জবি ক্যাম্পাসে মশার রাজত্ব, ভ্রুক্ষেপহীন প্রশাসন

অপরিচ্ছন্ন ড্রেনে জলাবদ্ধতা, পর্যাপ্ত পরিমাণে হয়না মশার ওষুধের প্রয়োগ, নেই মশা নিধনে কার্যকরী পদক্ষেপও। এরই মাঝে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বেড়ে চলেছে এডিস মশার বংশবৃদ্ধি। এতে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা, ফলে আতঙ্কে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও।
ক্যাম্পাস পরিদর্শন করে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে শুরু করে পুরো ক্যাম্পাসের ড্রেনগুলোতেই জমে আছে পানি। ভাষা শহীদ রফিক ভবনের পাশের ড্রেন, ক্যাফেটেরিয়ার পাশের ড্রেন, নতুন একাডেমিক ভবনের পেছনের ড্রেনগুলোর মুখে ময়লা জমে পুরো ড্রেনেজ ব্যবস্থা স্থবির হয়ে গেছে। এসব ড্রেনে পানি জমে থাকায় বেড়েছে এডিস মশার রাজত্ব। মশার কামড়ে শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ডেঙ্গু আক্রান্ত হলেও মশা নিধনে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শুধুমাত্র সিটি কর্পোরেশনের দিনে একবার ফগার মেশিনে দিনে মশার ওষুধ ছিটিয়েই দায় সারছে প্রশাসন।
এদিকে ড্রেনের লাইনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করাও হচ্ছে না। শিক্ষক ডরমেটরি, বিজ্ঞান অনুষদ চত্বর কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ ফটকের ভেতর দিয়ে যাওয়া সিটি করপোরেশনের ড্রেনেও জমে রয়েছে পানি। জমে থাকা পানিতে দেখা যায় এডিস মশার লার্ভা। মশাও উড়ে বেড়াচ্ছে চারদিকে। পরিষ্কার না করায় এই অবস্থা ভয়াবহতায় রূপ নিচ্ছে। আর তা পরিণত হচ্ছে মশার আতুড়ঘরে।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় অধিকাংশ ড্রেনেই খোলা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ছাত্রী কমনরুমের পাশের ড্রেন, রফিক ভবনের দুপাশের ড্রেন, বজলুর রহমান মিলনায়তনের পেছনে, কলা ভবন ও সামাজিক বিজ্ঞান ভবনের পেছনের ড্রেনও উন্মুক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন একাডেমিক ভবনের পেছনের ড্রেনগুলোতেও দেখা যায় বদ্ধ পানি। স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ এবং বিভিন্ন ঝোপঝাড় থাকায় ড্রেনগুলি মশার বংশবিস্তারের উপর্যুক্ত পরিবেশ তৈরি করেছে।
এদিকে মাঝেমধ্যে বিকালে ক্যাম্পাসে শুধুমাত্র ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবনের চারপাশ, নতুন একাডেমিক ভবনের সামনের জায়গা, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সামনের জায়গায় ফগার মেশিন দিয়ে নামমাত্র মশার ওষুধ ছিটানো হয়। নিয়মিত ড্রেন পরিষ্কার না করা ও ভবনের পিছনের ঝোপঝাড়ের জায়গাগুলোতে মশার ওষুধ না ছিটানোয় মশা যেন কমছেই না। কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় ক্যাম্পাসে মশার রাজত্ব বেড়েই চলছে।
এদিকে মশা নিধনে ও বংশবিস্তার রোধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কার্যকরী পদক্ষেপ না থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করছেন শিক্ষার্থীরা।
ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আসাদুজ্জামান আপন জানান, ক্লাস পরীক্ষার প্রয়োজনে দিনের অধিকাংশ সময়ই ক্যাম্পাসে কাটানো হয়। সারাদেশে ডেঙ্গুর যা অবস্থা তাতে আমাদের অবস্থান করাতেও ঝুঁকি রয়েছে। ক্যাম্পাসের ড্রেনগুলিতে মশা যেভাবে বংশবিস্তার শুরু করেছে এভাবে চলতে থাকলে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে পড়বে।
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান জানান, 'শুধুমাত্র বিকালে মশার ওষুধ ছিটানো হয়। এডিস মশা তো রাতে কামড়ায় না। দিনের বেলাতেই বেশি কামড়ায়। সারাদিন ক্যাম্পাসে থাকতে হয়। কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় আমার অনেক বন্ধুই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে।
এদিকে ঠান্ডা ও জ্বর নিয়ে অনেক শিক্ষার্থীই প্রতিদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে আসছেন। প্রায় প্রতিদিন ২০০ জন রোগী আসলে অধিকাংশই আসছেন জ্বরের উপসর্গ নিয়ে। এদের মধ্যে এক তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থীই ডেঙ্গুর উপসর্গের। বিগত দুই সপ্তাহে প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী এমন উপসর্গ নিয়ে মেডিকেল সেন্টারে এসেছেন। যার মধ্যে অধিকাংশেরই ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার আশংকা করছেন তারা।
মেডিকেল সেন্টারের উপ-প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. মিতা শবনম বলেন, ' আমাদের এখানে অনেক শিক্ষার্থীই জ্বর নিয়ে আসছেন। জ্বর হলে প্রাথমিকভাবে নাপা খেতে বলি। ডেঙ্গুর উপসর্গ দেখা দিলে তাদেরকে ডেঙ্গু টেস্ট করার জন্য বলি। শিক্ষার্থীরা বাইরের মেডিকেল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করায়। উপসর্গ থাকা কিছু শিক্ষার্থীদের ডেঙ্গু পজিটিভ আসে আর অনেকেরই নেগেটিভ আসে। রিপোর্ট নিয়ে আসলে আমরা ডেঙ্গু আক্রান্তের নির্দিষ্ট সংখ্যা বলতে পারতাম। তবে বেশ কিছু শিক্ষার্থী ডেঙ্গু আক্রান্ত বলে শুনেছি।'
এবিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ উন্নয়ন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল কাদের বলেন, 'আমরা দিনে একবার করে ওষুধ ছিটাচ্ছি। ক্যাম্পাসের পিছনের ড্রেনগুলোতেও ছিটানো হচ্ছে। ড্রেনগুলো যেন পরিষ্কার রাখা হয় সেজন্য বলা হয়েছে।'
তবে পানি জমে থাকা ও ঢাকনা না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরে কথা বলতে বলেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দীন পাটোয়ারি সকালের সময়কে জানান, 'এসব ড্রেনে ঢাকনার ব্যাপারে আমি একবার ফাইল পাঠিয়েছিলাম, তবে সেটি বাতিল হয়ে যায়। অনেকেই এ ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করে। বলেছে ঢাকনা থাকলে ড্রেন পরিষ্কার করতে সমস্যা হবে। তবে আমরা সবাই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি।'
এমএসএম / জামান

থমথমে ঢাবি ক্যাম্পাস, সতর্ক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

ঢাবি ভিসিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘জামায়াতি প্রশাসন’ আখ্যা দিল ছাত্রদল

সুবিপ্রবি নির্ধারিত জায়গায় দ্রুত স্থাপনের লক্ষে বৃহত্তর সুনামগঞ্জবাসীর স্বারকলিপি

ডাকসু নির্বাচনের ভোটগণনা শুরু

টিএসসি কেন্দ্রে ৩ ঘণ্টায় ভোট পড়েছে ৩৫ শতাংশ

ভোটার লাইনে প্রার্থীদের প্রচারণা, ‘বিরক্ত’ ভোটাররা

শান্তিপূর্ণভাবে চলছে ডাকসুর ভোটগ্রহণ

শান্তিপূর্ণভাবে চলছে ডাকসুর ভোটগ্রহণ

ভোটটা উদযাপন করতে চাই : ছাত্রদল প্যানেলের ভিপিপ্রার্থী আবিদুল

ঢাবিতে প্রবেশে কঠোর নিয়ন্ত্রণ, ভেতরে বিজিবির টহল

ডাকসু নির্বাচন : নারী ভোটকেন্দ্রে লম্বা লাইন

রাত পোহালে ডাকসু নির্বাচন

পবিপ্রবিকে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার নেতৃত্ব দেওয়ার দাবিতে শিক্ষার্থীরা
Link Copied