ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে হাজতিকে নির্যাতনের অভিযোগ


মোখলেছুর রহমান, কোনাবাড়ী photo মোখলেছুর রহমান, কোনাবাড়ী
প্রকাশিত: ২৬-৬-২০২৩ দুপুর ১১:১

গাজীপুরে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে রুনা লায়লা (৩৮) নামে এক হাজতিকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। তার সঙ্গে পরিবারের কাউকে দেখা করতেও দেওয়া হচ্ছে না। এঘটনায় ভুক্তভোগীর ভাই আব্দুল করিম বাদী হয়ে রোববার (২৫ জুন) সকালে গাজীপুর জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন। 

নির্যাতনের স্বীকার রুনা লায়লা গাজীপুরের কাপাসিয়া থানার কড়িহাতা গ্রামের আব্দুল হাইয়ের মেয়ে এবং মৃত এ কে এম মাহমুদুল হকের স্ত্রী। তিনি ঢাকার কোতোয়ালি থানার ৭৩৫ নং মামলায় গত ১৫ জুন বিচারাধীন অবস্থায় ১৬ জুন থেকে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার- ৩ এ রয়েছেন। 

রুনার ভাই আব্দুল করিম বলেন,গত বৃহস্পতিবার (২২ জুন) সকাল ১০ টায় আমার বোনের সঙ্গে কারাগারে দেখা করতে গেলে আমার বোনের নাম ঠিকানা নেওয়ার ৩ ঘন্টা পরে সাক্ষাতের টিকেট কাউন্টার থেকে আমাকে জানানো হয় যে "ডিও নাই, দেখা করা যাবে না। তার পরও আমি সেখানে অপেক্ষা করতে থাকি। পরে জামিনে বের হয়ে আসা লোকদের কাছে আমার বোন সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা আমাকে জানায় যে, আমার বোন রুনা লায়লাকে পিটিয়ে মারাক্তক আহত অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছে। তখন আমি উদ্বিগ্ন হয়ে ফিরে যাই এবং পরের দিন আবার কারাগারে আমার বোনের সঙ্গে দেখা করতে যাই। 

পরে জানতে পারি যে, আমার বোনের কাছে ৭ হাজার ৪০০ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। সেই টাকা কেড়ে নেওয়ার জন্য কারাগারে দায়িত্বে থাকা মেট্রন ( হাবিলদার) ফাতেমা ও নাসিমা এবং হাজতী/কয়েদি যুবমহিলালীগ থেকে বহিস্কৃত নেত্রী শামীমা নুর পাপিয়া, সোনালী, আনন্দিকা, অবন্তিকা, ও নাজমা আমার বোনকে (সিসি ক্যামেরা নেই এমন স্থানে নিয়ে) বেধরক পিটিয়ে মারাত্মক আহত করে। মার সয্য করতে না পেরে আমার বোন প্রেসাব-পায়খানা ও রক্ত বমি করে। এক পর্যায়ে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে । জ্ঞান ফেরার পর আবারও তাকে পেটানো হয়। 

আব্দুল করিম আরও জানান (২৩ জুন) শুক্রবার আমার বোনের সঙ্গে দেখা করার জন্য ফের কারাগারের সাক্ষাত কাউন্টারে টিকেট কাটতে গেলে টিকেটম্যান আমাকে কাশিমপুর কারাগারের অভিযোগ কেন্দ্রের ইনচার্জ আলেয়া'র সঙ্গে দেখা করতে বলেন। আমরা আলেয়া'র কাছে গেলে তিনি আমাদের বসিয়ে রেখে ডেপুটি জেলার জান্নাতুল তায়েবাকে আমাদের কাছে নিয়ে আসেন।

জান্নাতুল তায়েবার কাছে আমার বোনকে মারধর করে আহত করার কথা জানালে তিনি বলেন, আপনার বোনের কিছু হয়নি। আমার বোনের সঙ্গে দেখা করার কথা বললে জান্নাতুল তায়েবা বলেন, দেখা করা যাবে না। তখন জান্নাতুল তায়েবার সঙ্গে আমাদের কথা কাটাকাটি হয়। কিন্তু কোন অবস্থাতেই জান্নাতুল তায়েবা আমার বোনের সঙ্গে আমাদের দেখা করতে দেননি। 

রুনার ভাই আরো বলেন, ডেপুটি জেলার জান্নাতুল তায়েবা আমার বোনের সঙ্গে ফোনে কথা বলিয়ে দিতে চান। পরে দুপুর দুইটা সময় একটি মোবাইল  ফোনে অপরিচিত মহিলার কণ্ঠে আমার বোন বলে পরিচয় দিয়ে কথা বলান। কিন্তু ওই মহিলা আমার বোন রুনা লায়লা ছিলনা। রুনা সাজিয়ে অন্য মেয়েকে দিয়ে কথা বলানো হয়।   

ডেপুটি জেলার জান্নাতুল তায়েবা অন্য একজন মহিলাকে আমার বোন সাজিয়ে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। এমতবস্থায়, আমি বিশ্বাস করি যে, জেলের ভিতরে আমার বোনকে পিটিয়ে আহত করে মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছে। এমনকি তারা আমার বোনকে হত্যা করে থাকতে পারে। উক্ত বিষয়টি কারা কর্তৃপক্ষ অবগত হওয়ার পরও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। 

নাম না বলার শর্তে এক কারারক্ষী বলেন,ঐদিন তাদের নির্মম নির্যাতন দেখে অন্যান্য কয়েদিরা কেঁদেছিল। কিন্তু মন গলেনি তাদের। মেট্রন ও পাপিয়ার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার এর কর্তব্যরত চিকিৎসক কাউসার আহম্মেদ বলেন,রুনা লায়লাসহ ৪-৫ জন কয়েদিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তাদের শরীরে লিলা ফুলা যখম ছিলো।

এবিষয়ে ডেপুটি জেলার জান্নাতুল তায়েবা বলেন, আমি ওই ঘটনার দিন ছুটিতে ছিলাম। তিনদিন পর ছুটি থেকে এসে  শুনতে পারি রুনা লায়লার সাথে বেশ কয়েকজন কয়েদির হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে বিষয়টি সিনিয়র স্যারকে জানাই।

জেল সুপার ফারহানা আক্তার বলেন,১৭ জুন রুনা লায়লা কারাগারে আসে। পরের দিন তার কাছে ৭ হাজার ৪০০ টাকা পাওয়া যায়। টাকার বিষয় জানতে তাকে মাইকে বেশ কয়েকবার ডাকা হয়। যার কারনে সে  মেট্রন এর  উপর রাগান্বিত হয়। পরে অন্য কয়েদিরা এসে তাকে মারধর করে।  ঘটনারদিন শামীমা নুর পাপিয়া ওই খানে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এঘটনায় প্রত্যেকে শাস্তির আওতায় আনা হয়। তবে কারাগারের ভিতরে এমন ঘটনা দুঃখ জনক বলে জানান তিনি । 

কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার এর সিনিয়র (ভারপ্রাপ্ত) জেল সুপার মোঃ ওবায়দুর রহমান বলেন,রুনা লায়লা ৭ হাজার ৪০০ টাকা নিয়ে কারাগারে আসে। বিষয়টি পরের দিন তদন্ত করে পাওয়া যায়। টাকার বিষয়ে মেট্রন জানতে চাইলে রুনা লায়লা তার ওপর আক্রমণ করেন। পরে সেখানে উপস্থিত কয়েদিরা রুনা লায়লাকে চড় থাপ্পড় মারে। আসলে এ বিষয়ে কেউ গুরুতর আহত বা নিহত হয়নি । পরে তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। রুনা লায়লাকে যারা চড় থাপ্পর মেরেছিল  তাদেরকে কারা বিধি অনুযায়ী শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। এ বিষয়ে জেল সুপার ফারহানা আক্তার কে প্রদান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে । আগামী সাত কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে বলে জানান তিনি। গাজীপুর জেলা প্রশাসক মো. আনিসুর রহমান জানান, এবিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এমএসএম / এমএসএম

কুতুবদিয়ায় পানিতে পড়ে শিশু মৃত্যু প্রতিরোধে মতবিনিময় সভা

দুমকিতে রাস্তা দখলের নামে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগ

মুকসুদপুরে দূর্গাপূজা উপলক্ষে মুকসুদপুর থানার আয়োজনে প্রস্তুতিমুলক সভা অনুষ্ঠিত

ধামরাইয়ে পারিবারিক কলহের জেরে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু

পটুয়াখালীতে সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে উপকূলে বৃষ্টিপাত

কোনাবাড়িতে ডিভোর্সকৃত স্ত্রীকে ছুরিকাঘাত করে সাবেক স্বামীর আত্মহত্যা

বিএনপি সরকার গঠন করলে জনগণের ভোগান্তি লাঘব হবে ও জনস্বার্থে সকল রাস্তার কাজ করা হবেঃ সিরাজুল ইসলাম সরদার

নেত্রকোনার মদনে চেয়ারম্যান-মেম্বারের ভুয়া ওয়ারিশান সনদে সম্পদ বঞ্চিত মা-মেয়ে

পাবিপ্রবিতে ‘প্রমীত ভাষা ব্যবহারের গুরুত্ব’ নিয়ে ভাষা বক্তৃতা অনুষ্ঠিত “সর্বত্র ভাষার অপপ্রয়োগ দূর করতে হবে”

ধামইরহাটে ঝরেপড়া শিক্ষার্থীদের স্কুলমূখী করতে ওয়ার্ল্ড ভিশনের উদ্যোগে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান

কালকিনিতে দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণ করতে বিএনপির মতবিনিময়

চন্দনাইশে শান্তিবাহিনী ৬সদস্য সেনাবাহিনীর হাতে আটক

চিতলমারীতে সর্বজনীন উৎসব দুর্গাপূজা সফল করতে প্রস্তুতিমূলক সভা