ঢাকা মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৫

ওপেন ব্যাংকিং : গ্রাহকের নতুন ব্যাংকিং অভিজ্ঞতা


মেহেদী হোসেন পলাশ, মধুখালী  photo মেহেদী হোসেন পলাশ, মধুখালী
প্রকাশিত: ২৬-৬-২০২২ দুপুর ২:১০

শুরুতে আমাদের দেশের ব্যাংকিং এবং আর্থিক পরিষেবাগুলির কিছু বিবর্তনের উপর আলোকপাত করি। সিটি ব্যাংক এক ধরনের ডিজিটাল ঋণ প্রদান শুরু করেছে যা বিকাশ অ্যাকাউন্টহোল্ডাররা বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে তাৎক্ষণিকভাবে ঋণ গ্রহণের জন্য অনুরোধ এবং গ্রহণ করতে পারেন। বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে আইডিএলসির সঞ্চয় স্কিমে টাঁকা জমানো যায়। গ্রাহক তাদের বিকাশ একাউন্টের মাধ্যমে আইডিএলসি ফাইন্যান্সের ডিজিটাল সেভিংস সার্ভিস উপভোগ করতে পারবেন। কোন আইডিএলসি শাখায় না গিয়ে, শুধু বিকাশ অ্যাপ দিয়ে গ্রাহক আইডিএলসি ফাইন্যান্সের সাথে ডিপোজিট একাউন্ট খুলতে পারবেন, আমানত জমা এবং টাঁকা উত্তোলন করতে পারবেন।

অনেক ব্যাংক এবং মোবাইল আর্থিক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান অনলাইন প্রযুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন ইউটিলিটি বিল, টিউশন ফি এবং সরকারী অর্থ প্রদানের সুবিধা দিচ্ছে। শুধু আপনার গ্রাহক আইডি বা কোন রেফারেন্স নম্বর দিন, সিস্টেমটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিষেবা সরবরাহকারী সিস্টেম থেকে অর্থ প্রদানের পরিমাণটি স্ক্রিনে এনে দেখাবে এবং আপনি আপনার মোবাইল ব্যাংকের স্থিতি অথবা আপনার ব্যাংক হিসাবের স্থিতি থেকে ডেবিট করে বিলটি প্রদান করতে পারেন। তারপর আপনি একটি স্বয়ংক্রিয় উৎ্পন্ন অর্থপ্রদানের রসিদ পাবেন এবং আপনার রেফারেন্স আইডির বিপরীতে পরিষেবা সরবরাহকারীর সিস্টেমে পেমেন্টটি তাৎক্ষণিকভাবে হালনাগাত হয়ে যাবে। 

আমি ১৯৯৬ সালে একটি শীর্ষস্থানীয় বাণিজ্যিক ব্যাংকে আমার ব্যাংকিং কর্মজীবন শুরু করেছিলাম, তখন সমস্ত ব্যাংকিং রেকর্ড কাগজ ভিত্তিক লেজারে ম্যানুয়ালি বজায় রাখা হতো। পরে কয়েকটি ব্যাংক গ্রাহকদের লেনদেন এবং সাধারণ লেজার অ্যাকাউন্টগুলি স্বয়ংক্রিয় করার জন্য আধা-স্বয়ংক্রিয় স্বতন্ত্র সিস্টেম চালু করে। তখন এক শাখার গ্রাহকগণ সরাসরি একই ব্যাংকের অন্য শাখায় লেনদেন করতে পারতেন না। ২০০২ সালের পরে কিছু ব্যাংক কেন্দ্রীয় ডাটাবেস ভিত্তিক কোর ব্যাংকিং সিস্টেম ব্যবহার শুরু করে, তখন গ্রাহকরা ঐ ব্যাংকের যে কোন শাখা থেকে ব্যাংকিং করার সুবিধা পান। এখন প্রায় সব ব্যাংকই তাদের গ্রাহকদের বিভিন্ন অনলাইন সুবিধাসহ কোর ব্যাংকিং সিস্টেম ব্যবহার করছে।

বিভিন্ন পর্যায়ে বাংলাদেশ ব্যাংক স্বয়ংক্রিয় ক্লিয়ারিং হাউস কর্মকাণ্ড, ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (বিইএফটিএন), রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট (আরটিজিএস) এর মাধ্যমে তাৎক্ষনিক আন্তঃব্যাংক তহবিল স্থানান্তর চালু করেছে এবং ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশ (এনপিএসবি) এর মাধ্যমে দেশীয় এটিএম এবং চ্যানেলগুলি ভাগআভাগি করে ব্যবহার করার সুযোগ দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত ন্যূনতম বৈশিষ্ট্যের মানযুক্ত কোর ব্যাংকিং ব্যবস্থা বাস্তবায়নের জন্য সময়সূচী বেধে দিয়ে ব্যাংকগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে। সুতরাং, ব্যাংকিং এবং আর্থিক অ্যাপ্লিকেশনগুলির আপগ্রেডেশন ক্রমাগত উন্নতির ভিত্তি হিসাবে চলছে।

প্রযুক্তি ব্যাপক বিকশিত হয়েছে এবং সেই অনুযায়ী গ্রাহকদের ব্যাংকিংয়ের অভিজ্ঞতাও পরিবর্তন   হয়েছে। গ্রাহকদের ক্রমবর্ধমান প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য ব্যাংককে তাদের পণ্য এবং পরিষেবাগুলি সময় উপযোগী করতে হবে। যদি কোন ব্যাংক পরিবর্তন করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে অন্যরা সেই ব্যাংকটিকে পিছনে ফেলে অতিক্রম করবে। 

এই নিবন্ধে আমার উদ্দেশ্য হলো ওপেন ব্যাংকিং নিয়ে পাঠককে একটা ধারণা দেওয়া। কিন্তু আমি আর্থিক প্রযুক্তির উন্নয়ন ব্যাখ্যা করে বিষয়টিকে বাইপাস করছি মনে হচ্ছে। এর পিছনে কারণ হল যে কম প্রযুক্তিগত ভাষায় একটি জটিল প্রযুক্তিগত বিষয়কে উপস্থাপন করা বেশ কঠিন। তাই আসুন আমরা ওপেন/খোলা ব্যাংকিংয়ের বিপরীত শব্দের দিকে দেখি, যা হল পরিবেষ্টিত ব্যাংকিং। প্রথাগত ব্যাংকিং পরিবেষ্টিত ব্যাংকিং এর একটি উদাহরণ। ব্যাংক ডিজিটাল হোক বা না হোক, তাতে কিছু যায় আসে না; প্রথাগত ব্যাংকগুলি তাদের তথ্যের গোপনীয়তা বজায় রাখে এবং কেবলমাত্র ব্যাংক এবং সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের মধ্যে ব্যাংকিং তথ্য সীমাবদ্ধ করে। 

ওপেন ব্যাংকিং সংজ্ঞায়িত করার আগে, আমি ব্যাংকিং পরিষেবার একটি কল্পিত উদাহরণ দেই। একবার, জনাব করিম কক্সবাজারে একটি হোটেলের সুইমিং পুলের পাশে তার অবসর সময় উপভোগ করছিলেন। হঠাৎ তিনি দেখতে পান যে একটি সুন্দর গাড়ি সেখানে পাশ দিয়ে যাচ্ছে এবং তিনি তৎক্ষণাৎ তার মোবাইল দিয়ে গাড়ির ছবি তুললেন। জনাব করিম তার ভার্চুয়াল সহকারীকে ঢাকার গাড়ির শোরুমগুলোতে একই ধরণের গাড়ি অনুসন্ধানের আদেশ দিলেন। সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন শোরুমে একই ধরনের বিভিন্ন রঙের গাড়ি মোবাইলের স্ক্রিনে ভেসে উঠল। করিম সাহেব অগমেন্টেড রিয়েলিটি ব্যবহার করে কয়েকটি গাড়ীর টেস্ট ড্রাইভ করলেন এবং একটি পছন্দ করলেন। তাৎক্ষনিক তিনি ঐ গাড়ীটি কেনার জন্য নিশ্চিত করলেন, কিন্ত ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট জানালো করিম সাহেবের তিনটি একাউন্টের ব্যালেন্স গাড়ীর দামের চেয়ে বেশ কম।

তখন তিনি ভার্চুয়াল সহকারীকে বাকি টাকার জন্য কোন ব্যাংকে গাড়ী ঋণের জন্য আবেদন করার নির্দেশ দিলেন। যে সকল ব্যাংক ও লিজিং কোম্পানী গাড়ি কেনার জন্য ঋণ দেয় তাদের সুদের হার ও শর্তাবলী বিবেচনা করে একটি লিজিং কোম্পাানর কাছে স্বয়ংক্রিয় ঋণের আবেদন তৈরি করে। ঋণ অ্যাপ্লিকেশনটি ব্যাংকগুলির সাথে করিম সাহেবের হিসাবগুলোর লেনদেন, আয় ও সম্পদের প্রমাণ হিসাবে ট্যাক্স সিস্টেম থেকে তিন বছরের ট্যাক্স রিটার্ন, জাতীয় পরিচয়পত্র ড্যাটাবেস থেকে কেওয়াইসি তথ্য এবং ঋণ প্রক্রিয়াকরণ সম্পূর্ণ করার জন্য অন্যান্য কয়েকটি সিস্টেম থেকে তথ্য সংগ্রহ করে। আবেদনে প্রদত্ত এবং অন্যান্য সিস্টম থেকে প্রাপচ তথ্যের উপর ভিত্তি করে জনাব করিমের এর ঋণ অনুমোদিত হয় এবং তিনি কোথাও না গিয়ে শুধু তার স্মার্ট ফোন ব্যবহার করে পুলের পাশে বসে গাড়ী ক্রয় চুক্তি সম্পন্ন করেন। আপনাদের অনেকেই মনে করতে পারেন যে এটি একটি আজগুবে গল্প, কিন্ত প্রযুক্তিগতভাবে এটি বাস্তবে ঘটতে পারে। এখন মনে হয় আমার জন্য ওপেন ব্যাংকিং সংজ্ঞায়িত করা কিছুটা সহজ হবে।

ওপেন ব্যাংকিং একটি ব্যাংকিং প্রক্রিয়া যা তৃতীয় পক্ষ পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সিস্টমকে অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস (এপিআই) এর মাধ্যমে ব্যাংকের সিস্টেমের সাথে যুক্ত করে গ্রাহকদের ব্যাক্তিগত তথ্য, লেনদেনের তথ্য এবং অন্যান্য অনুমোদিত তথ্য বিনিময় করতে দেয়। এখানে দুটি প্রধান বিষয় বিবেচনায় নিতে হবে; গ্রাহকদের তথ্য শেয়ার করার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও আইনগত অনুমতি এবং তথ্যের নিরাপত্তা। গ্রাহকদের অবশ্যই সংজ্ঞায়িত প্রক্রিয়ায় শর্তাবলী মেনে নিয়ে তাদের তথ্য বিনিময়ের সম্মতি দিতে হবে। ওপেন ব্যাংকিং পরিষেবাগুলি সহজ করার জন্য ব্যাংকগুলিকে সুরক্ষিত ইন্টিগ্রেশান ইন্টারফেস লেয়ারসহ ব্যাংকিং সিস্টেম বাস্তবায়ন করতে হবে যার সাথে অসংখ্য তৃতীয় পক্ষের সিস্টেমকে সহজে এবং সুরক্ষিত পদ্ধতিতে সংযুক্ত করা যায়।

বাংলাদেশে ওপেন ব্যাংকিংয়ের অধীনে গ্রাহকদের ডেটা শেয়ারের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার নীতিমালা এখনও প্রনয়ন হয়নি। তবে, প্রথম প্যারাতে উদাহরনে দেওয়া বর্তমান পরিসেবার দিকে তাকালে দেখা যায় যে ব্যাংক এবং ফিনটেক কোম্পানী সহযোগিতামূলক উপায়ে ইতিমধ্যে আর্থিক পরিষেবা প্রদানের জন্য এপিআই ব্যবহার করে লেনদেনের তথ্য বিনিময় শুরু করেছে। এটাকে আমরা ওপেন ব্যাংকিং যাত্রার শুরু বলতে পারি, তবে ওপেন ব্যাংকিং এর পরিসেবার পরিধি অনেকটা ব্যাপক। ওপেন ব্যাংকিংয়ের প্রধান সুবিধাগুলি হল ব্যাংকিংকে সহজসাধ্য করা, ব্যয় হ্রাস, ব্যক্তিগতকরণ এবং ব্যাংকিং পরিষেবাতে উন্নত সিদ্ধান্ত গ্রহণ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য,দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, কানাডা এবং আরও কিছু দেশে ওপেন ব্যাংকিং নিয়ন্ত্রিত কাঠামোর অধীনে কাজ করছে।

সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট বর্তমান সময়ে ব্যবসায়ে পণ্যের মূল্য এবং ব্যবসা করার জটিলতাকে লিভারেজ করার জন্য একটি বড় ফ্যাক্টর। স্থানীয় এবং আন্তঃসীমান্ত বানিজ্য বাবস্থায় পন্য সরবরাহে একটি শৃঙ্খল প্রক্রিয়া চালু করা বড় চ্যালেঞ্জ। এই ব্যাবস্থার সামগ্রিক কর্মকান্ডের সাথে বেশ কয়েকটি পক্ষ জড়িত। যদি একটি সমন্বিত বাস্তুতন্ত্র সমস্ত পক্ষ যেমন ক্রেতা, বিক্রেতা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, লজিস্টিক পার্টনার, সরকারী সংস্থা ইত্যাদিকে বাণিজ্য লেনদেন সম্পর্কিত তথ্য বিনিময় করার জন্য একক প্ল্যাটফর্মে সংযুক্ত করতে পারে, তবে লেনদেন এবং প্রক্রিয়াকরণের সময় ও ব্যয় ব্যাপকভাবে হ্রাস পাবে। ওপেন ব্যাংকিংয়ের আরেকটি সুবিধা হল, ফিনটেক কোম্পানির সাথে সহযোগিতায় বৈদেশিক অর্থ প্রেরনে দ্রুত গতি আনতে পারে, যা আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী এনআরবি পরিবারের সদস্যদের সহায়তা করবে। এই সহযোগিতা বর্তমানে ব্যাংকিং এর বাইরে থাকা জনগোষ্ঠির  অনেককে ব্যাংকিং চ্যানেলে যুক্ত করতে পারে যা আমাদের আর্থিক ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে।

ওপেন ব্যাংকিংয়ের অনেক সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। যেহেতু ওপেন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে তৃতীয় পক্ষীয় সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানকে ব্যাংকের সিস্টেমের সাথে সংযোগ করার প্রধান মাধ্যম হচ্ছে এপিআই, প্রথম চ্যালেঞ্জটা এখানেই ট্রিগার করে।  ওপেন ব্যাংকিংয়ের জন্য সক্ষম পাবলিক এপিআইগুলি নির্ভরযোগ্যভাবে কাজ নাও করতে পারে, বিশেষ করে বিভিন্ন তৃতীয় পক্ষের অ্যাপ্লিকেশন কনফিগারেশন ব্যাংকের সিস্টমের কনফিগারেশনের সাথে নাও মিলতে পারে। ওপেন ব্যাংকিং লেনদেনে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন পাওয়া আরেকটি চ্যালেঞ্জ। যেহেতু ওপেন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কিছু তথ্য শেয়ার করা হয় এবং পাবলিক এপিআইগুলির সাথে সংযুক্ত তৃতীয় পক্ষের সিস্টেমের মাধ্যমে তথ্যগুলি নিতে পারে, তাই ব্যাংকের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য নিরাপত্তা সমস্যাটি অগ্রাধিকার দিতে হবে। যাইহোক, আর্থিক সিস্টেমের সর্বত্র চ্যালেঞ্জ রয়েছে যা থামানো যাবে না, বরং উন্নত প্রক্রিয়া এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রশমিত করা যেতে পারে। 

বাংলাদেশে, ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি এখনও পুরাতন সিস্টেম নিয়ে সংগ্রাম করছে। আর্থিক সিস্টেমের ডেটা সাইলো ভিত্তিক এবং লিগ্যাসি সিস্টেমগুলির ইন্টিগ্রেশন করা বেশ কঠিন কারণ উন্নত প্রযুক্তির সাথে পুরাতন প্রযুক্তির কনফিগারেশন অনেক সময়ই মিলে না। এই সিস্টেমগুলির ইন্টিগ্রেশন স্তরটি খুব সহজবশ্য না হওয়ায় তৃতীয় পক্ষীয় অনেক সিস্টেমের সাথে এর ইন্টিগ্রেশন করা সম্ভবপর নয়। সকল সমস্যা সত্ত্বেও যদি ওপেন ব্যাংকিং এর জন্য একটি পরিচালন কাঠামো গঠন করা হয়, ওপেন ব্যাংকিং প্ল্যাটফর্মের দিকে এগিয়ে যাওয়া অসম্ভব নয়। বিভিন্ন সংস্থা তাদের সিস্টেমগুলিকে একটি ক্রমাগত প্রক্রিয়া হিসাবে আপগ্রেড করতে শুরু করেছে যা আমরা যদি অতীতের বছরগুলিতে ফিরে তাকাই তবে আমরা সহজেই উপলব্ধি করতে পারি। অন্যদিকে ফিনটেক কোম্পানীগুলো আর্থিক সেবাদান কর্মকাণ্ডে প্রবেশ করছে। কাজেই প্রযুক্তি বিকাশের মাধ্যমে ব্যাংক ও ফিনটেক কোম্পানী যৌথভাবে কাজ করলে ওপেন ব্যাংকিং এর জগতে প্রবেশ করা খুব বেশী কষ্টসাধ্য নয়।

কেউ কেউ আবার ডিজিটাল ব্যাংকিং বা ডিজিটাল ব্যাংকের সাথে ওপেন ব্যাংকিংকে গুলিয়ে ফেলতে পারেন। একটি ডিজিটাল ব্যাংক এমন একটি ব্যাংক যা শুধুমাত্র অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে তার ব্যাংকিং পরিষেবা  দিতে পারে। সুতরাং, একটি ডিজিটাল ব্যাংকের তার গ্রাহকদের ব্যাংকিং পরিষেবা প্রদানের জন্য বাস্তবিক শাখা / অফিস থাকার প্রয়োজন হয় না। ওপেন ব্যাংকিং এবং ডিজিটাল ব্যাংক উভয়ই গ্রাহকদের জন্য ব্যক্তিগতকৃত এবং সমন্বিত ব্যাংকিং পরিষেবা সরবরাহ করছে এবং বিশাল প্রযুক্তিগত পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। কিন্তু সংজ্ঞা অনুযায়ী এই দুটি ভিন্ন। একটি ডিজিটাল ব্যাংক ওপেন ব্যাংকিং কাঠামো স্থাপন করতে পারে তবে ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য এটি বাধ্যতামূলক নয়।

আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে উপনীত হয়েছি যেখানে প্রশিক্ষিত কম্পিউটার মানুষ ছাড়াই কাজ করে। প্রযুক্তির পরিবর্তনের পাশাপাশি গ্রাহকদের প্রয়োজনীয়তাও পৌঁছেছে নতুন উচ্চতায়। পরিষেবা প্রদানকারী কোম্পানী যারা গ্রাহকদের ক্রমবর্ধমান প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য নিজেকে পরিবর্তন করতে পারবে, তারা বাজারে টিকে থাকবে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এর বাইরে নয়। ওপেন ব্যাংকিং হল পরবর্তী প্রজন্মের ব্যাংকিং প্ল্যাটফর্ম যা ধীরে ধীরে প্রথাগত ব্যাংকিং ধারণাগুলি পরিবর্তন করছে। আর্থিক পরিষেবা পূরণের জন্য আরও ফিনটেক কোম্পানী ভবিষ্যতে আসবে। ফিনটেক সংস্থাগুলির সহযোগিতায় ওপেন ব্যাংকিং প্রথাগত ব্যাংকিংয়ের ধারণা পরিবর্তন করতে চলেছে, যা গ্রাহকদের আর্থিক পরিষেবায় একটি নতুন অভিজ্ঞতা দেবে।

মো. লতিফুল ইসলাম

চেয়ারম্যান, ফিনপ্রো কনসালটেন্টস লিমিটেড

এমএসএম / জামান

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার গণতন্ত্রের জন্য চ্যালেঞ্জ

কোচিং-এর গোলকধাঁধায়, শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে গুরুত্ব নেই

সাংবাদিকের দল সমর্থন গণতন্ত্রের জন্য হুমকি

ইঁদুরের কৃতজ্ঞতা

নাগরিক সেবা ও প্রত্যাশার সংকট: রাষ্ট্রীয় কর্মচারী কোথায়?

টেকসই সমাজ গঠনে সাম্য একটি অপরিহার্য ভিত্তি

শুভ জন্মাষ্টমী : সত্য, সুন্দর ও সাম্য প্রতিষ্ঠায় শান্তির বার্তা

রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অপরিহার্য

জনগণের অংশগ্রহণে নির্বাচিতরাই কাশ্মীরের শাসক

স্বৈরশাসকের বিদায়, বিদ্রোহ ও পলায়ন

জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় তারেক রহমান

এপিআই ও এক্সিপিয়েন্ট উৎপাদনে বাংলাদেশের আত্মনির্ভরশীলতা: স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির নবদিগন্ত উন্মোচন

ট্রাম্প-উরসুলার বাণিজ্য চুক্তিতে স্বস্তির হাওয়া