ঢাকা সোমবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৫

তদন্তে দুদকের দীর্ঘসূত্রিতা

গিয়াস সিন্ডিকেটে জিম্মি চট্টগ্রাম নৌ-বাণিজ্য অফিস!


জাহিদুল ইসলাম শিশির photo জাহিদুল ইসলাম শিশির
প্রকাশিত: ৯-৬-২০২১ রাত ৯:১০

ঘুষ গ্রহণ,অনিয়ম,দূর্নীতির মাধ্যমে অবৈধভাবে বিপুল সম্পদ অর্জন ও ভুয়া তথ্য উপাত্ত দিয়ে পিএসসি থেকে নিয়োগ লাভের  অভিযোগে দুুদকের তদন্তাধীন  চট্রগ্রাম নৌবাণিজ্য অফিসের প্রিন্সিপ্যাল অফিসার ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন আহম্মেদের  বিরুদ্ধে নিজ অফিসে সিন্ডিকেট গড়ে তোলার অভিযোগ উঠেছে।

চট্্রগ্রাম নৌবাণিজ্য অফিসের  সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে  নৌবানিজ্য অফিসটাকে নিজস্ব সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রকাশ্য ঘুষ দূর্নীতির আখড়ায় পরিনত করেছেন ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন আহম্মেদ।এ সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য হিসেবে রয়েছেন নটিক্যাল সার্ভেয়ার ক্যাপ্টেন জালাল । অফিসের অফিস সহকারি আহাদ, এবং দালাল হিসেবে মিজান নামে এক ব্যক্তি সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। জানা গেছে বিদেশ থেকে যে সকল সমুদ্রগামি জাহাজ বাংলাদেশে আসে সে সব জাহাজে  এজেন্টের মাধ্যমে অর্থের বিনিময়ে পিসি প্রদান করা হয়ে থাকে।

 ফিসিং ভ্যাসেল, কোস্টাল জাহাজে স্বশরীরে  সার্ভে না করেই ক্যাপ্টেন জালাল সার্ভে সনদ প্রদান করে বিপুল অংকের অর্থ হাতিয়ে নেন। ক্যাপ্টেন জালাল চট্ট্রগ্রামের বাসিন্দা হওয়ার সুবাদে চট্ট্রগ্রাম জাহাজ ব্যবসায়ীদের সাথে রয়েছে গভীর সখ্যতা। জানা গেছে, বর্তমানে তিনি নৌ বাণিজ্য অফিসের প্রিন্সিপ্যাল অফিসার হতে কয়েক কোটি টাকার নিয়ে তদ্বিরে নেমেছেন। অপর দিকে ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন আহম্মেদ নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের চীফ নোটিক্যাল সার্ভেয়ার হওয়ার জন্য কোটি কোটি নিয়ে সরকারের উচ্চ মহলে দেনদরবার শুরু করেছেন। গোপালগঞ্জ জেলার বাসিন্দা হওয়ার সুবাদে ক্যাপ্টেন গিয়াস  উদ্দিন আহম্মেদ নিজেকে সুপার ম্যান হিসেবে মনে করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

অনেকেই মনে করেন, এ কারণেই দুদকে  তার ও তার স্ত্রী সাজেদা আহম্মেদের বিরুদ্ধে নথিভূক্ত অভিযোগের তদন্ত তিনি প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘ সময়  আটকে রাখতে সক্ষম হয়েছেন। ইতোপূর্বে নৌ পরিবহণ অধিদপ্তরের চীফ ইঞ্জিনিয়ার প্রকৌশলী এ.কে.এম ফখরুল ইসলাম, ড. নাজমুল হক, ও সদরঘাট নদী বন্দরের ইঞ্জিনিয়ার এন্ড শীপ সার্ভেয়ার মির্জা সাইফুর রহমান তিন জনেই দুদক কর্তৃক ধৃত হয়ে এখন সাময়িক বরখাস্ত রয়েছেন।  এদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই দূর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এত কিছুর পরও থেমে নেই নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের দূর্নীতিবাজরা। ২০১৯ সালের সে্েপটম্বর থেকে অভ্যান্তরীণ মালবাহি, বালুবাহি ট্রাক বোট ইত্যাদির নতুন করে নকসা অনুমোদন বন্ধ থাকার পরও একটি দূর্নীতিবাজ সিন্ডিকেট নক্সা জালিয়াতির উপায় হিসেবে ব্যাক ডেট ব্যবহার করে নক্সা অনুমোদনের মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। এ প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত রয়েছ একটি শক্তিশালী দালাল চক্র।

যাদের মধ্যে রয়েছে স্বপন, পাতলা  দিদার, বাট্টু মিজান, ঠাকুর, জাকির, নাহিদসহ অনেকে। এরাই মূলত: নক্সা জালিয়াতির প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত রয়েছে। দীর্ঘদিন  সকালের সময়ের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে এদের নেপথ্য গড ফাদারদের নাম। যাদের মধ্যে রয়েছে দূর্নীতির অভিযোগে সাময়িক বহিষ্কৃত একজন উর্ধতন কর্মকর্তা, একজন নেভাল আর্কিটেক্ট ও অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত একাধিক কর্মকর্তা। অনুসন্ধানে জানা গেছে এক একটি নক্সা  ব্যাক ডেটে অনুমোদনের জন্য প্রায় অর্ধকোটি টাকা নিয়ে থাকেন এ চক্রটি। তথ্যনুসারে ২০১৯ সাল থেকে নক্সা অনুমোদন বন্ধ থাকার পর থেকে  এ পর্যন্ত শতাধিক  নক্সা অনুমোদন করিয়ে দিয়েছে এ সিন্ডিকেট।  সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ যাবৎকালে সংঘটিত নৌ দূর্ঘটনার পেছনে রয়েছে অর্থের বিনিময়ে নক্সার অনুমোদন পাওয়া এসব  নৌযানের আধিপাত্য। সংশ্লিষ্ট সুত্রগুলো বলছে, বিভাগীয় তদন্ত দিয়ে এসব দূর্নীতিবাজদের  কিছুই হবে না। প্রয়োজন নিরপেক্ষ ও বিচারবিভাগীয় একটি তদন্ত। এতে কমে আসতে পারে এ অধিদপ্তরের দূর্নীতি। সেই সাথে বেপরোয়া দূর্নীতিবাজদের উচ্চ পদে আসীন হওয়ার পথও রুদ্ধ হতে পারে। এ দিকে নৌ পরিবহণ অধিদপ্তরের দূর্নীতির অভিযোগে বরখাস্তকৃত ও বর্তমান কর্মরতদের মাঝে যোগসাজসের একটি অডিও দৈনিক সকালের সময়ের হাতে এসেছে।

সে অডিও থেকে কর্মকর্তাদের একে অপরের দিকে কাদা ছুড়াছুড়িসহ একে অপরের বিরুদ্ধে অর্থ খরচ করে দুদকের জালে আটকে দেয়ার তথ্য রয়েছে। ঐ অডিও বার্তায় দেখা যাচ্ছে নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের মোটা দাগে চিহ্নিত দূর্নীতির ভেতর বাহিরের সাথে ক্যাপ্টেন গিয়াস  উদ্দিন আহম্মেদের সংশ্লিষ্টতা  রয়েছে। ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন আহম্মেদ ও তার স্ত্রীর নামে দুদকের অভিযোগ নং ৩৪০১৭(২)  স্মারক নং ০০.০১.০০০০.৫০২..১.০৮৯.১৯ তারিখ ০২.০৯.২০১৯।এ দিকে সূত্র বলছে  দুদকের অভিযোগ তদন্তের দীর্ঘসূত্রিতায় আরো বেশী বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন আহমেদ।ঢাকার ধানমন্ডিতে  স্টার্ণ ডালিয়ায় তাদের  রয়েছে আলিশান  ফ্লাট। সেই সাথে নামে বেনাম এ দম্পত্তির জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের তালিকা রীতি মতো আঁতকে  ওঠার মতো বিষয় হিসেবে আলোচনায় রয়েছে। ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন আহম্মেদ ও তার স্ত্রী সাজেদা আহম্মেদের  অভিযোগ তদন্তকারি কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক শাহীন আরা মমতাজ এর কাছে  তদন্তের দীর্ঘসূত্রিতার  বিষয় জানতে চাইলে তিনি দৈনিক সকালের সময়কে বলেন, মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে। ধীর কেন হচ্ছে এ প্রশ্নের জবাব দেয়া সত্যিই কঠিন। অনেক কাজ করতে হয়।

তাছাড়া কাজ একেবারেই হয়নি তা বলা যাবে না। প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। এখন অধিকতর তদন্তের কাজ চলছে। সময় হলেই এর তথ্য জানানো হবে বলে জানান দুদকের এই কর্মকর্তা।দুদকের একাধিক সূত্র এ বিষয়ে দৈনিক সকালের সময়কে জানান, অধিকতর তদন্ত মানেই “জাস্টিস ডিলে জাস্টিস ডিনাই” এর মতো ঘটনা।  দুদকের একটি সূত্র জানান, তদন্তকারি কর্মকর্তা হিসেবে শাহিনারা মমতাজের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ হয়তো  কম। তবে কিছুদিন আগে তিনি অসুস্থ হয়ে দেশের বাইরে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার কারণে এমন দেরি হতে পারে।এদিকে দৈনিক সকালের সময়ের অনুসন্ধানে জানা গেছে, মামলার প্রাথমিক জিজ্ঞাসায় ক্যাপ্টেন গিয়াসউদ্দিন ও তার স্ত্রী  যে পারমাণ সম্পদ দুদকে জমা দিয়েছেন তার চেয়ে অনেক বেশী  সম্পদ রয়েছে এ পরিবারের। এদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ দুদকের অনুসন্ধান-তদন্তে দীর্ঘসূত্রতা কমিয়ে আনার চেষ্টা থাকবে বলে কর্মকালের শুরুতেই মন্তব্য করলেও তদন্তের তালিকায় দীর্ঘ সময় ঝুলে থাকা এমন সব মামলা চেয়ারম্যানের আন্তরিকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন আহম্মেদ দৈনিক সকালের সময়কে বলেন, দূর্নীতি দমন কমিশন আমার ও আমার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত করছে এটা সত্য। কিন্তু প্রভাব খাটিয়ে তদন্তে দীর্ঘসূত্রিতা সৃষ্টি করার বিষয়টা সত্য নয়। তদন্তের স্বার্থে আমি দুদককে সার্বিক সহযোগিতা করছি। এ ছাড়া অধিদপ্তওে আমার শত্রু নেই সে কথা বলা যাবে না। যারা আমার উন্নতি পছন্দ করেনা তারা নানাভাবে আমাকে হেয় করার চেষ্টা করছে। তিনি দাবি করেন তার স্ত্রীকে ঘিওে যে সব লেখালেখি হচ্ছে তা সত্য নয়। এটা কাঙ্খিতও নয়। 

এমএসএম / এমএসএম

গণপূর্তের ইএম কারখানা বিভাগে নির্বাহী প্রকৌশলী মো: ইউসুফের দুর্নীতির রাজত্ব

দুর্নীতিতে পিছিয়ে নেই এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলীগন

‘এনবিআর’এ স্বৈরাচার সরকারের পালিয়ে থাকা চক্রের চক্রান্ত

প্রাণ ধ্বংসকারী কোম্পানি প্রাণ

বিসিএসআইআরের ৬ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি কেনায় ভাগ বাটোয়ারা

কোতোয়ালীতে অপহৃত ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

রেজিস্ট্রি অফিসের প্রভাবশালী নকলনবিশের কাণ্ডঃ মন্ত্রীদের প্রভাবে চাঁদাবাজি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

বিসিক এর নীরিক্ষা কর্মকর্তা সাবধান আলী হতে সাবধান!

কেরানীগঞ্জ উপজেলার রাজাবাড়ী রোডে অবৈধ এলপিজি বটলিং প্লান্ট এর সন্ধান

গডফাদার মুরাদ জং-এর বোন পরিচয়ে দলিল দাতা-গ্রহীতাদের জিম্মি করার অভিযোগ

গাজীপুরের কাশিমপুরে সরকারি খাস জমি ভূমিদস্যুদের দখলে

বগুড়ায় সাবেক অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে 'ফ্যাসিস্ট সিন্ডিকেটের' মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের আইন যেন শুধু খাতা কলমে