ঢাকা শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

২০২৩ সালে বশেমুরবিপ্রবির ৭ শিক্ষার্থীর অকালমৃত্যু


শাহাজান ইসলাম, বশেমুরবিপ্রবি photo শাহাজান ইসলাম, বশেমুরবিপ্রবি
প্রকাশিত: ২-১-২০২৪ দুপুর ২:৯

বিদায় নিয়েছে আমাদের মাঝ থেকে ২০২৩  সাল । আবির্ভাব হয়েছে নতুন বর্ষের। বিদায়ী বছরে অনেক প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির মাঝে কিছু হারানোর বেদনা, গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিষাদের অন্ধকার নামিয়েছে। অকাল মৃত্য হয়েছে  বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ জন শিক্ষার্থীর তারমধ্যে কারো মৃত্যু রোগে ভুগে, আবার কেউ  আত্মহত্যায় নিজেকে দিয়েছেন বিসর্জন, সড়ক দুর্ঘটনার মতো অস্বাভাবিক মৃত্যুতে কারও অকাল মৃত্যু ঘটে।

বছরের শুরুতে ২৮ ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জের নবীনবাগ এলাকায় ভাড়া বাসায় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের (২০১৯-২০) শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রিক্তা খানম ওরফে নোভার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় তার স্বামী একই বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি বিভাগের (২০১৬-১৭) শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. রাসেল মণ্ডলকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রাসেল মন্ডল মঙ্গলবার ২৮ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কোচিং করানোর জন্য বাসা থেকে বের হয়। দুপুর পৌনে ২টার দিকে তিনি গেট খুলে ভেতরে প্রবেশ করে কক্ষের দরজা খোলা দেখতে পান। এসময় তিনি ফ্যানের সঙ্গে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দেয়া স্ত্রী রিক্তার মরদেহ দেখতে পান। তিনি ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ভালকি গ্রামের রবিউল ইসলামের মেয়ে ।

পরের মাসে মার্চের ১৯ তারিখ কৃষি বিভাগের (২০১৫-১৬) শিক্ষাবর্ষের সাবেক শিক্ষার্থী আফসানা মিমি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় ঢাকাগামী ইমাদ পরিবহন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে গেলে কয়েকজন বাস যাত্রীসহ আফসানা মিমির মৃত্যু হয়। খুলনা থেকে ঢাকাগামী বাসে চড়ে মিমি নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরছিলেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তরে অধ্যয়নরত ছিলেন।

তার প্রায় তিন মাস পর জুলাই এর ১২ তারিখে আইন বিভাগের  (২০১৬-১৭) শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অনুপম শিকদার আত্মহত্যা করেন।  পারিবারিক সূত্রে জানা যায়,  রাজবাড়ী সদর উপজেলাধীন নিজ গ্রাম রাজাপুরে দুপুরে গলায় ফাঁস দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে অনুপ শিকদারের কাকাতো ভাই সুজয় শিকদার। আত্মহত্যার আগে অনুপমের স্ত্রী শ্বশুর বাড়ি থেকে নিজ বাড়ি চলে যায়। তবে অনেকের দাবি রয়েছে, পারিবারিক কলহে এমন আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।এছাড়া, পহেলা আগস্টে পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের (২০২০-২১) শিক্ষাবর্ষের দুই শিক্ষার্থী হিয়া ও রিতু বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকে ডুবে মারা যান।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বৃষ্টিতে ভেজার সময় পা পিছলে লেকের পানিতে ডুবে যায় হিয়া। হিয়াকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেন রিতু৷ এসময় দুজনই লেকের পানিতে তলিয়ে যায়। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের সহায়তায় তাদেরকে লেক থেকে তোলার পর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে মৃত ঘোষণা করেন।এরপর ১৯ আগস্ট রসায়ন বিভাগের (২০১৮-১৯) শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. আসহাব আলী ফুসফুসে ইনফেকশন ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।

জানা যায়, আসহাব দীর্ঘদিন ফুসফুসের ইনফেকশন, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে শারীরিক যন্ত্রণায় ভুগছিলেন। পরবর্তীতে তার ফুসফুসের ফাঙ্গাস ধরা পরে। অবস্থার অবনতি ঘটলে গত ১২ আগস্ট তাকে ঢাকায় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানেই শনিবার (১৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার মো.আক্কাস আলীর সন্তান।

সর্বশেষ, গত ৮ ডিসেম্বর এ্যাপ্লাইড কেমিস্ট্রি অ্যান্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (এসিসিই) বিভাগের (২০১৩-১৪) শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সুমাইয়া সুমি সড়ক দুর্ঘটনার স্বীকার হয়ে মারা যান। গেল ৭ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) খুলনা শহরে মাহিন্দ্র ও ভ্যানের সংঘর্ষে গুরুতর আহত হলে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন শুক্রবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়  মারা যান তিনি। খুলনা সদরে একটি ভাড়া বাসায় সপরিবারে থাকতেন সুমাইয়া ‍সুমি। তিনি সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার শেখ শাহাবুদ্দিনের মেয়ে।

শিক্ষার্থীদের অকাল প্রয়াণ প্রসঙ্গে উপাচার্য ড. একিউএম মাহবুব বলেন, " যে ৭ জন শিক্ষার্থী মারা গিয়েছে তারা কিন্তু একই কারণে মারা যায় নি, বিভিন্ন কারণে মারা গিয়েছে। তারমধ্যে দুটি আত্মহত্যা, দুটি দূ্র্ঘটনাজনিত, দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকে পড়ে ও একটি অসুস্থতাজনিত কারণে মারা গেছে। একটা ছেলে আসহাব ওর তো স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে, ও অসুস্থ ছিলো,ওকে বাঁচানো অনেক কঠিন ছিলো , পরে ওকে আমরা চিকিৎসার জন্য সাহায্য করেছি। কিন্তু ওকে বাঁচানো সম্ভব হয় নি।

হিয়া-রিতুর আকস্মিক মৃত্যুর ঘটনায় তিনি বলেন, আমার অনেক সময় মনে হয় আমারও তো মেয়ে হতে পারতো, কিন্তু মৃত্যু ওদের টেনে নিয়ে গিয়েছে।  তারপরও তো আমরা জানি না ওরা তখন ঐখানে যাবে,গিয়ে এমন দূর্ঘটনা ঘটবে। এ মৃত্যু দুইটা একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না। আমি তাদের একজনের বাসায় ও গিয়েছিলাম।

শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার বিষয়ে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যা খুবই করুণার। যখন একটা ছেলে বা মেয়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় এর পেছনে অনেকগুলি কারণ আছে। তার কারণ হতে পারে তাদের নিজস্ব বন্ধু বান্ধব পছন্দ করার বিষয়ে, পারিবারিক, সামাজিক অথবা অন্যান্য কারণ। আসলে আত্মহত্যা করার পরে এ ঘটনাগুলো আমাদের কাছে আসে, এর আগে আমরা এ সম্পর্কে জানলে আমরা তাকে এ পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে ব্যবস্থা নিতে পারি।

আত্মহত্যাকে রোধে করণীয় সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রত্যেকটা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাইকোলজিক্যাল কাউন্সেলিং এর ব্যবস্থা থাকা জরুরী। আমরাও এটা করার চেষ্টা করেছি।এছাড়াও শিক্ষার্থীদের এহেন অকাল প্রয়াণে শোক প্রকাশ করে তিনি বলেন, এ ধরনের মৃত্যু আমরা দেখতে চাই না। এগুলো দুঃখজনক ঘটনা।

উল্লেখ্য, এবছর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ জন শিক্ষার্থী বিভিন্ন কারণে মারা গিয়েছে। তারমধ্যে ২ জন আত্মহত্যা করে ২ জন সড়ক দুর্ঘটনায়, ২ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকে ডুবে ও ১ জন অসুস্থতাজনিত কারণে মারা গেছে।

এমএসএম / এমএসএম

আইএফপিআরআই ও সার্ক কৃষি কেন্দ্রের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর

ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি'তে শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক সম্মেলন BIM 2025

চাকসু নির্বাচনে ব্যালট নম্বর প্রকাশ, আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু

গঠনতন্ত্রে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সংযোজন করে ইকসু'র দাবি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টার পুনঃনিয়োগ

পাস্ট ডিবেটিং সোসাইটির নতুন সভাপতি রউফ, সম্পাদক তন্নি

বিশ্বসেরা ২ শতাংশ গবেষকের তালিকায় পবিপ্রবির ৩ শিক্ষার্থী

রাবিতে শাটডাউন প্রত্যাহার, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন জাতীয়তাবাদী শিক্ষকদের

পিছানো হল চাকসু নির্বাচন

রাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’

১৬ অক্টোবর রাকসু নির্বাচন

বিশ্বসেরা ২ শতাংশ গবেষকের তালিকায় বাকৃবির ১২ গবেষক

বিশ্বের শীর্ষ দুই শতাংশ গবেষকদের তালিকায় ইবির দুই অধ্যাপক