সাতকানিয়ায়- নামছে বন্যার পানি; চলছে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই

সাতকানিয়ায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ধীরে ধীরে নেমে যাচ্ছে বন্যা কবলিত এলাকার পানি। তবে পানি নেমে গেলেও ভেসে উঠছে বন্যার ভয়াবহ ক্ষতচিহ্ন। স্রোতের তোড়ে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক, মহাসড়ক, কালভার্ট ভেসে উঠছে। এছাড়া বীজতলা, ফসলের মাঠ, মাছের ঘের, বেড়িবাঁধ, বসতঘর যেন সে ক্ষতের চিহ্ন বহন করছে। গত পাঁচদিন ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল সংযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, গেলো কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ডুবে থাকা এলাকা থেকে ধীরে ধীরে নেমে যাচ্ছে পানি। তবে এর সঙ্গে সঙ্গে ভেসে উঠছে বিভিন্ন ক্ষতচিহ্ন। দেখা মিলছে বিধ্বস্ত রাস্তাঘাট, কালভার্ট; একই সঙ্গে উপড়েপড়া গাছপালাও।বৃষ্টিপাত কমায় পানি কমতে শুরু করলেও এখনো পানির নিচে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি ও লোকালয়। বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও বেশিরভাগ এলাকা থেকে পানি না নামায় বাড়িতে ফিরতে পারছে না লোকজন। পানিবন্দি মানুষ এখনো আশ্রয়ে আছে আশেপাশের বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রসহ উঁচু স্থানে। এসব এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের অভাবে কষ্টে পড়েছেন বানভাসি মানুষ।
২০১৯সালেও সাতকানিয়া ডুবেছিল বন্যায় তবে তখন এতবেশী প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি না হলেও সাতকানিয়ার বাজালিয়া কেওঁচিয়াসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে ছিলো এখনকারমত সমান দূর্ভোগ।সেই দূর্ভোগের রেষ না কাটতেই ৪বছর পার হতেই আবারো সমান তালে একই দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এই জনপদের জনগোষ্ঠীকে।
তবে এবার কেউ কেউ দোষ চাপাচ্ছেন অপরিকল্পিত চট্টগ্রাম কক্সবাজার রেললাইন এই বন্যায় মূলত নতুন মাত্রা যোগ করেছে।একদিকের পানি আরেকদিকে চলে যেতে না পেরে পানি ফুলেফেঁপে এই বন্যাকে ভয়াবহ রূপ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।তাদের অভিযোগ পরিকল্পিত ভাবে করা হয়নি এই রেললাইন তাই আজকের এই অবস্থায়।এতবেশী শোচনীয় পর্যায়ে পৌছেঁছে এই বন্যা শুধু সাতকানিয়ায় মৃত্য হয়েছে ৬জনের আর পার্শবর্তী লোহাগাড়ায় মৃত্যু হয়েছে ৪জনের মহানগরীতে ১জনের বাঁশখালীতেও ১জন, চন্দনাইশে ২জন।
এদিকে-কেঁওচিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল গফুরসহ কয়েকজন জানান, তিনদিন কমপক্ষে ৫-৭ ফুট পানিতে বন্দি ছিলেন তারা। পানি ক্রমাগত নেমে যাচ্ছে; এর সঙ্গে সড়কের ভাঙন, বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও মাছের ঘেরের ক্ষয়ক্ষতি দৃশ্যমান। যাদের বাড়িঘর এখনও রয়েছে, তাদেরও বাড়িতে গিয়ে রান্না করার সুযোগ নেই, বাড়ির ভেতরের পানি বের করার চেষ্টা করছেন।
সাতকানিয়া কেরানীহাট প্রগতিশীল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনজুর আলম বলেন, কেরানীহাটে তিন হাজার দোকান রয়েছে। সবকটি দোকানে পানি ঢুকেছে। এরমধ্যে এক হাজার দোকান এখনো বন্ধ রয়েছে। বেশির ভাগ দোকানই ভোগ্যপণ্যের। এসব কারণে ভোগ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের জোগান অনেকটা বন্ধ হয়ে পড়েছে।দস্তিদারহাট এলাকার কুলসুমা খাতুন, তার পুত্রবধূ পারভীন আকতার ও স্থানীয় রুমি আকতার বলেন, এলাকার একটি দ্বিতল ভবনে আশ্রয় নিয়েছি। নিচের তলায় গরু, উপরের তলায় আমরা আশ্রয়ে আছি। তিন দিন ধরে শুকনো খাবার খেয়েছি। এখন আর কোনো খাদ্যসামগ্রী নেই। কী খাব জানি না।
তারা বলেন, শুধু খাদ্যসামগ্রী নয়, বিশুদ্ধ পানি সংকট এখনো প্রকট আকার ধারণ করেছে। সরকারি-বেসরকারি কোনো ধরনের ত্রাণসামগ্রী বা সহায়তা মিলেনি বলে জানান তারা।কেঁওচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওচমান আলী বলেন, পানিবন্দি-দুর্গত লোকজন যেখানে অবস্থান নিয়েছে, সেখানে থাকাই ভালো। নড়াচড়া বা অবস্থান বদলালে তাদের দুর্ভোগ আরও বাড়তে পারে। কারণ কোথাও ভালো অবস্থান নেই। পুরো সাতকানিয়া পানিতে প্লাবিত। তবে পানিবন্দি লোকজনকে শুকনো খাবার বা খাদ্যসামগ্রী পৌঁছাতে না পারলে মানবিক বিপর্যয় আরও বাড়তে পারে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্র জানায়, সাতকানিয়া উপজেলায় লাখ ৭০ হাজার মানুষ পানিবন্দি। সরকারের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত ৬০ মেট্রিক টন চাল, নগদ সাড়ে তিন লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ৫শ প্যাকেট বিস্কুট, ৫শ পিস ওরস্যালাইন ও ৫শ পিস পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বরাদ্দ পাঠানো হয়েছে।
এদিকে বন্যার পানিতে নিখোঁজ ও নৌকা ডুবির ঘটনায় দু’জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
নিহতরা হলো- পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের ঘাটিয়াপাড়া এলাকার মফজল উর রহমান ছেলে মোহাম্মদ হেলাল (২০) ও চরতী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মো. সেলিমের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস (৪)।
অন্যদিকে পানি নেমে যাওয়ায় ৩দিন পর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যান চলাচল পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়েছে। তবে এখনও বান্দরবানের সঙ্গে বন্ধ রয়েছে সড়ক যোগাযোগ। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
দোহাজারী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মোহাম্মদ ইরফান বলেন, মহাসড়ক থেকে পানি নেমে যাওয়ায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। সড়কের কোথাও পানি নেই। স্বাভাবিকভাবে যানবাহন চলাচল করছে।
এদিকে বাজালিয়ার চেয়ারম্যান তাপস দত্ত বলেন-২০১৯সালের ভয়াবহতার কথা এখনো ভুলতে পারেনি আমার বাজালিয়ার মানুষ তার উপর এই বছরের ক্ষতটা যেন আগের ঘাঁ না শুকাতে আবারো ঘাঁ।তবুও আমি গত ৫/৬দিন ধরে বাজালিয়ার মানুষের পাশে আছি এবং আমি নিজেই ২০১৯সালের মত সবাইকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছি, এখন বাজালিয়া পরিষদই আমার ঘরবাড়ি, কিছুক্ষণ পরপর বাজালিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছুটেঁ যাচ্ছি। আমার বিশ্বাস আমার দেহে প্রাণ থাকতে বাজালিয়ার মানুষ একজনও এক বেলা না খেয়ে থাকবেনা।এদিকে সরকারি ত্রাণ আর নিজের অর্থায়নের বিষয়ে তাপস দত্ত বলেন-উপজেলা প্রশাসন থেকে আমি সাড়ে তিনটন চাল পেলাম আর আমি নিজস্ব তহবিল থেকে ২০টন চাল দিচ্ছি, এবং আমি যতক্ষন আছি বৃষ্টি যতক্ষণ আছে ততক্ষণ দিতেই থাকবো আনলিমিটেড।
এমএসএম / এমএসএম

রাজবাড়ীতে বাড়ি থেকে মাকে বের করে দিল ছেলে-পুত্রবধূ!

ডাকসুর নির্বাচনে শামসুন্নাহার হলের জিএস নির্বাচিত হয়েছেন নরসিংদীর সামিয়া

জুড়ীতে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার

জয়পুরহাটে কারাতে প্রতিযোগিতা ও পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠান

বাকেরগঞ্জে দূর্গোৎসব উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

পটুয়াখালীতে কোস্টগার্ডের যৌথ অভিযানে ১৬০০ কেজি পলিথিন জব্দ

মাতৃভূমি আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে বিজ্ঞান উৎসব ২০২৫ অনুষ্ঠিত

কুড়িগ্রাম সীমান্তে বিজিবির অভিযান, সাত দিনে ২ কোটি ১১ লাখ টাকার মাদকসহ অবৈধ মালামাল জব্দ

ঢাকা ভাংঙা এক্সপ্রেসওয়েতে ২য় দিনের মতো যানবাহন চলাচল বন্ধ, বিকল্প পথে সড়কে বেড়েছে যানজট

চিতলমারীতে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল: সড়ক অবরোধে অচল জনজীবন

রায়পুরে নিরক্ষরদের হাতে কলম তুলে দিল শিবির

ঠাকুরগাঁওয়ে ঝুঁকিপূর্ণ রামদাড়া সেতুতে জীবন বিপন্নের আশংকা
