ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

মধুপুরে বনের প্লট নিয়ে বিরোধের জের

সুবিধাভোগী ভয়ঙ্কর প্রতিপক্ষের হামলা-মামলায় অতীষ্ঠ এক নারী পরিবার


মধুপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি photo মধুপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৭-১১-২০২৩ দুপুর ৩:৯
টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার বন অধ্যুষিত এলাকা বেরিবাইদ ইউনিয়নের জাঙ্গালিয়া গ্রামে বনের প্লট নিয়ে বিরোধের জেরে হাসনা বেগম নামে এক অসহায় বৃদ্ধার পরিবার চরম আতঙ্কে জীবন যাপন করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নয়ন থিগিদি, জাকির হোসেন, মালেকদের হামলা মামলাতে অতীষ্ঠ পরিবারটি। তার উপর প্রতিপক্ষ ও বন বিভাগের  উপর্যপুরী মামলাতে ওই পরিবারের অবস্থা একেবারে নাজেহাল। এমন অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের। 
 
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ভাংচুর হওয়া ভুক্তভোগী পরিবারের ঘরবাড়ি হামলার সাক্ষ্য বহন করছে। প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হওয়া ৫ জনের আতঙ্ক এখনও কাটেনি। নিজেরা মার খেয়ে আহত হয়ে উল্টো প্রতিপক্ষের মামলাতে অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে ও বৃদ্ধ বাবা মিলে ৫ জন জেল খেটেছেন। জামিন নিয়ে বাড়িতে এসেও শান্তিতে নেই হাসনা বেগমের স্বামী মফিজ ও তাদের সন্তানরা। হাজতে আটকে আছেন এক স্বজন।
 
অভিযোগ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, মধুপুর জাতীয় উদ্যানের সদর রেঞ্জের ৭৪ জন সিএফডাব্লিউ তথা সুবিধাভোগীদের সামাজিক বনায়নের  প্রকল্পের প্লট বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। এই বরাদ্ধ প্রক্রিয়ায় অসহায় নারী হাসনা বেগমের টাকার বিনিময়ে হস্তান্তরিত জমির দখল ছিনিয়ে নিয়ে অন্যকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এতে চরম বেকায়দায় পড়েছে হাসনা বেগম ও তার পরিবার। 
 
বেরীবাইদ মৌজার জাঙ্গালিয়া গ্রামের ৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মফিজ উদ্দিনের স্ত্রী হাসনা বেগম জানান, নয়ন গারোর বড় ভাই থমেজ গারো ও তার  স্ত্রী বালিকা গারো মিলে ২০১০ সালে  ৬০ শতাংশের প্লট স্থানীয় রীতিতে দখল বড় অংকের টাকায় বন্দোবস্ত হস্তান্তর করে দেন।  তখন থেকেই চাষবাস করে আসছেন। নয়ন গারো দখল হস্তান্তর প্রক্রিয়ার স্বাক্ষী থাকা সত্তেও সম্প্রতি হাসনা বেগমের ওই জমি দখল নেয়ার চেষ্টা শুরু করে। দখলে থাকতে হলে নয়ন গারো বিভিন্ন ছুঁতোয় চাঁদা দাবি করে। ৫০ হাজার টাকা চাঁদা নির্ধারণ করে দেয়া হয়। না হলে জমিটা কেড়ে নেয়ার হুমকি দিতে শুরু করেন। 
 
অবশেষে এ বছর সিএফডাব্লিউদের প্লট বুঝিয়ে দেয়ার  প্রক্রিয়ায় সিএফডাব্লিউ নেতা নয়ন গারো ও জাকির হোসেনরা মিলে হাত দিয়েছেন হাসনা বেগমের দখলীয় ওই প্লটে। বন বিভাগের পরোক্ষ সহযোগিতায় বেরীবাইদ মৌজায় ভুক্তভোগী হাসনা বেগমের দখল সূত্রে ক্রয়কৃত ৬০ শতাংশ জমি দখল করে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে ওই এলাকারই মালেক খানকে দিয়েছেন।
 
মফিজ উদ্দিন অভিযোগ করেন, গত ৩০ জুন হাসনা ও তার ছেলেরা মিলে জমিতে আনারসের চারা লাগাতে গিয়ে ছিলেন। এসময় নয়ন গারো ও জাকির হোসেনসহ বড় একটি দল মাঠে এসে ক্ষেত থেকে তুলে দেয়ার চেষ্টা করে। বাধা দিতে গেলে হাসনা ও তার ছেলেদেরকে জমির মধ্যেই বেধড়ক মারপিট করে। এ সময় রূপালী বেগম নামে একজন মারপিটে বাধা দিতে গেলে তাকেও এলোপাথাড়ি মারপিট করা হয়।  
 
রূপালী বেগম জানান, তিনি জখম হয়ে প্রাণ ভয়ে স্থান ত্যাগ করেন। ক্ষেতে মারপিটে ক্ষান্ত হননি তারা। পরক্ষণেই নয়ন গারো ও জাকিরের নেতৃত্বে ৮০/৯০ জনের সিএফডাব্লিউ দল ভুক্তভোগীর বাড়িতে হানা দেন। দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ভুক্তভোগী হাসনা বেগমের বাড়ি ঘরে হামলা করে ঘরের টিন কুপিয়ে ছিন্ন ভিন্ন করেন। এসময় বাধা দিতে গেলে পরিবারের অন্তত ৫ জনকে কুপিয়ে জখম করে। ছেলে আবুল কাশেমকে কুপিয়ে মারাত্বক আহত করে তারা। এ সময় প্রতিবেশিরা ৯৯৯ এ ফোন করলে মধুপুর থানার অরণখোলা পুলিশ ফাঁড়ি থেকে পুলিশ গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করে।
 
ভুক্তভোগী হাসনা বেগমের স্বামী মফিজ উদ্দিন আহতদের চিকিৎসা দিয়ে আইনের সহায়তার জন্য থানায় গিয়ে মামলা লেখা অবস্থায় নয়ন গারোর আগে থেকেই প্রস্তুত করা বন বিভাগের পরোক্ষ সহায়তায় দায়ের মামলায় আটক হন। সাথে অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলেসহ অন্তত ৫ জনকে পুলিশ আটক দেখিয়ে পরের দিন এক শিশু সুমন (১৩) ছেড়ে দিয়ে বাকি চার বাপ বেটাকে আদালতে পাঠায়।  
 
বাবা মফিজ উদ্দিন তিন ছেলে সুজন(১৫), আবুল হাশেম(২১), আহত আবুল কাশেম (২৩) জেলে যাওয়ার সাথী হন। জামিনে বাপ বেটা ৪ জন মুক্ত হলেও  ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে  হাজতে আছেন ওই পরিবারের আরেক স্বজন রফিকুল ইসলাম কামরুল(১৯)। 
 
সম্প্রতি রূপালী নামের নারী আসামী আটক হয়ে জামিন প্রার্থনায় মুক্ত হয়েছেন। এমনি অবস্থায় পরিবারটি মামলায় আটক ও প্রতিপক্ষের হামলার আতঙ্কে দিন যাপন করছে। তারা সবাই নিরাপত্তাহীন দাবি করেন। অভিযোগ করে জানান, তাদের করা অভিযোগ থানায় মামলা না নেয়ায় প্রতিপক্ষ বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। 
 
পরিবারটির ভাষ্য মতে, ওই এক খন্ড জমিই মূলত ছিল পরিবারটির আয়ের উৎস। তাও জবর দখল করে নিয়েছে নয়ন গারোরা। তাদের বিরুদ্ধে এলাকায় কেউ কোন কিছু বলতে যায় তাহলে তাদের উপরই নেমে আসে এ রকম হামলা মামলাসহ নানা নির্যাতন। 
 
নয়ন থিগীদি ওরফে নয়ন গারো, জাকির হোসেন অভিযোগ মিথ্যা দাবি করেন। তারা বলেন, বন বিভাগের পক্ষ থেকে মালেকের নামে বরাদ্ধ প্লটে লাগানো চারা মফিজ ও তার পরিবারের সদস্য তুলে ফেলেছে। উপকারভোগীদের পক্ষ থেকে এটা বাধা দিতে গেলে উল্টো তাদের হাতে ৪ জন আহত হয়। দুইজনকে ময়মনসিংহ ও তাদের মধ্যে একজনকে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা দিতে হয়। এ নিয়ে মামলা হয়েছে। মামলা চলছে।
 
মামলার আইও  এসআই আরিফুল হাসান জানান, মামলার (চার্জসিট) প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয়া হয়েছে। মফিজের পক্ষ থেকে মামলার বিষয়ে এসএই আরিফুল জানান, শুনেছি  মফিজের পক্ষ থেকে আদালতে মামলা করা হয়েছে।
 
 

এমএসএম / এমএসএম

তেলের ট্রাকে বিস্ফোরণ : পুড়ল ৪শ ব্যারেল তেল, ৮ দোকান

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য মনোনীত হলেন প্রফেসর আবুল কাসেম ফজলুল হক

গোদাগাড়ীতে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা

জয়পুরহাটে ৬০ কেজি গাঁজাসহ ২ মাদক কারবারি গ্রেফতার

গাজীপুরে কারখানায় আগুনে নিহত ১

রৌমারীতে আটক ৯টির মধ্যে ১টি জমা না দেওয়ার অভিযোগ বিজিবি’র বিরুদ্ধে

পটুয়াখালীর ধানক্ষেত থেকে ১টি শঙ্খিনী সাপ উদ্ধার

কামারখন্দে কোনাবাড়ি ইসহাক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিএনপি আলোচনা সভায়

মুন্সীগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পুলিশ সদস্যকে গুলি

কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র নদে নৌকায় ডাকাতি

পটুয়াখালীতে পৌর মাছ বাজারের ঘাট পুনরুদ্ধার, খুশি ব্যবসায়ীরা

নওয়াপাড়ায় ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকিং সেমিনার অনুষ্ঠিত

মুন্সীগঞ্জে এক্সপ্রেসওয়েতে ৬ দুর্ঘটনাঃ নিহত ১