ঢাকা সোমবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৫

নতুন প্রজন্মের জন্য ফেব্রুয়ারির ইতিহাস চর্চা জরুরি


জিয়াউদ্দিন লিটন photo জিয়াউদ্দিন লিটন
প্রকাশিত: ৮-২-২০২৩ দুপুর ১:৫৮
শুরু হলো ঐতিহাসিক ভাষার মাস, গৌরবের মাস ফেব্রুয়ারি। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ঢাকার রাজপথে যারা জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, তাদের অমলিন স্মৃতি স্মরণের মাস ফেব্রুয়ারি।বাঙালির কাছে এই মাস ভাষার মাস, দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হওয়ার মাস। তাই তো বাঙালি জাতি নানা আয়োজনের মাধ্যমে পুরো ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে ভালোবাসা জানাবে ভাষা শহীদদের প্রতি। 
১৯৫২ সালে এই মাসেই সালাম, রফিক, বরকত, জব্বারসহ অনেকে বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে মাতৃভাষাকে রক্ষা করেন। মায়ের ভাষা কেড়ে নেওয়ার এই সংগ্রামে সেদিন ছাত্র-জনতা একসঙ্গে রাজপথে নেমে পড়েছিলেন। পৃথিবীর ইতিহাসে ভাষা নিয়ে এমন আন্দোলন আর কোথাও হয়নি। সেজন্য ফেব্রুয়ারি শুধু ভাষার মাস নয়, আত্মপ্রত্যয়ে উজ্জীবিত হওয়ারও মাস, বাঙালির গর্ব-অহংকারেরও মাস। রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলার স্বীকৃতি প্রদানের বিষয়টি ভাষা আন্দোলনের মূল বিষয় হলেও এ আন্দোলনের প্রভাব ছিল অনেক সুদূরপ্রসারী। এই আন্দোলন এক অর্থে পূর্ব বাংলায় পাকিস্তানি শাসনের অবসান প্রক্রিয়ার সূত্রপাত ঘটায় এবং গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে মানুষের সাহসী অংশগ্রহণকে নিশ্চিত করেছে। বাস্তবতার বিচারে স্বাধীনতা দিবস বা বিজয় দিবস একুশে ফেব্রুয়ারির চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলেও এখন পর্যন্ত একুশে ফেব্রুয়ারির প্রাণের উচ্ছ্বাসের সঙ্গে অন্যদিনের তুলনা চলে না। কিন্তু বর্তমান প্রজন্ম কি একুশের তাৎপর্য সম্পর্কে সচেতন?এসব দিবসে মাঝে মাঝে টেলিভিশনে যে তাৎক্ষণিক সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয় তাতে দেখা যায়, অনেকেই এসব দিনকে সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করতে পারে না। 
 
“ওরা আমার মুখের ভাষা কাইরা নিতে চায়…………………………আদৌ কি বাঙালির  মুখে কি অন্য কথা শোভা  পায়?” আব্দুল লতিফের লেখা সেই গানের কথা ছিল বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের পটভূমি। তবে ওদের কার্য হাসিল করতে দেয়নি বাংলার ছেলেরা। জীবনের বিনিময়ে ছিনিয়ে এনেছে মুখের ভাষা। ফেব্রুয়ারি মাসে ঘটে যাওয়া অনেক ঘটনা আমাদের ইতিহাসের অনন্য সংযোজন। এই ফেব্রুয়ারি মাসেই সামরিক শাসনের  অবসানে ১৯৯১-এ অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করে, ফলে এক নতুন গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ। অবশ্য এই অভিযাত্রাকে সেদিন অপরপক্ষ গ্রহণ করতে পারেনি। জনতার রায়কে অভিহিত করা হয়েছিল সূক্ষ্ম কারচুপি হিসেবে। ২০০৯ সালের এ মাসেই ঘটে দেশের ইতিহাসে এক অবর্ণনীয় হত্যাকাণ্ড। বিদ্রোহের অজুহাতে তৎকালীন বিডিআরের ৫৭ জন সেনা অফিসারকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। আজ পর্যন্ত কেউ জানলো না কেন এই হত্যাযজ্ঞ। কিছু অপরাধীর বিচার হয়েছে;  কিন্তু একটি সুশৃঙ্খল বাহিনীর কিছু সদস্য কেন হিংসায় উন্মত্ত হয়ে উঠেছিলেন সেদিন- বিভিন্নজন বিভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছেন, কিন্তু বিশ্বাসযোগ্য কোনো কিছুই পাওয়া যায়নি। শৃঙ্খলাবদ্ধ বাহিনীতে বিদ্রোহের ঘটনা এ দেশে নতুন নয়। পাকিস্তান আমলে এই ঢাকা শহরে পুলিশরা এই ফেরুয়ারি মাসেই বিদ্রোহ করেছিল। ১৯৭১ সালে সেনাবাহিনী, বিডিআর, পুলিশ, আনসার বিদ্রোহ করেছিল স্বাধীনতার জন্য। ১৯৯৪ সালে আনসার বাহিনী বিদ্রোহ করেছিল বেতন-ভাতার জন্য।  
 
এ ফেব্রুয়ারি মাসেই ১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি একক সিদ্ধান্তে ছাত্রনেতা তোফায়েল আহমেদ শেখ মুজিবুর রহমানকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করেন। এগার দফা আন্দোলনের অন্যতম ছাত্রনেতা মো. শামসুদ্দোহা লিখেছেন : ‘বঙ্গবন্ধু উপাধি প্রদানে কোনো আপত্তি কারোই ছিল না বা নেই। কিন্তু ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের কাউকে না জানিয়ে যে পদ্ধতিতে তার মতো নেতাকে এই উপাধি দেয়া হয়, তা না করে উচিত ছিল আনুষ্ঠানিকভাবে কেন্দ্রীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে তাকে বঙ্গবন্ধু উপাধি প্রদান করা।’ অবশ্য ততদিনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. শামসুজ্জোহা এবং আগরতলা মামলার আসামি সার্জেন্ট জহুরুল হকের শহীদি মৃত্যু হয়েছে। অবসান ঘটেছে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা বা পরবর্তীকালে সত্য মামলা আগরতলার। ১৯৬৬ সালের এ মাসেই শেখ মুজিব লাহোরে ঐতিহাসিক ছয় দফা ঘোষণা করেন যা পরবর্তী সময়ে প্রেরণা জুগিয়েছে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে। এ মাসেই, ১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলনে গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিল দীপালী, দেলোয়ারসহ অনেকে। এদের কথা আজ আর কেউ মনে করে না। তরুণদের মন থেকে ওই আন্দোলনের কাহিনীকে মুছে ফেলেছে ভালোবাসা দিবসের উত্তেজনা। কিন্তু সব ঘটনার ঔজ্জ্বল্যতা ম্লান করে দিয়েছে ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ভাষা আন্দোলন। ভাষা আন্দোলনকে  অনেকভাবেই আমরা আখ্যায়িত করি। সংগ্রামের উজ্জীবনী দিন একুশে ফেব্রুয়ারি। একুশ মানে মাথা নত না করা, একুশ মানে কথা বলার স্বাধীনতা,একুশ মানে অধিকারের স্বীকৃতি। পূর্ব বাংলার মুসলমানদের প্রবল কার্যক্রমে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হলেও পূর্ব বাংলার সেই মুসলমানরাই পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যেই জনগণের পক্ষে সফল আন্দোলন তৈরি করেছিলেন। তাই বলি,একুশে ফেব্রুয়ারি শুধু ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামই নয়, একুশে ফেব্রুয়ারি গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম- স্বাধিকার অর্জনের সংগ্রাম। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন বাঙালির জীবনে এক অবিচ্ছেদ্য অধ্যায়। যে অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের মধ্য দিয়ে। এই আন্দোলনে ছাত্রদের পাশাপাশি রাজপথে নেমে এসেছিল কৃষক, চাকরিজীবী, রিকশাচালকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। বুক পেতে দিয়েছিল শত্রুর বুলেটের সামনে। পরোয়া করেনি নিজের জীবনের। শহীদ হয়েছিলেন সালাম, বরকত সহ অফিস যাত্রী শফিউর রহমান সহ নাম না জানা অনেকে। শত্রুর ভয়ে যার লাশ দাফন হয়েছিল দুই দিন পর খুব গোপনে।
 
মূলত,১৯৪৭ সাল থেকেই চলে আসছে বাংলাকে নিজেদের করে নেয়ার কার্যক্রম। বাংলা ভাষা আন্দোলন ছিল তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে সংঘটিত একটি সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন। ২ সেপ্টেম্বর ১৯৪৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষক ও ছাত্রের উদ্যোগে ‘তমুদ্দুন মজলিস‘ গঠনের মাধ্যমে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয়। তমুদ্দুন মজলিসের নেতৃত্বে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন তরুণ অধ্যাপক আবুল কাশেম। মৌলিক অধিকার রক্ষাকল্পে বাংলা ভাষাকে তৎকালীন পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণদাবীর বহিঃপ্রকাশ ঘটে। ১৯৪৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি তারিখে পাকিস্তান গণপরিষদে ইংরেজি ও উর্দুর পাশাপাশি সদস্যদের বাংলায় বক্তব্য প্রদান এবং  সরকারি কাজে বাংলা ভাষা ব্যবহারের জন্য একটি সংশোধনী প্রস্তাব উত্থাপন করেন গণপরিষদ সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। ইংরেজিতে প্রদত্ব বক্তব্যে বাংলাকে অধিকাংশ জাতিগোষ্ঠীর ভাষা হিসেবে উল্লেখ করে ধীরেন্দ্রনাথ বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেয়ার দাবি তোলেন। এছাড়াও সরকারি কাগজে বাংলা ভাষা ব্যবহার না করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানান তিনি। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে এ আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ ধারণ করলেও বস্তুত এর বীজ বপিত হয়েছিল বহু আগে, অন্যদিকে এর প্রতিক্রিয়া এবং ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী। 
 
১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ব্রিটিশ ভারত ভাগ হয়ে পাকিস্তানের উদ্ভব হয়। কিন্তু পাকিস্তানের দু’টি অংশ- পূর্ব পাকিস্তান এবং পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে সাংস্কৃতিক, ভৌগোলিক ও ভাষাগত দিক থেকে অনেক মৌলিক পার্থক্য বিরাজ করছিল। ১৯৪৮ সালে পাকিস্তান সরকার ঘোষণা করে যে, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। এ ঘোষণার প্রেক্ষাপটে পূর্ব পাকিস্তানে অবস্থানকারী বাংলাভাষী সাধারণ জনগণের মধ্যে গভীর ক্ষোভের জন্ম হয় ও বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। পূর্ব পাকিস্তান অংশের বাংলাভাষী মানুষ আকস্মিক ও অন্যায্য এ সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারেনি এবং মানসিকভাবে মোটেও প্রস্তুত ছিল না। ফলস্বরূপ বাংলাভাষার সম মর্যাদার দাবিতে পূর্ব পাকিস্তানে আন্দোলন দ্রুত দানা বেঁধে ওঠে। আন্দোলন দমনে পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করে ঢাকা শহরে সমাবেশ-মিছিল ইত্যাদি বেআইনী ও নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি (৮ ফাল্গুন ১৩৫৮) এ আদেশ অমান্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু সংখ্যক ছাত্র ও প্রগতিশীল কিছু রাজনৈতিক কর্মী মিলে মিছিল শুরু করেন। মিছিলে যোগ দেন সাধারণ মানুষও। পথশিশু থেকে শুরু করে কর্মজীবী, রিকশাচালকও স্লোগানে মুখরিত করে তোলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। মিছিলটি ঢাকা মেডিকেল কলেজের কাছাকাছি এলে পুলিশ ১৪৪ ধারা অবমাননার অজুহাতে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। গুলিতে নিহত হন রফিক, সালাম, বরকত-সহ আরও অনেকে।
 
একুশে ফেব্রুয়ারির অন্যতম শিক্ষা ছিল মাতৃভাষার মর্যাদা। বলা হতো, মাতৃভাষা বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার এবং শিক্ষার ন্যায্য দাবিকে আদায় করার গণতান্ত্রিক দাবি আদায়ের সংগ্রামে যারা শহীদ হয়েছেন, সেই সব বীরকে আমরা স্মরণ করি, আমাদের প্রতিজ্ঞায়, আমাদের কাজে ও চিন্তায়। এ দেশের সংগ্রামী মানুষের পথচলায় বিভিন্ন সময়ে অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা আছে, যা সমাজকে আন্দোলিত করেছিল। কিন্তু ফিরে আসতে হয় এই ভাষার মাসে। প্রতি বছর এ দিনটি যে তাৎপর্য বহন করে আনে আমাদের জীবনে,অন্য দিনটি তা করে না। জীবনের অস্তিত্বের সঙ্গে যেন জড়িয়ে গেছে দিনটি। কিন্তু একুশের শিক্ষা কি আমাদের জীবনে প্রবেশ করেছে?স্বাধীন বাংলাদেশে একুশ শোক বা প্রতিবাদের কথা বলে না। একুশ এখন পরিণত হয়েছে উৎসবে, লক্ষ প্রাণের মুখর জমায়েতে। হারিয়ে যেতে বসেছে মাতৃভাষা বাংলার উপযোগিতা ও প্রাধান্য। বিদেশি ভাষার সঙ্গে মিশেল দিয়ে যে বাংলা তৈরি হচ্ছে, প্রচারিত হচ্ছে তাতে একসময় বাংলাকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। একধরনের মিডিয়ার কল্যাণে শিক্ষার্থীরা যে বাংলা শিখছে, তা পরিণত বয়সে তাদের সঙ্গী হয়েই থাকবে এবং সেটাকেই তারা শুদ্ধ বাংলা বলে জানবে। বর্তমান অবস্থা চলতে থাকলে বাংলা ভাষা একসময় সাংস্কৃতিক ভাষায় পরিণত হবে, হয়তো হারিয়েও যাবে। প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনেকের ছেলেমেয়েই এখন বাংলা পড়তে বা বুঝতে পারে না। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্রযুক্তির ব্যবহার। এই প্রযুক্তির ব্যবহারের প্রয়োজনে তরুণরা এখন ভিন্ন ভাষা ব্যবহার করে। এই ভিন্নতা ইংরেজির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। সরকারি নিয়ন্ত্রণ দিয়ে কোনো পরিবর্তন ঠেকানো যাবে কিনা সন্দেহ আছে।
"আমার ভাইয়ের রক্তে  রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি........." গানটি আজ শুধু একদিনের  একটি অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক গানে পরিনত হয়ে গেছে। 
একুশের শিক্ষাও আমাদের জীবন থেকে মুছে যাচ্ছে। ভাষা আন্দোলনের শহীদরা গণতন্ত্রের অধিকার, কথা বলার অধিকার, আপন পথে চলার অধিকারের কথা বলেছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশে ক্রমান্বয়ে তা অপসৃয়মাণ। গণতান্ত্রিক স্বাধীনতার অনুপস্থিতিতে মানুষ রাষ্ট্রের সঙ্গে তার সম্পর্ককে হারিয়ে ফেলে, পরিণত হয় এক বিচ্ছিন্ন দ্বীপে। যারা একুশে পদক পেয়ে মর্যাদা পেয়েছেন তারাও এই অনুপস্থিতির ব্যাপারে সোচ্চার নন। অথচ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এমন পদক বিজয়ীরা মানুষের এই অধিকারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। শোক যেমন শক্তিতে পরিণত হয়, উৎসবও পরিণত হতে পারে আন্দোলনে। এ কারণেই ফেব্রুয়ারির ইতিহাস চর্চা ও চিন্তা অত্যন্ত জরুরি।  ফেব্রুয়ারির ঘটনাবলী আমাদের জাতীয় জীবনে ইতিহাসের, বিশেষ করে বিদ্রোহের, অপমানের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর এবং অধিকার আদায়ে জনতার একতার আলোকবর্তিকা হিসেবে টিকে থাকবে। ভবিষ্যতে পথ দেখাবে বাংলাদেশের মানুষকে- গৌরবের অতীতকে স্মরণে রাখতে।  
 
লেখকঃ শিক্ষক,সাংবাদিক ও কলামিস্ট

এমএসএম / এমএসএম

কোচিং-এর গোলকধাঁধায়, শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে গুরুত্ব নেই

সাংবাদিকের দল সমর্থন গণতন্ত্রের জন্য হুমকি

ইঁদুরের কৃতজ্ঞতা

নাগরিক সেবা ও প্রত্যাশার সংকট: রাষ্ট্রীয় কর্মচারী কোথায়?

টেকসই সমাজ গঠনে সাম্য একটি অপরিহার্য ভিত্তি

শুভ জন্মাষ্টমী : সত্য, সুন্দর ও সাম্য প্রতিষ্ঠায় শান্তির বার্তা

রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অপরিহার্য

জনগণের অংশগ্রহণে নির্বাচিতরাই কাশ্মীরের শাসক

স্বৈরশাসকের বিদায়, বিদ্রোহ ও পলায়ন

জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় তারেক রহমান

এপিআই ও এক্সিপিয়েন্ট উৎপাদনে বাংলাদেশের আত্মনির্ভরশীলতা: স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির নবদিগন্ত উন্মোচন

ট্রাম্প-উরসুলার বাণিজ্য চুক্তিতে স্বস্তির হাওয়া

মানবিক সংকটের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব