শিক্ষিতদের মধ্যে বিচ্ছেদের হার বাড়ছে, চাইলেই নারীকে ধরে রাখা যায়? পর্ব-২

ধরুন কুয়াশাচ্ছন্ন শীতার্ত ভোরে, কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে কেউ একজন আপনাকে পরম ভালোবাসার উষ্ণতায় জড়িয়েছে। আবার ঝুম বৃষ্টির মাঝে একসাথে ভিজে প্রেমের আলিঙ্গনে আবদ্ধ হয়েছেন। পরিবার পরিজন, বন্ধুবান্ধব ভুলে গিয়ে একজন নারীর স্পর্শে সবুজ প্রেমিক হয়ে তার মন জয় করেছেন। তবুও ছোট্ট কোনো কারনে,ছোট্ট কোনো বিষয়ে যার জন্য ঘর ছেড়েছেন সেই নারী আপনাকে ছেড়ে চলে যাবে বা যাচ্ছে। নারীরা স্বামীর ভরপুর পরিবার ছেড়ে তার সাথে একা থাকতে পছন্দ করেন। পুরুষরাও তাদেরকে সেই সুযোগ দেয় (কিছু কিছু ছাড়া)।
আপনার কর্ম ব্যস্ততার ভীড়ে সে নারী হয়তো অন্য কারো ভালোবাসায় ডুবন্ত আছে। যার জন্য আপনে ছিলেন কর্মব্যস্ত। ‘পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে গতকাল মঙ্গলবার (৮আগস্ট) নোয়াখালী সেনবাগে স্বামীকে কু'পি'য়ে হত্যা করে এক নারী’। এভাবেই ভালোবাসা দিয়ে পোষা মানুষটা আপনাকেও পিষ্টে দিতে পারে। তাই বলে কী একা নারীরাই দায়ি? পুরুষরা কতটা দায়ি? আর দায়িত্বশীল?
গবেষণায় দেখা গেছে– বর্তমানে শিক্ষিতদের মধ্যে অনেক বেশি বিচ্ছেদের হার বেড়েছে। এর কারণ হিসেবে মূলত নারীরা আগের চেয়ে অনেক বেশি নিজেদের অধিকার আদায়ে সচেতন আর আত্মনির্ভরশীল। আর বিশেষ যে কারণে বিচ্ছেদের হার বাড়ছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো– ➤পারস্পরিক সম্মানবোধের অভাব, ভুল বুঝাবুঝি, টাকা পয়সা নিয়ে ঝামেলা, ইগো, পরোকিয়া, যৌতুক, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, শারীরিক সম্পর্কের দূরত্ব ইত্যাদি। এছাড়াও খুব ছোট ছোট ঝগড়া থেকেও নিজেদের সম্মান আর মানসিক শান্তির কথা ভেবে মানুষ এখন সমাজের ভয়ে অভিনয় করে সম্মান ঠিকিয়ে রাখার পক্ষপাতী না।
ইংল্যান্ডের অষ্টম রাজা হেনরি তার প্রথম স্ত্রীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ চেয়েছিল। কিন্তু তখনকার দিনে বিচ্ছেদের জন্য চার্চের অনুমতি লাগত… চার্চ তাকে অনুমতি দিচ্ছিল না। পরে সে বাধ্য হয়ে নিজেকে ইংল্যান্ডের সব চার্চ গুলোর প্রধান হিসেবে ঘোষণা দেয় এবং রোমের পোপের কোন শাসন তার উপর যেন না খাটে সেই ব্যবস্থা করে… এবং এভাবে সে স্বেচ্ছায় তার প্রথম বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটায় !
এ থেকে বুঝা সহজ শুধু কী নারীরা বিচ্ছেদ ঘটায়? যাই হোক সুশীলরা উত্তর দিবেন হয়তো। তৎকালীন ইসরায়েল এর রাজা সলোমন এর প্রায় ৭০০ স্ত্রী এবং ১০০ রও বেশি রক্ষিতা ছিল ! কই কেউ তো তাকে ছেড়ে যায়নি। তার মানে রাখতে জানলে হাজারো স্ত্রী রাখা যায়। তবে বর্তমান ওয়েস্টার্ন যুগের সাথে আগের আদিযুগের ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষনীয়।
খ্যাতিমান লেখক বুদ্ধদেব সাহার উপন্যাসের বিয়ে বিষয়ক কিছু কিছু লাইন খুব মন ছুঁয়েছে- "বিয়ে! কি জটিল, কঠিন প্রয়োজনীয়, সাংঘাতিক মজবুত একটা ব্যাপার, আর কি ঠুনকো! দু-জন মানুষ সারাজীবন একসঙ্গে থাকবে–পাঁচ, দশ, পনের বছর নয়, সারাজীবন—এর চেয়ে ভয়ঙ্কর জুলুম আর অমানবিক আদর্শ আর কি হতে পারে? সন্তানের সাথে আজীবন থাকি না আমরা। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বন্ধু বেছে নিই, কিন্তু আশা কিংবা দাবি করা হয় যে, একবার যারা স্বামী-স্ত্রী হলো তারা চিরকাল তা–ই থাকবে! এই অস্বাভাবিক অবস্থাটা সহ্য করা যায় এটাকে ঈশ্বরের বিধান বলে মেনে নিলে, আমাদের ব্যাক্তিগত সুখ দুঃখ থেকে অনেক দূরে সরিয়ে রাখলে।" দুজন মানুষের যে দূরে কাছে ঘুরে বেড়াবার ব্যাক্তি স্বাধীনতা আছে, নিজেদের কিছু নিজস্বতা, স্বকীয়তা আছে তা সমাজ মানতে দিতেই চায় না।
মোরশেদ আলম
লেখক ও সাংবাদিক
এমএসএম / এমএসএম

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার গণতন্ত্রের জন্য চ্যালেঞ্জ

কোচিং-এর গোলকধাঁধায়, শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে গুরুত্ব নেই

সাংবাদিকের দল সমর্থন গণতন্ত্রের জন্য হুমকি

ইঁদুরের কৃতজ্ঞতা

নাগরিক সেবা ও প্রত্যাশার সংকট: রাষ্ট্রীয় কর্মচারী কোথায়?

টেকসই সমাজ গঠনে সাম্য একটি অপরিহার্য ভিত্তি

শুভ জন্মাষ্টমী : সত্য, সুন্দর ও সাম্য প্রতিষ্ঠায় শান্তির বার্তা

রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অপরিহার্য

জনগণের অংশগ্রহণে নির্বাচিতরাই কাশ্মীরের শাসক

স্বৈরশাসকের বিদায়, বিদ্রোহ ও পলায়ন

জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় তারেক রহমান

এপিআই ও এক্সিপিয়েন্ট উৎপাদনে বাংলাদেশের আত্মনির্ভরশীলতা: স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির নবদিগন্ত উন্মোচন
