কুবি উপাচার্যের বিরুদ্ধে 'অপ্রচার' স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের ষড়যন্ত্র: বঙ্গবন্ধু পরিষদ

সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের আলোচনাকে কেন্দ্র করে 'বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ ও অপপ্রচার' চলমান সরকারবিরোধী ও স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের ষড়যন্ত্র একই সূত্রে গাঁথা দাবি করে  এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অনুমোদনপ্রাপ্ত বঙ্গবন্ধু পরিষদ।

 

সোমবার (১৪ আগস্ট) সংগঠনের সভাপতি কাজী ওমর সিদ্দিকী ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাহিদ হাসান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানা যায়।

 

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বঙ্গবন্ধু পরিষদ মনে করে, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের 'নবীন বরণ ও বিদায় অনুষ্ঠানে' নতুন নতুন জ্ঞান সৃষ্টিতে উদ্বুদ্ধ করে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে দেওয়া দীর্ঘ বক্তব্যকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে খণ্ডিত আকারে প্রকাশ এবং পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন অপপ্রচার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ও মাননীয় উপাচার্যের সুনাম ক্ষুণ্ণ করার একটি ব্যর্থ প্রয়াস। অপসাংবাদিকতা ও অপপ্রচারের পক্ষ নিয়ে দেওয়া বিভিন্ন বক্তব্য প্রদানকারী ও বিবৃতিদাতাদের রাজনৈতিক পরিচয়ই প্রমাণ করে যে, এটি পরিকল্পিত এবং চলমান সরকারবিরোধী ও স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের ষড়যন্ত্রেরই একটি অংশ।'

 

বিষয়টিকে সরকার বিরোধী চক্রান্তের অংশ দাবি করে তারা বলেন,  'উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় যখন বাংলাদেশ এগিয়ে চলছে, তখনই দেশ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরাধী প্রতিক্রিয়াশীল চক্র এই অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। এ চক্রটিই সেই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে দেশে আগুন সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের রাজত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য চীন চক্রান্তে মেতে উঠেছে। দেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে দেশব্যাপী সরকারবিরোধী প্রচারণা করা সেই চক্রান্তেরই অংশ। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'সাংবাদিক' পরিচয়ধারী কয়েকজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে থাকা সরকারবিরোধী, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী, দেশবিরোধী ওই প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের পৃষ্ঠপোষকতায় সেই চক্রান্তকে গতিশীল করার জন্য মেতে উঠেছেন। উক্ত কথিত, বিকৃত, অতিরক্ষিত ও বিভ্রান্তিকর সংবাদ তারই একটি অংশ বলে মনে করে বঙ্গবন্ধু পরিষদ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় । উক্ত 'সংবাদ' সাংবাদিকতার পরিমণ্ডলে অ্যাকাডেমিক ও পেশাগতভাবে আলোচিত 'ফেক নিউজ'-এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ।'

 

'বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ ও অপপ্রচার' উপাচার্যের সুনামকে ক্ষুণ্ণ করার একটি প্রয়াস দাবি করে তারা বলেন, 'আমরা অবাক হয়ে লক্ষ করলাম, উপাচার্যের দীর্ঘ বক্তব্যকে বাদ দিয়ে উদাহরণ দেওয়া অংশকে কেটে বিশেষভাবে সম্পাদনা করে 'দুর্নীতি হচ্ছে তাই বাংলাদেশের উন্নয়ন হচ্ছে: কুবি উপাচার্য লিখে সংবাদ প্রকাশ করা হয় এবং একটি সংগঠনের পেজে তা শেয়ার দেওয়া হয়। উক্ত 'সংবাদটি শুধু সংবাদমাধ্যম ও উক্ত সংগঠনের পেজে থাকলে আমরা ভাবতাম, হয়তো বা অনিচ্ছাকৃতভাবে ভুলভাবে বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু তা যে গভীর ষড়যন্ত্র ও উপাচার্যের সুনামকে ক্ষুণ্ণ করার একটি প্রয়াস তা বোঝা গেল তখনই, যখন তা ভর্তি পরীক্ষাভিত্তিক ফেসবুক পেজে শুধু শিরোনামটি শেয়ার দিয়ে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির হীন প্রচেষ্টা চালানো হয়।'

 

'আমরা দৃঢ় কণ্ঠে বলতে চাই, উপাচার্যের বিভিন্ন গুণগত পদক্ষেপ তথা প্রিডেটরি ও মানহীন জার্নালে যেনতেন গবেষণা প্রবন্ধ ছেপে পদোন্নতি লাভ বন্ধ করা, পদোন্নতির পর আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ব্যাংকড জার্নাল'-এ গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশের জন্য শর্ত আরোপ, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের উপর জ্ঞান বৃদ্ধিতে বিভিন্ন উদ্যোগ, দুর্নীতি বন্ধ, মানসম্মত জার্নালে প্রকাশিত প্রবন্ধের জন্য ভাইস চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড প্রদান, শিক্ষার্থীদের জন্য মেধাবৃত্তি চালু প্রভৃতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যমান স্বাধীনতাবিরোধী ও প্রতিক্রিয়াশীল ওই চক্র বেশ অসন্তষ্ট। কারণ, তাঁদের বিরুদ্ধে যেনতেন করে পদোন্নতি প্রাপ্তিসহ দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। এই চক্রটিই শুরু থেকে সাংবাদিক' নামধারী কয়েকজনকে ব্যবহার করে তাদের হীন স্বার্থ হাসিলের জন্য উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন 'ফেইক নিউজ' তথা অপপ্রচার করে আসছিল। সাম্প্রতিক সংবাদ সেই ধারাবাহিক প্রচেষ্টার আরেকটি নিকৃষ্ট উদাহরণ।'

 

তারা আরো বলেন, 'এই চক্রটিই অতীতের প্রশাসনের দুর্নীতি ও স্বৈরতান্ত্রিক আচরণের দুই সারথি হিসেবেই কারা করেছে। ফলে, বিভিন্ন শিক্ষকের পদোন্নতি আটকানো, শিক্ষক-শিক্ষার্থী হয়রানিসহ বিভিন্ন নিপীড়ণ চালানো হয়। আর সেই চক্রটির পৃষ্ঠপোষকতায় এই সময় থেকে এই সাংবাদিক নামধারী কয়েকজন নিরীহ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে 'ফেইক নিউজ' তথা অপপ্রচার করে অতীত প্রশাসনের স্বেচ্ছাচারিতাকে সমর্থন দিয়ে আসছিল। বর্তমান উপাচার্য দুর্নীতি বন্ধ করে দেওয়ায় এই চক্র ও সাংবাদিক' নামধারী কয়েকজন যড়যন্ত্রকারী মাননীয় উপাচার্য ও গবেষণামুখী শিক্ষকদের সুনাম বিনষ্ট করার পাঁয়তারা করে আসছে। 'এই ছেলে' শব্দযুগলকে 'এই শালা' বানিয়ে একজন শিক্ষককে হেনস্থা করার উদ্দেশ্যে বানোয়াট সংবাদ তৈরি, সংবাদ সূত্র'কে 'তথ্য ফাঁসকারী' আখ্যা দিয়ে তৎকালীন প্রশাসনের মর্জিমাফিক সংবাদ প্রচার, ফেসবুকে অপসাংবাদিকতা নিয়ে লেখার কারণে একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন'-এ মামলা করার কথা প্রভৃতিই তাদের অপসাংবাদিকতার মুখোশ উন্মোচনের জন্য যথেষ্ট। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, যে কথিত সাংবাদিক এই উদ্দেশ্যমূলক প্রতিবেদন তৈরি করেছেন, তার বিরুদ্ধে উস্কানি দিয়ে দুইটি পক্ষের মধ্যে সমস্যা তৈরি করে ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিরও অভিযোগ রয়েছে।'

 

'আমরা দৃঢ় কণ্ঠে বলতে চাই, আমরা বঙ্গবন্ধু পরিষদ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এ হীন উদ্দেশ্য অতীতেও সফল হতে দেয়নি, বর্তমানেও দিবে না। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী সকলকে সাথে নিয়ে এই হীন ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দিতে প্রস্তুত। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো দুর্নীতিবাজ, স্বাধীনতাবিরোধী দেশবিরোধী, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী তথা প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের কোনো ঠাঁই নেই। সকল ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করে বর্তমান সরকার তথা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অর্থনৈতিক উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে আরো শক্তিশালী করতে আগামী জাতীয় নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু পরিষদ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সর্বাত্মক ভূমিকা পালন করবে।'