মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে নিকারাগুয়া

১৯৪৫-এ জন্ম নেওয়া এই নেতা কিশোর বয়সে যোগ দিয়েছিলেন সেই সময়ের সরকারবিরোধী বামপন্থী আন্দোলনে। নিকারাগুয়ার রাজনৈতিক ইতিহাসের অন্যতম আলোচিত দল সান্দিনিস্তা ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট। এই দলেই তাঁর রাজনীতির হাতেখড়ি। পড়াশোনার উদ্দেশ্যে ওর্তেগা ভর্তি হয়েছিলেন রাজধানী শহর ম্যানাগুয়ার সেন্ট্রাল আমেরিকান ইউনিভার্সিটিতে। কিন্তু পড়াশোনা বেশি দূর এগোয়নি। ১৯৬৩ সালে তিনি রাজনৈতিক কারণে আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যান। ১৯৬৭ সালে তৎকালীন শাসক সোমোজা পরিবারের বিরুদ্ধে শহরকেন্দ্রিক আন্দোলন গড়ে তোলার দায়িত্ব পেয়েছিলেন। কিন্তু ওই বছরই ব্যাংক ডাকাতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হন ওর্তেগা। কারাগারে থাকা অবস্থায় ব্যাপক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন ওর্তেগা। আর ওই সময়ের ওর্তেগা সম্পর্কে নিকারাগুয়ার বিখ্যাত ঔপন্যাসিক সার্জিও রামিরেসের পর্যবেক্ষণ হলো, কারাবাস তাঁকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে। এই কারাবাসের পর যে ওর্তেগাকে পাওয়া যায় তিনি ছিলেন একজন চাঁছাছোলা, সবার থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে চাওয়া ও অবিশ্বাসী একজন মানুষ। গত বছর ৭ নভেম্বর নিকারাগুয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় আসেন বামপন্থী গেরিলা নেতা ডেনিয়েল ওর্তেগা। আর ভাইস প্রেসিডেন্ট হন তাঁর স্ত্রী রোজারিও মুরিল্লো। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিকারাগুয়ার সরকারি কর্মকর্তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।২০২১ সালের নির্বাচনে টানা চতুর্থবারের মতো জয় পেয়ে ক্ষমতা ধরে রেখেছেন ওর্তেগা। যদিও কারচুপির ওই নির্বাচন নিয়ে দেশ-বিদেশে প্রচুর সমালোচনা রয়েছে। চতুর্থ দফায় ক্ষমতায় বসার পর ওর্তেগা কয়েক ডজন বিরোধী নেতাকে জেলে পুরেছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের ভুয়া অভিযোগ আনা হয়েছে, যেসব অভিযোগ রাষ্ট্রদ্রোহের সমান অপরাধ হিসেবে গণ্য করা যায়।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিকারাগুয়ার শীর্ষ কর্মকর্তাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। এমনকি বিরোধী নেতা ও আইনপ্রণেতাদের দোষী সাব্যস্ত করা বিচারকদের ক্ষেত্রেও একই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। তখন মোট ১১৬ জনকে ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছিল। ওই তালিকায় আরও ছিলেন মেয়র, সরকারি কৌঁসুলি, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসক, পুলিশ কর্মকর্তা, কারা ও সামরিক কর্মকর্তা। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে থাকা নিকারাগুয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীসহ বিভিন্ন সেনা কর্মকর্তার সম্পদও জব্দ করা হয়েছে আগেই। নিকারাগুয়ার টেলিকম ও খনি খাতের সম্পদ রয়েছে এ জব্দ তালিকায়। নিকারাগুয়ায় প্রেসিডেন্ট দানিয়েল ওর্তেগার সরকারকে সমর্থন জানানোয় দেশটির শতাধিক কর্মকর্তার ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে মানবাধিকারকে সংকুচিত ও গণতন্ত্রকে দুর্বল করায় একশ এর বেশি কর্মকর্তার ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এবং নিকারাগুয়ার কারাগারে বন্দী ক্যাথলিক বিশপ রোনান্দো ইভারেজকে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।বিশপ ইভারেজ নিকারাগুয়া সরকারের কড়া সমালোচক হিসেবে পরিচিত। সরকারবিরোধী বিক্ষোভে সহযোগিতা দেওয়ার অভিযোগ এনে তাঁকে ২৬ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অবশ্য এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁকে দেশ ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসনে যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল। রামিরেসের মতে, ওর্তেগা সব সময়ই একজন বিচ্ছিন্ন মানুষ। কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর ১৯৭৪ সালে ওর্তেগা নির্বাসিত হয়েছিলেন কিউবায়। সেখানে গিয়ে গেরিলা যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন তিনি। পরে হয়ে ওঠেন গেরিলা নেতা। আর এই গেরিলাদের হাত ধরেই সংঘটিত হয় ১৯৭৯ সালের বিপ্লব। গৃহযুদ্ধের অবসানের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মদদপুষ্ট সোমোজা পরিবারের বিদায় হয় নিকারাগুয়া থেকে। এরপর যে বিপ্লবী সরকার গঠন করা হয়েছিল তার শীর্ষ পাঁচ নেতার একজন ছিলেন ওর্তেগা।
এরপর শুরু হয় নতুন চড়াই-উতরাই। কারণ যুক্তরাষ্ট্র বসে থাকেনি। বিপ্লবী সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে সশস্ত্র গোষ্ঠী কন্ট্রাকে মদদ দেওয়া শুরু করে দেশটি। বিশ্লেষকেরা বলেন, উদ্দেশ্য ওর্তেগার যেমন পরিষ্কার, তেমনি যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্যও স্পষ্ট ছিল। ওর্তেগার স্বপ্ন ছিল কিউবার মতো একটি রাষ্ট্র গঠনের। আর যুক্তরাষ্ট্র চাইছিল এই বিপ্লবী সরকারকে হটিয়ে দিয়ে তার মতাদর্শের সরকার প্রতিষ্ঠা করা। ১৯৮৪ সালে নিকারাগুয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী মনোভাবকে কাজে লাগিয়েছিলেন ওর্তেগা। মার্কিন লেখক স্টিফেন কিনজারের মতে, ১৯৮৪ সালের নির্বাচনী প্রচারে ওর্তেগা বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র বলছে, আমরা গণতন্ত্রবিরোধী। কিন্তু আমরা জানি গণতন্ত্রের সত্যিকার অর্থ কী। গণতন্ত্র হলো সাক্ষরতা, গণতন্ত্র হলো ভূমি সংস্কার, গণতন্ত্র হলো শিক্ষা, জনস্বাস্থ্য। ওই নির্বাচনী প্রচার থেকে ওর্তেগা বলেন, কন্ট্রা বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াইয়ে প্রাণহানির জন্য দায়ী মার্কিন সরকার। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট হন ডেনিয়েল ওর্তেগা। কিন্তু এরপর থেকে অর্থনৈতিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হতে থাকে। এর অন্যতম কারণ হলো কন্ট্রা গোষ্ঠীর সঙ্গে যুদ্ধ এবং যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা। কন্ট্রার সঙ্গে লড়াইয়ে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে বলে প্রচলিত আছে। আর তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান ওর্তেগার বিরুদ্ধে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। ফলে নিকারাগুয়ার মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যায়। এর ফলাফল সাবেক সহযোগী ভিওলেতা চামোরোর কাছে ১৯৯০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ওর্তেগার পরাজয়। পরে নিকারাগুয়ার এই প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট কন্ট্রার সঙ্গে যুদ্ধ থামাতে পেরেছিলেন। কয়েকবার হারের পর ২০০৬ সালে আবারও ক্ষমতায় ফেরেন ওর্তেগা। তবে নিন্দুকেরা বলেন, সেই ওর্তেগার সঙ্গে আগের ওর্তেগার বিস্তর ফারাক।বদলে যায় আদর্শ, বদলে যায় রাজনৈতিক অবস্থান।
২০০৬ সালে ক্ষমতায় আসার জন্য নিজেকে খ্রিষ্টান সোশ্যালিস্ট হিসেবে আখ্যা দিয়ে প্রচার চালান ওর্তেগা। এখানেই শেষ নয়, তিনি তার মার্ক্সবাদী আদর্শ ও যুক্তরাষ্ট্র বিরোধী মনোভাব থেকেও সরে আসেন বলে মনে করেন সমালোচকেরা। এতে লাভও হয়েছিল। বেসরকারি ও বিদেশি বিনিয়োগ জোগাড় করতে সমর্থ হয়েছিলেন ওর্তেগা। এ ছাড়া ভেনেজুয়েলার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হুগো শাভেজের কাছ থেকেও বিভিন্ন ধরনের সাহায্য পেয়েছিলেন তিনি। ২০০৬ সালে ওর্তেগা ক্ষমতায় আসার আগে বিশ্বে দ্বিতীয় দরিদ্রতম দেশ ছিল নিকারাগুয়া। কিন্তু ক্ষমতায় আসার ১০ বছরের মাথায় দেশটির জিডিপি পৌঁছায় ৪ শতাংশে। এই সাফল্য বিরোধীদেরও বিস্মিত করে।এ প্রসঙ্গে নিকারাগুয়ার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রান্সিসকো আগুয়েরে স্যাকাসা বলেন, ওর্তেগা যেভাবে অর্থনীতি সামাল দিয়েছিলেন তা সত্যি আমাকে অবাক করেছিল। প্রাথমিক অবস্থায় অর্থনৈতিক মুক্তি মিলেছিল কিন্তু এর চরম মূল্য দিতে হয় নিকারাগুয়ার জনগণকে। কারণ, সেবার ক্ষমতায় এসে নিকারাগুয়ার ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছিলেন ওর্তেগা। নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেন বিচার বিভাগের ওপরও। সুপ্রিম কোর্ট চলে আসে ওর্তেগার কবজায়। নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয় নির্বাচনী প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপরও। দুইবারের বেশি প্রেসিডেন্ট থাকা যাবে না- সংবিধানের এই বাধা দূর করতে ২০০৯ সালে সুপ্রিম কোর্টকে ব্যবহার করেছিলেন ওর্তেগা। ২০১৬ সালের ক্ষমতায় আসতে আবারও পরিবর্তন করেন সংবিধান। ওর্তেগা কেন এমন করেছেন তার একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন ঔপন্যাসিক সার্জিও রামিরেস। তাঁর মতে, একটি প্রাণীর পায়ে যখন গুলি করা হয়, তখন সে দৌড়াতে থাকে। কিন্তু একটা সময় তাকে থামতে হয়। আমার ধারণা, ওর্তেগার পায়েও গুলি লেগেছে। তিনি যে পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন তার পতন হবে শিগগিরই। কিন্তু ওর্তেগার পতনের আগেই অনেক কিছু ঘটে যাচ্ছে নিকারাগুয়ায়।
২০১৮ সালে সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতাধীন অবসর ভাতা ৫ শতাংশ কমানোর ঘোষণা দেওয়ার পর ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল সে দেশে। এই বিক্ষোভ পরে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নিয়েছিল। ওই বিক্ষোভ দমনে কঠোর পদক্ষেপ নেয় সরকারি বাহিনী। নিহত হয় শতাধিক মানুষ।ব্যবসায়ী মহলকে সন্তুষ্ট করতে নিকারাগুয়ার সামষ্টিক অর্থনীতির ধারা বদলে দেন ওর্তেগা। ২০১৬ সালের নির্বাচনে জয়ের পর স্ত্রী রোজারিও মুরিল্লোকে করেছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর হাতে তুলে দেন একের পর এক ক্ষমতা। সেই মুরিল্লো এখন মন্ত্রিসভার বৈঠক করেন এবং সরকারের পক্ষ থেকে কথাও বলেন। নির্বাচন নিয়ে নতুন নকশা করছেন ওর্তেগা। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, এই নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্প্রতি ১৭ রাজনীতিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থী পাঁচজন। তাঁদের অধিকাংশের বিরুদ্ধেই আনা হয়েছে দেশদ্রোহের অভিযোগ। কারও কারও বিরুদ্ধে আনা হয়েছে অর্থ পাচারের অভিযোগ। তবে এ নিয়ে দ্বিধাহীন ওর্তেগা, থামার কোনো লক্ষণ নেই তাঁর। দীর্ঘ বিরতির পর জনসমক্ষে এসেছেন তিনি। বলেছেন, আইন অনুযায়ী গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এসব ঘটনাপ্রবাহে এটি স্পষ্ট যে ডেনিয়েল ওর্তেগা আগে যা-ই ছিলেন, এখন অন্তত উদারপন্থী সরকারপ্রধান নন। বিরোধীদের আদতে সহ্যও করতে পারছেন না আর। গণতন্ত্র বা বামপন্থা কোনোটিরই পথেই হাঁটছেন না তিনি। বরং ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখার মোহ পেয়ে বসেছে তাঁকে। শেষটা করা যাক ১৯৭৫ সালের এক ঘটনা দিয়ে। নিকারাগুয়ার স্বৈরশাসক আনাস্তাসিও সোমোজা দেবাইলেকে একটি খোলা চিঠি লিখেছিলেন সেই সময়ের সুপরিচিত সাংবাদিক পেদ্রো হোয়াকিন চামোরো। সরকারের কঠোর সমালোচনা ছিল ওই চিঠিতে। এর তিন বছর পরই পেদ্রো হোয়াকিন চামোরোকে হত্যা করা হয়েছিল। ১৯৭৫ আর ২০২১-এও মিল আছে যথেষ্ট।
কারণ, আজ পেদ্রো হোয়াকিন চামোরোর মেয়ে ক্রিস্টিনা চামোরোকে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়তে চাওয়া তাঁর অপরাধ। আর তাঁকে বন্দী করার নির্দেশদাতা একসময়ের বিপ্লবী সরকারের হর্তাকর্তা ও সোমোজা পরিবারের শাসনের বিরোধী ডেনিয়েল ওর্তেগা। তবে কি সেই সোমোজা পরিবারের সঙ্গে একই কাতারে নাম লেখাচ্ছেন একদা গণতন্ত্র-সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় লড়াই করা ওর্তেগা। ইঙ্গিত কিন্তু সেদিকেই। নিকারাগুয়ার জনগণের উদ্দেশে প্রেসিডেন্ট ডেনিয়েল ওর্তেগা একসময় বলেছিলেন, ভাই ও বোনেরা আসুন গণতন্ত্রের জন্য লড়াই অব্যাহত রাখি, জাতীয় মর্যাদা রক্ষায় লড়াই জারি রাখি, নিকারাগুয়ার ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে লড়াই জারি রাখি। কিন্তু সেই লড়াই আর জারি নেই। ওর্তেগা বদলে গেছেন অনেক। মানুষ বেঁচে থাকলে বদলায়-এই আপ্তবাক্যটির সফল বাস্তবায়ন ঘটেছে ওর্তেগার ক্ষেত্রে। ছিলেন বিপ্লবের নেতা। এখন অনেকে তাঁর পরিচয় দিচ্ছেন নিপীড়ক শব্দে। ডেনিয়েল ওর্তেগা কতটা নিপীড়কে পরিণত হয়েছেন বা সম্প্রতি কী পরিমাণ দমনপীড়ন চালাচ্ছেন, তাতে চোখ বোলানোর আগে একবার দেখে নেওয়া যেতে পারে তাঁর অতীত।ওর্তেগাদে-র সেই এফএসএলএন সরকার যখন নিকারাগুয়ায় ক্ষমতা আসে তত দিনে ফিদেল কাস্ত্রোও কিউবায় ক্ষমতায় এসেছেন। তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের কাছ থেকে ওর্তেগাদের সরকার সমর্থন পাচ্ছিল। ফলে তাদের হুমকি মনে করছিল যুক্তরাষ্ট্র। সেই সময় নিকারা গুয়ার পত্রিকা লা প্রেনসার খবরে বলা হয়েছিল, সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাস্তায় নেমে এসেছে এবং কিউবা ও ফিদেলের নামে স্লোগান দিচ্ছে। এই জনসমর্থন কাজে লাগানোর বিষয়ও ওই সময়কার বিপ্লবী সরকারের হিসাবে ছিল।এ সময় এফএসএলএনে -র সরকারের হাত ধরে নিকারাগুয়ার বিভিন্ন খাতের উন্নয়নও হয়। এর মধ্যে অন্যতম স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও ভূমি সংস্কার ছিল অন্যতম। কিন্ত বছরের পর বছর ধরে নিকারাগুয়ার শাসনক্ষমতায় থাকা ওর্তেগা-মুরিল্লো সরকার দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গুলো ভেঙে দিয়েছে। দুর্নীতি ও দায়মুক্তির সংস্কৃতিকে প্রশ্রয় দিয়েছে বলে নিকারাগুয়ার আজকের এই পরিণতি।
লেখক: গবেষক ও কলাম লেখক
এমএসএম / এমএসএম

এপিআই ও এক্সিপিয়েন্ট উৎপাদনে বাংলাদেশের আত্মনির্ভরশীলতা: স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির নবদিগন্ত উন্মোচন

ট্রাম্প-উরসুলার বাণিজ্য চুক্তিতে স্বস্তির হাওয়া

মানবিক সংকটের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব

বিশ্ব পানিতে ডুবা প্রতিরোধ দিবস ২০২৫ : গল্পের মাধ্যমে গড়ে উঠুক সচেতনতার বাঁধ

রাজনীতি আজ নিলামের হাট: কুষ্টিয়া-৪ এ হাইব্রিড দাপটের নির্মম প্রতিচ্ছবি

জাতীয় নির্বাচনে প্রথমবার ভোট দিবে প্রবাসীরা, আনন্দে ভাসছে পরবাসে বাঙালীরা

বিশ্ববাণিজ্যে অস্থিরতা ও বাংলাদেশে তার প্রভাব

বাংলাদেশে ওয়াশিং প্ল্যান্টের বর্জ্য দ্বারা মিঠাপানির দেশীয় মাছ বিলুপ্তির পথে

বাংলাদেশ ঘূর্ণিঝড় ও বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ

দলীয় পরিচয়ে পদোন্নতি ও বদলি: দুর্নীতির ভয়াল থাবায় বাংলাদেশ

ব্যবসায়ীদের জন্য ওয়ান-স্টপ সমাধান: FBCCI-এর বিদ্যমান সেবার উৎকর্ষ সাধন

বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিসরকে একীভূত করা: অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার জন্য বিসিক কেন অপরিহার্য
