ঢাকা শনিবার, ২ আগস্ট, ২০২৫

আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ


রায়হান আহমেদ তপাদার  photo রায়হান আহমেদ তপাদার
প্রকাশিত: ৩১-৭-২০২৩ দুপুর ১:৪২

সাম্প্রতিক সময়ে গণতন্ত্রের পাশাপাশি যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দেখা দিয়েছে, তা হচ্ছে আঞ্চলিক ভূরাজনীতি। বাংলাদেশ ঘিরে যে আঞ্চলিক ভূরাজনৈতিক খেলা চলছে, তাতে জড়িত তিনটি বৃহৎ শক্তি-যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ভারত। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান শক্তি ও প্রভাব যুক্তরাষ্ট্রের শিরঃপীড়ার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিকসহ নানা কারণে গত বছরগুলোয় চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠতর হয়েছে।যুক্তরাষ্ট্র স্বাভাবিক ভাবেই চায় যে বাংলাদেশ চীনের প্রভাব থেকে বেরিয়ে আসুক। যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক রণকৌশল এবং কোয়াড সংগঠন চীনের প্রভাবকে সীমিত করার লক্ষ্যেই সৃষ্ট। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শেষ সময় থেকেই যুক্তরাষ্ট্র চাইছে বাংলাদেশ এই রণকৌশলে যুক্ত হোক। বাইডেন আমলেও এই প্রয়াস অব্যাহত আছে। এমনিতেই বেশ কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশকে নিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আগ্রহ বাড়ছে। এই আগ্রহ বাড়ার নেপথ্যে ভূরাজনীতি, অর্থনীতি নাকি অন্য কোনো কারণ আছে। এই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। তবে ভূরাজনীতির যে গুরুত্ব, সেটা বেশ পুরোনো। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের মধ্য দিয়ে বঙ্গোপসাগরের ভূরাজনীতি পাল্টে গিয়েছিল। এ অঞ্চলে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রভাব বেড়ে গিয়েছিল। ধীরে ধীরে বৈশ্বিক পরিস্থিতির পরিবর্তন হলেও ভূরাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বঙ্গোপসাগরের গুরুত্ব কখনোই কমেনি। হয়তো রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের গুরুত্ব সীমিত ছিল। এখন ভারত মহাসাগরীয় কৌশলের প্রেক্ষাপটে এবং বাংলাদেশের অবস্থানগত কারণে আমাদের নিয়ে মনোযোগ কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। ভূরাজনীতির পাশাপাশি অর্থনৈতিক কারণেও বাংলাদেশের প্রতি বৈশ্বিক মনোযোগটা বেড়েছে। গত ৫১ বছরে বাংলাদেশ ভূরাজনৈতিক ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে একটি পক্ষ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। যেটা ১৯৭১-এ বাংলাদেশে ছিল না। পাকিস্তান ওই সময় ভূরাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। 

এ অঞ্চলে পাকিস্তানের গুরুত্ব কমার ফলে যে জায়গা তৈরি হয়েছে, তাতে ভারতের পর বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ভূ-অর্থনৈতিকভাবেও এগিয়েছে। বাংলাদেশের অনেক কৌশলগত অর্থনৈতিক সম্ভাবনাও রয়েছে। তাছাড়া ছোট দেশ হলেও বঙ্গোপসাগরের মাথায় অবস্থান বাংলাদেশের। এ এলাকায় বাংলাদেশকে বিবেচনায় না নিয়ে কিছুই করতে পারা যাবে না। আর ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নির্ধারিত হওয়ায় বাংলাদেশের গুরুত্ব বেড়ে গেছে কয়েক গুণ। একটা দেশ যতই উন্নতি করবে, গুরুত্বপূর্ণ হতে থাকবে, সে দেশের চ্যালেঞ্জও বাড়তে থাকবে। ওটাকে ঝুঁকি হিসেবে দেখলে ভুল হবে। এটাকে সুযোগ হিসেবে দেখে এগিয়ে যেতে হবে।ঝুঁকি তখনই হবে, যখন কোনো দেশ তার সম্ভাবনাকে বাস্তবায়ন করতে পারছে না। মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশ যখন বিশ্বের সাম্প্রতিক ক্ষমতার কাঠামোতে যতই ওপরের দিকে উঠতে থাকবে, তত তাকে ওই পর্যায়ে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। আর যদি খেলতে না পারে, তবে ঝুঁকি বাড়বে। যদি খেলতে পারে, তবে তা হবে সুযোগ। এখন এটা নির্ভর করবে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে কীভাবে এমন পরিস্থিতিতে খেলবে বা কী পদক্ষেপ নেয়, তার ওপর। তবে এসবকে সামগ্রিকভাবে ইতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখাই বাঞ্ছনীয়।সবাই যে আগ্রহ দেখাবে, এটাই তো স্বাভাবিক। এখন যদি আমরা মনে করি সবাই কেন আমাদের দিকে তাকাচ্ছে,তাহলে বুঝতে হবে আমরা বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে সরে গেছি। এখন বাংলাদেশ নিয়ে যে আগ্রহ কিংবা কৌতূহল, আগামী ১০ থেকে ১৫ বছরে আরও বেড়ে যাবে। বাংলাদেশ নিশ্চয়ই একলা চলে এগিয়ে যেতে পারবে না। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, বাংলাদেশ কি পশ্চিমা মেরুকরণের পথ বেছে নেবে, না পূর্ব দিকে যাবে।নাকি বাংলাদেশ চীনের দিকে হেলে পড়বে। এখানেই বাস্তবতার নিরিখে বাংলাদেশকে যাত্রাপথটা ঠিক করতে হবে। এত দিন পর্যন্ত আমরা মোটামুটিভাবে সবার সঙ্গেই ছিলাম। এটা সম্ভবও ছিল। 

অতীতে বাংলাদেশ তেমন অবস্থানে ছিল না বলে সবার সঙ্গে থাকতে পেরেছে। কিন্তু ধীরে ধীরে বাংলাদেশের অগ্রগতি এবং বৈশ্বিক রাজনৈতিক মেরুকরণে একটু ঝুঁকে পড়া বা হেলে পড়ার বিষয়টি সামনের দিনগুলোয় অবধারিত হয়ে উঠতে পারে। সামান্য ঝুঁকে পড়াটাও কিন্তু একটি দেশের পররাষ্ট্রনীতির অংশ। বাংলাদেশ কি ১৯৭২, ১৯৭৩ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের দিকে ঝুঁকে পড়েনি? সবার সঙ্গে বন্ধুত্বের কথা বললেও একটা দিকে তো বাংলাদেশ ঝুঁকে ছিল, যা ছিল তৎকালীন সোভিয়েত ব্লক। কাজেই সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে এগিয়ে চলার যে মূলনীতি, সেটা শুধু আদর্শিক হলেই চলবে না। অবস্থানটা নিতে হবে বাস্তবতার নিরিখে এবং জাতীয় স্বার্থের বিবেচনায়। এখানেই আমাদের প্রজ্ঞার পরিচয় দিতে হবে। তাড়াহুড়া করে কোনো দিকে ঝুঁকে পড়লে এর পরিণতি কী হতে পারে, তা আমরা শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে দেখেছি। কাজেই একটা পক্ষে আপনি ততটাই ঝুঁকবেন, যাতে করে আবার ফিরে এসে ভারসাম্য আনা যায়। তবে একাত্তরে গণতান্ত্রিক যে মূল্যবোধের জন্য বাংলাদেশ লড়াই করেছিল, সেটা শক্ত করে ধরে রাখতে হবে। তা না হলে পরিণতিটা হবে ছেঁড়া ঘুড়ির মতো। প্রশ্ন হলো, অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে যেসব মূল্যবোধের ভিত্তিতে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে, সেগুলো যদি ঠিক না থাকে, তবে অর্থনৈতিক উন্নয়ন দীর্ঘস্থায়ী ও জনমুখী হবে না। মূল্যবোধের বিষয়গুলো ঠিক না থাকলে দিকহীন হয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকে যাবে। সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন ভিসা নীতিকে আমাদের দেশের প্রেক্ষাপট থেকে দেখাটা ভুল হবে। ওই ভিসা নীতিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেক্ষাপট থেকে দেখতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র কিন্তু এবারই প্রথম কোনো দেশের বিরুদ্ধে ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে, বিষয়টা কিন্তু এমন নয়। যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের স্বার্থেই এ অবস্থান নিয়েছে। বিশেষ করে ডেমোক্র্যাটরা যখন ক্ষমতায় থাকে, তারা গণতন্ত্র ও সুশাসন নিশ্চিতের জন্য এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়ে থাকে। 

এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, যুক্তরাষ্ট্র যে উদ্দেশ্যে ওই ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে, সেটা কি বাংলাদেশের মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক? তা তো নয়। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার জন্যই তো একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। তাই বিষয়টিকে আমাদের সেই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা দরকার। 
গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মিল রয়েছে।যুক্তরাষ্ট্রের একটা ধারণা হয়েছে যে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ঢিলেঢালা হয়ে গেছে। গণতন্ত্র সমুন্নত রাখার অঙ্গীকার থাকলেও তা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রক্রিয়াগত বিষয়গুলো ক্রমাগত শিথিল হয়ে পড়ছে। তারা বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে জোরদার করতে আগ্রহী। বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্রের প্রচারক হিসেবে দেশটি ভূমিকা রাখার অভিপ্রায় থেকেই বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের ওপর জোর দিচ্ছে। বৈশ্বিক সম্পর্কের কোনো কার্যক্রমই শেষ পর্যন্ত নিরপেক্ষ নয়। রাষ্ট্রের ভূরাজনৈতিক নীতি থাকবেই। এটাই স্বাভাবিক। প্রতিটি দেশের এ বিষয়ে শক্তিমত্তা কিংবা দুর্বলতা, দুটিই থাকতে পারে। ভূরাজনীতি একটি রাষ্ট্রের কৌশলেরই অংশ। অন্য দেশের মতো ভারতেরও ভূরাজনৈতিক লক্ষ্য রয়েছে। আর উদীয়মান শক্তি হিসেবে কিছু পদক্ষেপ আছে। প্রশ্ন হচ্ছে, এই পদক্ষেপগুলোকে আমরা কীভাবে দেখি। বাংলাদেশকে নিশ্চয় এখনো কেউ বলেনি চীনের সঙ্গে যেয়ো না। ফলে বাংলাদেশকে সময় ও পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে একধরনের ভারসাম্যমূলক অবস্থানে থেকে এগোতে হবে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ভারত তাদের আগের অবস্থান বজায় রেখেই চলেছে। নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভুটান, বাংলাদেশ যেখানেই হোক না কেন, পুরো দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীলতা চায় ভারত। এটা নিয়ে বিতর্কের কোনো অবকাশ নেই। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কটা বিশেষ এবং চিরন্তন। ভারত উদীয়মান শক্তি। সে জন্য বাংলাদেশের অনেক কিছু শুধু বঙ্গোপসাগর নয়, ভারতের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তার মানে হচ্ছে, বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের আগ্রহ ও মনোযোগ অব্যাহত থাকবে। 

অন্যদিকে বঙ্গোপসাগরে উপস্থিতির পাশাপাশি মূল্যবোধ এবং জাতীয় স্বার্থের প্রেক্ষাপট থেকে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের অনেক সাযুজ্য রয়েছে। তিনটি দেশই সংগ্রাম করে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। তিনটি দেশের সংবিধানে মূল্যবোধের একটা মিল খুঁজে পাওয়া যায়। তাই তিনটি দেশই গণতান্ত্রিক এবং অবাধ একটি সমাজ চায়। অবাধ গণমাধ্যম চায়। দর্শন এবং মূল্যবোধের একটা মিল এখানে দেখি। যেটা অন্য ব্লকে নেই। আবার আউটরিচের দিকে তাকিয়ে দেখলে কী পাই? আমাদের রপ্তানির বড় গন্তব্যটা যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোয়। প্রযুক্তি কোথা থেকে আসে? বাংলাদেশ সমৃদ্ধির জন্য কোথায় যেতে আগ্রহী? সেটাও কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমেই। পশ্চিমের সঙ্গে আমাদের এই সম্পর্ক ও যোগাযোগের মাঝে ভারতের একটা যোগসূত্র আছে। ফলে তিন দেশের সম্পর্কের মৌলিক ভিত্তিটা জোরালো। সম্পর্কে ওঠানামা থাকতেই পারে। কিন্তু অন্য ব্লকের সঙ্গে সম্পর্কের ভিত্তি নিশ্চয়ই এই দুই দেশের মতো নয়। এমন কথাও রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে চালু আছে যে যুক্তরাষ্ট্র বেশি চাপ দিলে বাংলাদেশ ঝুঁকে পড়বে চীনের দিকে। ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদারত্বের নিরিখে বিষয়টি সুখকর হবে না। পররাষ্ট্রনীতির বড় দিক হলো, সামগ্রিক ভাবে পরিস্থিতিকে বিবেচনায় নিয়ে ভেবেচিন্তে সমন্বিত ভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো। যতই ঝড় আসুক, আপনি ধীরস্থির থাকবেন। বাক্যবাণ ব্যবহারের বিষয়ে সতর্ক থাকবেন। হুটহাট সম্পর্কের গতিপথ পরিবর্তন করবেন না। এ বিষয়গুলোতে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। বর্তমানে এ বিষয়গুলোতে বাংলাদেশে সমন্বয়ের অভাব দেখা যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র ও নির্বাচন নিয়ে তাদের প্রত্যাশার কথা বাংলাদেশকে সব সময় জানিয়ে গেছে। এটা তাদের কৌশলের অংশ। বাংলাদেশের কাছে প্রত্যাশাটা সরাসরি ঢাকায় এসে জানিয়ে গেছে। বাংলাদেশও নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এরপর তারা দেখবে তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী কী পদক্ষেপ বাংলাদেশ নিচ্ছে। এরপর প্রয়োজন মনে করলে আরও চেষ্টা করতে পারে। কারণ, রাজনীতির মতো কূটনীতিতেও শেষ বলে কিছু নেই। যুক্তরাষ্ট্র বলছে তারা কী চায়, কী হলে ভালো হয় বলে তারা মনে করে। অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে তারা জোর দিয়েছে। 

শান্তিপূর্ণ বিশেষণটি আগে ঠিক এভাবে ছিল না। তার মানে শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো অঞ্চলের স্থিতিশীলতার ওপর তারা জোর দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও অর্থনীতি মিলিয়ে বাংলাদেশের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। এমন একটা পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ যাতে তাদের প্রভাবের মধ্যে থাকে, এ জন্যই পশ্চিমাদের এত উদ্যোগ। তারা চাইছে এবং সুযোগও দিচ্ছে বাংলাদেশ যাতে নিজেই সমস্যাগুলোর সুরাহা করে। তারা বন্ধুত্বের মাধ্যমে এ বিষয়গুলোয় আমাদের সহায়তা করতে আগ্রহী। 
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শুধু রেমিট্যান্স নয়, স্বদেশকে তাঁরা সমৃদ্ধ করেন জ্ঞান, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, চিকিৎসা ও শিক্ষাগত সুবিধা দিয়ে, যা এককথায় অমূল্য। এই উপকার চিরজীবী ও ক্রমবর্ধমান। এর একাংশ সহায়তাও আমরা চীন বা রাশিয়া থেকে পাব না। কারণ, ওরা আমাদের পোশাক বা দ্রব্যও সেভাবে কিনবে না। কিংবা স্থায়ী অভিবাসন দিয়ে জীবনেও সাহায্য করবে না। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক তেতো করার আগে এ বিষয়গুলো মাথায় রাখা উচিত। এখনো প্রতিকারের পথ হচ্ছে কূটনৈতিক অর্থনীতি বাড়িয়ে সম্পর্ক সুদৃঢ় করা। মাঝেমধ্যেই সেন্ট মার্টিন নিয়ে গেল, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে উন্নত, নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ইরান ও কিউবাকে কিছু করা যায়নি, ওরা বাংলাদেশের উন্নতিকে হিংসা করে-এ জাতীয় ভিত্তিহীন বাচালতা পরিহার করতে হবে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ঘন ঘন বাংলাদেশের প্রসঙ্গ নিয়ে বিবৃতি দিচ্ছে মানেই সম্পর্ক তিক্ত নয়। সমাজ শিক্ষিত হলে যেমন অনেক আইন অপ্রয়োজনীয় হয়ে যায়, নির্বাচন নিরপেক্ষ হলে মার্কিন ভিসা নীতিও আমাদের বিচলিত করবে না। আপাতত এ নিয়ে দুশ্চিন্তা বা বাচালতা-কোনোটিরই প্রয়োজন নেই। বরং কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্ঘে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক আরো দৃঢ় অবস্থানে নেওয়া যায় তার ব্যাবস্থা করাই হোক আমাদের রাজনীতিকদের লক্ষ্য। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, আরও এগিয়ে যাক এটাই হোক আমাদের সবার প্রত্যাশা। 

লেখক: গবেষক ও কলাম লেখক 

এমএসএম / এমএসএম

এপিআই ও এক্সিপিয়েন্ট উৎপাদনে বাংলাদেশের আত্মনির্ভরশীলতা: স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির নবদিগন্ত উন্মোচন

ট্রাম্প-উরসুলার বাণিজ্য চুক্তিতে স্বস্তির হাওয়া

মানবিক সংকটের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব

বিশ্ব পানিতে ডুবা প্রতিরোধ দিবস ২০২৫ : গল্পের মাধ্যমে গড়ে উঠুক সচেতনতার বাঁধ

রাজনীতি আজ নিলামের হাট: কুষ্টিয়া-৪ এ হাইব্রিড দাপটের নির্মম প্রতিচ্ছবি

জাতীয় নির্বাচনে প্রথমবার ভোট দিবে প্রবাসীরা, আনন্দে ভাসছে পরবাসে বাঙালীরা

বিশ্ববাণিজ্যে অস্থিরতা ও বাংলাদেশে তার প্রভাব

বাংলাদেশে ওয়াশিং প্ল্যান্টের বর্জ্য দ্বারা মিঠাপানির দেশীয় মাছ বিলুপ্তির পথে

বাংলাদেশ ঘূর্ণিঝড় ও বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ

দলীয় পরিচয়ে পদোন্নতি ও বদলি: দুর্নীতির ভয়াল থাবায় বাংলাদেশ

ব্যবসায়ীদের জন্য ওয়ান-স্টপ সমাধান: FBCCI-এর বিদ্যমান সেবার উৎকর্ষ সাধন

বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিসরকে একীভূত করা: অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার জন্য বিসিক কেন অপরিহার্য

সবুজ অর্থায়নের কৌশলগত বিশ্লেষণ: বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের ঝুঁকি ও সুযোগ