চৌগাছায় মাদ্রসা শিক্ষকের বেধড়ক মারপিটে ছাত্র আহত শিক্ষক আটক
যশোরের চৌগাছায় একটি হাফেজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষকের বেধড়ক মারপিটে মারাত্মক আহত হয়েছে সাজিদ হোসেন (১৩) নামের এক ছাত্র। সাজিদ হোসেন উপজেলার লস্কাপুর গ্রামের আকবার আলীর ছেলে। পুলিশ মাদ্রাসা হুজুরকে আটক করেছে। ১৬ রমজান দিবাগত রাতে উপজেলার কয়ারপাড়া গ্রামের ভাড়া করা বাসায় পরিচালিত মাদ্রাসায় এই ঘটনা ঘটেছে। আহতের পরিবারসহ এলাকাবাসি অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
আহতের পরিবার ও থানা সূত্রে জানা গেছে, প্রায় এক বছর আগে উপজেলার কয়ারপাড়া বাজারে একাটি হাফেজিয়া মাদ্রসা খুলে বসেন একই উপজেলার গয়ড়া গ্রামের বাসিন্দা আক্তারুজ্জামান আক্তার। ভাড়া বাড়িতেই চলতো শিশুদের কোরাআন শিক্ষার কার্যক্রম। প্রতি দিনের মতই ১৬ রমজান তারাবি নামাজ আদায় করে শিশুরা বিশ্রামে যায়। রাত সাড়ে দশটার দিকে ছোট্ট একটি ঘটনাকে কেন্দ্র হুজুর আক্তার সাজিদ হোসেনকে বেত দিয়ে বেধড়ক মারপিট করে। ছোট্ট শিশু হুজুরের পা ধরে মাফ চাইলে লাথি মেরে দুরে ফেলে দেয়ার পাশাপাশি বুক ও পেটে লাথি মেরে আহত করে। পরের দিন সকালে এ ঘটনা জানতে পেরে আহত শিশুর পিতা মাদ্রসায় ছুটে যান এবং শিশুকে উদ্ধার করে চৌগাছা হাসপাতালে নিয়ে আসেন। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সাজিদকে বাড়িতে রেখে ওই দিনই শিশুটির পিতা থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ শিক্ষক আক্তরকে আটক করেন।
শিশুটির মা শিলা খাতুন বলেন, এমন নির্যাতন কোন মানুষ করতে পারেনা। তাকে যে ভাবে মেরেছে তাতে মনে হচ্ছে উনি (হুজুর আক্তার) হয়ত অস্বাভাবিক ছিলো। সাজিদের বন্ধু আসিফ (১২) একই মাদ্রসায় পড়ে। রমজানের আগে তাকেও অনুরুপ ভাবে পিটিয়ে আহত করে শিক্ষক নামের ওই কথিত হুজুর। আসিফের মা রিনা খাতুন বলেন, তিনি শিশুদের পিটিয়ে তাদের মাঝে এক ধরনে ভিতি ঢুকিয়ে দিয়েছে, বিচার দাবি করছি। প্রতিবেশি শাহালম হোসেন, আসমা খাতুন বলেন, ব্যবসা করার উদ্যোশে হুজুর ও তার স্ত্রী পাশাপাশি দুটি প্রতিষ্ঠান খুলে বসেছে। শিশুদের মারপিট করায় যেন তাদের কাছে মুল শিক্ষা। এই দম্পত্তির বিচার দাবি করছি।
স্থানীয়রা জানান, আক্তার হোসেন কয়ারপাড়ায় এসে পাশাপাশি দুটি বিল্ডিং ভাড়া নিয়ে একটিতে মহিলা হাফেজিয়া অন্যটিতে পুরুষ হাফেজিয়া মাদ্রসা খুলে বসেন। উভয় প্রতিষ্ঠানে অর্ধশত শিক্ষার্থী আছে। শিক্ষার্থী প্রতি তিনি মাসে সাড়ে ৬শ টাকা করে বেতন আদায় করতেন। বৃহস্পতিবার হুজুর আক্তার আটক হওয়ার খবরে তার স্ত্রী শারমিন আক্তার উভয় প্রতিষ্ঠান তালা ঝুলিয়ে আত্মগোপনে চলে যান। এ বিষয়ে জানার জন্য মাদ্রসার সাইনবোর্ডে লেখা মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
চৌগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ ইকবাল বাহার চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আহত শিশুর পিতার অভিযোগের ভিত্তিতে মাদ্রসা শিক্ষককে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এই ঘটনার সাথে অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এমএসএম / এমএসএম