ঢাকা বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৫

আইন মানা হয় না জবির আইন বিভাগে


ইউছুব ওসমান, জবি  photo ইউছুব ওসমান, জবি
প্রকাশিত: ৪-১১-২০২১ দুপুর ১২:০

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) আইন অমান্য করে টানা চার মেয়াদে বিভাগীয় চেয়াম্যানের পদ ধরে রেখেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. সরকার আলী আক্কাস। টানা ১২ বছর ধরে চেয়ারম্যান পদে নিয়োজিত থাকার পর আবারও পঞ্চমবারের মতো চেয়ারম্যান হয়েছেন তিনি। এভাবে দীর্ঘমেয়াদে চেয়ার‌ম্যান থাকায় স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব তৈরি হয়েছে বিভাগটিতে। বিভাগটিতে দীর্ঘদিন ধরে একজন অধ্যাপকের পদ ফাঁকা থাকলেও আধিপত্য ধরে রাখতে অধ্যাপক নিয়োগের জন্য কখনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে চাহিদাপত্রও দেননি তিনি।

জানা যায়, ২০০৯ সালের ১ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকেই বর্তমান সময় পর্যন্ত একাধারে ১২ বছর ধরে আইন বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন ড. সরকার আলী আক্কাস। বর্তমানে বিভাগটিতে আরো দুজন সহযোগী অধ্যাপক আছেন কিন্তু তাদের মধ্য থেকে কাউকেই এখন পর্যন্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া হয়নি। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে বলা হয়েছে, ‘বিভাগে অধ্যাপক না থাকলে সহযোগী অধ্যাপককে চেয়ারম্যানশিপ দিতে হবে।’ বিভাগে নিজের আধিপত্য ধরে রাখতে আইনের তোয়াক্কা না করে দীর্ঘদিন যাবৎ চেয়ারম্যান পদ আঁকড়ে রয়েছেন তিনি।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন (২০০৫)-এর ২৪ নম্বর ধারার ২ নম্বর উপধারায় বলা আছে, ‘বিভাগীয় অধ্যাপকদের মধ্য হইতে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পালাক্রমে তিন বৎসর মেয়াদে ভাইস চ্যান্সেলর কর্তৃক বিভাগীয় চেয়ারম্যান নিযুক্ত হইবেন।‘ ২৪ নম্বর ধারার ৩ নম্বর উপধারায় বলা আছে, ‘যদি কোনো বিভাগে অধ্যাপক না থাকেন তাহা হইলে ভাইস চ্যান্সেলর সহযোগী অধ্যাপকদের মধ্য হইতে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পালাক্রমে একজনকে বিভাগীয় চেয়ারম্যান নিযুক্ত করিবেন। তবে শর্ত থাকে যে, সহযোগী অধ্যাপকের নিম্নের কোনো শিক্ষককে বিভাগীয় চেয়ারম্যান পদে নিযুক্ত করা যাইবে না। আরো শর্ত থাকে যে, অন্যূন সহযোগী অধ্যাপক পদমর্যাদার কোনো শিক্ষক কোনো বিভাগে কর্মরত না থাকিলে সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রবীনতম শিক্ষক উহার চেয়ারম্যান হইবেন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন অনুযায়ী, ‘বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক থাকায় তিনি পুনরায় বিভাগের চেয়ারম্যান হতে পারেন না।’ কিন্তু ড. সরকার আলী আক্কাস আইন অমান্য করে পুনরায় বিভাগের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হয়েছেন।

এদিকে পরপর দুই মেয়াদে ডিনের দায়িত্ব পালনের নিয়ম না থাকলেও তিনি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ভঙ্গ করে পরপর তিনবার ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১২ সালের ৯ মে থেকে ২০১৮ সালের ৮ মে পর্যন্ত ডিনের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর চতুর্থবার ডিন হতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক খ্রীষ্টিন রিচার্ডসন উপাচার্য বরাবর অভিযোগ করলে সরকার আলী আক্কাস ডিন হতে ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে দুই বছর পর চতুর্থবার পুনরায় তিনি ডিন হিসেবে দায়িত্ব পান। বিশ্ববিদ্যালয় আইনের (২০০৫) ২২ নম্বর ধারার ৫ নম্বর উপধারায় বলা আছে, ‘ভাইস চ্যান্সেলর সিন্ডিকেটের অনুমোদনক্রমে প্রত্যেক অনুষদের জন্য উহার বিভিন্ন বিভাগের অধ্যাপকদের মধ্য হইতে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পালাক্রমে দুই বৎসর মেয়াদের জন্য ডিন নিযুক্ত করিবেন। তবে শর্ত থাকে যে, কোনো ডিন পরপর দুই মেয়াদের জন্য নিযুক্ত হইতে পারিবেন না। আরো শর্ত থাকে যে, কোনো বিভাগে অধ্যাপক না থাকিলে সেই বিভাগের জ্যেষ্ঠতম সহযোগী অধ্যাপক ডিন পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হইবেন এবং কোনো বিভাগের একজন অধ্যাপক ডিনের দায়িত্ব পালন করিয়া থাকিলে ওই বিভাগের পরবর্তী পালাসমূহে অবশিষ্ট অধ্যাপকরা জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে ডিন পদে নিযুক্তির সুযোগ পাইবেন। আরো শর্ত থাকে যে, একাধিক বিভাগে সমজ্যেষ্ঠ অধ্যাপক অথবা সহযোগী অধ্যাপক থাকিলে সেক্ষেত্রে তাহাদের মধ্যে ডিন পদের আবর্তনক্রম ভাইস চ্যান্সেলর কর্তৃক নিদিষ্ট হইবে।’

বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী, আইন অনুষদের দুই বিভাগে আরো তিনজন সহযোগী অধ্যাপক থাকার পরও নিয়ম অনুযায়ী তাদের মধ্য থেকে নিয়োগ না দিয়ে সরকার আলী আক্কাসকে চতুর্থবারের মতো ডিন হিসেবে নিয়োগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ১৭(২) ধারায় সুস্পষ্ট উল্লেখ আছে, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সকল দায়িত্বের জন্য আর্থিক সুবিধা প্রদান করা যাইবে সেই সকল দায়িত্বের মধ্য হইতে একসঙ্গে একাধিক দায়িত্ব কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে প্রদান করা যাইবে না।’ এক্ষেত্রেও সরকার আলী আক্কাস আইন অমান্য করেছেন। একই সঙ্গে তিনি বিভাগের চেয়ারম্যান এবং অনুষদের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

এ বিষয়ে ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগের চেয়ারম্যান খ্রীষ্টিন রিচার্ডসন বলেন, এ আইন অনুষদের ডিন বিষয় নিয়ে আমি একবার অভিযোগ করেছিলাম। তখন বিষয়টি সমাধান করেছিলেন উপাচার্য স্যার। যেহেতু এটা বিভাগের অভ্যন্তরীণ বিষয়, শিক্ষকরা চাইলেই সমাধান করতে পারবেন।

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সরকার আলী আক্কাস বলেন, নিয়োগ তো আমি দেই না, বিশ্ববিদ্যালয় দেয়। আর বিশ্ববিদ্যালয় আইন মেনেই নিয়োগ দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক বিভাগে এভাবেই চলছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী তিনি চেয়ারম্যান হয়েছেন। সহযোগী অধ্যাপক থাকার পরেও তিনি কিভাবে চেয়ারম্যান হলেন- জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলতে বলেন।

বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর থাকলে তিনিই চেয়ারম্যান হবেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ২৪ নম্বর ধারার ২ ও ৩ উপধারার কথা বললে তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে জানান।

এমএসএম / জামান

শিক্ষার্থীদের অধিকার ও রেজিস্টারের পদত্যাগের দাবিতে চবি ছাত্রদলের বিক্ষোভ৷

সামুদ্রিক শৈবাল দিয়ে পুষ্টিকর স্যুপ উদ্ভাবন শেকৃবির গবেষকের

প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের শাহবাগ অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ

নজরুলকে নিয়ে যথাযথ গবেষণা হয়নি: কবির মৃত্যুদিবসে জাককানইবি ভিসি

হত্যাচেষ্টা মামলায় ডাকসু ভিপি প্রার্থী জালাল গ্রেপ্তার

জবির সিন্ডিকেটে জকসু সংবিধির প্রস্তাব গৃহীত

রুমমেটকে ছুরিকাঘাত, ডাকসু ভিপি প্রার্থী জালাল হল থেকে বহিষ্কার

ইবিতে নভেম্বরে ইকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা

ডিআইইউতে হল থেকে হাতেনাতে গাঁজা উদ্ধার, কিন্তু তদন্তে লাগবে ১২ দিন

কম্বাইন্ড ডিগ্রি দাবিতে অচলাবস্থা, উদ্বেগে বাকৃবির পশুপালন অনুষদের শিক্ষকরা

ইবিতে আ'লীগপন্থী শিক্ষকের বহিষ্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

চবি মেডিকেলে প্যাথলজি বিভাগ উদ্বোধন, করানো যাবে ২১ ধরনের পরীক্ষা

ইবিতে (ইকসু)গঠনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন