ঢাকা রবিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৫

অর্থব্যয়ে পরিকল্পনার গুরুত্ব


ডেস্ক রিপোর্ট photo ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশিত: ২৯-৫-২০২৩ দুপুর ১:৩৪

দৈনন্দিন জীবন নির্বাহে অর্থ অপরিহার্য। অর্থের অভাব যেমন মানুষের জীবনকে সংকটের মধ্যে ফেলে দেয়, তেমনি অর্থের অপরিকল্পিত ব্যয়ও মানুষকে বিপদগ্রস্ত করে। এ জন্য ইসলাম মানুষকে সুপরিকল্পিতভাবে অর্থ ব্যয়ের নির্দেশ দিয়েছে। বিশেষত নিজের পরিবার-পরিজন যেন অর্থকষ্টে না পড়ে, সে চিন্তা করা মুমিনের দায়িত্ব।

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, উত্তম সদকা হলো, যা দান করার পরে মানুষ অমুখাপেক্ষী থাকে। ওপরের হাত নিচের হাতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। যাদের ভরণ-পোষণ তোমার দায়িত্বে আছে তাদের আগে দাও। কেননা স্ত্রী বলবে, হয় আমাকে খাবার দাও, নইলে তালাক দাও।
গোলাম বলবে, খাবার দাও এবং কাজ করাও। ছেলে বলবে, আমাকে খাবার দাও, আমাকে তুমি কার কাছে ছেড়ে যাচ্ছ? (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৩৫৫)

আলোচ্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) মানুষকে এমনভাবে অর্থ ব্যয় করতে নিষেধ করেছেন, যা তাকে অন্যের মুখাপেক্ষী করে তুলবে এবং সে সদকা গ্রহণে বাধ্য হবে। অর্থব্যয় সে এমনভাবে করবে, যেন তার হাতে পর্যাপ্ত অর্থ থাকে। যে অর্থ তার ও তার পরিবারের ব্যয় নির্বাহে যথেষ্ট হবে।

শুধু পরিবারের জন্যই পরিকল্পনা নয়, বরং দ্বিনি কাজে অর্থব্যয়ের জন্য পরিকল্পনা করতে হবে। যেন সে ধারাবাহিকভাবে দানের ধারা অব্যাহত রাখতে পারে। সব সময় যেন তার হাতটিই ওপরে থাকে, অন্যের কাছে হাত পাততে না হয়। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘এবং যখন তারা ব্যয় করে তখন অপব্যয় করে না, কার্পণ্যও করে না; বরং তারা আছে এই দুইয়ের মাঝে মধ্যম পন্থায়।’ (সুরা ফোরকান, আয়াত : ৬৭)

মুমিন অর্থব্যয়ের পরিকল্পনায় ব্যক্তি তার পরিবার-পরিজনকে প্রাধান্য দেবে।

বিশেষত যাদের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব তার ওপর অর্পিত। যেমন সন্তান, স্ত্রী ও মা-বাবা। পরিবারকে প্রাধান্য দেওয়ার কারণ হলো পরিবারের সদস্যরা তার ওপর নির্ভরশীল এবং তাদের সামর্থ্যানুযায়ী পরিবারের প্রয়োজন পূরণ করা তার দায়িত্ব। অন্যদিকে অন্যের প্রয়োজন পূরণ করা তার জন্য আবশ্যক নয়, নফল বা মুস্তাহাব।

কারো কারো ধারণা হতে পারে, পরিবার-পরিজনের জন্য অর্থ ব্যয় করলে সাধারণ দানের মতো সওয়াব পাওয়া যায় না। কিন্তু নবীজি (সা.) তাদের ধারণা পাল্টে দিতে বলেছেন পরিবারের জন্য অর্থ ব্যয় করা উত্তম সদকা বা দান। হাদিসের বর্ণনা থেকে এটাও স্পষ্ট হয় যে স্বামীর কাছে স্ত্রী, পিতার কাছে সন্তান এবং মালিকের কাছে দাস-দাসী প্রয়োজনীয় ভরণ-পোষণ দাবি করতে পারবে। এটা তাদের অধিকার।

হাদিস থেকে আরো জানা যায়, মানুষ তার সম্পত্তির পুরোটা দান করবে না; বরং নিজের ও পরিবারের প্রয়োজনগুলোও বিবেচনা করবে; পরিবার-পরিজনকে ইচ্ছা করে কষ্টে রাখা অনুচিত; গুরুত্ব অনুযায়ী ব্যয়ের খাত নির্ধারণ করা; পরিবারের জন্য অর্থ ব্যয় করলে সওয়াবের নিয়ত করা; কেউ নিজ দায়িত্বের ব্যাপারে উদাসীন হলে তাকে তা স্মরণ করিয়ে দেওয়া দোষের নয়।

আল মাউসুয়াতুল হাদিসিয়্যাহ অবলম্বনে

 

এমএসএম / এমএসএম