বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় চলে সনদ বিক্রি করে
স্ত্রী সন্তান নিয়ে ট্রাষ্ট: অনিয়মে জড়িত শিক্ষা মন্ত্রণালয়

স্ত্রী সন্তান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি গঠন করে অবৈধ ভাবে উপাচার্য পদে থেকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হাজার হাজার অনার্স মাস্টার্সের সনদ বিক্রি করে বিদেশে হাজার কোটি টাকা পাচার এবং সীমাহীন দূর্নীতি প্রমাণ পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন।
প্রায় ১ বছর ধরে তদন্ত করে কমিশন রাজধানীর এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ থেকে এমন সব বিস্ময়কর তথ্য বের করেছে। শতাধিক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সরকার ও কমিশনের নির্দেশনা অমান্য করে নিজস্ব শক্তি সক্ষমতা প্রয়োগ করে তাদের খেয়াল খুশি মতো চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা কমিশনের নেই বলে চুপ থাকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন। কমিশনের একটি কথা দশকের পরে দশক ধরে শোনা যাচ্ছে তাদের জনবল কম। কমিশনের সদস্য বিশ্বজিৎ চন্দ বলছেন ৪০/৫৪ টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য যে জনবল ছিলো সেই জনবল দিয়ে এখন শতাধিক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় দেখবাল করতে হয়। এশিয়ান ইউনিভার্সিটির চাকুরীচ্যুত এক শিক্ষক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের এই সদস্য বিশ্বজিৎ চন্দের নামে অভিযোগ দিয়ে বলছেন এশিয়ান ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা জঙ্গি নেতা মাওলানা আবুল হাসান মুহাম্মদ সাদেকের সাথে গোপন বৈঠক করে বড় অংকের ঘুষ নিয়েছে। ওই শিক্ষক বলছেন শতাধিক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শতরকম অনিয়ম দুর্নীতি আছে, সেই সুযোগে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের কর্মকর্তারা মোটা অংকের ঘুষ নিতে পারে।
রাজধানী ঢাকার উত্তরায় এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর সাবেক ভিসি জঙ্গি নেতা মৌলভী আবুল হাসান মুহাম্মদ সাদেক নামে ঢাকায় ১০০ বিঘা জমি এবং ১০ হাজার কোটি টাকা পাচারের ব্যাপারে তদন্ত শুরু করছে দুদক। এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ২৭ বছরেও যথাযথ প্রক্রিয়ায় সরকারি অডিট না করে সাবেক ভিসি আবুল হাসান মুহাম্মদ সাদেক (এনআইডি নং ৪৬০০১৭৪৪৭০) এবং তার পুত্র বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাষ্ট চেয়ারম্যান জাফর সাদেক ও সাদেকের স্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাষ্ট সদস্য সালেহা খাতুন সরকারের আয়কর ফাঁকি দিয়ে সীমাহীন দুর্নীতি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ সম্পদের গড়েছে। ২০০৯ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সরকার ১৫ বছর দেশ পরিচালনা করলেও জঙ্গি নেতা মাওলানা আবুল হাসান মুহাম্মদ সাদেককে আইনের আওতায় আনতে পারেনি। অভিযোগ আছে বিপুল পরিমাণ অর্থ ঘুষ নিয়ে সাবেক শিক্ষা মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সমাবর্তন অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। উপাচার্য ছাড়া সেই সমাবর্তন ছিলো সম্পুর্ন অবৈধ। বিশ্ববিদ্যালয়টির সরকার ও রাজনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান বলছেন সাদেকের অবৈধ সম্পদের পাহাড়ে ধাক্কা দিতে পারছেনা সরকারের কোন কর্তৃপক্ষ।
সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা সাদেকের টাকা ও দাপটের সামনে অসহায়। মাদ্রাসা থেকে টাইটেল পাশ করা ছদ্মবেশী মাওলানা আবুল হাসান মোহাম্মদ সাদেক একজন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী। তার গ্রামের বাড়ি নরসিংদী জেলায়। সরকার পরিবর্তন সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন করে তার পোষাক। কখনও মুজিব কোট, কখনও মতিউর রহমান নিজামীর মতো জামাতি কায়দায় টুপি, কখনও জিয়াউর রহমানের মতো চার পকেট ওয়ালা শার্ট ছাড়াও নানা সাজে সজ্জিত থাকে এই জঙ্গি নেতা মাওলানা আবুল হাসান মুহাম্মদ সাদেক। জামাত শিবিরের পুনর্বাসন কেন্দ্রে পরিনত হয়েছে এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়। অছাত্র, বিদেশি অবৈধ ব্যাবসায়ী, চাকুরীজীবি, গৃহিণী, সামরিক বেসামরিক সরকারের নানা পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারীদের সনদ প্রদান করছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ বিক্রি করে সাদেক টাকার পাহাড় গড়েছে। সরকারের কর্মকর্তাদের বিভিন্ন পর্যায়ে পদন্নোতি পেতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ভিত্তিক সনদ দরকার হয় সেই সনদ প্রদানকারী এশিয়ান ইউনিভার্সিটির এই সাদেক। যে কারনে দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও সাদেক সরকারের নানামহল থেকে ছাড় পায়। দুই বছর করে দুই মেয়াদ অর্থাৎ একজন ব্যক্তি চার বছর উপাচার্য পদে থাকার নিয়ম থাকলেও জঙ্গি নেতা মাওলানা সাদেক ২৭ বছর অবৈধভাবে উপাচার্য ছিলো।
দৈনিক সকালের সময়ের অনুসন্ধানে এশিয়ান ইউনিভার্সিটির সাবেক এই ভিসি জঙ্গি নেতা সাদেকের নানাবিধ দুর্নীতির প্রমান পেয়েছে। সনদ জালিয়াতি অর্থ পাচার নারী কেলেঙ্কারি অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ তার নানাবিধ কুকর্মের ইতিহাস নিয়ে দৈনিক সকালের সময় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পরে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন সাদেকের ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেয়। দৈনিক সকালের সময়ের আবেদন আমলে নিয়ে ইউজিসি ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১ তারিখে চিঠি দিয়ে তার "ইমিরেটাস উপাধি" ব্যাবহার করতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ১০ মার্চ ২০২১ তারিখে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শামীমা বেগম স্বাক্ষরিত চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখতে। বিশ্ববিদ্যালয়টির সনদ জালিয়াতির অভিযোগে একই তারিখে উপসচিব শামীমা বেগম স্বাক্ষরিত পৃথক চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার ফারুক আহমদকে আইনের আওতায় আনতে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাষ্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেয়। রেজিস্ট্রার ফারুখ চাকুরীচ্যুত হলেও তাকে আইনের আওতায় আনতে দেখা যায়নি। ৩০ নভেম্বর ২০২১ তারিখে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে শাজাহান খান নামের একজনকে ভিসি পদে নিয়োগ দিয়েছেন। এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে নতুন ভিসি অবৈধ ভিসি সাদেকের পদাঙ্ক অনুসরণ করে সেখানে দ্বায়িত্ব পালন করছে। তিনিও ইউজিসির নির্দেশ মানছে না। নতুন ভিসি বিশ্ববিদ্যালয়টির ভুয়া ভিসি জঙ্গি নেতা সাদেক পুত্র জাফরের অধীনস্থ একজন কর্মচারীর মতো গোপনে দ্বায়িত্ব পালন করছে।
পারিবারিক উত্তরাধিকার সুত্রে পাওয়া সম্পদের মতো পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়টির নিয়ন্ত্রণ করেছে সাদেকের পুত্র মুহাম্মদ জাফর সাদেক। জাফর এই বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান। পিতা পুত্রগং নিয়ন্ত্রিত এই বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাষ্টি বোর্ডে আছে বোমা হামলার আসামি ইয়াসিন আলী এবং চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী সাদেক। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রাজাকার কামারুজ্জামানের বিশেষ সহকারী শিবির ক্যাডার বোমা সন্ত্রাসী এস এম ইয়াসিন উত্তরার আব্দুলাপুরে বোমা হামলার চিহ্নিত আসামি। রংপুরের কারমাইকেল কলেজের শিবির ক্যাডার সাদেকের পিএস মাহাবুব ও ঢাকার পল্টন থানা জামাত সেক্রেটারি জাকির হোসেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরে বিচরণ করে টাকা লুটপাট করছে। সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষক জাকির হোসেন পল্টন বোমা হামলার পরে গ্রেফতার হয়েছিলো। সেই জাকির এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরিচালক। রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগ পাওয়া বর্তমান ভিসি শাজাহান খান এবং ট্রেজারার প্রফেসর নুরুল ইসলামের নামেও দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ আছে। অস্ট্রেলিয়ার সাউদার্ন কুইনস ল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণকালীন প্রফেসর শাজাহান খান তথ্য গোপন করে এশিয়ান ইউনিভার্সিটির ভিসি হয়েছেন। অন্যদিকে সদ্য নিয়োগ পাওয়া ট্রেজারার জামাত নেতা প্রফেসর নুরুল ইসলাম নিজ এলাকায় মসজিদ তৈরির নাম দিয়ে বহু টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সাদেকের কাছ থেকে।
২০০৬ সালে বিএনপি সরকারের শেষ কার্যদিবসে বিএনপি নেতা আব্দুল্লাহ আল নোমান চট্টগ্রামে ইষ্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয় এবং একটি ঋণদাতা এনজিও সংস্থা আশা ইউনিভার্সিটি নামে ঢাকায় পৃথক দুটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি নিয়েছিলো। এই অনুমোদনের মধ্যে শেষ হয় বিএনপি সরকারের দেয়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি। দেশে তখন ৪০ টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হয়েছে। এরপরে ৪ বছর বন্ধ ছিলো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সুযোগ ছিলো না বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি দেয়ার, তবে তখন সরকার পরিচালনায় দ্বায়িত্বে থাকা শিক্ষা উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান নিয়মবহির্ভূত ভাবে ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী সনদ দিয়েছিলো তা পরবর্তীতে বাতিল হয়ে যায়। ২০০৯ সালে নির্বাচিত সরকার গঠনের পরে শুরু হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন। গত ১৫ বছরের প্রায় ৭০ টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন হয়েছে। ক্ষমতা প্রয়োগ করে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক নেতা এমপি মন্ত্রীকে সামনে রেখে বহু ব্যবসায়ী এবং অযোগ্য লোক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন করিয়ে নিয়েছে কেবল মাত্র বানিজ্যিক উদ্দেশ্যে।
ঢাকায় স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় সকল কিছু একত্রে চালায় এমন ব্যবসায়ী আছে অনেক। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য রাজধানীর মোহাম্মদপুরে কাজী আজাহার নামে এক লোক পরিচালনা করতো বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়। স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা তার। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে সনদ জালিয়াতির অভিযোগ ছিলো। এই বিশ্ববিদ্যালয়টির বর্তমানে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার ছুতোয় তাদের সমস্ত অনিয়ম ও দুর্নীতি ঢাকতে চেষ্টা করছে। এখনও শহরের সড়কপথের পাশে বহু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা হচ্ছে সে ব্যাপারে কমিশনকে প্রশ্ন করলে তারা বলে কমিশন বার বার তাগিদ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুলোকে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার জন্য।
এমএসএম / এমএসএম

এসেনসিয়াল ড্রাগসের এমডির আত্মীয়দের বদলি বাণিজ্য

ট্যাক্স ল'ইয়ার্স সোসাইটি ২০১৭ এর নির্বাচিত নতুন কমিটির অভিষেক দোয়া ও ইফতার অনুষ্ঠিত

উদ্যোমী নারীদের সম্মাননা জানাল ‘উইমেন’স ফাউন্ডেশন’

উত্তরা সেক্টর-১২ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

রোজাদার পথচারীদের পাশে ইফতার নিয়ে হাজির আজমল হুদা মিঠু

আন্তর্জাতিক নারী দিবসে ৮ জন নারী উদ্যোক্তা পেলেন সাহসিকা সম্মাননা

টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স ক্লাবের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

ছাত্র দলের আয়োজনে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

বিআরটি’র ফ্যাসিস্ট আওয়ামীর দোসর এডি আলী আহসান বহাল তবিয়তে

ধর্ষণও হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে

ছুরিকাঘাতে রাজধানীতে যুবক নিহত

আলোচনা সমালোচনার শেষ নেই আওয়ামী লীগ নেত্রী তাহমিনার
