তদন্ত কমিটি সত্যতা পেলেও ব্যবস্থা গ্রহণে গড়িমসি ইউএনও'র
নিয়ম ভঙ্গ করে কেটে নেওয়া হয়েছে গ্রামীণ রাস্তার গাছ। গাছ কাটার সময় নেওয়া হয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন। এরপর সাংবাদিকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে উঠে আসে গাছ কাটার পূর্ব অনুমতি না নেওয়ার বিষয়টি। এরপর প্রায় দুই মাস পেরিয়ে গেলেও দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি মাঠ প্রশাসন।
ঘটনাটি ঘটেছে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার পামুলি ইউনিয়নের কাজীপাড়া এলাকায়। জানা যায়, গত ১৭ মার্চ ওই এলাকার মৃত ইব্রাহীম গাজীর ছেলে কামাল ইকবাল সাজু ও দুলাল গাজী সরকারি রাস্তার ৩৬ টি গাছ কেটে তড়িঘড়ি করে বিক্রি করেন। এরপর তা বিক্রি করেন একই ইউনিয়নের রামজিশান্তি এলাকার খালেক মেম্বারের ছেলে কাঠ ব্যবসায়ী ফারুকের নিকট। চুক্তি অনুযায়ী গাছগুলো কেটে নেন খালেল। বিষয়টি মুঠোফোনে ইউপি চেয়ারম্যান মণি ভুষণকে অবহিত করা হয়েছিল বলে সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চেয়ারম্যান নিজেই। তবে অজ্ঞাত কারণে ইউপি চেয়ারম্যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানাননি। বরং গাছগুলো অভিযুক্তরা লাগিয়েছেন এবং তাদের গাছ তারাই কেটে নিয়েছেন বলে অনিয়মকারীদের পক্ষে সাফাই গান তিনি। তবে গাছগুলো যে সরকারি রাস্তার সাথে রোপণ করা হয়েছিল এটি চেয়ারম্যান স্বীকার করেন।
বিনা অনুমতিতে গাছ কাটার বিষয়টি নিয়ে ২৩ মার্চ সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম ফেরদৌসকে জানানো হয়। পরে ২ এপ্রিল ইউএনও রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল কাদের ও ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা ভবেশ চন্দ্র বর্মণের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলেন। সেই প্রতিবেদন দুই মাস পর গত ১১ জুন দাখিল করেন রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল কাদের।
তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে, কামাল ইকবাল সাজু ও দুলাল গাজী নিয়ম ভঙ্গ করে সরকারি রাস্তার ৩৬ টি গাছ কেটে বিক্রি করেছেন।
এইদিকে অজ্ঞাত কারণে দুই মাস হতে চললেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম ফেরদৌস। এই দুই মাসে বিভিন্ন সময় খোঁজ নিলেও তিনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলেই দায় এড়িয়ে গেছেন।
এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম ফেরদৌস বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রায় দুই মাসেও কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি এমন প্রশ্ন করলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
সার্বিক বিষয়ে জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জানা ছিল না। আমরা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এমএসএম / এমএসএম