জবি ছাত্রলীগে বিভক্তি, স্থগিত কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের ঘুম হারাম

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত হওয়ার পরই বিভক্ত হয়ে পড়েছেন শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। স্থগিত কমিটির শীর্ষ দুই নেতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেন বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা। কমিটি স্থগিত হওয়ার পরই ক্যাম্পাসে নিয়মিত শোডাউন দিচ্ছেন এই অমূল্যায়িত নেতাকর্মীরা। এ অবস্থায় স্থগিত হওয়া কমিটির সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজি ও সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেনের ঘুম হারাম হয়ে গেছে।
এর আগে গত ১ জুলাই কমিটি স্থগিত হওয়ার পরও সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কর্মীরা নিয়মিত ক্যাম্পাসে মহড়া দিলেও বিদ্রোহীদের ক্যাম্পাসে দেখা যেত না। কয়েক দিন পরই পাল্টাতে থাকে চিত্র। কমতে থাকে স্থগিত কমিটির সভাপতি গ্রুপের কর্মী সংখ্যাও। গত কিছুদিন যাবৎ ঝিমিয়ে পড়েছেন সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের কর্মীরাও। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এর প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে। গত ১০ দিনে এসএম আক্তার হোসেন মাত্র পাঁচটা পোস্ট করেছেন ফেসবুকে। পোস্টে কর্মীদের কমেন্টও পড়ছে কম।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক নেতা জানান, নেতা হওয়ার পরই ইব্রাহিম ফরাজি ও এসএম আক্তার হোসেনের চাল-চলনে অনেক পরিবর্তন আসে। কমিটি হওয়ার পর থেকেই তারা চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির দিকে ঝুঁকে পড়েন। প্রতিদিন প্রকৌশল দপ্তর আর উপাচার্য ভবনে দৌড়াদৌড়ি করে তাদের কর্মকাণ্ড শেষ করতেন। স্বার্থ হাসিল না হলে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সাথেও দুর্ব্যবহার করতেন।
এদিকে নিয়মিত প্রোগ্রামে না এলে সকলের সামনে কর্মীদের চড়-থাপ্পর মারার অভিযোগ আছে ইব্রাহিম আক্তারের বিরুদ্ধে। কর্মীদের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদ না দেয়ার হুমকি দিতেন সরাসরি। কমিটির অন্য নেতাদের মূল্যায়নই করতেন না।
সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের কথা না শুনলে কেউ ছাত্ররাজনীতি করতে পারবেনা বলে হুঙ্কার দিতেন এসএম আক্তার হোসেন। ছাত্রলীগের বিভিন্ন সভা-সমাবেশের মঞ্চে উপস্থিত আওয়ামীলীগ ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতাদের সালাম দিতেও বারণ করেন বলে অভিযোগ আছে ইব্রাহিম-আক্তারের বিরুদ্ধে । এতে দিন দিন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন অমূল্যায়িত নেতা-কর্মীরা।
এখন নিয়মিতই ক্যাম্পাসে শোডাউন দিচ্ছে অমূল্যায়িত নেতারা। প্রায় প্রতিদিনই ক্যাম্পাসে এসে শতাধিক কর্মী নিয়ে মহড়া দিচ্ছে তারা। বিশ্বস্তসুত্রে জানা গেছে, গ্রিন সিগনাল পেয়েই নিয়মিত মহড়া দিচ্ছেন ছাত্রলীগের অমূল্যায়িত নেতারা। স্থগিত হওয়া কমিটির শীর্ষ দুই পদে নতুন কেউ আসার সম্ভাবনা বেড়েই চলেছে। আবার অমুল্যায়িত নেতাদের নিয়মিত মহড়ার সাথে বাড়ছে কর্মীদের উপস্থিতিও। স্থগিত কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনেক কর্মীও যোগ দিচ্ছে নেতাদের শোডাউনে। দিন দিন স্থগিত কমিটির শীর্ষ দুই নেতার ফিরে আসার সম্ভাবনা ফিকে হয়ে যাচ্ছে। এই নিয়ে দুশ্চিন্তা আর হতাশায় ঘুম হারাম হয়ে যাচ্ছে তাদের।
এদিকে স্থগিত কমিটির সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজি ও সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন বিভিন্নভাবে কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ম্যানেজ করার চেষ্টা করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছাত্রলীগ নেতাদের সাথে অসাংগঠিনক আচরণের কারণে কেন্দ্রীয় ছাত্ররীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্রাচার্যের রোষানলে বেশ কয়েকবার পড়েছিলেন স্থগিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক এসএম আক্তার হোসেন। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সাথেও ভালো সম্পর্ক নেই ইব্রাহিম ফরাজির।
স্থগিত কমিটির সহ-সভাপতি কামরুল হোসাইন বলেন, 'বর্তমান কমিটির ইব্রাহীম-আকতারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে, সেগুলো সত্য হলে তাদেরকে বাদ দেওয়া হোক। আর মিথ্যা হলে যারা অপপ্রচার করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।'
ক্যাম্পাসে মহড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, 'ক্যাম্পাস তো সবার। সেজন্যই আমরা সবাই যাই, দেখা সাক্ষাৎ করি। এমন তো না ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম করতেছি। একসাথে বসতেছি, এটা তো স্বাভাবিকভাবে চলবেই।'স্থগিত কমিটির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ফৌজিয়া আফরিন প্রিয়ন্তী বলেন, 'আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে লিখিত অভিযোগ জানাবো। কেন্দ্রের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ জানিয়েছি, লিখিতভাবেও জানাবো। এই কমিটির আন্ডারে আমরা থাকতে চাইনা।'
স্থগিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রিফাত সাঈদ বলেন, 'কোনো ব্যক্তির কর্মের দায়, কখনোও সংগঠন নিবেনা। তাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে, তার জন্য কেন্দ্র উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করুক আমরা সেটাই চাই।'ক্যাম্পাসে মহড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে সবারই ক্যাম্পাসে আসার, বন্ধুবান্ধবের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করার অধিকার আছে। আমরা তো এখানে রাজনৈতিক কোনো কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছিনা। সবাই মিলে আড্ডা দিচ্ছি।'
এবিষয়ে জবি ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক এসএম আকতার হোসাইন বলেন, 'জগন্নাথ ছাত্রলীগের আলাদা কোনো গ্রুপ নেই। যারা বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে যায় তারা ছাত্রলীগের কেউ না৷ অনেকে আছে আবার ছাত্রলীগের অনুপ্রবেশকারী। তারা ছাত্রলীগকে বিতর্কিত করতে চায়।'
কবে নাগাদ আবার ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে সুসংগঠিত হয়ে ফিরবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা তো এখন বলা যাচ্ছে না। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নেতারা যেই সিদ্ধান্ত নিবে আমরা সেটাই মেনে নিবো।স্থগিত কমিটির সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজি বলেন, 'জননেত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত নিবেন আমরা তাই মেনে নিবো।'
ক্যাম্পাসে মহড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবে। এটা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে পড়েনা। যদি কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতো, সেটা আলাদা কথা।'
এমএসএম / জামান

ডাকসু নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন মাহিন, সমর্থন দিলেন বাকেরকে

ইবিতে ক্যারিয়ার ক্লাবের উদ্যোগে নেতৃত্ব উন্নায়ন কর্মশালা

ধ*র্ষ*ন হুমকির প্রতিবাদে গোবিপ্রবি ছাত্রদলের বিক্ষোভ

ঢাবি ছাত্রীকে গণধর্ষণের হুমকির প্রতিবাদে ইবি ছাত্রদলের বিক্ষোভ

সেই আলী হুসেনকে ঢাবি থেকে বহিষ্কার

নীলফামারিতে শ্রমিক হত্যার প্রতিবাদে জবিতে বিক্ষোভ

গোবিপ্রবি উপাচার্যের কাছে ছাত্রদলের চার দফা দাবী

এবার রেলপথ অবরোধ করলেন বাকৃবির আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা

চবি ও বাকৃবি শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে জবি শিক্ষক সমিতির মানববন্ধন

এলজিইউডি'কে শিক্ষা ক্যাডারে অন্তর্ভুক্তকরণের দাবিতে জাককানইবি'তে মানববন্ধন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌথ বাহিনী মোতায়েন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি

ফের সংঘর্ষে জড়িয়েছে স্থানীয় ও চবি শিক্ষার্থীরা, প্রক্টরসহ আহত অনেকে
Link Copied