পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া)
ঈশ্বরদীবাসীর প্রাণের দাবি তরুণ নেতা কনককে চাই, বিএনপি-জামায়াত তত্ত্বাবধায়কের দিকে তাকিয়ে

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে; ততই পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া ) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা তোড়তোড় শুরু করেছেন। তবে ঈশ্বরদীবাসীর প্রাণের দাবি পাঁচবারের নির্বাচিত এমপি ও সাবেক ভূমিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুর রহমান শরিফ ডিলুর সুযোগ্য সন্তান তরুণ নেতা কনককে চাই। সেই লক্ষ্যে এলাকাবাসী কনকের হয়ে কাজ করছেন পুরোদমে।
এ আসনে অনেক আগে থেকেই মনোনয়ন প্রত্যাশীরা স্ব স্ব দলীয় প্রার্থীর প্রতীক পেতে বিভিন্নভাবে দলের হাইকমান্ডাদের মনপুষ্ট করতে কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। আগামী বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নির্ধারণ করায় এক রকম আদাজল খেয়ে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা কাজ শুরু করেছেন। তারা আটঘাট করে নির্বাচনী ওয়ার্ক চালিয়ে গেলেও বিএনপি, জামায়াত, জাতীয়পার্টিসহ বিরোধী মহলের পক্ষের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নির্বাচন নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে। তবুও মনোনয়ন প্রত্যাশীদের পদচারণায় নির্বাচনী হাওয়া এখন সর্বত্রে ছড়িয়ে পড়ছে। শহর ছেড়ে গ্রামাঞ্চল, হাটবাজার, চা-স্টলে সরব হয়ে ওঠছে।
(ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) আসনে আওয়ামীলীগের একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশীরা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন জোরেসরে। একাধিক আ.লীগের প্রার্থীর মধ্যে অধিকাংশই কেন্দ্রেীয় নেতৃবৃন্দ রয়েছেন। আর বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছে। তারা তত্ত্বাবধায়কের দিকে তাকিয়ে আছে।
১৯৯১ সালে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব ও জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী মাওলানা নাসির উদ্দিনকে হারিয়ে পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন সিরাজুল ইসলাম সরদার। বিএনপি’র গ্রুপিং রাজনীতির কারণে এই আসনটি বিএনপি-জামায়াত প্রার্থী বারবার ধরাশায়ী হয় আওয়ামীলীগের প্রবীণ রাজনীতিবিদ সাবেক সংসদ সদস্য ভাষাসৈনিক ও বীরমুক্তিযোদ্ধা শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর কাছে। এই আসন থেকে ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে বার বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। দীর্ঘ সময়কাল এই আসন হাত ছাড়া হয়ে যায় চারদলীয় জোটের কাছ থেকে।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের এই আসন থেকে বরাবরের মতো এবারও আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী অনেক নতুন ও পুরাতন মুখ। তবে জোটগত সিদ্ধান্ত আর বিএনপি নির্বাচনমুখি হলে এই আসনে বিএনপির প্রভাবশালী দুই প্রার্থী মনোনয়ন চাইবেন বলে অধিক প্রচারিত।
ঈশ্বরদীতে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকজন রয়েছেন। অধিকাংশই হচ্ছেন কেন্দ্রীয় নেতা। এ আসনে সব প্রত্যাশীরাই মাঠে ময়দানে কাজ শুরু করেছেন। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন-মরহুম ভূমিমন্ত্রীর পুত্র, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক উপ-কমিটি সদস্য, তরুণ নেতা, মানবদরদী, গরীবের বন্ধু সাকিবুর রহমান শরীফ কনক, বিশিষ্ট শিল্পপতি, কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুল আলিম, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম লিটন, বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির কোষাধ্যক্ষ, পাঁচবারের নির্বাচিত এমপি ও সাবেক ভূমিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুর রহমান শরিফ ডিলুর কন্যা এবং উপজেলার সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আবুল কালাম আজাদ মিন্টুর স্ত্রী মাহজেবিন শিরিন পিয়া, বিশিষ্ট শিল্পপতি জালাল উদ্দিন তুহিন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রবিউল আলম বুদু, ব্যারিস্টার সৈয়দ আলী জিরু, বর্তমান সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান বিশ্বাস, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোহাম্মদ রেজাউল রহিম লাল, ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র ইসাহক আলী মালিথা ও সাবেক মেয়র আবুল কালাম আজাদ মিন্টু।
এ আসনে নৌকার মনোনয়ন নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিয়েছেন ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও উত্তরবঙ্গের শ্রমিক নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ রশিদুল্লাহ। তিনি সাংবাদিক সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন।
এছাড়াও উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি হায়দার আলী এই আসন থেকে প্রার্থী হবেন বলে নাম শোনা যাচ্ছে। এবার দলীয় নেতাকর্মিরা নানা কারণেই নতুন মুখের দাবি জানাচ্ছেন। বর্তমান সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান বিশ্বাস বলেন, দল করতে গিয়ে অনেক ত্যাহ স্বীকার করেছি, জেল জুলুম খেটেছি। ঈশ্বরদীবাসীর স্বপ্ন আমার স্বপ্ন। আমাকে আবারও যদি মনোনয়ন দেয়া হয় আর যদি নির্বাচিত হতে পারি তা’হলে আমার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখবো। সর্বপরি যিনিই নৌকা প্রতীক মনোনয়ন পাবেন আমি তার সাথে কাজ করবো, তিনি যোগ করেন।
আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী মরহুম ভূমিমন্ত্রী, ভাষা সৈনিক, বীরমুক্তিযোদ্ধা শামসুর রহমান শরীফ (ডিলু)’র পুত্র ঈশ্বরদীবাসীর প্রাণের স্পন্ধন, তরুণ নেতা, মানব দরদী, এলাকার উন্নয়নের স্বপ্নদ্রষ্টা আওয়ামীলীগ নেতা সাকিবুর রহমান শরীফ (কনক) এর কথা সর্বমহলে আলোচিত হচ্ছে। তার মত অমায়িক ভদ্রাচারণ, মানবিক নিবেদিত প্রাণ তারুণ্যের অহংকার কনককে নৌকা প্রতীকের মাঝি করার জন্য ঈশ্বরদী-আটঘরিয়াবাসী অধীর আগ্রহে চেয়ে আছেন প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকে। এলাকারবাসীর প্রাণের দাবি মরহুম ভূমি মন্ত্রীর উত্তবসূরী কনক নির্বাচিত হতে পারলে তার বাবার শুধু অসমাপ্ত কাজই নয়; তারুণ্যের ঝলকানিতে এ দু’টি উপজেলা হবে আলোকিত। তাই মনোনয়ন প্রত্যাশী কনক বলেন,‘কার মিছিল কত বড় হলো, কে কতটা জাঁকজমক মিছিল করলো, কে কত দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন-এটাতে কাজ হবে না। মানুষের মনভাব বুঝে, কাকে মনোনয়ন দিলে নৌকার মাঝি হতে পারবেন-এটা নির্ভর করবে মূলত বিশেষ রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে। তিনি বলেন, ‘জননেত্রীর ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে নেতাকর্মিদের সাথে কাঁদে কাঁদ মিলিয়ে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছি। করোনার সময় থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে খাদ্য, শীতে কম্বল, ঈদ, পূজা-পার্বণে শাড়ী-লুঙ্গী, নগদ অর্থ উপহার দিয়ে পাশে থেকেছি। করোনা দুর্যোগের ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নামে অক্সিজেন সিলিন্ডার, পিপিই, স্যানিটাইজার, ডাক্তার সেবা ও ঔষুধ নিয়ে দিন-রাত মানুষকে সেবা দিয়েছি। যখনি কোন করনোার রোগীর দুর্বিসহ অবস্থা শুনেছি;তখনই অক্সিজেনের সিলিন্ডার নিয়ে কাছে পৌঁছেছি। সামাজিক সব ধরণের কর্মকান্ডে নেতাকর্মিদের সাথে নিয়ে সম্পৃক্ত রয়েছি।এই আসনে বাবা থাকতে বিএনপি জামায়াত কখনো তাদের অবস্থান মজবুত করতে পারেনি। আমি বিশ্বাস করি আওয়ামীলীগকে সুসংগঠিত করে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো। তাই ঈশ্বরদীবাসী বুঝেসুঝেই আমকে ভোট দিবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।’ তাই নেত্রী আমাকে মননোয়ন দিলে ঈশ্বরদীবাসীর স্বপ্ন পূরণে আত্মনিয়োগ করবো।’
নির্বাচনী এক সভায় মাহজেবিন শিরিন পিয়া বলেন,‘আমি পাবনা-৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে নিজে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করছি। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে মনোনয়ন চাইবো। তিনি মনোনয়ন দিলে ঈশ্বরদীর মানুষের জন্য কাজ করতে পারব।’দলীয় মনোনয়ন পেলে জনগণের সেবা আর সরকারের নানামুখি উন্নয়নের ছোঁয়া বাস্তবায়ন করতে সর্বদা চেষ্টা করবেন এমন অভিমত ব্যক্ত করলেন আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী অন্যান্য নেতারা।
তত্ত্বাবধায়ক আসলে মনোনয়ন চাইবেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, পাবনা জেলা বিএনপির আহবায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব ও বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম সিরাজ সরদার। তবে মাঠ জরিপে অবশ্য সিরাজের প্রধান্যতা বেশি পরিলক্ষিত হয়। অনুরূপভাবে মাঠ গরমের কৌশলে আছেন পাবনা জেলা বিএনপির আহবায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব। তবে তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার না হলে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না বলে এ প্রতিনিধিকে জানান। অবশ্য দু’জনই কেন্দ্রের দিকে তাকিয়ে আছেন; যদি নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করে তবে দু’জনই মনোনয়নের জন্য লড়াই করবেন বলে দৃশ্যপটে এমনটাই মনে হচ্ছে।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা, পাবনা জেলা বিএনপির আহবায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন,‘নির্বাচন নিয়ে কোন চিন্তাভাবনা নেই। তত্ত্বাবধায়ক সরকার না হলে প্রার্থী হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার হলে মনোনয়নের ব্যাপারে কথা হবে তখন। যদি মনোনয়ন না পাই; তবে যিনিই পান অবশ্যই তার পক্ষে কাজ করবো।’
সাবেক সংসদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম সরদার বলেন,‘ হাবিব মূলত আওয়ামীলীগ থেকে আসা বিএনপির হাইব্রিড নেতা। তিনি বিএনপির রাজনীতিতে আসার পরই এই আসনে বিএনপির ভরাডুবির অন্যতম কারণ। তিনি বলেন, আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে; আর দল আমাকে যদি মনোনয়ন দেয়। তা’হলে এবারে এ আসন আর বিএনপির হাত ছাড়া হওয়ার কোন সুযোগ নেই।’
এদিকে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী মাওলানা নাসির উদ্দিন। পরবর্তী ২০০১ ও ২০০৮ সালে জোটকে ছাড় দিয়ে এ আসনে জামায়াতের প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। জামায়াতের দাবি, জয়ী হওয়ার মতো ভোট ব্যাংক থাকতেও জোটের স্বার্থে দু’বার আসনটি ছেড়ে দিয়েছিল বিএনপিকে। কিন্তু বিএনপির ঘরোয়া দ্বন্দ্বে মাসুল গুনতে হয়েছে জামায়াত ও জোটকে। তত্ত্বাবধায়ক আসলে এখানে জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল প্রার্থী হবেন বলে নিশ্চিত করেছেন দলের জেলা নেতৃবৃন্দ। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া জামায়াত নির্বাচনে যাবে না বলে মন্ডল স্পষ্টভাবে জানান।
এমএসএম / এমএসএম

সাজিদা ট্রেডিংয়ের প্রোপাইটর মোঃ লিয়াকত হোসেন খোকনের বিরুদ্ধে মামলা

শান্তিগঞ্জে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমে গতিশীলতা আনয়ন শীর্ষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত

নাফনদীর মোহনায় ট্রলার ডুবি, ৭জেলে উদ্ধার

বালিয়াকান্দিতে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময়

বাউফলে চেয়ারম্যান পরিবহন বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন

আদমদীঘিতে সমন্বয় কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত

জয়পুরহাটে পৌর হোল্ডিং ট্যাক্স বৃদ্ধির কার্যক্রম স্থগিতের দাবীতে স্মারকলিপি প্রদান

দৌলতপুরে মুখ বাঁধা অবস্থায় নারীর মরদেহ উদ্ধার

কমিউনিটি পুলিশিং সভা ও উদ্ধারকৃত মোবাইল-অর্থ হস্তান্তর: মেহেরপুর জেলা পুলিশের জনবান্ধব উদ্যোগ

ভূরুঙ্গামারীতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নবজাতক শিশুদের জন্ম নিবন্ধন নিশ্চিত করছে উপজেলা প্রশাসন

পাবনায় ট্রিপল মার্ডারের রায়ে একজনের মৃত্যুদন্ড

গলাচিপা সরকারি কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সাথে জামায়াতের এমপি পদ প্রার্থীর মত বিনিময় সভা
