ঢাকা মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

কালীগঞ্জে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টেস্ট বাণিজ্য এখন ওপেন-সিক্রেট স্বাস্থ্য সেবা বিপন্ন


নিজস্ব সংবাদদাতা photo নিজস্ব সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ১৫-২-২০২৩ দুপুর ১২:৪৭

সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান গাজীপুর জেলার ৫০ শয্যা বিশিষ্ট কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। বিস্ময়কর হলেও যে, এখানে নানা রোগের পরীক্ষা-নিরীক্ষার সরঞ্জাম প্রায় সব সময়ই থাকে বিকল। এছাড়া ২০ ভাগ পরীক্ষার কোনো ব্যবস্থাই নেই সরকারী এই হাসপাতালে। এই সুযোগে কিছু অসৎ কর্মকর্তার যোগসাজশে হাসপাতালের ভেতরেই গড়ে উঠেছে বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিকদের একটি শক্তিশালী চক্র। তাদের প্রতিনিধিরা প্রকাশ্যে হাসপাতালের কম্পাউন্ড হতে রোগীদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে নিজ নিজ বেসরকারি ক্লিনিকে।

এর মাধ্যমে রোগী ও স্বজনদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন হাজার হাজার টাকা। এ প্রক্রিয়ার সাথে অনেক অসাধু চিকিৎসকও জড়িত রয়েছে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিশ্চুক হাসপাতালের কিছু কর্মকর্তা। তাদের কারসাজিতে পাশেই গড়ে তোলা বেসরকারি ডায়াগনাষ্টিক সেন্টাগুলিতে চলছে টেষ্ট বাণিজ্য। হাসপাতাল ঘিরে গড়ে ওঠা চিকিৎসক সিন্ডিকেটের এই ‘টেস্ট’ বাণিজ্য এখন ‘ওপেন-সিক্রেট’। ফলে উচ্চমূল্যে টেস্ট করাতে গিয়ে ঔষুধ কেনার টাকা থাকছে না অনেক রোগীর। হাসপাতালে একটি চক্র গ্রাম থেকে আসা সহজ-সরল রোগীদের বিভ্রান্ত করে এ কাজ করছে। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য।

অনুসন্ধানে জানা যায়,জাহানারা (৪৫) নামে সেবা প্রার্থী এক রোগী মেয়েলী কিছু সমস্যা নিয়ে সরকারী হাসপাতালে বর্হিবিভাগে ডাক্তার দেখায়। চিকিৎসক তার ব্যবস্থাপত্রে ইউরিনসহ বেশ কিছু টেস্ট করাতে বলেন। কিছু বুঝে উঠার আগেই হাসপাতাল কম্পাউন্ডের ভিতরেই দালাল চক্র চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী রোগীকে নিয়ে যায় বেসরকারী ক্লিনিকে। পরীক্ষা নিরীক্ষা বাবদ ২ হাজার ৬শত টাকার একটি বিল তার হাতে ধরিয়ে দেন। 

সেবা নিতে আসা বীর মুক্তি যোদ্ধা নুরুল হক (৬৫) বলেন, ডাক্তারের ব্যবহার খুবই খারাপ। নরেশ নামে এক সেবা প্রার্থী বলেন,ডাক্তার যেই পরিমান টেষ্ট দিয়েছে, ঔষধ কিনব কি দিয়া আর টেষ্ট করবই বা কি দিয়া।সরেজমিনে  জানা গেছে বিভিন্ন ডায়াগনাষ্টিক সেন্টারের অন্তত ১০ জন দালাল হাসপাতাল কম্পাউন্ডে দায়িত্ব পালন করেন। তারা ঘুরে ঘুরে রোগীর নিকট হতে চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্র দেখেন। তাতে টেস্ট করানোর নির্দেশনা থাকলেই স্বজনদের ফুসলিয়ে নমুনা সংগ্রহ করতে নিয়ে যান। এযেন সরকারি হাসপাতালে বেসরকারি ক্লিনিকের সাব অফিস-এমন মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ। আবার অনেক চিকিৎসক বেসরকারী কোন ক্লিনিক থেকে টেস্ট করাতে হবে তা সরাসরি রোগী বা তার স্বজনদের বলেই দেন। এ কাজে অসাধু চিকিৎসকদের একটি সিন্ডিকেটও গড়ে উঠছে। তারা অর্থের লোভে টেস্ট বাণিজ্যে জরিয়ে পড়েছেন। চিকিৎসকরা জড়িত থাকা নিয়ে এই চক্রের অপতৎপরতার বিরুদ্ধে হাসপাতালের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস পান না।

একজন চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আগে জনৈক এক চিকিৎসক বিসমিল্লাহ ডায়াগনাষ্টিক সেন্টারে নিয়মিত রোগী পাঠাতেন আর এখন পাঠায় শাপলা ডায়াগনাষ্টিক সেন্টারে। অধিক লাভের ব্যবসায় নেমে অনেক চিকিৎসক নিজেদের পরিচয় ভুলে গিয়ে ব্যবসায়ীদের মতো মুনাফার লোভে যা খুশি তাই করছেন। তাদের কারসাজিতেই হাসপাতালের প্যাথলজি ল্যাবে দুয়েকটি টেষ্ট ছাড়া সব ধরনের টেষ্ট বাইরে থেকে করাতে হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, সরকারি হাসপাতালের ২০০ গজের মধ্যে কোনো বেসরকারি ক্লিনিক, ডায়াগনাষ্টিক সেন্টার স্থাপন করা যাবে না-এমন একটি নীতিমালা করার উদ্যোগ নিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কিন্তু রহস্যজনক কারণে সেই উদ্যোগ এখনো আলোর মুখ দেখেনি। কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় সরেজমিন দেখা গেছে ২০০ গজেরও কম দূরত্বে গড়ে উঠেছে বিসমিল্লাহ ডায়াগনাষ্টিক সেন্টার, আবেশমনি  ডায়াগনাষ্টিক সেন্টার, নয়ন কুমার চাকির নিজস্ব নাম বিহীন মেডিকেল সেন্টার। এসব প্রতিষ্ঠানের সেবা নিয়ে আছে নানা প্রশ্ন। এদের এজেন্ট, দালালরা সরকারী হাসপাতালের রোগীদের টেস্ট বাণিজ্য এবং রোগী ভাগানোর কাজ করে থাকে। 
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ স¦াস্থ কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ এস এম মনজুর-ই-এলাহী প্রতিবেদককে জানান, বেশীর ভাগ পরীক্ষা হসপিটালেই হয়। আমি হাসপাতালের সকল ডাক্তারদের সতর্ক বার্তার  মাধ্যমে জানিয়ে দিব যাতে কোন রোগীকে অপ্রয়োজনীয় টেষ্ট দিয়ে হয়রানী না করা হয়। রোগীরা যেন খালী পকেটে এসে স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে হাসি মুখে ঘরে ফিরে যায়। এসব বন্ধে আমি নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছি। দালাল চক্র যাহাতে হাসপাতালে না আসতে পারে সে ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করব। নাম বিহীন মেডিকেল সেন্টারের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।

অস্বাভাবিক টেষ্ট, দালাল চক্রের দৌরাত্ব ও নাম বিহীন মেডিকেল সেন্টারের ব্যাপারে জানতে চাইলে গাজীপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ খায়রুজ্জামান জানান, আপনি কি ডাক্তার? কি কি টেষ্ট দিতে হবে তা ডাক্তারই বুঝবে। তবে, যেহেতু আপনি জানিয়েছেন তাই আমি হাসপাতালের কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করব এবং রোগীদের কাছ থেকে কেউ যদি আমার কাছে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করে অবশ্যই তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিব।

এমএসএম / এমএসএম

ইলিশ পাচার সিন্ডিকেট বিলুপ্ত চান ভোলার উপকূলের জেলেরা

‎ঝিনাইদহে রেলপথের দাবিতে মানববন্ধন

ঠাকুরগাঁওয়ে বিদ্যমান সার নীতিমালা বহাল রাখার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

লামা উপজেলায় শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের দায়িত্বশীল শিক্ষা শিবির অনুষ্ঠিত

কোটালীপাড়ায় পোনা মাছ অবমুক্তকরণ

ত্রিশালে বাগান মাদরাসা পরিদর্শনে আইএমইডির মহাপরিচালক

কুড়িগ্রামে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন উপলক্ষে গণমাধ্যমকর্মীদের কর্মশালা

সার নীতিমালা বহালের দাবিতে কুড়িগ্রামে সংবাদ সম্মেলন

ঠাকুরগাঁওয়ে নিখোঁজ তিন মাদ্রাসাছাত্রী, ২১ দিনেও সন্ধান মিলেনি

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিনাধান-১৭ সম্প্রসারণে মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত

রৌমারীতে মানষিক ও শারিরীক নিযাতনেই গৃহবধুর বিষপানে আত্মহত্যা

চৌগাছায় কৃষকদের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ

নাটোরের সিংড়ায় পাওনা টাকার দাবিতে মানববন্ধন