মোহনপুর ভূমি অফিসে টাকা কথা বলে

রাজশাহীর মোহনপুরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সেবা পেতে পদে পদে গুনতে হচ্ছে টাকা। ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছে জিম্মি সেবাপ্রার্থীরা। সেবাগ্রহীতারা বলছেন, এ অফিসে টাকা কথা বলে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, জমি খারিজের অনলাইনে আবেদন হওয়ার পরই তা পাঠিয়ে দেয়া হয় সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের জমা সহকারীর কাছে। আর এখান থেকেই শুরু হয় ঘাটে ঘাটে টাকা দেয়ার খেলা। তবে সেবাগ্রহীতারা নিঃস্ব হলেও অর্থ-বিত্তে ফুলে-ফেঁপে উঠছে ভূমি সেবা সংক্রান্ত পেশাজীবীসহ দালাল শ্রেণি।
সূত্রমতে, ভূমি সেবা সংক্রান্ত অনিয়মের চিহ্নিত স্থানগুলো হলো-জমা সহকারী, উপ সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (নায়েব) সার্ভেয়ার, এসিল্যান্ড, নাজির, কম্পিউটার অপারেটর, অফিস সহকারী, প্রসেসারভার, পিয়ন ও বহিরাগত দালাল।সেবা গ্রহীতাদের মাধ্যমে জানা গেছে, জমি খারিজ করতে নথি প্রতি খরচ তহসিলদার খরচ ৭০০ টাকা ঝামেলা থাকলে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা, বহিরাগত দালাল কর্তৃক নথি চেকিং ২০০, সার্ভেয়ার চেকিং ৫০০, এসিল্যান্ডের স্বাক্ষরের নামে টাকা, জমা সহকারী ফাইনাল করতে ৩০০, নোটিস জারি ২০০, ডিসিআর ফি ১২০০ আর্কাইভ করতে ২০০, হোল্ডিং খুলতে সর্বনিম্ন ২০০ সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা। অথচ সরকারি খরচ আবেদন,কোর্ট ফি, নোটিস জারি, ডিসিআর ফি বাবদ সর্বমোট ১২২০ টাকা।
ভুক্তভোগী ও তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, চাকরি বিধি অনুযায়ী এক কর্মস্থলে তিন বছর অতিবাহিত হলে বদলি করা হয়। অথচ তিন বছরের অতিরিক্ত সময় ধরে একই কর্মস্থলে রয়েছেন সার্ভেয়ার তৃসিত কুমার সাহা, কেশরহাট ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা ইকবাল কাশেম ও ধোরসা ভূমি উপ সহকারী কর্মকর্তা সজিবুল ইসলাম।
উপজেলার মৌগাছি ইউপির হরিহরপুর ভূমি অফিসের উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা শামিমা আকতার এখানে সেবা নিতে আসা গ্রাহকদের সাথে খারাপ আচরণসহ দূর্বব্যবহার করেন। এখানকার পুরাতন বিল্ডিংটি তিনি (শামিমা) দালালদের জন্য বরাদ্দ দিয়েছেন আর সেখানে বসেই সরকারি কর্মচারীরমত অফিসে প্রকাশ্যে সেবা গ্রহীতাদের জিম্মি করে অর্থ আদায় করছেন বহিরাগত দাদাল রনি ও শামিম।
তহশিলদার শামিমার বিরুদ্ধে বিদিরপুর বকপাড়া গ্রামের ফয়েজ উদ্দিনের ছেলে আজিজুল খান (৪৫) অভিযোগ করে বলেন, আমার ৭৪ শতক জমি খারিজের জন্য হরিহরপুর ভূমি অফিস আবেদন দিলে অনেকদিন ঘোরানোর পরে সাড়ে ১৭ শতক ধানী জমি খারিজ হবে বলে জানান তহশিলদার। এরপর তহশিলদার এর মেইন লোক রনি জমিটি খারিজ করে দিতে দু'বারে আমার থেকে নগদ সাড়ে বারো হাজার টাকা নিয়ে কাজটি করে দেন।
ধুরইল ইউপির আমরাইল গ্রামের মৃত ইসমাইল মন্ডলের ছেলে বাবুল মন্ডল (৩৮) বলেন,জমি খারিজ করে হোল্ডিং খুলতে হরিহরপুর ভূমি অফিসে যান। সেখানে কর্মরত পারভীন প্রস্তাবিত খতিয়ান ও হোল্ডিং খোলার জন্য কাগজ ও দু'শ টাকা নিয়ে এক সপ্তাহপর যোগাযোগ করতে বলেন, দুই দিন পরেই পারভীন মুঠোফোনে বাবুলকে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে আসতে বলেন। তিনি আসলে পারভীন ও রাকিব বলেন, আপনার প্রস্তাবিত খতিয়ান ও হোল্ডিং খোলা হয়ে গেছে খতিয়ানের জন্য ৮'শ ও হোল্ডিং খোলার জন্য ৭'শ টাকা দিতে হবে। একথা শুনে তিনি টাকা দিতে আপত্তি জানান এবং বিষয়টি তহশিলদার শামিমাকে জানালে তিনি বলেন, আপনাকে ১৫'শ টাকা দিয়েই হোল্ডিংয়ের কাগজ নিয়ে যেতে হবে। নিরুপায় বাবুল অগত্যা ঘুষের ১৫'শ টাকা দিয়ে কাগজটি নিতে বাধ্য হয়। যার হোল্ডিং নম্বর ১১৩৭, প্রস্তাবিত খতিয়ান নং ১০৫৩ মৌজা আমরাইল।
এদিকে মোহনপুর সহকারি কমিশনার ভুমি অফিসের সার্ভেয়ার তৃসিত কুমার সাহা'র বিরুদ্ধে জমি খারিজ সংক্রান্ত প্রতি কেস বাবদ স্বাক্ষর করতে ৫'শ টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।এখানেই শেষ নয় অফিসের টেবিলে বসে কাজ করেন সার্ভেয়ার এর অলিখিত বেসরকারি সহকারী শহিদুল নামে এক ব্যক্তি। সার্ভেয়ার নির্দেশে এ শহিদুল টাকা নিয়ে খারিজ কেস পাশ করে দেন বলে অভিযোগ করেন মৌগাছি ইউপির আকুবাড়ি গ্রামের মৃত ইয়ানুচ ওরফে ইউনুচ আলীর ছেলে নাজমুল হক (৫২) তিনি বলেন, শহিদুল আমার খারিজ কেস পাশ করার জন্য সার্ভেয়ার এর সামনে নগদ ৫ হাজার টাকা ও ডিসিআর কাটতে দেড় হাজার টাকা নিয়ে আমার কাজটি করে দিয়েছেন। যার হোল্ডিং নম্বর- ৫৮২,খতিয়ান-৫৮৮।
বাবুল মন্ডল আরো জানান, মোহনপুর সহকারি কমিশনার ভূমি অফিসের নাজির মোঃ নাজমুল হোসেন ভিপি সম্পত্তি পুকুর খারিজ করে দিবেন বলে ১ লাখ টাকায় মৌখিক চুক্তি করে নগদ ১৭ হাজার টাকা গ্রহন করেন। প্রায় ৬মাস অতিবাহিত হলেও তিনি এখনো তাকে শান্তনা দিচ্ছেন ডিসি স্যার স্বাক্ষর করলেই আপনার কাজটি হবে একটু ধৈর্য ধরুন। যার তফসিল পরিচয় আমরাইল মৌজা, রকম পুকুর, দাগ নং ৪৫৫৪, খতিয়ান ১ নম্বর খাস খতিয়ান পরিমান ৩৫ শতাংশ পুকুর।
এ বিষয়ে নাজির মোঃ নাজমুল হোসেন বলেন, বাবুলের কাজটি করে দেব বলে একটা চুক্তি হয়েছিল। পররর্তীতে তার থেকে নেওয়া ১৭ হাজার টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। সে কাজ করতে টাকা দিয়ে সবাইকে বলে বেড়ায়।
মোহনপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার তৃসিত কুমার সাহা বলেন, অফিসে লোক কম থাকায় শহিদুল নামে একজনকে দিয়ে কাজ করাই। আমার নাম করে টাকা নেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই।এবিষয়ে মোহনপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি প্রিয়াংকা দাস বলেন, ভূমি সেবা নিতে কেউ হয়রানির স্বীকার হয়নি। লোকবল কম থাকায় বেসরকারি লোকজন দিয়ে কাজ করানো হয়। টাকা নেওয়ার ঘটনা সত্য নয়।মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী সাবিহা ফাতেমাতুজ-জোহ্রা বলেন,‘ভূমি সেবা পেতে ঘাটে ঘাটে টাকা দিতে হয়। এটা জানতাম না। ভূমি অফিসগুলোতে বেসরকারি লোককে দিয়ে কাজ করাতে নিষেধ করেছি। সেবা নিতে এসে কেউ হয়রানির স্বীকার হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুহাম্মদ শরিফুল হক বলেন,যারা ভূমি সেবা নিতে গিয়ে ভোগান্তির স্বীকার হয়েছেন তাদেরকে আমার দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করতে বলুন। আর তা না হলে আপনি তাদের হয়ে অভিযোগ করুন।
এমএসএম / জামান

পঞ্চগড়ে ইন্টার্নশিপ বিদ্যালয়ে সহকারি দুই শিক্ষক অনুপস্থিত, একজন হাজতে, ব্যবস্থা নেয়নি কেউ

কোটালীপাড়ায় মায়ের সাথে অভিমান করে মাদ্রাসা ছাত্রের আত্মহত্যা

টেকনাফের বাহারছড়ার গহীন পাহাড়ে কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনীর যৌথ অভিযান

লাকসামে ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ কাউন্সিল’২৫ অনুষ্ঠিত

শেরপুরে বন্যহাতির তান্ডবে আমন খেত নষ্ট: দিশেহারা কৃষকেরা

মাদকমুক্ত সমাজ গড়ি" শীর্ষক প্রতিবাদকে সামনে রেখে স্থানীয় গ্রামবাসী ও যুবসমাজের উদ্যোগে আলোচনা

বাউফলে স্প্রেইড হিউম্যানিটির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন,স্বৈরাচারের বিচার দৃশ্যমানকরে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দিতে হবেঃ এটি এম মাসুম

তানোরে মা ও ছেলেকে কুপিয়ে জখম

সীতাকুণ্ডে বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল সাইকেল আরোহীর

ঝামায় ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

মুকসুদপুর প্রেসক্লাব ৩ সদস্যকে ত্রুেস্ট ও পরিচয়পত্র প্রদান
