তাড়াশে মায়ের ঘর পুড়িয়ে দিল ছেলে
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে নিজের ছেলে হয়ে বিধবা মায়ের ঘর পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত সোমবার (২৪ মে ) সন্ধ্যায় উপজেলার মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়নের নাদো সৈয়দপুর গ্রামের নদীপাড়া চাঁদের মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, বিধবা রেহানা বেগম মৃত ইব্রাহীমের স্ত্রী। তিনি একটি টিনের ঘরে বসবাস করতেন। বড় ছেলে আব্দুল মালেক পাশেই একটা ঘরে ও ছোট ছেলে নিজাম উদ্দিন অন্য এক গ্রামে বাস করেন। তার বড় ছেলে আব্দুল মালেক, মালেকের স্ত্রী নাছিমা খাতুন ও নাতনি একই গ্রামের হাফিজুরের স্ত্রী নাইমা খাতুন ওই বিধমা এক টুকরা ভিটেমাটি লিখে নেয়ার জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে জ্বালা-যন্ত্রণা করে আসছিল। একপর্যায়ে ৩-৪ দিন আগে রেহানা বেগমকে পরিবারের সবাই মিলে নির্যাতন করলে ছোট ছেলে নিজাম উদ্দিন তার মাকে নিজ বাসস্থানে নিয়ে যান।
এদিকে সন্ধ্যায় সুযোগ বুঝে আব্দুল মালেক, তার স্ত্রী নাছিমা খাতুন ও মেয়ে একই গ্রামের হাফিজুরের স্ত্রী নাইমা খাতুন বিধবা রেহানা বেগমের ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। মুহূর্তেই আগুনের অগ্নিশিখা দাউ দাউ করে উঠলে পার্শ্ববর্তী লোকজন এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। ওই সময় বৃষ্টি থাকায় এবং জনগণের আপ্রাণ চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও পার্শ্ববতী ঘরগুলোর কিছুটা ক্ষতি হয়। নইলে এলাকাজুড়ে বিশাল ক্ষতি হওয়ায় সম্ভবনা ছিল। আগুনে পুড়ে বিধবা মায়ের ধান, চাল, আসবাবপত্র ও নগদ এক লাখ ১২ হাজার টাকা ছাই হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে বিধবা রেহানা বেগম তাড়াশ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
বিধবা মা রেহানা বেগম বলেন, ছেলে, ছেলের বউ ও নাতনির অত্যাচারে আমার ছোট ছেলের বাড়িতে গেছি। কিছুক্ষণ পর শুনি আমার একমাত্র থাকার ঘর আগুনে পুড়ে ছাই করে গেছে। আমার কুলখানির জন্য নগদ ১ লাখ ১২ হাজার টাকা রেখে দিয়েছিলাম, তাও পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আমি এর বিচার চাই।
প্রতিবেশী ঘরের বাসিন্দা মৃত মুছা প্রামাণেকের স্ত্রী জয়নব খাতুন বলেন, ওরা মা-ছেলে মারামারি করবি করুক। মায়ের ঘরে আগুন দেবি দিক; কিন্তু আমার ঘরের যে ক্ষতি হলো তার দায়ভার কে নেবে? আমি এদের বিচার চাই।
এ বিষয়ে আব্দুল মালেকের সাক্ষাৎ না পাওয়ায় তার স্ত্রী নাছিমা খাতুন বলেন, আমার শাশুড়ির ঘর পুড়ে গেছে এটা সত্য কথা। তবে আমরা আগুন দেইনি। আমার ঘর আর আমার শাশুড়ির ঘর একসাথে লাগানো আছে। তার ঘরে আগুন দিলে তো আমার ঘর পুড়ে যাবে। তাই কোনো বিবেকবান মানুষ আগুন দেবে না। তবে কিভাবে আগুন লাগছে আমরা জানি না।
এ ব্যাপারে মাগুড়া বিনোদ ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক আতিকুল ইসলাম বলেন, আমি এ বিষয়ে শুনেছি। সেখানে গিয়ে উভয়কে নিয়ে বসে সমাধানের চেষ্টা করব।
এমএসএম / জামান