চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে সড়ক ও ফুটপাত দখল করে ৫ শতাধিক অবৈধ দোকান

চট্টগ্রাম নগরীর ব্যস্ততম সড়ক বহদ্দারহাট। এই এলাকা ঘিরে সড়ক ও ফুটপাত অবৈধভাবে দখলের নৈরাজ্য চলছে। সড়কের ওপর অবৈধভাবে ৫ শতাধিক দোকান বসিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকার চাঁদাবাজি ও বাণিজ্য করে আসছে একটি চক্র। এসব অপকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে বহদ্দারহাট পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত কয়েকজন পুলিশের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি থানা পুলিশের কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তাও জড়িত বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
চসিকের বিদায়ী প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন দায়িত্ব নেয়ার পর এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছিল। তবে চসিক নির্বাচনের পর থেকে ফের অবৈধ দখলে বহদ্দারহাটের ফুটপাত, সড়কও। বর্তমান মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী বহদ্দারহাটের ঐতিহ্যবাহী বহদ্দার বাড়ির সন্তান। তিনি সেখানেই বসবাস করেন। দায়িত্ব গ্রহণের পাঁচ মাস অতিক্রম হলেও এখনো নিজ এলাকা বহদ্দারহাটের ফুটপাত ও সড়ক অবৈধ দখলমুক্ত করতে পারেননি। স্থানীয়দের প্রত্যাশা যেন ডুবতে শুরু করেছে। বহদ্দারহাট মোড়ে ফুটপাতে পা রাখার জায়গাটিও নেই। হক মার্কেটের সামনে থেকে কাঁচাবাজারের মুখ পর্যন্ত ফলের দোকানে ছেয়ে গেছে। পথচারীদের রীতিমতো রাস্তা দিয়ে হাঁটতে গিয়ে বিভিন্ন দুর্ঘটনা ও যানজটের ঘটনা নিত্যদিন।
এসব ফল বিক্রেতারা জানান, তারা অবৈধভাবে দোকা বসাতে এককালীন৫০ হাজার টাকা ও দৈনিক ৫০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত চুক্তিতে ফুটপাতে দোকান বসিয়েছেন। প্রতিদিন বিকাল বেড়ে যায় দোকানের সংখ্যা। বিভিন্ন পণ্যের দোকান সড়কেও চলে আসে। কেউ কেউ ভ্যান গাড়িতে সড়কের অর্ধেক জুড়ে দখলে চলে যায়। এসব দোকানের চাঁদার রেট অবশ্য ফুটপাতের স্থায়ী দোকানের চেয়েও কম। তাদের কাছ থেকে আদায় করা হয় ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। আর ফুটপাত ও সড়কের দোকানীদের দিনে অন্তত চার দফা চাঁদা পরিশোধ করতে হয়। জায়গা নির্ধারণ ও ব্যবসার ধরণ অনুযায়ী এককালীন টাকা এখানকার নিয়ন্ত্রক সন্ত্রাসী ফ্রুট সোহেলের হাতে দিতে হয়। এরপর থেকে দৈনিক ভাড়ার নামে চাঁদা তুলে সোহেলের ভাই রুবেল ওরফে পাঙ্গাস, ধামা জুয়েল, ভাগিনা মহিউদ্দিন। সোহেল ও জুয়েলের বিরুদ্ধে চারটি মামলায় পরোয়ানা রয়েছে, রুবেলের বিরুদ্ধে ছিনতাইসহ দুইটি মামলা রয়েছে। চাঁদাবাজি প্রথা থেকে পিছিয়ে নেই পুলিশও! চান্দগাঁও থানা ও বহদ্দারহাট পুলিশ ফাঁড়ির হয়ে কনস্টেবল আনিস ও ইমন প্রতিদিন টাকা তুলে। তারা মূলত পুলিশের ক্যাশিয়ার হিসেবে পরিচিত এখানে। এই কর্মস্থলে অন্তত ৮-১০ বছর কর্মরত তারা। যদিও পুলিশের চাকরিতে দীর্ঘদিন এক জায়গা থাকা সম্ভব নয়।
সড়ক জুড়ে অবৈধ পরিবহন স্ট্যান্ডের ছড়াছড়ি। ফরিদের পাড়ার তালতলা মোড় হয়ে বহদ্দারহাট ওয়েল ফুড পর্যন্ত গড়ে উঠেছে একটি মাইক্রোবাস স্ট্যান্ড। এই সড়কে চলাচলে ফরিদের পাড়ার অন্তত বিশ হাজার বাসিন্দা নানা ভোগান্তির সম্মুখীন হন। স্ট্যান্ড কেন্দ্রিক বেড়েছে বখাটেদের আড্ডা। ফলে মহিলাদের ইভটিজিং ঘটনা মারাত্মক ভাবে বেড়েছে। পাশাপাশি সন্ধ্যা নামতেই এই সড়কে ছিনতাইয়ের কবলে পড়ছেন মানুষ। দীর্ঘদিনের নরক যন্ত্রণা এই মাইক্রোবাস স্ট্যান্ড স্থায়ীভাবে উচ্ছেদের দাবি জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। এটি নিয়ন্ত্রনে রুবেল, আবছারসহ কয়েকজন। পাশেই রয়েছে আরো একটি মাইক্রোবাস স্ট্যান্ড। সেটি মদিনা হোটেলের সামনে সড়কে।
বহদ্দারহাট পুলিশ ফাঁড়ির সামনেই সড়কের এক পাশ দখল করে বসানো হয়েছে রেজিস্ট্রেশন বিহীন অবৈধ টেম্পো স্ট্যান্ড বহদ্দারহাট মোড় ঘিরে সড়ক ও ফুটপাতের এসব অপকর্মে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের পাশাপাশি থানা ও ফাঁড়ি পুলিশের বিতর্কিত ভূমিকা রীতিমতো প্রশ্নবিদ্ধ। নানা অভিযোগে ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই রূপক কান্তি চৌধুরীকে গত ১৬ মার্চ বদলি করেন সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর। এরপর চার্জ নেন এসআই অধীর চৌধুরী। এতেও কোন পরিবর্তন আসেনি এলাকাটিতে। অভিযোগ রয়েছে, অধীর চৌধুরীও সেই বিতর্কিত রূপকের পথেই হাটছেন। অপকর্মে জড়িতদের নানা সহযোগীতা করার অভিযোগ এই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
সরেজমিনে বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার পরিদর্শন করে দেখা যায়, সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত ভবনের অলিগলি দখল করে বসানো হয়েছে মাছসহ বিভিন্ন দোকান। ক্রেতাদের চলাচলেও দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। পর্যাপ্ত আলো বাতাস বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এছাড়া, এখানে ক্রেতা ঠকানোর ঘটনাও ঘটছে নিয়মিত। ওজনে মারাত্মক ভাবে চুরি করা যেন সিস্টেমে পরিণত হয়েছে। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে উল্টো হেনস্তা করা হয়, এমনকি উল্টো পুলিশ দিয়ে হয়রানি করানোর অভিযোগ রয়েছে।এর চেয়ে ভয়াবহ চিত্র মূল ভবনের বাইরে। বাজারের পাশ দিয়ে নিউ সিডিএ আবাসিক ও ফরিদের পাড়ার সড়কটি অস্তিত্ব হারিয়েছে অবৈধ কাঁচাবাজারে। এই সড়কের দুই পাশে অন্তত তিনশো দোকান বসানো হয়েছে। আর এই চিত্র আজ নতুন নয়, দীর্ঘকাল যাবত চলে আসছে। ফলে গাড়ি তো দূরের কথা, একটি রিক্সা চলাচলেও মারাত্মক বেগ পেতে হয়।
নিউ সিডিএ আবাসিকের বাসিন্দারা জানান, তারা সিডিএ থেকে প্লট কিনে বাড়ি করেছেন, সিটি করপোরেশনকে সর্বোচ্চ হোল্ডিং ট্যাক্সও দিচ্ছেন। তবুও তারা নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত। তাদের প্রধান সড়কটি অস্তিত্ব হারিয়েছে অবৈধ বাজারে। এ থেকে পরিত্রাণ চান তারা। সড়ক দখল করে বাজার গড়ে তোলার নেপথ্যে রয়েছে বাজার কমিটির নামে কথিত দুই নেতা ও স্থানীয় সন্ত্রাসী গ্রুপ। এ বিষয়ে বহদ্দারহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ অধীর চৌধুরী বলেন, সড়কের উপর অবৈধভাবে দোকান পার্ট বসিয়ে চাঁদাবাজির বিষয়ে কিছু জানে না বলে দাবি করেন, তারা যদি আগ থেকে উক্ত স্থানে দোকান বসিয়ে থাকে তাহলে তারা কিভাবে বসাচ্ছে তিনি খবর নিয়ে দেখবেন বলে জানান।
এমএসএম / এমএসএম

শান্তিগঞ্জে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমে গতিশীলতা আনয়ন শীর্ষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত

নাফনদীর মোহনায় ট্রলার ডুবি, ৭জেলে উদ্ধার

বালিয়াকান্দিতে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময়

বাউফলে চেয়ারম্যান পরিবহন বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন

আদমদীঘিতে সমন্বয় কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত

জয়পুরহাটে পৌর হোল্ডিং ট্যাক্স বৃদ্ধির কার্যক্রম স্থগিতের দাবীতে স্মারকলিপি প্রদান

দৌলতপুরে মুখ বাঁধা অবস্থায় নারীর মরদেহ উদ্ধার

কমিউনিটি পুলিশিং সভা ও উদ্ধারকৃত মোবাইল-অর্থ হস্তান্তর: মেহেরপুর জেলা পুলিশের জনবান্ধব উদ্যোগ

ভূরুঙ্গামারীতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নবজাতক শিশুদের জন্ম নিবন্ধন নিশ্চিত করছে উপজেলা প্রশাসন

পাবনায় ট্রিপল মার্ডারের রায়ে একজনের মৃত্যুদন্ড

গলাচিপা সরকারি কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সাথে জামায়াতের এমপি পদ প্রার্থীর মত বিনিময় সভা

ত্রিশালে মসজিদে চুরি করতে গিয়ে গণপিটুনিতে নিহত
