালগুলো রক্ষা করার চেষ্টা করব।
এমএসএম / জামান