ঢাকা সোমবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৫

দোহাজারী কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্প

১৮শ কোটির প্রকল্প শেষ হবে ১৮ হাজার কোটিতে


এসএম পিন্টু photo এসএম পিন্টু
প্রকাশিত: ৩০-১০-২০২২ দুপুর ২:৫১

৭৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে, ২০২৩ সালের ৩০ জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার আশা থাকলেও ট্রেন চলাচল করতে পারবে ২০২৪ এর শুরুতে-পিডি

পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সাথে সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন সহজ করার লক্ষে, চট্টগ্রামে দোহাজারী-কক্সবাজার ১০০ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণের ব্যয় শুরুতে ১৮৫২ কোটি ধরা হলেও পরে কাজের পরিধি বৃদ্ধি পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত এর ব্যয় বৃদ্ধি পেয়ে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকায় এসে ঠেকেছে। বর্তমানে এই প্রকল্পের কাজ ৭৫ শতাংশ শেষ হয়েছে জানিয়ে প্রকল্প পরিচালক মো. মফিজুর রহমান বলেন, কাজের পরিমান বাড়ার কারনে বেড়েছে প্রকল্পের ব্যয়। তবে টেন্ডার করার পরে এর ব্যয় বাড়েনি। সময় বাড়িয়ে ২০২৪ সালের ৩০ জুন করা হলেও ২০২৩ সালের ৩০ জুনের মধ্যেই কাজ শেষ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। তবে সব ঠিক থাকলে ২৪ এর শুরুতেই এই লাইনে ট্রেন চলাচল করতে পারবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

জানা যায় এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ঋণ সহায়তায় দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার মিটার গ্যাজ রেল লাইন নির্মাণ প্রকল্প ২০১০ সালের ৬ জুলাই একনেকে অনুমোদন পায়। সেই সময়ে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৮৫২ কোটি টাকা। পরে সেই প্রকল্পকে ডুয়েল গ্যাজ (মিটার গ্যাজ ও ব্রড গ্যাজ) ও ডাবল লাইনে কাজ করার জন্য পুণরায় ব্যয সংশোধন করে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা করা হয় এবং প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। পরে এক দফা বাড়িয়ে প্রকল্পের মেয়াদ করা হয় ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত।
এরই ধারাবাহিকতায় দোহাজারী থেকে কক্সবাজারের পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটারকে ২ ভাগে ভাগ করে ২টি কোম্পানীর মাধ্যমে কাজ চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন (সিআরইসি) ও বাংলাদেশের তমা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি এবং চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি) ও বাংলাদেশের ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড পৃথক দুই ভাগে কাজটি করছে। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে প্রকল্পটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। 
জানা যায়, প্রথম পর্যায়ে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত  ১৮ হাজার কোটি টাকার মধ্যে নির্মাণ করা হবে ১০০ কিলোমিটার রেলপথ। এর মধ্যে ৩৯টি বড় সেতু, ২২৩টি ছোট সেতু ও কালভার্ট, বিভিন্ন শ্রেণির ৯৬টি লেভেল ক্রসিং। থাকবে হাতি চলাচলের জন্য একটি ৫০ মিটার দীর্ঘ ওভারপাস ও তিনটি আন্ডারপাস। নয়টি স্টেশন নির্মাণ করা হবে দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগড়া, হারবাং, চকরিয়া, ডুলাহাজরা, ইসলামাবাদ, রামু ও কক্সবাজার।

২০১৮ সালের জুলাইয়ে কাজ শুরু করে বর্তমানে ৭৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে জানিয়ে প্রকল্প পরিচালক (পিডি) মো. মফিজুর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে কক্সবাজারের রামু, ঈদগাঁ, পেকুয়া ও চকরিয়া অংশে রেলট্র্যাক বসানোর কাজ শেষ হয়েছে বলে জানা গেছে। ব্রিজের কাজ প্রায় শেষ। এগুলোর ফিনিশিং কাজ চলছে। তবে কিছু কালভার্ট নির্মাণের কাজ বাকি আছে। এটি সরকারের ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প আমরা চেষ্টা করছি  নিখুঁতভাবে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য।
সাম্প্রতিক সময়ে ডলারের মূল্য বাড়ার কারণে সবধরনের নির্মাণ সামগ্রীর দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে প্রকল্পের মেয়াদকালও বাড়ানো হয়েছে তবে ব্যয় বাড়ানো হয়নি। যেটা বেশি দেখা যাচ্ছে তার জন্য কাজ বেড়েছে। প্রথমে এটি ঝিল মিটার গ্যাজের সিঙ্গেল লাইন পওে এাঁকে ডুয়েল গ্যাজ কওে ডাবল লাইন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে আর এজন্য লেগেছে অতিরিক্ত জমি। শুধু জমি অধিগ্রহণেই লেগে গেছে ৫ হাজার কোটি টাকা। । এছাড়া এই প্রকল্পের অধিনে কক্সবাজারে ঝিনুকের আদলে নির্মাণ হচ্ছে দেশের একমাত্র আইকনিক রেল স্টেশন। ২৯ একর জমির ওপর গড়ে ওঠা স্টেশন ভবনটি ১ লাখ ৮৭ হাজার ৩৭ বর্গফুটের। ছয় তালা ভবনের সামনে খোলা মাঠে তৈরি হবে ঝিনুকাকৃতির দৃষ্টিনন্দন একটি ফোয়ারা। যাত্রীরা ঝিনুক ফোয়ারা দিয়ে স্টেশনে প্রবেশ করবেন এবং চলন্ত সিঁড়ির মাধ্যমে পদচারী সেতু হয়ে উঠবেন ট্রেনে। আবার ট্রেন থেকে নেমে ভিন্ন পথে বেরিয়ে যাত্রীরা পা বাড়াবেন সৈকতশহরে। এ জন্য তৈরি হচ্ছে গমন ও বহির্গমনের পৃথক দুটি সড়ক। থাকছে গাড়ি পার্কিংয়ের তিনটি বড় জায়গা। ভবনের উত্তরে ৬৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১২ মিটার প্রস্থের তিনটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি হচ্ছে। প্রতিটি প্ল্যাটফর্মের দৈর্ঘ্য ৬৫০ মিটার ও প্রস্থ ১২ মিটার। এছাড়া এই স্টেশনটিতে পর্যটকেরা লাগেজ স্টেশনে রেখে সারা দিন সমুদ্রসৈকত বা দর্শনীয় স্থান ঘুরে রাতের ট্রেনে আবার ফিরতে পারবেন নিজ গন্তব্যে। এছাড়া ভবনটিতে থাকবে টিকিট কাউন্টার, অভ্যর্থনাকক্ষ, তথ্যকেন্দ্র, মসজিদ, শিশুদের বিনোদনের জায়গা, পেসেঞ্জার লাউঞ্জ, শপিং মল, রেস্তোরাঁ, তারকামানের হোটেল, রেস্তোরাঁ, কনফারেন্স হল ও কর্মকর্তাদের কার্যালয়।

উল্লেখ্য আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে কোম্পানি চট্টগ্রাম-ষোলশহর লাইন ১৯২৯ সালে, ষোলশহর-নাজিরহাট লাইন ১৯৩০ সালে, ষোলশহর এবং দোহাজারী লাইন ১৯৩১ সালের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করে। ২০১০ সালে দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার ও রামু থেকে মিয়ানমারের কাছে ঘুমধুম পর্যন্ত ১২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প নেওয়া হয়। প্রকল্প নেওয়ার সময় ২০১৩ সালের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু তার সময় বাড়িয়ে করা হয় ২০১৮ সাল পর্যন্ত। তবে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয় ২০১৭ সালে। ফলে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার রেললাইন ২০২৪ সালের শুরুতে সারাদেশের রেলওয়ে নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হবে আশা করছে সরকার।
কক্সবাজারের পাশাপাশি মিয়ানমারসহ ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে বাংলাদেশকে যুক্ত করার উদ্দেশ্যে এই প্রকল্প হাতে নেওয় হয়েছিল। তবে কক্সবাজার থেকে মিয়ানমার পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটারের কাজ আপাতত হচ্ছে না। কক্সবাজারের মহেশখালীতে গভীর সমুদ্রবন্দর, তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র, শিল্প অঞ্চলসহ অর্থনৈতিক উন্নয়নে নানা প্রকল্পের কাজ চলছে। চট্টগ্রামের সঙ্গে কক্সবাজারের যোগাযোগব্যবস্থা সহজ ও দ্রুত করার জন্য কর্ণফুলী নদীর তলদেশে চলছে টানেলের নির্মাণকাজ। এর পাশাপাশি রেললাইন স্থাপিত হলে কক্সবাজারে যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ হবে।

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত স্টেশন থাকবে মোট ২৫টি স্টেশন হলো:
চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন, চট্টগ্রাম জংশন রেলওয়ে স্টেশন, ঝাউতলা রেলওয়ে স্টেশন, চট্টগ্রাম পলিটেকনিক রেলওয়ে স্টেশন, ষোলশহর জংশন রেলওয়ে স্টেশন, জান আলীর হাট রেলওয়ে স্টেশন, গোমদণ্ডী রেলওয়ে স্টেশন, বেঙ্গুরা রেলওয়ে স্টেশন, ধলঘাট রেলওয়ে স্টেশন, খানমোহনা রেলওয়ে স্টেশন, পটিয়া রেলওয়ে স্টেশন, চক্রশালা রেলওয়ে স্টেশন, খরনা রেলওয়ে স্টেশন, কাঞ্চননগর রেলওয়ে স্টেশন, খানহাট রেলওয়ে স্টেশন, হাশিমপুর রেলওয়ে স্টেশন, দোহাজারী রেলওয়ে স্টেশন, সাতকানিয়া রেলওয়ে স্টেশন, লোহাগাড়া রেলওয়ে স্টেশন, হারবাং রেলওয়ে স্টেশন, চকরিয়া রেলওয়ে স্টেশন, ডুলাহাজরা রেলওয়ে স্টেশন, ইসলামাবাদ রেলওয়ে স্টেশন, রামু রেলওয়ে স্টেশন ও কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশন।

এমএসএম / এমএসএম

নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন এস এম রেজাউল ইসলাম রেজু

শার্শা আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন-তৃপ্তি

মৌলভীবাজার-৪ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হাজী মুজিব

বিএনপির মাদারীপুর এক ও তিন আসনে প্রার্থিতা ঘোষণা

গাইবান্ধার পাঁচ টি আসনে বিএনপির প্রার্থী চূড়ান্ত

কুমিল্লায় বিএনপি'র ৯ টি আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীতা ঘোষণা

চাঁদপুর জেলার বিএনপির সম্ভাব্য পাঁচ প্রার্থী

শরীয়তপুর-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী সাঈদ আহমেদ আসলাম

প্রথম বারের মতো ভোলা -৪ চরফ্যাশন মনপুরা আসেন মনোনয়ন পেলেন নূরুল ইসলাম নয়ন

মেহেরপুর বিএনপির মনোনয়ন পেলেন মাসুদ অরুণ-আমজাদ হোসন

মৌলভীবাজার-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন মিঠু

টাঙ্গাইল- ৬ আসনে বিএনপির প্রার্থী রবিউল আওয়াল লাভলু মনোনীত হয়েছেন

চুয়াডাঙ্গায় বিএনপির মনোনয়ন পেলেন শরীফ-বাবু